সুন্দরবন ভ্রমণ( সপ্তম পর্ব)।
আমার বাংলা ব্লগে,সবাইকে স্বাগতম।
আমি @emon42.
বাংলাদেশ🇧🇩 থেকে
দেখতে দেখতে আমাদের বেঁধে দেওয়া আড়াইঘন্টা প্রায় শেষ। তো আমরা হাঁটা ধরলাম ট্রলারের উদ্দেশ্যে।যেখানে এসে আমরা নেমেছিলাম। গিয়ে দেখি ট্রলার এসে দাঁড়িয়ে আছে এবং অধিকাংশ ছেলেরা চলে এসেছে। আমরা সহ অল্প কয়েকজন বাকি ছিল। আমরা উঠে পড়ালাম মোটামুটি সুন্দরবন থেকে মংলা পোর্ট এর উদ্দেশ্যে আমাদের ট্রলার যাএা শুরু করে ৩:৩০ এর দিকে। তখন বেশ রোদ ছিল। গতকাল রাতে আমি ঘুমাই নাই সেজন্য চোখটা কিছুটা লেগে গেছিল। যাইহোক ৪৫ মিনিট ট্রলার যাএার পর আমরা চলে আসি মংলাপোর্টে। আমাদের সুন্দরবন ভ্রমণ শেষ। এখন সময় দুপুরের খাবারের। সকালের নাস্তা করেছি সেই ১১ টার সময় এখন বাজে সাড়ে চারটা। যাইহোক গিয়ে দেখি রান্না শেষ স্যার বলল তোমরা বসে পড়ো। কিন্তু ১০০ জন ছাএ একবারে বসলে হবে না পরিবেশন করার জন্য কিছু লোক লাগবে। যাইহোক সেজন্য আমরা ৬০ জন প্রথমে খেয়ে নেয় এবং অন্যরা পরিবেশনে সাহায্য করে।
আমাদের দুপুরের খাবারের মেন্যুতে ছিল সাদা ভাত, মুরগির রোস্ট, খাসির মাংস, সবজি, টমেটো সালাত, এবং সফট ড্রিংকস। সত্যি বলতে আমাদের স্যার আমাদের খাবারের দিকটাই কোনো স্যার দেয়নি। খাবার গুলো ছিল একেবারে প্রিমিয়াম কোয়ালিটির। ঐ রাধুনির রান্নাটা বেশ দারুণ ছিল। খাবার হয়েছিল দারুণ সুস্বাদু। খাবার ছিল পর্যাপ্ত একেবারে হিসেব করা। আমাদের খাওয়া শেষ হলে যারা বাকি ছিল তারা বসল এবং আমাদের সঙ্গে যারা খেয়েছে তাদের মধ্যে কয়েকজন সাহায্য করল। খাওয়ার পর্বটা চলেছিল বেশ অনেকক্ষণ। খাওয়ার পর অনেক ক্লান্ত হয়ে যায়। সারাদিন পর পেটে কিছু পড়লে মনে হয় একটু ঘুম দেয়। তো বাসে গিয়ে একটু এলিয়ে শুয়েছি। তখন আমার বন্ধু শিশির এসে ডাকছে বলছে ইমন চল এখন গেমস হবে সবার খাওয়া শেষ। সত্যি বলতে আমার যেতে ইচ্ছা করছে না কিন্তু যেতে হলো। গিয়ে দেখি সবাই প্রস্তুত খেলার জন্য অনেকে আবার অংশগ্রহণ করবে না। এটা অনেক মজার একটা গেমস ছিল।
