পথশিশু
আমার বাংলা ব্লগে,সবাইকে স্বাগতম।
আমি @emon42.
বাংলাদেশ🇧🇩 থেকে
গতকালকের পোস্টে আমি একটা ঘটনা বলেছিলাম আপনাদের। যেখানে আমাকে প্রায় মধ্যরাতে গাবতলি বাস টার্মিনালে যাওয়া লাগে আমার বন্ধুর সঙ্গে দেখা করতে। সেখানে গিয়ে একটা বিষয় আমি লক্ষ্য করেছিলাম। আজকে সেটা নিয়েই কিছু কথা বলব। ঢাকা আসার পরে খুব একটা বের হওয়া হয় না বাসা থেকে। শুধু ক্লাসে আসি যায় মাঝে মাঝে বাজারে যায়। এই বাইরে বের হওয়া। কিন্তু সেদিন গাবতলি যাওয়ার পথে ঢাকা শহরের যানজট সম্পর্কে বেশ ভালো ধারণা হয়েছিল হা হা। তবে অন্য একটা বিষয় আমার দৃষ্টিগত হয়। গাবতলি তে গিয়ে আমি আমার বন্ধুকে ফোন দেয় তখন ও বলে ও যানজটে আটকে আছে। বেশ অনেক টা সময় লাগবে। আমি আর কী করব ঐ সময় টা পাশেই গিয়ে বসলাম। বসে কোনো কাজ না থাকায় ফোন ঘাটাঘাটি করছিলাম এবং একজনের সঙ্গে চ্যাটিং করছিলাম। ততক্ষণে হ্যাংআউট শেষ হয়ে গিয়েছে।
তো ওখানে বসে আছি তারপর একে একে বেশ কিছু শিশু বয়স ঐ ৯-১০ বছর হবে আমার কাছে আসতে শুরু করল। আমরা সহজ ভাষায় এদের কে পথশিশু বা টুকাইও বলে থাকি। আমার কাছে এসে বলছে ভাইয়া কিছু টাকা দেন রাতে খাই নাই। আবার বলছে ভাইয়া টাকা দেন না হলে আপনার এই হবে সেই হবে। একপর্যায়ে আমার বেশ বিরক্তি ধরে যায়। সত্যি বলতে আমি নিজেই বেশ কষ্ট চলছি। এই মাসে অনেক খরচ হয়ে গিয়েছে। আর দিলেই কত জনকে দিব বলেন। একে একে আসতেই থাকে। আবার এদের কেউ দোষ দেওয়া যাবে না। এদের নিয়ে কাজ করবে বাংলাদ এমন অর্গানাইজেশন নাই বললেই চলে। এরা যে আবার আপনার আমার দেওয়া টাকা দিয়ে খাবার খাবে ব্যাপার টা সেটাও না। অধিকাংশ সময় এরা এই টাকা দিয়ে নেশা করে। এটা ভেবে আমি অধিকাংশ সময় তাদের টাকা দেয় না।
এরপর আমার ফ্রেন্ড আসার পর দেখি ও বেশ অস্থির। অনেক ঘেমে গিয়েছে। সেজন্য দুইজন দুইটা সফট ড্রিংকস নিয়েছি মাএ। তখনো সফট ড্রিংকস এর বোতল টা খুলি নাই। আর আশপাশ থেকে ঐসব পথশিশুরা এসে হাজির। বলে ভাইয়া দেন দেন আমি খাব। বিষয়টি দেখলে যেমন খারাপ লাগে ঠিক ততটা বিরক্তিও আসে। অন্যদিকে আমার বন্ধু বেশ রাগী তার উপর এতোটা জার্নি করে এসেছে। ও তো সরাসরি বলে দিল এই জায়গা থেকে সরে যা। তখন আবার একটা পথশিশু বলে উঠল এই মিয়া ঝাড়ি দেন ক্যা! কথাটা শুনে আমি একটু অবাক হয়ে গেলাম। এটা ছিল আমার ঐখান কার অভিজ্ঞতা। এবার আসি আমার বাসার এই জায়গার অবস্থা। আমি বর্তমানে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর এর কাছে হজ্ব ক্যাম্পের পাশেই থাকি। এখানে আবার এই সমস্যা টা অন্যরকম এবং প্রকট।
এখানেও অনেক পথশিশু দেখা যায়। তবে এখন পযর্ন্ত তাদের কে আমি মানুষদের থেকে টাকা চাইতে দেখিনি। কিন্তু রাস্তায় বের হলেই দেখি একেবারে ছোট ছোট ছেলেরা নেশা করছে। বিষয়টি খুবই দৃষ্টিকটু লাগে দেখতে। একধরনের জুতায় দেওয়া আঠা এরা অল্প টাকায় পেয়ে যায়। এবং পরবর্তীতে সেটা আঠা পলিথিনের মধ্যে নিয়ে কোনোভাবে নিশ্বাস নেয়। এই নেশার পদ্ধতি টা অনেক টা এইরকম শুনেছি। এখানে রাস্তা দিয়ে গেলেই এটা দেখা যায়। কেউ এদের কিছু বলে না। আবার যেসব দোকানদার রা তাদের কাছে এসব বিক্রি করে তাদের এটা ভাবা উচিত। এবং এটা বেশ সহজলভ্য এবং দাম কম হওয়াই এটা দিয়ে তারা সহজেই নেশা করতে পারে। আমাদের দেশের সরকার বিভিন্ন এনজিও অর্গানাইজেশন অনেক সেবামূলক কাজ করে থাকে। এক্ষেত্রে আমার মনে হয় কারো উচিত এদের নিয়ে কাজ করা। যেন এরা সুস্থ্য জীবনে ফিরতে পারে। কিন্তু আমি আপনি চেয়ে কিছু হবে না। এটার প্রতিকার করতে হবে উপর থেকে।।
সবাইকে ধন্যবাদ💖💖💖।
অনন্ত মহাকালে মোর যাএা অসীম মহাকাশের অন্তে। যারা আমাদের পাশে আছে তারা একটা সময় চলে যাবেই, এটা তাদের দোষ না। আমাদের জীবনে তাদের পার্ট ওইটুকুই। আমাদের প্রকৃত চিরশখা আমরা নিজেই, তাই নিজেই যদি নিজের বন্ধু হতে পারেন, তাহলে দেখবেন জীবন অনেক মধুর।তখন আর একা হয়ে যাওয়ার ভয় থাকবে না।
ঢাকা শহরে এরকম শিশুদেরকে অনেকটা ব্যবসায়ের নামিয়ে দেয়া হয়েছে কিছু কিছু শিশুকে দিয়ে এরকম মানুষের কাছ থেকে টাকা উঠিয়ে নেওয়া হয়। এইসব টাকা যে ওরা ভোগ করতে পারে আমার তা মনে হয় না। তাছাড়া খুব অবাক হলাম এত ছোট ছোট শিশু এরকম ভয়ংকর মারাত্মক নেশায় আসক্ত হয়ে যাচ্ছে। এসব শিশুরা বড় হয়ে আরো মারাত্মক ভয়ঙ্কর কাজে লিপ্ত হয়ে যাবে যা দেখার আসলেই কেউ নেই।
বর্তমানে ঢাকা শহরে পথ শিশুর সংখ্যা অনেক বেশি বেড়ে গিয়েছে। আসলে সরকারিভাবে উদ্যোগ নিলে পথ শিশুদের সুস্থ জীবনে ফিরিয়ে আনা সম্ভব। আমার কাছে মনে হয় বিভিন্ন অর্গানাইজেশনের পথশিশুদের নিয়ে ভালো করে কাজ করা উচিত। সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই।