রাগ থেকে বড় ধরনের দূর্ঘটনা || একটি বাস্তব ঘটনা
"হ্যালো",
আমার বাংলা ব্লগ বাসি, সবাই কেমন আছেন? আশা করছি সবাই ভালো আছেন এবং সুস্থ আছেন। আমিও আপনাদের দোয়াই এবং আল্লাহর রহমতে ভালো আছি। সবার সময় ভালো কাটুক এই কামনাই করছি।
সবাইকে আমার নতুন একটি ব্লগে স্বাগতম। আজ আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করব একদম বাস্তব একটি ঘটনা। যেটি আমার পার্শ্ববর্তী গ্রামে ঘটেছিল কয়েক বছর আগে। কথায় আছে রেগে গেলেন তো হেরে গেলেন। রাগ মানুষকে অনেক নিচে নামায়। মানুষ রেগে গেলে খুন করতেও দুবার ভাবে না। ঠিক তেমনই একটি গল্প আজ আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করব সামান্য একটু রাগ থেকে একজন মানুষ কিভাবে একটা জীবন কেড়ে নেয় সেটা ভাবতে আমার গা শিউরে ওঠে। আশা করছি আজকের এই গল্প থেকে আমরা অনেক কিছুই শিখতে পারব এবং নিজের রাগকে কন্ট্রোল করতে শিখবো।
রাকিব গ্রামের একজন বিত্তবান লোক।স্ত্রী ববিতা এবং দুই ছেলে সন্তান নিয়ে তার সুখের সংসার। টাকা পয়সা ধনসম্পত্তির কোনো অভাব নেই তার সংসারে। গ্রামের অনেক মানুষকে বিপদে আপদে সাহায্য করে। গ্রামের কেউ বিপদে পড়লে টাকার প্রয়োজন পড়লে তাদের কাছে এসে বললে তারা সঙ্গে সঙ্গে তার অভাব দূর করার চেষ্টা করে। বিশেষ করে ববিতা গ্রামের মহিলাদের অনেক সাহায্য করে চাল ডাল থেকে শুরু করে টাকা পয়সা সব কিছু দিয়ে। একই গ্রামের সবুজ নেশাখোর ছেলে। রাকিবের পাশে বাড়ি তার। বেশ কয়েকবার ববিতার থেকে টাকা ধার নিয়েছে। কিন্তু দেবার বেলায় অনেক ছলচাতুরি।
যাই হোক একদিন সবুজ ববিতার কাছে যায় টাকা ধার করতে। ববিতা সবুজকে বলে সে কোনো ভাবেই তাকে আর টাকা পয়সা দেবে না। তখন থেকেই সবুজ ববিতা এবং রাকিবকে দেখতে পারত না। সবসময় তাদের নামে বদনাম করে বেড়াতো।যাইহোক একদিন সকালবেলা খাবার শেষে ববিতার বড় ছেলে বাসিম বাড়ির সামনে খেলা করছিল। হঠাৎ ঝিরিঝিরি বৃষ্টি শুরু হয়। আর সেই সময় সবুজ কোথা থেকে এসে বাসিম যেখানে খেলা করছিল তার পাশে দাঁড়ায়।এবার ছোট বাসিম বুঝতে না পেরে বৃষ্টির অল্প কিছু পানি সবুজের গায়ে দেয়।
যেই না সবুজের গায়ে একটু পানি গেছে সেই সময় সবুজ নিজের রাগ কন্ট্রোল করতে না পেরে দৌড়ে এসে ছোট্ট বাসিমের গলা চেপে ধরে। কিছুক্ষণের মধ্যেই বাসিম নিস্তেজ হয়ে পড়ে। সবুজ বুঝতে পারেনা যে কি হয়েছে। দৌড়ে তার বাড়িতে নিয়ে যায়।সবুজের মা বুঝতে পারে বাসিম আর বেঁচে নেই। এদিকে ববিতা তো আর ছেলেকে খুঁজতে বের হয়। না পেয়ে পুরো গ্রামের খবরটা ছড়িয়ে পড়ে এবং সবাই খুঁজতে বের হয়। তখন সবুজ বাসিমকে গ্রামের এক পাশে রেখে আসে। একসময় সবাই তাকে খুঁজে পাই।
ববিতার রাকিবের অবস্থা খুবই খারাপ হয়ে যায় তাদের ছেলেকে হারিয়ে। এরপর তদন্ত করে সবুজ ধরা পড়ে। সে এখনো জেলে।সামান্য একটু রাগ থেকে মানুষের জীবনটাই নষ্ট হয়ে যায়। তার রাগের ফলে সে আজ নিঃস্ব এবং একটা ছোট বাচ্চা অকালে প্রাণ হারালো। এজন্যই বলছি নিজের রাগকে কন্ট্রোল করা খুবই জরুরী। রাগের মাথায় কখন কি করতে হবে এটা আমরা বুঝে উঠতে পারি না। পরিশেষে একটাই কথা বলব আমাদের রাগকে মনে পুষে রাখা একদমই ঠিক না। এতে অন্যের বিপদ তো হবেই আবার নিজেরও বিপদ হয়।
যাইহোক আজ এখানেই বিদায় নিচ্ছি। দেখা হবে পরবর্তীতে। সবাই ভাল থাকবেন এবং সুস্থ থাকবেন। ধন্যবাদ সবাইকে।
❤️আমার পরিচয়❤️
আমি হাবিবা সুলতানা হীরা । জাতীয়তাঃ বাংলাদেশী। পেশাঃ গৃহিণী। শখঃ নতুন নতুন রেসিপি বানাতে ভালো লাগে। তাছাড়া গান গাওয়া, আর্ট করা, ফটোগ্রাফি করা ও বাগান করতে আমি বেশ স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি। আমি স্টিমিটে ২০২০ সালের নভেম্বর মাসে যুক্ত হই।
