টিউশনের গল্প

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago
হ্যালো আমার বাংলা ব্লগবাসী।আশা করি সবাই ভাল আছেন৷ আমিও ভাল আছি৷ আজ আপনাদের সাথে শেয়ার করব আমার টিউশন লাইফের গল্প।

pexels-tima-miroshnichenko-5427998.jpg
সোর্স

আপনারা জানেন আমি বেকার। আমিও নিজেকে বেকার হিসেবেই পরিচয় দেই।তবে আমি পার্ট টাইম টিউশন করাই।
ছাত্রজীবনের সব থেকে পরিচিত একটি পেশা হল টিউশন।জীবনের প্রথম টিউশন পাওয়াটাই সব থেকে কঠিন।একটা টিউশন পাওয়ার পর যখন আপনি ভাল পড়াবেন তখন আপনার জন্য টিউশন মুড়ি-মুড়কি।

আমার প্রথম টিউশন শুরু করেছিলাম মাধ্যমিক পরীক্ষার পর।পরীক্ষার পর বেকার বসে ছিলাম।তখন পাশের বাসার আন্টি তার মেয়েকে পড়ানোর অফার দেয়।পিচ্চি তৃতীয় শ্রেণীতে পড়ত।সে জেলা স্কুলে ভর্তির প্রস্তুতি নিচ্ছিল।আমার কাজ তাকে গাইড করা।

আমি নিজে মফস্বলে পড়েছি,তাই ভর্তি পরীক্ষা সম্পর্কে আমার অভিজ্ঞতা ছিল না।আর যে বিষয়ে আমার অভিজ্ঞতা নেই সে বিষয়ে আমি কিভাবে গাইড করব।তাই আমি আন্টিকে না বলি। পরে আন্টি বলে কোন সমস্যা নাই,তুমি শুধু পড়াতে শুরু করো।তুমি তোমার মত পড়াও।

প্রথমবার অফার তাই সম্মানী নিয়ে আলোচনা করি নি। যেহেতু একজন কে গাইড করার দায়িত্ব নিয়েছি তাই সেটা পূরণ করা কর্তব্য। তখন ইউটিউবে নিজে আগে ক্লাস করলাম কয়েকদিন। শিখে নিলাম কিভাবে আগাতে হবে।

এরপর পড়ানো শুরু করি।মাত্র তিনমাস সময় পেয়েছিলাম।তার মাঝেই যতটা পারি প্রস্তুতি নেওয়ালাম।এরপর এলো পরীক্ষার দিন।স্টুডেন্ট এর যতটা টেনশন হচ্ছিল, সমান টেনশন আমারো হচ্ছিল।মনে হচ্ছিল আমিই যেন পরীক্ষা দিচ্ছি ।স্টুডেন্ট পরীক্ষা দিয়ে জানালো পরীক্ষা অনেক ভাল হয়েছে।তখন মন শান্ত হল।তবে দু:খের বিষয় হল শেষ পর্যন্ত স্টুডেন্ট এর জায়গা হয় ওয়েটিং লিস্টে।

তবে এরপরেই ছিল ক্যান্টমেন্ট স্কুলের পরীক্ষা। সেখানে লিমিটেড আসন ছিল।তবে এবার ঈশ্বর আমার আর আমার স্টুডেন্ট এর উপর সদয় হন।স্টুডেন্ট চান্স পেয়ে যায়।সেদিন যেন ঈদের দিন ছিল আমার জন্য।অত্যন্ত খুশি হয়েছিলাম।

তিনমাস দুই বেলা করে পড়িয়েছিলাম,সম্মানী পেয়েছিলাম ছয় হাজার টাকা।স্টুডেন্ট সফল হওয়ায় সম্মানীর পাশাপাশি গিফট পেয়েছিলাম। তবে স্টুডেন্ট সফল হওয়ায় যতটা খুশি হয়েছিলাম তার কাছে সম্মানী কিছুই না। তবে সেই বয়সে এই ছয় হাজার টাকাও অনেক৷ মাকে গিফট দিয়েছিলাম,বোনকে নিয়ে বাইরে খেতে গিয়েছিলাম।নিজের টাকায় এগুলো করার মাঝেও আলাদা একটা শান্তি ছিল।

