সতর্কতামূলক গল্পঃ ডিজিটাল প্রতারণা
আমার বাংলা ব্লগ স্টিম কমিউনিটির বন্ধুগন
আমি @mostafezur001 বাংলাদেশ থেকে
আজকে রবিবার , আগস্ট ২০/২০২৩
আশা করি আপনারা সবাই ভাল আছেন আমিও ভাল আছি। না আজকে আমি আপনাদের মাঝে পুনরায় আরও একটা নতুন পোস্ট নিয়ে হাজির হয়ে গেলাম। সময়ের পরিবর্তন হবার সাথে সাথে মানুষকে ঠকানোর পদ্ধতিতেও বিভিন্ন ধরনের পরিবর্তন চলে এসেছে। বিশেষ করে আধুনিক এই প্রযুক্তি কাজে লাগিয়েই প্রতারক চক্র মানুষকে ঠকানোর জন্য উঠে পড়ে লেগেছে। আমি লক্ষ্য করে দেখেছি বিশেষ করে বাংলাদেশের মানুষেরা এই ধরনের প্রতারণার মধ্যে খুব সহজেই পা দিয়ে ফেলে। আমিও একবার এই ধরনের প্রতারণার শিকার হয়েছিলাম।
ঘটনাটা আমি প্রথম থেকে বলি। সালটা সম্ভবত তখন ২০১৬। অনলাইন জগতের কোন কাজই আমি তখন পারতাম না। যেহেতু প্রত্যেকটি মানুষেরই অনলাইন কাজ করার প্রচুর আগ্রহ থাকে ঠিক তেমনিভাবে আমারও আগ্রহের পরিমাণটা ছিল অনেক বেশি। হঠাৎ করে গ্রামের কিছু বড় ভাইয়ের কাছ থেকে জানতে পারলাম যে অনলাইনে নাকি কাজ করা যায়। আর তারা সেই কাজ করে প্রচুর পরিমাণে টাকা ও উপার্জন করছে। অবশেষে আমি তাদের কাছ থেকে সেই কাজ সম্পর্কে ধারণা নিয়েছিলাম। ধারণা নিয়ে জানতে পেরেছিলাম এই কাজ করার জন্য টাকা ইনভেস্ট করার প্রয়োজন হয়। আর এই টাকা ইনভেস্ট করার উপর নির্ভর করেই একজনের আইডির লেভেল নির্ধারণ করা হয় আর সেই লেভেল অনুযায়ী সে উপার্জন করতে থাকে। ওই সময় আমি যে কাজটি করেছিলাম সম্ভবত তার নাম ছিল ভিউ ক্যাশ। আমার খুব পরিচিত কাছের একটি ভাইয়ের কাছ থেকেই আমি মূলত কাজটি শিখেছিলাম। যেহেতু ইনভেস্ট এর কাজ তাই আমাকে সেই কাজ করার জন্য খুব একটা বেশি পরিশ্রম করতে হতো না। দিনে সামান্য কয়েকটা এডস দেখলেই উপার্জন হয়ে যেত অনেক টাকা। সম্ভবত আমি ওই সময় এই কাজটি করার জন্য বাড়ি থেকে ১৬ হাজার টাকা নিয়ে ইনভেস্ট করেছিলাম। যেহেতু এই সাইট চালু হবার পরপরই আমি ইনভেস্ট করেছিলাম তাই আমি লস খেয়েছিলাম না। নিজে যে পরিমাণে ইনভেস্ট করেছিলাম আমি তার থেকেও বেশি টাকা কিনতে সক্ষম হয়েছিলাম। কিন্তু আমার টাকা তোলা দেখে অথবা আমাদের গ্রামের অন্যান্য সদস্যদের টাকা তোলা দেখে শেষের দিকে যারা একাউন্ট তৈরি করেছিল তাদের মধ্যেকার প্রায় সকলেই লস খেয়েছিল।
