রূপকথা - " বাঁদরের স্বভাব পরিবর্তন"

image source: copyright freepixabay || image credit: Mysticsartdesign
Hello
বন্ধুরা
আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি, আপনারা সবাই ভালো আছেন। আজ আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করব একটি রূপকথার গল্প। এই গল্পটি আমার দীদা আমাকে বলেছিল। আমার বয়স তখন ৭ বছর। আমি ছেলেবেলায় খুবই দুষ্টু ছিলাম লেখাপড়া করতে চাইতাম না।সারাদিন শুধু খেলতাম। আমি রাতে ঘুমানোর আগে প্রায়ই রূপকথা শুনতাম। আমার এখনো রূপকথা শুনতে ভালো লাগে। সেই রূপকথার গল্প থেকে একটি গল্প আজ আপনাদের সাথে শেয়ার করব।
এক বট গাছে একটা মা বাঁদর বাস করতো। সেই মা বাঁদরের দুটি বাচ্চা ছিল। তার ভিতর ছোটো বাচ্চা টি ছিল খুবই দুরন্ত। আর বড়ো বাচ্চা টি ছিল খুবই শান্ত।বাঁদরের ছোটো বাচ্চা টি সারাদিন এ গাছ থেকে ওগাছে লাফিয়ে বেড়াতো আর সকল পাখিদের খাবার ও তাদের বাসা ভেঙ্গে ফেলতো। ওই ছোটো
বাঁদরের বাচ্চা যখন এগাছ থেকে ও গাছে যখন লাফিয়ে বেড়াতো তখন তার লম্বা লেজ দিয়ে পাখির বাসা ভেঙ্গে ফেলতো। একদিন ছোটো বাঁদরের বাচ্চা টি লাফা লাফির করার সময় তার লম্বা লেজ দিয়ে
আঘাত করে একটা পাখির কয়েকটি পালক ভেঙ্গে পড়লো। পাখিটি কাঁদতে কাঁদতে বললো আমি তো তোমার কোনো ক্ষতি করিনি তাহলে তুমি আমাকে এভাবে আঘাত করলে কেন? তখন ছোটো বাঁদর টি বলে আমি লাফানোর সময় তোমার আঘাত লেগেছে।তুমি দানা মেলে উড়া বন্ধ করে দিয়ে নিজের বাসায় বসে থাকো। পাখি আর কোনো কথা না বলে উড়ে গেলো।
এভাবে তার অনিষ্ট দিন দিন বেড়েই যাচ্ছে। সে কারো কথা শুনতো না। আবারো একদিন দুষ্টু বাঁদর টি লাফাতে লাফাতে টুনি পাখির বাসা ভেঙ্গে দিল। সেই টুনি পাখির বাসায় ছিল তার সদ্য ফুটে বের হওয়া বাচ্চা। বাসা ভেঙ্গে মাটিতে পড়ে গেল এতে সেই টুনির বাচ্চা পড়ে মারা গেলো। দুষ্টু বাঁদর টি হেসে দিয়ে আবার লাফালাফি করতে লাগলো।
মা টুনি পাখি কাঁদতে কাঁদতে মা বাঁদরের কাছে গিয়ে বলে আপনি ও একজন মা। আপনার বাচ্চা লাফা লাফি করে আমার বাসা ও আমার বাচ্চা মেরে ফেলছে। আপনি আপনার বাচ্চাকে একটু বুঝায় বলো। সে যেনো আর না করে এমন। সব শুনে মা বাঁদর টি বলে আমার বাচ্চা এমন করতে পারে না। সে খুব শান্ত। তুমি এসে আমাকে মিথ্যা বলছো। এখনই তুমি এখান থেকে চলে যাও।তখন নিরুপায় হয়ে মা টুনি চলে গেল।
আর একদিন একটি আম গাছে ছিল মৌচাক। সেই আম গাছে ওই দুষ্টু বাঁদর টি লাফাতে লাগল। এক দিন লাফাতে লাফাতে তার লম্বা লেজের আঘাত লাগলো মৌচাকে। সেই আঘাতে ৪ টি মৌ পোকা মরে গেলো। রানী মৌ পোকা বাঁদর কে কিছু বললো না। আর এক দিন ওই দুষ্টু বাঁদর আবার লাফানো শুরু করে। সেই দিনও তার লম্বা লেজের আঘাতে ৮ টি মৌ পোকা মরে গেলো। তখন রানী মৌ পোকা উড়ে মা বাঁদরের কাছে গিয়ে বলল তোমার বাচ্চা আমার চাকে আঘাত করে কয়েকটি পোকা মেরে ফেলেছে। তখন মা বাঁদর তার বাচ্চার কোনো দোষ না দেখে রানী মৌ পোকা কে খারাপ খারাপ কথা বললো। রানী মৌ পোকা উড়ে গিয়ে অন্য সব পোকাকে বলে ওই বাঁদর যদি আবার তাদের আঘাত করে তাহলে তাকে ও উল্টে আক্রমণ করতে হবে। এর পরে আর একদিন বাঁদর এসে লাফা লাফি করছে। আগের দিনের মতো আজ ও একটি মৌ পোকা মরে গেলো। এবার মৌ পোকার দল এসে তাকে উল্টে আক্রমণ করলো। তখন বাঁদর বলে তোমরা কেনো আমাকে আক্রমন করছো। তুমি বার বার সবার ক্ষতি করে যাচ্ছ।তার পার পেয়ে যাবে তাতো বার বার না হতে পারে। তখন দুষ্টু বাঁদর বলে আমাকে ক্ষমা করে দাও। আমি আজ থেকে ভালো হয়ে যাবো। আর আমার স্বভাব পরিবর্তন করে ফেলবো। আমি আজ থেকে বিনা কারণে কারো কোন ক্ষতি করবো না। সেই দিন থেকে দুষ্টু বাঁদর খুব শান্ত হয়ে গেল।আর কারো কোনোদিন ক্ষতি করে না।
