
হাই বন্ধুরা!
আমার গল্পের রাজ্যে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগতম। প্রথম স্বপ্নের গল্প হিসেবে ব্লগ শেয়ার করতে চলেছি। আজকে অনলাইনের কাজ শেষ করে ঘুমাতে আমার বেশ দেরি হয়ে গেল। দুইটার পরে শুয়ে পড়লাম। হয়তো রাত আড়াইটির আগেই ঘুমিয়ে গেছি। চোখের পাতা বুঝতেই স্বপ্ন জগতে পা রাখলাম। অনেকদিন পর হঠাৎ আমাদের হাই স্কুলের স্মৃতি স্বপ্নের মাঝে ভেসে আসলো। ২০১০ সালে ক্লাস টেনে পড়তাম। একদম অবিকল ক্লাস টেনে ক্লাস করার জন্য উপস্থিত হয়েছি আমাদের গেম টিচার মোহাম্মদ স্যারের ক্লাসে। স্বপ্নে আমি মনে মনে ভাবছি স্যারের ক্লাস করব, কিন্তু আমাদের বান্ধবী গুলো কই? বন্ধুগুলো সবাই ছিল কিন্তু আমাদের ক্লাসের একটা বান্ধবী কেউ দেখতে পাচ্ছি না তখন। আমি মনে মনে তাদের খুঁজছিলাম এবং স্যারের ক্লাসে অংশগ্রহণ করছি। স্যার আমাদের বলল তোমাদের আজকে আমি ক্লাস নিব প্র্যাকটিক্যালি।
তখন আমি স্যারকে প্রশ্ন করলাম স্যার কেমন কি ক্লাস নিবেন। স্যার আমাকে বললেন স্বাধীনতার অনুষ্ঠানে বিভিন্ন খেলার প্র্যাকটিস হয়ে থাকে ঠিক তেমনি তোমাদের প্র্যাকটিস নিব যেন ক্লাস টেন পাশ করে যাওয়ার পরেও তোমাদের কাজে লাগে। তখন আমি মনে মনে ভাবলাম হাই স্কুল জীবন শেষ করে ফেলব। আর স্কুলে আসা হবে না। কোথায় ২০১০ সালে ক্লাস টেন শেষ করে এসেছি আর এখন ২০২৪ সাল। কিন্তু স্বপ্নে আফসোস করছি হাই স্কুল লাইফ শেষ করে ফেলব আর স্কুলে আসা হবে না।
এরপর আমার ক্লাসের বন্ধুরা সবাই একসাথে দৌড় প্রতিযোগিতা করলাম। দৌড় প্রতিযোগিতায় অনেকে হাপিয়ে গেল প্রচন্ড এ রোদে। স্বপ্নেও দেখছি প্রচন্ড রোদ গরম পড়ছে। এরপর আমরা স্কুল প্রাঙ্গণে কাঙ্ক্ষিত একটি বট-পাকুড় গাছের নিচে বসে পড়লাম। গাছটি এখন আছে কিনা আমার স্মরণে নাই। স্কুলটা আমাদের বাড়ি থেকে অতি নিকটে, বাড়ি থেকে মাত্র তিন মিনিটের রাস্তা। তবুও সেখানে প্রবেশ করা হয়ে ওঠে না আমার। এরপর স্যার আমাদের সকলকে একটি করে লাল কালারের কালো কালির কলম উপহার দিলেন যারা দৌড় প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেছিলাম সকলের জন্য। উনি বললেন এই কলমটা সবাই যত্ন করে রাখবা। এটা তোমাদের হাই স্কুল লাইফের শেষ পুরস্কার। আমি খুব ভক্তি সহকারে কলমটা নিয়ে নিলাম। কিন্তু মাঝে মাঝে মনের মধ্যে আপসোস আমাদের বান্ধবী গুলো কই। বারবার স্মরণ করতে থাকলাম মুক্তা; শিখা; রুনা; মাফিয়া; রেক্সোনা; পুষ্প; পলি; রিনা; লেলিমা; তাপসী সহ আরো বান্ধবীদের। তবে সত্যি কথা বলতে কি আমার হাই স্কুল লাইফে বান্ধবীদের সাথে তেমন কোনো কথাই হয়নি। শুধু ক্লাস নাইনে অল্প একটু আর ক্লাস টেনে একটু হয়েছে কোনরকম প্রয়োজনে কথাবাত্রা। আর তার আগের নিচের ক্লাস গুলোতে ভুল করে একটা মুহূর্তের জন্য একটা শব্দ হয়েছে কিনা মনে নেই। আমি এভাবেই মেয়েদের থেকে দূরে থাকতাম। কিন্তু স্বপ্নে আমি শুধু তাদেরকে বেশি খুজতেছিলাম। কিছুদিন আগে আমার এক বান্ধবী শিখার সাথে দেখা হয়েছিল শ্বশুরবাড়ি থেকে বাড়ি ফিরতে। কতটা চেঞ্জ হয়ে গেছে সে। দুইটা ছেলে মেয়ের আম্মা এখন। ছেলেটা ক্লাস ফোরে পড়ছে বর্তমানে।
