ফেয়ার হবে কবে ?
ধরুন, এই মুহূর্তে আমি বুকে ব্যথা অনুভব করছি। যদিও প্রথমে খুব একটা পাত্তা দেইনি, তারপরে অবস্থা বেগতিক দেখে, অবশেষে বাধ্য হয়ে পরিবারের লোকের কাছে বললাম। এমতাবস্থায় আমার পরিবারের লোক কি করবে, বলুন তো।
যে জায়গাটাতে থাকি সেখান থেকে মফস্বল শহর বেশ ভালোই দূরে। বলতে গেলে বিশ কিলোমিটারের পথ। পরিবারের লোকের মাথায় প্রথম যেটা আসবে, সেটা হচ্ছে দ্রুত গ্রাম্য ডাক্তার ডাকা, গ্রাম্য ডাক্তার আসতেও অনেকটা সময় অতিবাহিত হয়ে যাবে, এসে অবস্থা দেখে বলবে আরে তেমন কিছু না গ্যাস্ট্রিকের কারণে বুক ব্যথা, হয়তো গ্যাস্ট্রিকের ওষুধ দেবে। খেয়েও নেবো, তবে তারপরেও যখন কোন অবস্থাতেই বুক ব্যথা কমছে না, তখন যখন আবারও পরিবারের লোকের কাছে বিষয়টি বলবো, তখন তারা হয়তো কোন রকমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করবে।
যদিওবা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পৌঁছে যাই, তাহলে প্রথম সেখানকার উপস্থিত ডাক্তাররা হয়তো আমার সমস্যা দ্রুত জানার চেষ্টা করবে, তারপর ইসিজি করে হার্টে কোন সমস্যা হলো কিনা তা দেখার চেষ্টা করবে এবং তাৎক্ষণিক বুক ব্যথা কমানোর কিছু ওষুধ দিতে পারে। যদি রিপোর্ট খারাপ আসে, তাহলে হয়তো সেখান থেকে দ্রুত রেফার করবে যেখানে হৃদরোগের চিকিৎসা হয় সেই রকম কোন হাসপাতালে।
কেননা মফস্বল শহরে হৃদরোগের সঠিক ইমার্জেন্সি চিকিৎসা হয় না। এটা শুনতে খারাপ লাগলেও, বাস্তবে এটাই সত্য। যাইহোক অবশেষে যখন উপজেলা হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে আমাকে নিয়ে আমার পরিবারের লোকজন কোন মেডিকেল কলেজের উদ্দেশ্যে রওনা দেওয়ার চেষ্টা করবে , সেই যাত্রা পথে আমার প্রাণ বায়ু ততক্ষণে থাকতেও পারে আবার নাও পারে।
দেখুন গতকাল থেকে ক্রিকেটার তামিমের ব্যাপারটা বেশ কয়েকবার দেখলাম , তার ম্যাসিভ হার্ট অ্যাটাক হওয়া সত্বেও সে দ্রুত সবরকম সেবা মুহূর্তের মধ্যে পেয়ে গিয়েছে, সিপিআর দেওয়া, এয়ার অ্যাম্বুলেন্স, বিশেষায়িত হাসপাতাল, অভিজ্ঞ চিকিৎসক এবং সর্বোপরি সঠিক হার্টের চিকিৎসা, সবকিছু যেন মুহূর্তের মধ্যে ম্যানেজ হয়ে গিয়েছে এবং সে এখন শারীরিকভাবে অনেকটাই ভালো আছে।
আসেন একটু বাস্তবতার চিত্র দেখি, উদাহরণের ক্ষেত্রে একই সমস্যা কিন্তু আমারও। তবে আমার ক্ষেত্রে কি হলো, আমি কি দ্রুত এই সেবাগুলো পেলাম? প্রশ্ন আপনাদের কাছেই রেখে গেলাম ?
আমার প্রাণ বায়ু যখন নিভু নিভু করে , তখন অন্য কেউ দ্রুত সর্বোচ্চ সেবা পেয়ে ঠিকই সুস্থ হয়ে যাচ্ছে। এখন আপনি বলতে পারেন, তার ক্ষেত্রে বিষয়টি আলাদা ছিল। তবে এই কথা আমি হেসে উড়িয়ে দেবো ভাই এবং বলব পৃথিবীর সবার জন্য ফেয়ার না।
ডিসকর্ড লিংক
https://discord.gg/VtARrTn6ht
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |

VOTE @bangla.witness as witness

OR
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
আমরা আম জনতা ভাই। আমাদের হার্ট অ্যাটাক হলে রাস্তায় মরে যাওয়াই ভবিতব্য।
সবার জন্য সমান ফেসিলিটিস থাকবে এত সুন্দর পরিকাঠামো আমাদের দেশগুলোতে নেই এটা দুঃখের কথা হলেও চরম বাস্তবতা। এই সমান সুবিধাভোগের জন্য অনেকেই অনেক লড়াই করেছেন তবে দেখা গেছে যেই যায় লঙ্কায় সেই হয় রাবণ গল্প বারবার ফিরে এসেছে। তাই এসব আশাই করি না। আমি তো হার্ট এটাকে মরে যাব বডি পচে যাবে পুলিশ এসে দরজা খুলবে এরকম ভেবেই দিন কাটিয়ে দিচ্ছি। হি হি হি।
সমাজে বোধহয় আর কোনো রকম কোনো উন্নতি আমরা বেঁচে থাকতে দেখে যেতে পারবো না। গরিবের আবার সাধারণ মানুষরা আজীবন সুবিধাবঞ্চিত ছিল আজও আছে ভবিষ্যতেও যেন থেকেই যাবে ওই ভাবেই।
আপনার কথায় কিন্তু বেশ যুক্তি ছিল, বাস্তবতা বড্ড নিষ্ঠুর।
এই নিউজটার পর একদম আপনার মতোই বিষয়টা আমি চিন্তা করেছি। সাধারণ একজন মানুষকে মানে যে হার্টের রোগী তাকে হাসপাতালে নেয়া হলে আগে হাসপাতালের বিল দিতে হবে, তারপর সই স্বাক্ষর করতে হবে তারপর টাকা ম্যানেজ হলে চিকিৎসা সেবা শুরু হবে নতুবা হবে না। এই ব্যাপারটা পুরাপুরি উল্টো যখন প্রশ্ন আসে একজন সেলিব্রেটি পার্সনের! তখন ডাক্তাররা এতো হিসাব নিকাশ করবে কই! আগে তাকে চিকিৎসা করাতে হবে। তারপর অন্যকিছু ভাবা যাবে। মাঝে মাঝে ভাবী সাধারণ মানুষ হয়ে ভুলও করলাম বটে। তবে বাস্তবতা এটাই আপনাকে আমাকে মেনে নিতে হবে।
নিষ্ঠুর বাস্তবতার কারণে, বলির পাঁঠা হচ্ছি আমরা প্রতিনিয়ত ভাই।
ঠিক বলেছেন ভাই