ওয়েব সিরিজ রিভিউ: রুদ্রবীনার অভিশাপ- সাত সুরের মেজাজ ( সিজন ২- পঞ্চম পর্ব)
হ্যালো বন্ধুরা, সবাই কেমন আছেন? আশা করি সবাই ভালো আছেন। সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে আজকের ব্লগটি শুরু করছি। |
---|
আজকে আপনাদের সাথে রুদ্রবিনার অভিশাপ ওয়েব সিরিজটির দ্বিতীয় সিজনের পঞ্চম পর্ব রিভিউ দেব। আজকের পর্বের নাম হলো "সাত সুরের মেজাজ"। আগের পর্বে লাস্ট দেখেছিলাম যে বিক্রম এবং শ্রুতি যে রেকর্ডকৃত একটা ডিস্ক পেয়েছিলো সেটা নিয়ে শশীকান্ত ভরদ্বাজ ইনস্টিটিউটে গিয়েছিলো। আজকে দেখবো এরপরে গল্পটা কতদূর গড়ায়।
✠কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য:✠
ꕥমূল কাহিনী:ꕥ
এখানে শুরুতে দেখা যায় নলীত বাবু আর তার মেয়ে দিতিপ্রিয়া আনন্দগড় ছেড়ে কলকাতার দিকে রওনা দেয় গাড়িতে করে। তবে কিছু পথ যাওয়ার পরে দেখা যায় সেখানে একটা লোক বন্ধুক হাতে নিয়ে বাইক করে তাদের রাস্তা অবরোধ করে। এই লোকটা হলো সেই লোক যাকে রুদ্রভৈরব লোকটা পাঠিয়েছিল নাদ এর জায়গায়, কারণ নাদ তার কথা মতো কোনো কাজ করছে না তাই তার উপর আর ভরসা না করে দিতিপ্রিয়াকে মারতে তাকে পাঠায় অনাদগর এ। নাদও এই বিষয়ে সবকিছু শুনে ফেলেছিলো এবং সেও একটা ট্যাক্সি করে সেই লোকটাকে ফ্লো করতে করতে সেখানে চলে আসে। লোকটি ট্রিগার চাপতে যাবে এমন সময় নাদ লোকটির গলায় গুলি করে দেয় আর তাদের বাঁচিয়ে নেয়। তারা খুশি হয় মনে মনে কিন্তু নাদও পরে তাদের দিকে পিস্তল ধরে তার গাড়িতে গিয়ে বসতে বলে, আর এটা দেখে তারাও ভয় পেয়ে যায়। এদিকে বিক্রম আর শ্রুতি শশীকান্ত ভরদ্বাজ এর ইনস্টিটিউট গিয়ে সেই রেকর্ড দিলে বলে এটা কেদারের পুরানো হাভেলি থেকে সংগ্রহ করতে পেরেছি। তবে শশীকান্ত বাবু বলে এইটা তো বহু প্রাচীন একটা স্বরলিপি, এটা তো কেদারের কাছে থাকার কথা না। এরপর তারা বলে আমরা সেটা বলতে পারবো না উনি কথা থেকে এটা পেয়েছে কিন্তু আমরা তার হাভেলি থেকে এটা পেয়েছি তাই আপনার কাছে নিয়ে এসেছি।
শশীকান্ত বাবু তারপর তাদের খতিয়ে দেখার জন্য পরীক্ষা করার সিদ্ধান্ত নেয় যে রাগ সম্পর্কে কেমন পারে এবং কতটা পারদর্শী সে। এর মানে হলো শশীকান্ত বাবু একটা রাগ ধরবেন এবং বাকিটা তাকে সেখান থেকে শুরু করে শেষ করতে হবে। শশীকান্ত বাবু গান ধরলেন এবং সেই সুরের তালে তালে তার ৭ জন শিষ্যকে নৃত্য করতে বললেন। এরপর বিক্রমও তাদের সাথে সাথে সেই সুরের তালে গাওয়া শুরু করলেন আর সবকিছু ঠিকঠাক মিলিয়ে শেষ করলেন। শশীকান্ত বাবু তার গাওয়ার প্যাটার্ন দেখে অনেক খুশি হয় আবার অবাকও হয়। এরপর বিক্রম গাওয়ার শেষে বলে যে গানের সাতটি স্বর সাধারণত সাতটি দেবদেবীর প্রতীক যেটা তার