এই থেকেই শুরু। এরপর থেকে আর পিছু ফিরে তাকাতে হয়নি। সেই ২০১৬ থেকে শুরু আজ পর্যন্ত চলছেই।এর মাঝে অনেক সফলতা,ব্যার্থতা,মজার,দু:খের কাহিনী আছে।আজ প্রথম পর্ব, এরপর আস্তে আস্তে আরো আসবে।আপনার উৎসাহ দিলে সব শেয়ার করব আপনাদের সাথে।

আজকের টিউশনের গল্প এপর্যন্তই।আপনাদের উৎসাহ পেলে আরো পর্ব আসবে। সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়ার জন্য ধন্যবাদ। কেমন লাগল গল্পটি জানাবেন।
Sort:  
 2 years ago 

আমি কখনো টিউশনি করাইনি তাই এরকম অভিজ্ঞতা আমরা হয়নি, আসলে কোন একটা দায়িত্ব নিজের কাঁধে আসলে সেটা পূরণ না হওয়া পর্যন্ত অনেকটাই টেনশন হয়। ভালো লাগলো নতুন একটা অভিজ্ঞতা সম্পর্কে জানতে পারলাম।

 2 years ago 

ধন্যবাদ দাদা সুন্দর মন্তব্যের জন্য।

 2 years ago 

দাদা টিউশনি জীবনটা অনেক কষ্টের ৷ আমিও বিগত মাধ্যমিক পাস করার পর থেকেই টিউশনি শুরু করেছিলাম ৷ আর এই টিউশনি দিয়ে আজও নিজের পড়ালেখা খরচ চালাচ্ছি ৷ আপনার জন্য শুভকামনা দাদা ৷ এগিয়ে যান দাদা ৷

 2 years ago 

ধন্যবাদ দাদা। আপনার জন্যও শুভ কামনা রইল।

 2 years ago 

বাহ্ তাহলে তো দেখছি আপনি বেশ ভালই টিউশনি পড়াতে পারেন। আপনি তখন প্রথম হিসেবে কিন্তু বেশ ভালই চান্স পেয়েছেন। আপনার স্টুডেন্ট টিকে গিয়েছিল তাহলে। তখন থেকে এখনো পর্যন্ত তাহলে টিউশনি চলছে আপনার। আসলে নিজের কাঁধে যখন কোন একটা দায়িত্ব আসে তাহলে অনেক টেনশন হয়। সম্পূর্ণ দায়িত্ব পূরণ করতে না পারলে খুবই খারাপ লাগে। ভালোই লাগলো আপনার আজকের গল্পটি পড়ে।

 2 years ago 

ওয়েটিং লিস্টে আপনার স্টুডেন্ট এর জায়গা হলেও পরে কিন্তু বেশ ভালোই সম্মান পেলেন আপনার স্টুডেন্ট টিকে যাওয়ার কারণে। তিন মাস পড়ানোর পরে ছয় হাজার টাকা বেতন পেলেন এবং মাকে গিফট এবং বোনকে খাওয়ালেন বেশ ভালোই কিন্তু প্রথম টিউশনির ব্যাপার। অনেক বড় একটি দায়িত্ব ছিল প্রথম টিউশনের সময়। প্রথম প্রথম এরকম হয়। সেই ২০১৬ সাল থেকে আজ পর্যন্ত তাহলে চলছে আপনার টিউশনি। ভালোই লাগলো।

 2 years ago 

নিজের প্রথম উপার্জনের টাকা দিযে আপনজনদের কোন উপহার দেয়ার মজাই আলাদা। আপনার প্রথম টউশনির গল্পটা পড়ে খুবই ভালো লাাগলো। আশাকরি এমন আরো অনেক গল্প আছে আপনার ঝুলিতে। ধন্যবাদ শেয়ার করার জন্য।

Coin Marketplace

STEEM 0.11
TRX 0.23
JST 0.030
BTC 78259.15
ETH 1549.21
USDT 1.00
SBD 0.62