ভোগান্তি || @shy-fox 10% beneficiary
ঘটনাটির সূত্রপাত মূলত বিগত তিন মাস আগে থেকেই। যাইহোক ডিসেম্বরের শুরু থেকেই চেষ্টা করছি আরকি হিরার ভোটার আইডি কার্ড করার জন্য । মানে হিরার যখন প্রথমবার ভোটার আইডি কার্ড করার কথা ছিল, সে তখন প্রেগন্যান্ট ছিল । তাছাড়া সেই সময় করোনা পরিস্থিতি খুবই জটিল আকার ধারণ করেছিল । যার কারণে সেই সময়ে কোনোভাবেই হিরার ভোটার আইডির ছবি তোলা হয়নি ।
কিন্তু এখন পরিস্থিতি মোটামুটি কিছুটা স্বাভাবিক হওয়ায় ,তাই আমরা চিন্তা করছি হিরার ভোটার আইডি কার্ড করা দরকার। কিন্তু ঝামেলা পেঁকে যায় মূলত নির্বাচন অফিসের সিস্টেমের কারণে । যাইহোক ডিসেম্বর মাসে আমি প্রথম গিয়েছিলাম নির্বাচন অফিসে হিরাকে নিয়ে, ভোটার আইডি সংক্রান্ত ব্যাপার গুলো জানার জন্য ।
তারা আমাকে বলল, প্রথমত হিরা যে জায়গায় জন্ম গ্রহণ করেছে সেখানকার জন্ম নিবন্ধনের অনলাইন ফটোকপি লাগবে । তারপরে ব্লাড গ্রুপের ফটোকপি লাগবে, তারপরে শিক্ষাগত যোগ্যতার ফটোকপি লাগবে এবং সঙ্গে বাবা-মার ভোটার আইডির ফটোকপি এবং তার হাজবেন্ডের ভোটার আইডির ফটোকপি এবং যেই এলাকায় বর্তমানে আছে , সেই এলাকার নাগরিকত্বের সার্টিফিকেট লাগবে । যদি সবগুলো একত্রে করে নিয়ে আসতে পারি, তাহলে নির্বাচন অফিস থেকে তাকে ছবি তোলার পারমিশন দেবে ।
যেহেতু অনেকগুলো কাগজ সংগ্রহ করতে হবে, তাই ব্যাপারটা আমার কাছে মোটেও সহজ ছিল না । কারণ আমি এমনিতেই সময় খুব একটা পাই না । তার ভিতরে এত কিছু সংগ্রহ করা ,আমার জন্য আসলে অনেক কঠিন হয়ে যাচ্ছিল । তাও যেহেতু নাগরিকত্বের পরিচয়পত্র অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটা জিনিস, তাই আমি শত ব্যস্ততার মাঝেও আস্তে আস্তে চেষ্টা করছিলাম সবগুলো কাগজ সঠিকভাবে সংগ্রহ করার জন্য।
যাইহোক মোটামুটি আমি সবগুলো কাগজ সংগ্রহ করেছি, প্রথম এক মাসের ভিতরেই । কিন্তু মূলত বিপত্তিটা ঘটে যায়, সকল কাগজ সংগ্রহ করার পর থেকেই । কারণ তার পরের মাসেই মানে জানুয়ারি মাসে আমাদের এলাকায় ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন হয়েছিল এবং সেই নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নির্বাচন অফিসের লোকজন খুব ব্যস্ত হয়ে গিয়েছিল । সেই সময় যখন আমি তাদের কাছে গিয়েছিলাম । তারা আমাকে বলেছিল, ফেব্রুয়ারি মাসে আসার জন্য । বলেছিল যে, ফেব্রুয়ারি মাসের ছয় তারিখের পরে আসলে তারা আমার ওয়াইফের ভোটার আইডির জন্য ছবি তুলে দেওয়ার ব্যবস্থা করবে ।
আজ যখন আমি গল্পটা লিখছি তখন মোটামুটি ফেব্রুয়ারির ছয় তারিখ রাত্রিবেলা। আজকের দিনের বেলায় আমাকে খুব পেরেশানির ভিতর দিয়ে সময়টা কাটাতে হয়েছে। মূলত একপ্রকার আমাকে হয়রানি হতে হয়েছে । যেহেতু আমাকে দীর্ঘদিন থেকে এই কাজটার সঙ্গে লেগে থাকতে হয়েছে, তাই মূলত সমাধান না পেয়ে আমি অনেকটাই হতাশাগ্রস্ত হয়ে গিয়েছিলাম আজকে এবং অনেকটাই বিব্রতকর পরিস্থিতির শিকার হয়েছিলাম । তবে মানসিকভাবে অনেকটাই আমি সেটাকে সামলে নিয়ে ছিলাম ।