মা একদিন তাকে বলেছিলো। আর এখানে যে সাতজন নৃত্য করেছে তাদের উদ্দেশ্য করে বলে একইভাবে তাহলে কি এই সাতটি স্বর আমাদের সাতটি প্যাটার্নকে কি ডিফাইন্ড করে। এরপর শশীকান্ত বলেন যে এইসব বিষয়ে প্রাচীন সংগীত শাস্ত্রে উল্লেখিত আছে আর সেইজন্যই এইগুলো নাচের পশ্চাৎ দিয়ে স্পষ্ট করা হয়েছে। এরপর শশীকান্ত বাবু সেই সাতটি স্বর ( সা, রে, গা, মা, পা, ধা, নি ) এর প্রত্যেকটা স্বরের স্পষ্ট হিন্টস দেন তাদের উদাহরণসহ। এরপর তাদের অনুসন্ধান সফল হোক বলেন এবং তারা দুইজন পরে ইনস্টিটিউটের বাইরে চলে আসেন।
তারা দুইজন সেখান থেকে চলে আসার পরে এই বিষয় নিয়ে কথা বলতে বলতে আসে আর শ্রুতি খুব খুশিতে থাকে যে রাগ সঞ্জীবনী পেয়ে গেছে। কিন্তু আসলে এখনো সেই পর্যন্ত পৌঁছাতে পারিনি কারণ এই সাতটি স্বরের যে সাতটি হিন্টস দিয়েছে তাতে করে কেবল রাগ যোগ পাওয়া গিয়েছে। এদিকে গৌরাঙ্গ নামক লোকটা তাদের ফ্লো করে চলছে প্রতিক্ষণ যাতে তাদের কেউ কোনো ক্ষতি বা তাদের উপর হামলা না করতে পারে। এরপর শ্রুতির মনেও একটা সন্দেহ ছিল যে নাদ যে চাকতিগুলো নিয়ে পালিয়ে গেলো এখন তারা যদি স্বরলিপির কোডগুলো ডিকোর্ড করে ফেলে তাহলে তারা রাগ সঞ্জীবনীর খোঁজ পাওয়া যাবে কিন্তু বিক্রম এই বিষয়ে নিশ্চিন্ত থাকে কারণ অতটা সহজ হবে না তাদের পক্ষে। এরপর রুদ্রপুরে একজন লোক সেই তানসিনের তানপুরাতে লাগানো চাকতি নিয়ে রুদ্রভৈরব এর কাছে আসে এবং বলে ভৈরবী জলাশয়ের কাছে কয়েকজন এই প্রত্যেকটি স্বরলিপি অনুযায়ী বাদ্যযন্ত্র বাজিয়েছে কিন্তু কোনোকিছু হয়নি। এরপর সেখানে উপস্থিত হেমন্ত মহাশয় বলেন যে এই স্বরলিপি যে কেউ বাজালে হবে না, কারণ আমানত খাঁ এক বিশেষ ধরণের বাজনা চলন করে যেটা পরবর্তীতে আনন্দগড় এর ঘরানার বৈশিষ্ঠ হয়ে ওঠে।
হেমন্ত এর বাবা এই বাজনা নিজে শিখেছিল এবং পরবর্তীতে সবাইকে শিখিয়েছিলো। আর এখানে এই বাজনা বাজাতে হবে আনন্দগড় ঘরানার বিশেষ পদ্ধতিতে। একদিকে তো হেমন্ত বাজাতে পারে কিন্তু তার একার দ্বারা হবে না, বাকিদেরও লাগবে বলে। এদিকে বিক্রম আর শ্রুতি গান্ধারগড় থেকে সোজা রুদ্রপুরের শিব মন্দিরে যাওয়ার চিন্তা করে এবং রওনাও দেয় তাই শ্রুতি বাড়িতে ফোন করে সবাইকে আসতে বলে কারণ সবাইকে লাগবে সেখানে। কিন্তু তখন শ্রুতির মা জানায় যে দিতিপ্রিয়াকে নাদ কিডন্যাপ করে নিয়েছে। এরপর রাস্তার মাঝখানে নাদ আবার এদের দুইজনকে বন্দুক দেখিয়ে কিডন্যাপ করতে চায় কিন্তু বিক্রম নাদকে মেরে পালাতে চায় কিন্তু নাদ তার উপর হিংস্রের মতো ঝাঁপিয়ে পরে। এরপর গৌরাঙ্গ লোকটাও সেখানে এসে নাদকে সাবধান করে আর তাদের ছেড়ে দিতে বলে কিন্তু নাদ শোনে না। এরপর গৌরাঙ্গ নাদের হাতে গুলি করে বন্ধুক ফেলে দেয়। তার পশ্চাৎ নাদ গৌরাঙ্গকে গুলি করে মেরে ফেলে। বিক্রম আর শ্রুতি তাকে হসপিটালে নেওয়ার জন্য এম্বুলেন্সকে ফোন করতে যায় কিন্তু নাদ পেছন থেকে এসে তাদের লাঠি দিয়ে আঘাত করে অজ্ঞান করে ফেলে।