আসলে এই ধরনের কোম্পানিগুলো নিজেরা একটা টার্গেট নিয়ে মার্কেটে আসে। তারা কোন সময়ই তাদের পকেটের টাকা জনগণকে দেয় না। একজনের একাউন্ট খোলার বিনিময়ে যে অর্থ তারা পায় সেটাই অন্য একজন ব্যক্তিকে প্রদান করে। যেহেতু আমরা জাতি হিসেবে অনেকটাই লোভী তাই আমরা এই কাজের সাথে সহজেই সম্পৃক্ত হয়ে যায়। নিজে তো সম্পৃক্ত হই একই সাথে আমাদের পার্শ্ববর্তী মানুষদের কেউ উৎসাহ প্রদান করি এই কাজে অংশগ্রহণ করার জন্য। কারণ এই কাজে রেফার করার জন্য বড় সংখ্যার রেফার বোনাসের ব্যবস্থা রাখে কোম্পানিগুলো। ২০১৬ সালের পর থেকে আমি আর এই ধরনের কাজে অংশগ্রহণ করিনি কিন্তু অনেককেই অনেক সাইটে ইনভেস্ট করতে দেখেছি। লক্ষ্য করে দেখেছি বেশিরভাগ মানুষই এই ধরনের সাইটগুলো থেকে তাদের নিজেদের ইনভেস্ট করা টাকা হারিয়ে ফেলেছে। শুধুমাত্র গুটি কয়েকজন ব্যক্তি তাদের টাকা ফিরিয়ে আনতে পারে যারা এই সাইটগুলোতে প্রথমের দিকে অংশগ্রহণ করে। সাইটগুলো প্রথমের দিকে অংশগ্রহণ করা ব্যক্তিদেরকে লোভ দেখানোর জন্য কিছুটা টাকা উইথড্র দিয়ে থাকে। কারণ কিছু ব্যক্তিদের কে উইড্র না দিলে তো সেই ব্যক্তি অন্যান্য মানুষদেরকে এখানে নিয়ে আসবে না। আর যখনই এখানে প্রচুর মানুষ আসতে থাকে একই সাথে প্রচুর টাকা আসতে থাকে তখন তারা সকলের টাকা নিয়ে পালিয়ে যায়।
এইতো কিছুদিন আগের কথা আপনারা হয়তো বা একটা কোম্পানির নাম অনেকেই শুনেছেন। কোম্পানিটির নাম হচ্ছে MTFE । একটা পর্যায়ে তারাও প্রথমের দিকে মানুষদেরকে অনেক টাকা প্রদান করেছে আর এরই মধ্য দিয়ে মানুষের হাজার হাজার কোটি টাকা নিয়ে তারা পালিয়ে গিয়েছে। তাই আমি প্রত্যেককে সতর্ক করতে চাই যেন আমরা এই ধরনের সাইটগুলোতে নিজেরা অংশগ্রহণ না করি এবং অন্যদেরকে অংশগ্রহণ করাতে আগ্রহ প্রকাশ না করি। দিনশেষে এই সাইটগুলো আমাদের সকলের টাকা নিয়ে পালিয়ে যাবে এটাই স্বাভাবিক।
আমি মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান।আমি বাংলাদেশের খুলনা বিভাগে মেহেরপুর জেলার গাংনী থানায় বসবাস করি।আমি বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে নিজেকে গর্বিত মনে করি। আমি আমার জন্মভূমি বাংলাদেশকে খুবই ভালোবাসি।বর্তমানে আমি গ্রীনরেইন ল্যাবরেটরী স্কুলের একজন শিক্ষক।আমি ফটোগ্রাফি করতে খুব ভালোবাসি এবং সৃজনশীলতার মাধ্যমে নতুন নতুন জিনিস তৈরি করতে আমার খুবই ভালো লাগে।আমি বিশ্বাস করি, আমার এই সৃজনশীল কাজের মাধ্যমে থেকে কেউ যদি উপকৃত হয় বা নতুন কিছু শিখতে পারে তবেই আমার সৃজনশীল কাজটি সার্থক হবে। তাই আমি চেষ্টা করবো আপনাদের মাঝে প্রতিনিয়ত নতুন নতুন সৃজনশীল জিনিস নিয়ে উপস্থিত হতে।
আমার কিছু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম
ফেসবুক টুইটার
VOTE @bangla.witness as witness
OR