ঘটনাটি জেনে বেশ খারাপ লাগলো। সবুজের রাগের কারণে ছোট্ট বাচ্চাটি অকালে প্রাণ হারালো। সবুজের অবশ্যই ফাঁসি হওয়া দরকার। যাইহোক রাগ আসলেই মানুষকে ধ্বংস করে দেয়। তাই রাগকে অবশ্যই নিয়ন্ত্রণ করা উচিত আমাদের। বাস্তব ঘটনাটি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপু।
সবুজের আজীবন জেল হয়েছে ভাইয়া। তবে সেই শিশুটির মৃত্যুর কাছে এই শাস্তি কোনো শাস্তিই না। যাইহোক ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্যের জন্য।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
রাগ কখনো ভালো কিছু বয়ে আনে না।রাগ কে আমাদের কন্ট্রোল করে চলা উচিত।আপু আপনি আজ রাগ নিয়ে বাস্তব একটি ঘটনা শেয়ার করেছেন। এই সত্যি ঘটনা এটাই প্রমান করে রাগ কখনও কোন ভালো কিছু ঘটায় না।তাই আমরা রাগকে নিজেরা ই নিয়ন্ত্রণ করবো।
হ্যাঁ আপু এটা আমি সবসময়ই বিশ্বাস করি রাগ কখনো ভালো কিছু বয়ে আনে না কিন্তু আমরা অনেক সময় নিজের রাগ কন্ট্রোল করতে পারি না। যার কারণে অনেক ভুলভাল কাজ করে বসি। ধন্যবাদ আপু সুন্দর একটি মন্তব্যের জন্য।
কত বড় একটি কান্ড ঘটে গেল। আসলে এসব নেশা যারা করে এদের অন্তর গুলো খুবই খারাপ হয়। সামান্য টাকার কারণে একটা ছেলের গলা টিপে মেরে ফেললো। এই ধরনের জঘন্য মানুষদের শাস্তি কঠোর হওয়া উচিত। অনেক খারাপ লাগলো গল্পটি পড়ে।
সেই ছেলেটির যাবজ্জীবন জেল হয়েছে আপু। তবে আমার মতে তার ফাঁসি হওয়া উচিত ছিল। কারণ সামান্য কটা টাকার জন্য এভাবে সে একটা প্রাণ কেড়ে নিতে পারে না।
আপনার পোস্টটি পড়ে ভালো লাগলো। যে মানুষ তার রাগকে কন্ট্রোল করতে পারে না সে আসলে মানুষ কতটুকু এটি আমার মনে প্রশ্ন? এ ধরণের ঘটনায় সব সময় নিজেকে যদি ধৈর্য ধারণ না করতে পারে, তাহলে বুঝতে হবে সে বয়স প্রাপ্ত মানুষ আসলে মানুষ না।আর এধরণের অমানুষ থেকে সব সময় নিজেকে দূরে রাখায় আমার মনে হয় অনেক ভালো।
ঠিক বলেছেন আপু এই সমস্ত লোকের থেকে আমাদের সবসময় দূরে থাকা উচিত কারণ এরা আমাদের বিপদে ফেলতে দুবার ভাববে না। ধন্যবাদ আপু সুন্দর মন্তব্যের জন্য।
আপু আপনি খুব সুন্দর একটি ঘটনা শেয়ার করেছেন। আপনার এই ঘটনা থেকে সত্যি অনেক কিছু শেখার আছে। রাগকে কন্ট্রোল করতে না পারলে তা একসময় নিজেরই ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। সবুজের ক্ষেত্রেও তাই হয়েছে। সামান্য রাগ থেকেও বড় কোন দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে। তার জন্য আমাদের সবার উচিত রাগ কন্ট্রোলে রাখা। এতে নিজেরই মঙ্গল। ধন্যবাদ আপু এত সুন্দর একটি ঘটনা আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।
ধন্যবাদ আপু গঠনমূলক একটি মন্তব্য করার জন্য। একদম ঠিক বলেছেন আমাদের রাগকে কন্ট্রোল করা উচিত।
মানুষ নিজের রাগ কন্ট্রোল করতে পারে না বলেই নিজেদের এরকম অবস্থা হয়ে থাকে। সেই সাথে অন্যের জীবনটাও নষ্ট হয়ে যায়। তেমনি ভাবে সবুজ নিজের রাগের কারণে নিজের জীবনটা নষ্ট করে ফেলেছে আর বাসিমের জীবনটা তো একেবারে শেষ করে দিলো। তার বাবা-মা ও তাকে হারিয়ে অনেক কষ্টে আছে বুঝতে পারছি। এত সুন্দর করে গল্পটি শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।
হ্যাঁ আপু সবুজ যদি নিজের রাগটা কন্ট্রোল করতে পারত তাহলে তার হয়তো আজ এত বড় সাজা হতো না এবং একটা ছোট্ট প্রাণকে পৃথিবী থেকে বিদায় নিতে হত না। আপনাকে ধন্যবাদ আপু গল্পটি পড়ে সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য।