নজরুলের জীবন কাহিনী - দ্বিতীয় পর্ব
হ্যালো বন্ধুরা!
আসসালামু আলাইকুম।
কেমন আছেন সবাই? আশা করি মহান সৃষ্টিকর্তার অশেষ মেহেরবানীতে আপনারা অনেক অনেক ভাল রয়েছেন। আমিও আলহামদুলিল্লাহ আপনাদের দোয়ায় বেশ ভালো আছি। আজকে আমি আপনাদের মাঝে নজরুলের জীবন কাহিনী নামক গল্পের দ্বিতীয় পর্ব শেয়ার করতে চলেছি। এই গল্পের মূল কাহিনী লোকের মুখ থেকে শোনা। আমি আমার মতো করে একটু সুন্দর রূপ দিয়ে সাজিয়ে গুছিয়ে উপস্থাপন করব।
নজরুল আলেয়ার রুপে মুগ্ধ হল। আলেয়ার সরল মন মানসিকতা যেন তার মনে স্থান করে নিতে থাকল। সে প্রথমে ভাবলো মেয়েটাকে প্রেম করবো। তারপরে নজরুলের কাছে মনে হলো মেয়েটা তো প্রেম ভালোবাসা বোঝে না। জোরপূর্বক প্রেম করবো, বিয়ে করবো এমন চিন্তা নজরুলের ছিল না। কিভাবে মেয়েটাকে বিয়ে করা যায় সেই নিয়ে অনেকের মাঝে প্রস্তাব রাখে এবং ভালবাসতে চেষ্টা করে। একটি পর্যায়ে দেখা যায় মেয়েটা ভালবাসতে না জানলেও মেয়ের পিতা-মাতা রাজি হয়ে যায়। তারা দেখেছে বড়লোক বাড়ি থেকে প্রস্তাব। এটা না করা যাবে না। কিন্তু মেয়েটার খুব সাদাসিধা মন। তার মনের মধ্যে বিয়ের প্রভাব না আসলেও পিতা মাতার কথায় রাজি হয়ে যায় এবং বিয়ে করে। বেশ ভালো চলছিল তাদের দিনকাল। একপর্যায়ে তাদের মধ্যে প্রেম পিরিতি জেগে গেছে। ছেলেটার চাকরির জন্য লেখাপড়া করে। এইজন্য বাচ্চা নিতে দেরি করে। সে বউকে পেয়ে অনেক খুশি। মেয়েটা অতি সহজ সরল এবং সুন্দরী। কিন্তু গ্রামের মেয়ে, ভালো লেখাপড়া জানেনা। নামে মাত্র স্কুলের ক্লাসে যায় যায় না এমনটা। কথাবার্তা গুলো একদম চাচা-ভুসাদের মত। সুন্দর করে স্টাইল করে কথা বলতে পারে না। নজরুল লেখাপড়া জীবনে অনেক মেয়েদের দেখেছে কত সুন্দর স্টাইলে কথা বলতে।শুধু এই পার্থক্যের বিষয়গুলো নজরুলের কাছে একটু খারাপ লাগতো।
একদিন হঠাৎ শহর থেকে নজরুলের মেজ ভাই খায়রুল বাড়িতে ফিরল। মেজ ভাই পুলিশের মধ্যে চাকরি করতো। ইতো মধ্যে মেজ ভাইয়ের শালীটা বেশ বড় হয়ে গেছে। খায়রুলের স্ত্রী মিনা আর শালিকার নাম রিনা। রিনা দেখতে শুনতে মানান এবং কথাবার্তাও বেশ স্টাইল করে বলে। আধুনিকতার ছোঁয়া তার মধ্যে অত্যাধিক। রিনা আর মিনা দুই বোন, তাদের কোন ভাই নেই। মেজ ভাই খাইরুল বাড়িতে এসে লক্ষ্য করে দেখল গন্ডগ্রামের এক মূর্খ মেয়ের