আমরা অনেকেই মিউজিক চেয়ার বা মিউজিক বালিশ খেলেছি। খেলাটা ছিল মিউজিক বালিশ খেলা তবে আমাদের স্যার খেলাটাই একটা ভিন্ন মাএা যোগ করেছিল। যার কাছে বালিশ থাকাকালীন মিউজিক থেমে যাবে কৌটা থেকে তাকে একটা কাগজ তুলতে হবে। কাগজে লেখা আছে বিভিন্ন শর্ত তাকে সেই অনুসারে পারফরম্যান্স করে দেখাতে হবে। এটা বেশ নতুন ছিল। পারফরম্যান্স করে দেখাতে না পারলে সে খেলার বাইরে হয়ে যাবে আর পারলে সে থেকে যাবে। তো লজ্জার কারণে অধিকাংশ অংশ নেয় না। আমি অংশ নিয়েছিলাম। গোল হয়ে বসে খেলা শুরু করলাম অন্যদিকে ঘুরে মিউজিক কন্ট্রোল করছে কয়েকজন। খেলা শুরু হয়ে গেল প্রথমে বালিশ থামলো আমাদের বড় ভাই মানে সিনিয়র এক ভাইয়ের কাছে। উনি কৌটা থেকে কাগজ তুললেন সেটাতে লেখা আছে তোমার বউ মারা গেছে এইরকম অভিনয় করে দেখাও। ঐ ভাই অভিনয় করে দেখালো। যারা অংশগ্রহণ করছিল না তারা বেশ উপভোগ করতে শুরু করে খেলাটা।। এরপর আবার খেলা শুরু আমাদের ক্লাসের ছেলে আপন এর কাছে থেমে গেল বালিশ। ওকে গান শোনাতে হবে কিন্তু আপন হার মেনে নিল বলল পারব না সঙ্গে সঙ্গে গেমস থেকে আউট। আমি ভয়ে ভয়ে আছি আমার কাছে কখন জানি বালিশ আসে আর মিউজিক থেমে যায়।।
এভাবে আরও কয়েকজন তাদের পারফরম্যান্স দেখালো আবার বেশ কয়েকজন না দেখাতে পেরে বের হয়ে গেলে। একপর্যায়ে আমাদের স্যার এর কাছে বালিশ থেমে গেল। স্যার এর অপশনে ছিল গান শোনাতে হবে। স্যার মাইক্রোফোন নিয়ে শুরু করে দিলেন গান। না স্যার এর কন্ঠটা বেশ ভালো।। গেমসটা যেন জমে গেছে। যারা যারা শেষ পযর্ন্ত টিকে থাকবে সবাই উপহার পাবে। কিন্তু আমার আর শেষ রক্ষা হলো না। আমার কাছে গিয়ে বালিশ টা থেমে গেল একবার। ভয়ে ভয়ে তুললাম একটা কাগজ দেখি তাতে লেখা তোমার বন্ধুকে প্রেমিকা বানিয়ে প্রপোজ করো 😂। এটা বিশাল কঠিন কাজ ছিল আমার কাছে। আমার বন্ধু শিশিরকে বললাম যা মাঝে গিয়ে দাড়া। পরে হেঁটে এসে হাঁটু গেড়ে বললাম আমি তোমাকে ভালোবাসি এটা দেখে তো সবাই হাসাহাসি শুরু করে দিল। আমারও বেশ লজ্জা লাগছিল।। আমাদের হাতে আর সময় নেই। স্যার বলল গেমস এখানেই শেষ। এরপর আমরা যারা অংশগ্রহণ করেছিলাম তাদের হাতে পুরষ্কার ধরিয়ে দেওয়া হলো। কেউ পেয়েছিল ডায়েরি কেউ পেয়েছিল বই আবার কেউ ক্যালকুলেটার। স্যার বলল গেমস আর কন্টিনিউ করব না। তোমরা এইটুকু সময় ঘোরাঘুরি করো। যে যা কেনাকাটা করবা করো তবে এরা পর্যটক দেখলে দাম অনেক বেশি চাই দাম বুঝে কেনাকাটা করবা। স্যার বলল আমাদের বাস এখান থেকে ছাড়বে ৬:৩০ এর সময়, আমি সবাইকে এর আগে বাসে দেখতে চাই।।।
সবাইকে ধন্যবাদ💖💖💖।