ভাই আসলে যাদের জ্ঞান এর ঘাটতি তারাই অন্তত ২০২৩ এ এসে এই কাজে ইচ্ছা করে ধরা খায়। নাইলে এতো গুলো ঘটনা ঘটলো তবুও মানুষ এর কাণ্ডজ্ঞান হয়না। ২০১৬ দিকে তো ধরে নিলাম কেউ কিছু বুঝতোনা। কিন্তু এটা ২০২৩ মানুষ কেমনে এসবে বিশ্বাস করে। আমি নাম আর পদ্ধতি শুনেই ভেবেছিলাম ভাগবে। অনেকেরে সতর্ক করেছি ভাই। তবুও তারা সেধে ধরা খেয়েছে আরকি। রাতারাতি বড়লোক হতে চাইলে যা হয় আরকি।
ঠিক বলেছেন ভাই এই সময়ে আসার পরেও যারা এই ধরনের ভুল পথে পা দেয় তাদের মত বোকা আর কেউ হতেই পারে না।
আসলে টাকা দিয়ে যেখানে লেভেল কিনতে হয় সেই জায়গাগুলোতে প্রতারণা করার সম্ভাবনা অনেক বেশি থাকে। ডিজিটাল প্রতারণা দিনে দিনে অনেক বৃদ্ধি পাচ্ছে। আগে থেকেই এই প্রতারণা চলে আসছে। তবে বর্তমান সময়ে আরো বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে।
বর্তমানে প্রযুক্তি যত উন্নত হচ্ছে প্রতারণার ধরন তত উন্নত হয়ে যাচ্ছে।
অল্প পুঁজিতে বেশি লাভ করতে গেলে একটু ধরা তো খেতেই হয়।নিজের দেশের মানুষের বদনাম করতে চাই না তারপরও বলতে হয় আমরা সত্যি অনেক লোভী প্রকৃতির।টাকার গন্ধ পেলে কারো মাথা ঠিক থাকে না।আপনি যা ইনভেস্ট করেছিলেন তার থেকে বেশি পেয়েছেন জেনে ভালো লাগলো।যতই লাভের কথা বলুক এই ধরনের কাজে জড়ানো উচিত নয়।ভাইয়া আপনার বাস্তব অভিজ্ঞতা গুলো শেয়ার করার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।এতে করে অনেকেই সচেতন হবে বলে আমার ধারণা।ধন্যবাদ ভাইয়া।
বদনাম না পরে কোন উপায় নেই আপু কেননা আমাদের দেশের বেশিরভাগ মানুষ লোভী প্রকৃতির।
মামা আপনি আজকে আমাদের মাঝে সময় উপযোগী বেশ দারুন একটি পোস্ট শেয়ার করেছেন। আসলে আমাদের সমাজের মানুষ এখন খুব অল্প পরিশ্রমে টাকা ইনকাম করার পথ খুঁজে তাই ইনভেস্টের পথ বেছে নাই। আপনি 2016 সালের দিকে ষোল হাজার টাকা ভিউ কাশি ইনভেস্ট করেছিলেন এটা আমি আগে থেকে জানতাম। সেই সময় প্রায় গ্রামের ছেলেরা সবাই এই কাজটি করতো। সেখান থেকে আপনি লাভবান হতে পেরেছিলেন তাও আমি জেনেছিলাম। কিন্তু কিছুদিন আগে যে কাজটা চলে গেল সত্যি আপনাদের গ্রামের মানুষের কিন্তু অনেক টাকা নষ্ট হয়েছে। তাই আমি বলতে চাই সহজ পথে টাকা ইনকাম করার চিন্তা বাদ দিয়ে কষ্ট করে কাজ করে টাকা ইনকাম করার কথা চিন্তা করুন সব সময়। ধন্যবাদ মামা এত সচেতনামূলক একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য।
সেই সময়টাতে এই বিষয়গুলোতে ভালো ধারণা ছিল না তাই ইনভেস্ট করে ফেলেছিলাম কিন্তু এখন তো সবকিছু ভালোভাবে জানি এবং বুঝি।