ꕥব্যক্তিগত মতামত:ꕥ
এই পর্বে দেখা গেলো বিক্রম আর শ্রুতি শশীকান্ত বাবুর দ্বারা স্বরলিপি ক্র্যাক করে ফেলেছে। এখন শুধু রুদ্রপুরের ভৈরব জলাশয়ের কাছে গিয়ে তাদের বিশেষ কয়েকজনকে বিশেষ এক বাজনার মাধ্যমে এই রাগ সঞ্জীবনী উদ্ধার করতে হবে। আর এইটা সম্ভব হবে আনন্দগড় এর ঘরানার লোকজনদের দ্বারা। এর মধ্যে নাদ এখানে তাদের কিডন্যাপ করে রেখেছে কেন তার কারণটা অবগত। এটাও হতে পারে যে নাদ রুদ্রভৈরবকে এই রাগ সঞ্জীবনী দিতে চায় না, আবার এই রাগ সঞ্জীবনীর প্রতি নিজেরও কোনো উদ্দেশ্য আছে। এটা পরের পর্বে বোঝা যাবে যে তাদের কিডন্যাপ করেছে কি উদ্দেশ্যে।
ꕥব্যক্তিগত রেটিং:ꕥ
৯.৮/১০
ꕥট্রেইলার লিঙ্ক:ꕥ
দাদা রাগ সঞ্জীবনী উদ্ধারের শেষ পর্যায়ে এসে নাদ আনন্দগড় এর ঘরানার লোকজনদের কিডন্যাপ করে আরেক জামেলা বাজিয়ে দিলো। কি কারনে নাদ তাদের কিডন্যাপ করলো সেই কারন টা হয়তো পরের পর্বে জানা যেতে পারে। ধন্যবাদ দাদা।
রুদ্রভৈরব দেখছি একটা লোককে পাঠালো দিতিপ্রিয়াকে মারার জন্য। নলীত বাবু আর তার মেয়ে দিতিপ্রিয়া তাদের প্রাণ বাঁচাতে আনন্দগড় ছেড়ে চলে যেতে চাইলো। কিন্তু রাস্তায় তাদেরকে মেরে ফেলতে চাইলেও রুদ্র ভৈরবের পাঠানো লোকটি। অন্যদিকে নাদ তাদেরকে বাঁচালো। কিন্তু বাঁচিয়ে নিজে কেন কিডন্যাপ করল এটাই বুঝলাম না। এটা অনেকটা ধোঁয়াশা থেকে গেল। এদিকে বিক্রম আর শ্রুতি দেখছি খুব সুন্দর ভাবে শশীকান্ত বাবুর দ্বারা স্বরলিপি ক্র্যাক করে ফেলেছে। এতে আবার শশীকান্ত বাবু ভীষণ খুশি হলো। কিন্তু রাগ সঞ্জীবনী উদ্ধার করবে কিভাবে বুঝতে পারছি না। পরের পর্বে এটা নিশ্চয়ই দেখতে পারবো। এ পর্বটা পড়েও ভীষণ ভালো লাগলো। পরের পর্ব দেখার অপেক্ষায় রইলাম।
নাদ যদিও দিতিপ্রিয়া এবং তার বাবাকে ওই লোকটার হাত থেকে বাঁচালো কিন্তু তাদেরকে আবার নিজেই কিডন্যাপ করে নিয়ে গেল। এদিক দিয়ে বিক্রম এবং শ্রুতি স্বরলিপি গুলো পেয়ে গিয়েছে। বিশেষ পদ্ধতিতে এই স্বরলিপিগুলো বাজাতে পারলে রাগ সঞ্জীবনী পাওয়া যাবে। এখন নাদ আবার বিক্রম এবং শ্রুতিকেও কিডন্যাপ করলো। গৌরাঙ্গ লোকটি এদেরকে বাঁচাতে গিয়ে নিজেই মারা গেল। নাদ মনে হয় রুদ্র ভৈরবের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করার চিন্তা করছে। তা না হলে নাদ কেন এদেরকে আলাদাভাবে কিডন্যাপ করল এখন পরবর্তীতে দেখা যাক যে এই রাগ সঞ্জীবনী কার হাতে যায়। অনেক দূর রহস্য উদঘাটন হয়ে গিয়েছে প্রায়। আর কয় পর্ব আছে দাদা?