ঘুম থেকে উঠে হিরাকে সঙ্গে করে নিয়ে মূলত নির্বাচন অফিসের উদ্দেশ্যে রওনা হলাম। সঙ্গে নিয়েছি সেই দীর্ঘ সময় থেকে কষ্ট করে, সংগ্রহ করা রাখা সেই কাগজগুলো। যাইহোক রিক্সায় উঠেই গন্তব্য একদম নির্বাচন অফিসে। কিন্তু নির্বাচন অফিসের সামনে গিয়ে দেখি সেই লম্বা লাইন। কারণ মোটামুটি নির্বাচন অফিসে বিভিন্ন ধরনের লোকজন এসেছে বিভিন্ন কাজের জন্য এবং তাছাড়াও আজকে এখানকার নতুন জনপ্রতিনিধিদের মূলত শপথ গ্রহণ চলছে ।
একদম শুরুতেই ধাক্কা, তবে আমি দমে যাওয়ার মানুষ নই । আমি হিরাকে সঙ্গে করে নিয়ে একদম সোজা নির্বাচন অফিসারের রুমে ঢুকে গেলাম এবং গিয়ে বললাম যে , আমাকে আজকে আসার কথা বলা হয়েছিল কারণ মূলত আমার ওয়াইফের ভোটার আইডির ছবি তোলার জন্য । যাইহোক আজকে নির্বাচন অফিসে, তাদের বিভাগীয় আরও বড় কর্মকর্তা এসেছে । কারণ এখানে নব নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের শপথ গ্রহণ হবে। লোকাল অফিসার আমাকে দেখেই চিনতে পেরেছে এবং আমি সোজাসুজি বলার চেষ্টা করলাম , আমি মূলত দুমাস ধরে ঘোরাঘুরি করছি , আমার সমস্যা থেকে উত্তরণ হওয়ার জন্য কিন্তু আমি এখনো সমস্যাটি থেকে উত্তরণ হতে পারি নি ।
হুট করে তাদের বিভাগীয় কর্মকর্তা আমার কথাগুলো সে নিজের গায়ে বেঁধে নিল এবং তখনই মূলত ঝামেলাটি লেগে গেল । যাইহোক সে তাদের লোকাল অফিসারকে চুপ করতে বলে, আমার সঙ্গে কথা বলা শুরু করল । বলল যে, দেখতে পাচ্ছেন না , আজকে আমাদের এখানে শপথ গ্রহণ হবে এবং আমাদের হাতে আরও অনেক গুলো ফাইল আছে । আপনি কেন অহেতুক সময় নষ্ট করছেন। আজকে আপনার কাজ হবে না , আমরা পুরো মাসটাই ব্যস্ত থাকবো , আপনি পরের মাসের দুই তারিখে আসুন ।
আমি হয়তো মুহূর্তেই ভুলেই গিয়েছিলাম যে, এটা সরকারি অফিস । যাইহোক তাও মাথা ঠান্ডা করে, আমি তাকে প্রশ্ন করার চেষ্টা করলাম । ঠিক আছে , পরের মাসের দুই তারিখে আসব কিন্তু আমার সমস্যাটা হচ্ছে আমার ওয়াইফের ছোট বাবু আছে এটা আপনার লোকাল অফিসার ভালোভাবেই জানে । তাহলে আমাকে কেন এত বারবার তারিখ দেওয়া হচ্ছে ।
এই প্রশ্নটা শুনে, কিছুটা বিরক্তির সুরে বিভাগীয় কর্মকর্তা বলেই ফেলল যে , আপনার পারিবারিক সমস্যা আপনার কাছে । আমাদেরকে আমাদের মত করে কাজ করতে দিন । যাইহোক যেহেতু অফিসের বড় কর্মকর্তা বলেই দিয়েছে , তারপরেও আমি কিছুটা মাথা ঠান্ডা করে ,অবশেষে যখন রুম থেকে বের হবো তখন আমি বলেই ফেললাম, আমার মনে হয় আপনারা ভুলে গিয়েছেন যে, আপনারা পাবলিক সার্ভিসের সঙ্গে জড়িত। যাইহোক দেখা হবে পরের মাসের দুই তারিখে । তবে জানিনা ঐ দিন কাজ হবে কিনা নাকি ঐ দিন ও তারিখ পরিবর্তন হবে। কি যে অপেক্ষা করছে কে জানে ।
ডিসকর্ড লিংক:
https://discord.gg/VtARrTn6ht
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |

আসলে ভাই আজকের পোস্টটি পড়ে আমার খুবই খারাপ লাগলো। আসলে আমাদের পাবলিক জনগণ এতটা ভোগান্তিতে পড়তে হয় যা বলার মতো না। নির্বাচন অফিস মানেই ভোগান্তি। আসলে আপনি গত দুই মাস ধরে ভাবির জন্য নানারকম চেষ্টা করছেন। ভোটার আইডি কার্ডয়ের জন্য কতগুলো কাগজ পাতি জোগাড় করেছেন। আপনি অনেক ব্যস্ততার মধ্যে দিয়ে সময় কাটান। তারপরেও এতগুলো কাগজ পাতি জোগাড় করা কষ্ট কর। তারপরে সকল কাগজ জোগাড় করার পরেও যখন আজকে গেলেন তখন বিভাগীয় কর্মকর্তা শপথ গ্রহণ চলছে। এই জন্য আজকে ছবি ওঠা হলো না। পরে আবার 2 তারিখ। আসলে পরে 2 তারিখে হবে কিনা সেটাও সন্দেহ। যাইহোক আসলেই আমরা জনগণ ঠিকভাবে সেবা পায় না। এটাই মূল কথা।
ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য। শুভেচ্ছা রইল আপনার জন্য।
ভোগান্তি নামক এই শব্দটির সাথে আমরা সকলে অনেক বেশি পরিচিত। কারণ আমরা সাধারন জনগনরা পদে পদেই ভোগান্তির শিকার হচ্ছি। মনে হয় যেন এই ভোগান্তি শব্দটি আমাদের জীবনের সাথে গেঁথে রয়েছে। যেখানেই যাই না কেন ভোগান্তির শেষ নেই। বিশেষ করে নির্বাচন অফিস, পাসপোর্ট অফিস এবং বিআরটিএ অফিস এগুলোতো গেলে মানুষ চরম ভোগান্তির শিকার হয়। এক কাজের জন্য হাজার দিন ঘুরতে হয়। তবুও সঠিক সমাধান পাওয়া যায় না। ভাইয়া আপনি সবসময় বাস্তবের দিকগুলো তুলে ধরেন সেজন্য আপনার লেখাগুলো পড়ে আমার ভালো লাগে। আমাদের জীবনে ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলোর সাথে আপনার সাথে ঘটে যাওয়া ঘটনাটির অনেক মিল রয়েছে। আসলে আমাদের বাস্তবের প্রেক্ষাপটগুলো একই সূত্রে গাঁথা। যেই প্রেক্ষাপটগুলো সারা জীবন আমাদের তারা করে বেড়াবে। নির্বাচন অফিসে সত্যিই আপনি অনেক ভোগান্তিতে পড়েছেন। ছোট বাবুকে রেখে বার বার নির্বাচন অফিসে যাওয়া সত্যিই অনেক কষ্টের ব্যাপার। আর যদিও বা সঠিক সমাধান পাওয়া যায় তাহলে একটু ভালো লাগে। কিন্তু এখানে সঠিক সমাধান পেতে পেতে যে কতদিন লাগবে তা ভাবলেই খারাপ লাগে। তবে যাই হোক খুব তাড়াতাড়ি যেন আপনার সমস্যার সমাধান হয় এই কামনাই করছি। আপনার জন্য এবং আপনার পরিবারের সকলের জন্য শুভ কামনা রইলো ভাইয়া।
ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য। শুভেচ্ছা রইল আপনার জন্য।
সরকারি কর্মকর্তাদের দোষ দিয়ে লাভ নাই। যেখানে যাবেন সেখানেই একই অবস্থা। একবারে কোনো কাজই হাসিল করা যায় না। আমি গেছিলাম বাইকের নাম্বার প্লেট নিয়ে আসতে আমাদের বাসা থেকে প্রায় ৬০ কিলোমিটার দূরে। যেখানে একদিনেই করে দেওয়ার কথা সেখানে আমাকে তিনবার যেতে হইছে। এমনকি আমার মতো অনেকেই ফিরে আসছে। তাদের সময় লিমিটেড এই দোহায় দিয়ে কাজ করে নাই।
আসলে আমাদের দেখের সিস্টেম ই এমন। দেশের সিস্টেম পরিবর্তন হলে সরকারি কর্মকর্তাদের কাজের ধারাও পরিবর্তন হবে।
দোয়া করি আপনাকে যে তারিখ দিছে সেই তারিখ যাতে আর পরিবর্তন হয়ে নতুন তারিখ সংযুক্ত না হয়। আপনার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইলো ভাই।
ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য। শুভেচ্ছা রইল আপনার জন্য।
ভাই এটাই হচ্ছে আমাদের দেশের সরকারি কর্মকর্তাদের চরিত্র। তারা নিজেদেরকে জনগণের সেবক হিসেবে না ভেবে সাধারণ মানুষকেই তাদের সেবক মনে করে। শুধু নির্বাচন অফিসেই নয় বেশীরভাগ সরকারী দপ্তর গুলোতে এই ধরনের অনিয়ম আর হয়রানির শিকার হতে হয় পদে পদে। আর এই বিষয়গুলো দেখারও কেউ নেই। যাই হোক শেষ পর্যন্ত কি হলো জানার অপেক্ষায় রইলাম।
ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য। শুভেচ্ছা রইল আপনার জন্য।
সরকারি দপ্তরগুলোর কাজের গাফিলতির কারণে জনগণ ভোগান্তিরতে পারে। জনগণের ভোগান্তির শেষ থাকে না তখন। তারা তাদের দায়িত্ব যদি সঠিকভাবে পালন করত তাহলে এই সাধারণ জনগণরা এত বেশি ভোগান্তিতে পড়তো না। আসলে তারা কখনও মানুষের সময়ের মূল্য দিতে জানে না। সাধারণ জনগণকে তারা এতটাই তুচ্ছ মনে করে যে তারা তাদেরকে কটু কথা বলতেও দ্বিধা বোধ করে না। আসলে সরকারি দপ্তরের এসব অনিয়ম কতদিন চলবে তা আমরা কেউ জানিনা। তবুও আমাদেরকে সবকিছু মেনে নিয়ে চলতে হবে। কারণ আমরা এমন একটি দেশে বসবাস করি যেখানে সাধারণ জনগণের কোনো মূল্যই নেই। আসলে সেই অবহেলা গুলো খুবই খারাপ লাগে। তবে ভাইয়া আপনি যেন খুব তাড়াতাড়ি আপনার এই ঝামেলা গুলো কাটিয়ে উঠতে পারেন এবং আপুর নাগরিকত্ব খুব সহজেই পেয়ে যান এই কামনাই করছি।
ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য। শুভেচ্ছা রইল আপনার জন্য।
জানিনা পরের 2 তারিখে আপনার কাজ আসলে হবে কিনা তবে সত্যি বলতে মাঝে মাঝে ইচ্ছা করে ওনাদের কাজকর্ম দেখলে ইচ্ছা মতন যদি প্যাদানি দিতে পারতাম। কি বলবো ভাই মানুষের সময়ের কোনো মূল্যই তাদের কাছে নাই ।আপনাকে এতবার ঘুরাইলো আর কাগজপত্র ম্যানেজ করাটা যে কতটা ঝামেলার কাজ সেটা আমি নিজে জানি আমার নিজের সার্টিফিকেট পর্যন্ত আমি তুলি নাই শুধুমাত্র এই কাগজপত্রের ঝামেলার জন্য।
খুবই দুঃখজনক একটি ব্যাপার। তবে আমাদের দেশের সিস্টেমটাই এমন। কাজের কোন নাম নেই আকাম নিয়ে ফাল পাড়ে যতসব। যাদের পাবলিক সার্ভিস দেওয়ার কথা পাবলিক সার্ভিস না দিয়ে সরকারি বাবুদের কাজ নিয়ে ব্যস্ত ওরা হাহা। আশা করি সামনে আপনার কাজ টি যেন হয়ে যায়।🙏
ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য। শুভেচ্ছা রইল আপনার জন্য।
এই অভিজ্ঞতা গুলো নিতে হবে বলেই আমি আসলে সব গুছিয়ে উঠতে পারছিনা।নাহলে কয়েকটা কাগজ নেওয়া বড় কোনো বিষয় ই নয়।আমার কপালেও কি অপেক্ষা করছে কে জানে।
ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য। শুভেচ্ছা রইল আপনার জন্য।
কী আর বলব ভাই এসব সরকারি চাকরি জীবিদের ব্যবহার দেখলে মনে হয় তারাই দেশের হর্তাকর্তা। হালনাগাদ এর সময় ব্যতীত অনসময়ে ভোটার আইডি কার্ড করতে গেলে বেশ ঝামেলা পোহাতে হয়। তবে দিনের পর দিন দেওয়া আবার এদের একটা বাজে স্বভাব। যাইহোক কী আর করবেন ২ তারিখ পযর্ন্ত অপেক্ষা করুন।।
ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য। শুভেচ্ছা রইল আপনার জন্য।
ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য। শুভেচ্ছা রইল আপনার জন্য।