সাথে তার ছোট ভাই বিয়ে করেছে। কথাবার্তা গুলো গ্রামের মানুষের মত। মেয়েটার মধ্যে কোন চালাক চতুর বুদ্ধি নেই। সে ভাবতে থাকলো এমন মূর্খোর সাথে আমার ভাই যদি সংসার করে তাহলে ভবিষ্যতে বড় হতে পারবে না। আমার ভাই ভালো পর্যায়ে চলাফেরা করতে গিয়ে বউয়ের জন্য লজ্জা পাবে। এদিকে খায়রুলের শ্বশুরের অনেক জমি জায়গা। শশুরের মাত্র দুইটা মেয়ে। শত শত বিঘা জমি। বড় মেয়েটা সে বিয়ে করেছে। শশুরের ছোট মেয়েটার সাথে যদি ছোট ভাইয়ের বিয়ে দিতে পারে তাহলে শ্বশুরের সকল জমি জায়গা নিজেদের হাতে চলে আসবে। তাই ছোট ভাইকে অনেক সুন্দর করে বুঝাতে থাকে আর চাপ দিতে থাকে। ইতিমধ্যে আলেয়া নজরুলকে অনেক ভালবেসে ফেলেছে। আর ভালোবাসা পবিত্র বন্ধনে আবদ্ধ। সে সাদামাটা একটি মেয়ে। বিয়ের পর স্বামী ছাড়া কিছুই বোঝেনা। মন প্রাণ দিয়ে স্বামীকে ভালবাসে। স্বামীও তাকে ভালোবাসে। কিন্তু মেজ ভাইয়ের কথা শুনে দিন দিন সে কনফিউশনে পড়ে যায়। এতদিনের সম্পর্ক সে কিভাবে বউকে ছাড়বে। আলেয়ার গতি নজরুলের গভীর ভালোবাসা জন্মিয়ে গেছে। তার মনের মধ্যে এতটাই গভীরতা সৃষ্টি হয়েছে যেন প্রাণের বিনিময়ে আলেয়াকে ধরে রাখবে। কিন্তু প্রতিনিয়ত মেজ ভাইয়ের কথা তাকে সমস্যার সম্মুখীন করে তোলে। সে নিজেই ফেস করতে থাকে ভবিষ্যৎ চিন্তাভাবনা। একদিকে বেকার জীবন, আরেক দিকে শিক্ষিত সুন্দরী স্টাইলের কথা বলা মেয়ে। আরেক দিকে মেজ ভাইয়ের চাপ সৃষ্টি। সবকিছু যেন তার কাছে অন্যরকম মনে হতে লাগলো। সে কিছুদিন একা থাকতে চাই। আলেয়া দিনে দিনে তার স্বামীর মধ্যে পরিবর্তন লক্ষ্য করছে। তার স্বামী আগের মত হাসে না। আলেয়া কে নিয়ে মেতে থাকে না। আলিয়া ভাবছিল হয়তো স্বামীর পড়ালেখার চাপ হয়ে গেছে বেশি তাই টেনশন করে। তাই স্বামী কেউ সে বেশি বিরক্ত করতে চায় না।
খাইরুল তার ভাই নজরুলকে বোঝানোর চেষ্টা করে। সে অল্প বেতনের পুলিশের চাকরি কেন করে। তাদের জমিদারিত্ব ধরে রাখার জন্য। আরো তুমি জায়গার মালিক হওয়ার জন্য। কোন প্রকার কেস মামলা যেন তাদের মধ্যে না জড়াতে পারে তাই পুলিশের চাকরি করেছে। এদিকে ছোট ভাই কিনা নিচু ঘরের মেয়ে বিয়ে করে বসে রয়েছে। এমন গরীব ঘরের মেয়ে তাদের পরিবারের দাসী মানায়। বউ হয়ে আসার যোগ্যতা রাখে না। কিন্তু নজরুল ভেবে দেখে মানুষের মধ্যে বিভেদ করা এটা