নাদের এইরকম একটা প্ল্যান আছে। রুদ্রভৈরবকে সম্ভবত দেবে না বলেই তাদের কিডন্যাপ করেছে এবং বিস্তারিত তাদের কাছ থেকে জানতে চাইবে। আর তিন পর্ব আছে।
নলীত বাবু আর তার মেয়ে দিতিপ্রিয়া আনন্দগড় ছেড়ে চলে যাচ্ছিল, কারন তাদের প্রানের ঝুঁকি ছিল। কিন্তু রুদ্রভৈরব এর পাঠানো লোকটিতো তাদেরকে আটকে দিল আর মেরে ফেলতে চাইলো। কিন্তু নাদ এসে তাদেরকে বাঁচায় এটা দেখে ভালো লাগলো। কিন্তু বাঁচানোর পর নাদ নিজেইতো ওদেরকে কিডন্যাপ করে নিল। কিন্তু কেন সেটা বুঝলাম না। অন্যদিকে বিক্রমও সাথে সাথে সেই সুরের তালে গেয়ে সবকিছু ঠিকঠাক মিলিয়ে শেষ করলেন আর এর মাধ্যমে শশীকান্ত বাবুর দ্বারা স্বরলিপি ক্র্যাক করে ফেললেন। এতে শশীকান্ত বাবু বিষন খুশি হয়েছে। এবার রাগ সঞ্জীবনী উদ্ধার করার পালা। এইজন্য পরের পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।
"সাত সুরের মেজাজ" নামক এবারের পর্বের রিভিউ অনেক সুন্দর ভাবে তুলে ধরেছেন দাদা।নলীত বাবু ও তার মেয়ে দিতিপ্রিয়া আনন্দগড় ছেড়ে যেতে চাচ্ছিল। কিন্তু তারা পারল না। আসলে তাদের জীবনের ঝুঁকি ছিল বলেই তারা সেখান থেকে পালিয়ে যেতে চেয়েছিল। অন্যদিকে পথের মধ্যেই তারা আটকা পড়ে গেল। রুদ্রভৈরব যেই নতুন লোকটিকে পাঠিয়েছিল সে তাদেরকে আটকে দিল। কিন্তু নাদ তাদেরকে রক্ষা করল। নাদ তাদেরকে কিডন্যাপ করার পেছনের রহস্য এখনো ধোঁয়াশার মধ্যে রয়েছে। অন্যদিকে বিক্রম এবং শ্রুতি শশীকান্ত বাবুর দ্বারা স্বরলিপি ক্র্যাক করে ফেলেছে। বিক্রমের পারফরমেন্স এবং দক্ষতায় শ্রীকান্তবাবু খুশি হয়েছেন। এবার দেখা যাক রাগ সঞ্জীবনী উদ্ধার করা সম্ভব হয় কিনা। পরবর্তী পর্বের জন্য অপেক্ষায় রইলাম দাদা।
নাদ হঠাৎ করেই নলীত বাবু আর তার মেয়ে দিতিপ্রিয়াকে বাঁচিয়ে নিয়েছে বিষয়টা কেমন রহস্য মনে হচ্ছে আমার কাছে।সাত সুরের মেজাজ পর্বটি একটা রোমঞ্জকর মুহূর্ত ছিল যেখানে 7জন নৃত্য করেছিল গানের তালে তালে।নাদের ওদেরকে কিডন্যাপ করার জন্য বাচিয়েছিল।তাছাড়া গৌরাঙ্গ লোকটি মারা গেছে জেনে খারাপ লাগলো।তারপর নাদ পেছন থেকে এসে লাঠি দিয়ে আঘাত করে বিক্রম আর শ্রুতিকে।তারা কি বেঁচে আছে নাকি মরে গেছে?পরের পর্বের অপেক্ষায় রইলাম দাদা।