গল্পটি খুব সুন্দরভাবে সাজিয়ে -গুছিয়ে লিখেছেন বৌদি।আমার কাছে ভালো লেগেছে।এ থেকে শিক্ষা হলো - অন্যকে ক্ষতি করলে নিজেকে ক্ষতির সম্মুখে পড়তে হয়।ধন্যবাদ বৌদি।
আপু আপনার গল্পটি খুবই সুন্দর হয়েছে ।নিজে বিপদে না পড়লে আসলে অন্যের কষ্ট বোঝা যায় না । দুষ্টু বাদরটি যখন নিজে বিপদে পড়েছে তখনই বুঝতে পেরেছে অন্যদের ক্ষতি করলে নিজের ও ফল ভালো হয় না। যার জন্য সে ভালো হয়ে গিয়েছে। ধন্যবাদ আপনাকে এত সুন্দর একটি গল্প আমাদের সঙ্গে শেয়ার করার জন্য
ধন্যবাদ আপু। মন দিয়ে আমার গল্প টি পড়ার জন্য।
খুব সুন্দর ছিলো গল্পটি এবং বেশ শিক্ষনীয়, তবে একটা সুন্দর বানী রয়েছে এর মাঝে, সেটা হলো প্রথমে ক্ষমা করা উচিত, তারপর ঠিক না হলে কঠোর হতে হবে। যেমন পরে দুষ্টু বাঁদর তার ভুল বুঝতে পেরেছে। ধন্যবাদ
হ্যা ভাইয়া প্রথমে ক্ষমা করতে হয়।তারপর শিক্ষা দিতে হয়।
খুবই সুন্দর একটি শিক্ষণীয় গল্প লিখছেন বৌদি।গল্পটা খুবই ভালো লাগলো।আসলেই এমন অনেক বাবা মা আছে যারা শুধু অন্যের বাচ্চার দোষ দেখে নিজের বাচ্চার দোষ চোখে পড়ে না।এখন দেখো অন্যের ক্ষতি করলে একসময় নিজের উপরও পরে ।অনেক ধন্যবাদ বৌদি।
আপনাকেও ধন্যবাদ আপু এত সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।
চলার পথে কারো কোন ক্ষতি করলে নিজেই কোন না কোন ক্ষতিতে পড়তে হয় যার একটি উদাহরণ এই গল্পটি। মৌমাছির ক্ষমার একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত আমরা এই গল্পের মাঝে দেখতে পেলাম। খুবই সুন্দর হয়েছে এই গল্পটি। আমাদের অনেক শিক্ষণীয় বিষয় আছে এই গল্পে, ধন্যবাদ।
আপনাকেও ধন্যবাদ সময় নিয়ে আমার গল্পটি পড়ার জন্য।
আপু আপনার গল্পটি খুবই সুন্দর হয়েছে ।
বাবা মা যদি সন্তানদের আদর করতে করতে সঠিক শিক্ষা না দেয় তখন শেষে সন্তানটির ই ক্ষতি হয়। এটা একদম সঠিক।
আপনার গল্পটি খুব শিক্ষনীয় বৌদি। খুব ভালো লাগলো পড়ে,আপনি খুব ভালো লিখেন ও।
ভালো লাগলো যে দাদার মতো আপনিও গল্প লিখছেন।
বাঁদর উচিত শিক্ষা হওয়াতে সে আর কোনোদিনো এমন ভুল করবেনা,সুন্দর গল্প।
এটি আমি আমার দীদার মুখে শুনেছিলাম। আর গল্প অনেক আগে থেকেই লিখতাম কিন্তু সেটা ডায়েরীতে। তবে আমি আপনাদের @rme দাদার মতো এত ভালো লিখতে পারি না।
বৌদি আপনার গল্পটা ভালো লেগেছে এবং এটি একটি শিক্ষামুলক গল্প।কেউ বিপদে না পরলে,বিপদ বলে সেই জিনিসটা বুঝতে পারে না।অন্যদের ক্ষতি করলে নিজের ও ফল ভালো হয় না। যার জন্য সে ভালো হয়ে গিয়েছে।ধন্যবাদ বৌদি সুন্দর একটা গল্প উপহার দেয়ার জন্য।
দিদি আমাদের সমাজেও এমন কিছু মানুষ আছে তাদের উচিত শিক্ষা এমন করেই দেওয়া দরকার। সমাজে কিছু নিরুপায় মানুষ আছে যাদের পাশে দাড়ানোর কেউ থাকে না ফলে তারা আজীবন নির্যাতিত এবং নিপীড়ন হয়। গল্প পড়ে খুবই ভালো লাগছে দিদি। আপনার পরবর্তী লিখার অপেক্ষায় আমার ব্যকুল মন।
আপনার গল্পটি অনেক ভালো লাগলো। অন্যের ক্ষতি করলে অবশ্যই একদিন না একদিন নিজেকেও বিপদে পড়তে হয়। পৃথিবীতে এমন কিছু মানুষ আছে যারা এই বাঁদরের মতো নিজে বিপদে না পড়লে অন্য কারো কষ্ট বুঝতে চায় না। আপনার পোষ্টের মাধ্যমে অনেক কিছু শিখতে পারলাম। ধন্যবাদ আপনাকে।