বোকামি। জমি জায়গা ধন সম্পদ মানুষের কাছে অতি তুচ্ছ বিষয়। খাইরুল দেখলো এভাবে বুঝিয়ে ছোট ভাইকে তার পথে আনা যাবে না। খায়রুল সু চতুর বুদ্ধি নিয়ে কৌশল করে ছোট ভাইয়ের শশুরদের সাথে ঝগড়া সৃষ্টি করে। মেয়েটার নামে স্বর্ণ অলংকার চুরি নাটক সৃষ্টি করে, মিথ্যা দোষ দেয়। আর যাই হোক গ্রামের মানুষ কখনো বিশ্বাস করল না এই মেয়ের দ্বারা চুরির কাজ হবে। কারণ গ্রামের সর্বশ্রেণীর মানুষ এই মেয়েটাকে মনেপ্রাণে ভালোবাসে এবং জানে। তার মতো সাদাসিদের মেয়ে এই গ্রামে দ্বিতীয় কেউ নেই। যে কোন কিছুর প্রতি কখনো লোভ করে না। নিশ্চয়ই তারা মেয়েটার নামে মিথ্যা বদনাম সৃষ্টি করছে কোন কারনে। অনেকে ধারণা করতে থাকে মেজ ভাই বাড়ি এসে এগুলা শুরু করেছে। কারণ মেজ ভাইটাকে অনেকে জানতো লোভী শ্রেণীর মানুষ। খাইরুল যেন সম্পূর্ণ তার বাবার বিপরীত হয়েছে।(পর্ব চলবে)
বিষয় | গল্প পোস্ট |
---|---|
গল্পের বিষয় | নজরুল এর জীবন কাহিনী |
ফটোগ্রাফি ডিভাইস | Huawei mobile |
ফটো এডিটিং | মোবাইল গ্যালারি সফটওয়্যার |
আমার ঠিকানা | গাংনী-মেহেরপুর |
ফটোগ্রাফার ও ব্লগার | @helal-uddin |
ধর্ম | ইসলাম |
দেশ | বাংলাদেশ |
পাশে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
আমার সংক্ষিপ্ত পরিচয়

Twitter-promotion
আমার আজকের টাস্ক
নজরুলের জীবন কাহিনী গল্পটি ভালই এগিয়ে যাচ্ছে। গল্পের একটা থ্রিল পাওয়া যাচ্ছে। নজরুল- আলেয়ার শেষ পরিনতি দেখার অপেক্ষায় আমরা। না কি খায়রুলের কুটকৌশল জয়ী হবে? ভালো লেগেছে গল্পটি। নজরুলের জীবন কাহিনী শিরোনামে গল্পটি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
ইনশাল্লাহ সম্পন্ন গল্প শেয়ার করব
নজরুলের জীবন কাহিনী গল্পের দ্বিতীয় পর্বটা পড়লাম। পড়ে বুঝতে পারলাম মেজ ভাই খাইরুল স্বার্থ উদ্ধার করার জন্য ছোট ভাইয়ের সহজ সরল বউটাকে ক্ষতি করার জন্য উঠে পড়ে লেগেছে। অনেক ভালো লাগলো আপনার গল্প।
ধন্যবাদ আপনাকে
নজরুলের জীবন কাহিনীর প্রথম পর্বটা আমি পড়েছিলাম। আজকে দ্বিতীয় পর্ব করলাম। আপনি অনেক সুন্দর ভাবে গল্প শেয়ার করেছেন। অনেক মানুষের বাস্তব ঘটনাগুলো বিভিন্ন সিনেমা নাটকে রূপ নিয়ে থাকে। ঠিক তেমনি আপনার বাস্তব ঘটনা কেন্দ্রিক গল্পটা সম্পূর্ণ জানার জন্য অপেক্ষায় রইলাম।
গল্পটি পড়ার জন্য ধন্যবাদ