অনন্ত মহাকালে মোর যাএা অসীম মহাকাশের অন্তে। যারা আমাদের পাশে আছে তারা একটা সময় চলে যাবেই, এটা তাদের দোষ না। আমাদের জীবনে তাদের পার্ট ওইটুকুই। আমাদের প্রকৃত চিরশখা আমরা নিজেই, তাই নিজেই যদি নিজের বন্ধু হতে পারেন, তাহলে দেখবেন জীবন অনেক মধুর।তখন আর একা হয়ে যাওয়ার ভয় থাকবে না।
আমিও এই গেমস এর কথা শুনেছি। বিশেষ করে টিভিতে অনেক সিরিয়ালে দেখতে পাই মিউজিক বাজানো তারপর অফ হয়ে গেলে যাকে যেটা করতে বলা হয় সেটাই করে। আপনাদের খেলার কথা শুনে বেশ মজা লাগলো। বিশেষ করে আপনার স্যার তার অপসানে গান আসাতেও অনেক গান শুরু করলেন। কিন্তু স্যারের কন্ঠটা ভালো শুনে ভালো লাগবে । আপনার ভাগ্যে শেষ পর্যন্ত বন্ধুকে প্রপোজ করা ছিল। এটা কিন্তু বেশ মজার। যদিও আপনার জন্য লজ্জার। বেশ ভালই আনন্দ করেছেন আবার গেমসের জন্য গিফট ও পেয়েছেন।
হি হি। ধন্যবাদ আপনাকে আপু সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।।
আমিও এই গেমস খেলেছি মিউজিক বাজানো হবে। একটা সময় মিউজিক অফ হয়ে যাবে ।মিউজিক অফ হওয়ার সময় বালিশ যার কাছে থাকবে তাকে চিরকুট দেওয়া হবে। চিরকুটে যা আছে তাকে সেটাই পারফরম্যান্স করতে হবে ।খেলাটা বেশ সুন্দর ।বেশি ভালো লাগলো আপনার ছেলে হয়ে ছেলেকে প্রপোজ করাটা ।আর বেশ মজাই করেছেন বুঝা গেছে ।কোথাও ঘুরতে যাব আর খেলা হবে না সেটা হয় । আগে আমরাও মাঝেমাঝে পিকনিকে গিয়েছিলাম সেখানে খেলাধুলা করেছি।
জী ভাই আপনি তাহলে মজা টা বুঝবেন। ধন্যবাদ আপনাকে।।
কিছুদিন আগেও আপনি আপনার একটি পর্ব দেখেছিলাম সুন্দরবন নিয়ে বেশ ভালো লেগেছিল বিস্তারিত বর্ণনা পড়ে। আজকেও ঠিক তেমন ফটোগ্রাফির পাশাপাশি সুন্দর বর্ণনা করেছেন। সব মিলিয়ে খুব ভালো লাগলো। নতুন কিছু ধারনা পেলাম সুন্দরবন সম্পর্কে।
ধন্যবাদ ভাই আপনাকে।।
ভাই আপনার সুন্দরবন ভ্রমণের সপ্তম পর্বটা মনে হয় বেশ মজার ছিল। মিউজিক চেয়ার বা মিউজিক বালিশ খেলাটা আমার কাছে একদম নতুন ছিল। সিনিয়র ভাইয়ের বউ মরে যাওয়ার অভিনয় বা আপনার প্রেমের প্রস্তাব করা সবগুলো বিষয় ছিল অনেক আনন্দের। খুব ভালো লাগলো ভাই।
ধন্যবাদ ভাই আপনাকে।।
ভাইয়া আপনি ভ্রমন করতে গিয়েও দুপুরের খাবার খেয়ে ঘুমাতে চান,আবার বাসে গিয়ে ঘুমানোর চেষ্টাও করলেন। আপনার বন্ধুর জন্য খেলাটা উপভোগ করতে পারলেন। ধন্যবাদ ভাইয়া।
আসলে অনেক ক্লান্ত ছিলাম সেজন্য ভাই। ধন্যবাদ আপনাকে।।