যাইহোক এরপরে স্যার আমাদের স্কুল মাঠে বসালেন। এরপর উনি অনেক সুন্দর সুন্দর কথা বললেন। বললেন আগামীতে তোমরা ভালো রেজাল্ট করতে থাকো। কখনো কোনো প্রেম পিরিতির মধ্যে জড়িত হবে না। প্রেমে পড়লে জীবন ধ্বংস হয়ে যাবে। আর সব সময় চেষ্টা করবা এভাবে ব্যায়াম করে শরীর ঠিক রাখার। আসলে স্বপ্নটা দারুন ছিল। দীর্ঘ কতদিন পরে যে স্কুল লাইফের স্বপ্ন দেখলাম। আমি প্রায় কয়েক মাস পর পর এমন স্বপ্ন দেখে থাকি। আর ঘুম থেকে উঠলে সত্যি খুবই আফসোস লাগে হাই স্কুল জীবন নিয়ে। তবে এটা সত্য আমাদের গেম টিচার মোঃ স্যার কিন্তু আজ থেকে কয়েক বছর আগে রিটায়ার্ড হয়ে গেছেন। মাঝেমধ্যে উনার সাথে দেখা হয়, সালাম দেওয়া হয়। তবে উনাদের মুখ দেখলে বেশ কষ্ট লাগে, উনারা অনেকটা বৃদ্ধ হয়ে গেছেন। আপনারা সবাই আমাদের সকল শিক্ষকের জন্য দোয়া করবেন। যেন আল্লাহ তাদের সুস্থ সবল অবস্থায় দুনিয়ার বুকে রাখেন মৃত্যুর আগ পর্যন্ত, যেন কারোর মুখাপেক্ষী তাদের না হতে হয়।
গল্পটি পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।

ফটোগ্রাফি | চাঁদনী রাত |
ফটোগ্রাফি ডিভাইস | Infinix Hot 11s |
লোকেশন | জুগীরগোফা |
বিষয় | স্বপ্নের কথা |
ঠিকানা | গাংনী-মেহেরপুর, বাংলাদেশ |
পুনরায় ফিরে আসবো নতুন কোন গল্প নিয়ে। ততক্ষণ ভালো থাকুন সবাই, সবার জন্য শুভকামনা রইল। আল্লাহ হাফেজ। |

অনেক সুন্দর একটি হাই স্কুল লাইফের স্বপ্নের গল্প আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। আমিও মাঝেমধ্যে হাই স্কুল জীবন স্বপ্নে দেখে থাকি। মাঝে মাঝে বান্ধবীদের সাথে একসাথে স্কুলে হেঁটে যায়। কমন রুমে বসে আগের মত গল্প করি স্বপ্নে। অনেক ভালো লাগলো ভাইয়া আপনার গল্প পড়ে। খুব চমৎকার স্বপ্ন দেখেছেন।
এমন স্বপ্ন দেখলে খুব ভালো লাগে
বাস্তবে থেকে আপনি স্বপ্নের মধ্যেও প্রচন্ড গরম দেখতে পেরেছেন। কি আর করবেন প্রতিদিন এরকম রোদ গরম দেখতে দেখতে আমরা এর মধ্যে কখন ঢুকে গেছি। আমার তো মনে হচ্ছে এই রোদ গরম আর আমাদের ছাড়বে না। যাই হোক আপনি স্বপ্নে যে সেই শৈশবটা কে ফিরে পেয়েছেন এটা জানতে পেরে খুবই ভালো লাগলো। দশম শ্রেণীর কথা মনে উঠলেই মনে পড়ে যায় সেই স্মৃতিময় দিনগুলো । আপনার আজকের পোস্ট পড়ে খুবই ভালো লাগলো ধন্যবাদ শেয়ার করার জন্য।
হ্যাঁ হাই স্কুল লাইফটা মধুর জীবন মাঝেমধ্যে সেটাই দেখি
যাক তাহলে তো দেখছি আপনি স্বপ্নের মধ্যেই আপনার স্কুল লাইফে আবারো পৌঁছে গিয়েছিলেন। আপনি স্বপ্নের মধ্যে যে বটগাছ দেখেছিলেন সেটা এখনো রয়েছে আর আমরা সেখানেই বসে থাকি গরমের হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য। আপনার স্বপ্নের কাহিনীটা জানতে পেরে খুবই ভালো লাগলো।
দিনের বেলায় স্কুলের দিকে যাওয়া হয় না তো তাই মনে পড়ে না গাছটা আছে কিনা।
খুবই সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করেছেন আপনি৷ আপনি স্বপ্নের মধ্যে আবারো আপনারা সেই ছোটবেলায় ফিরে গেলেন এবং সেখানে আপনি ক্লাস করছেন এরকম একটি বিষয় দেখছিলেন। সেখানে গরমের কারণে যে বটগাছটি ছিল সেটিও আপনি এই স্বপ্নের মধ্যে দেখছেন৷ অনেক ধন্যবাদ এই পোস্টটি শেয়ার করার জন্য৷