দুবাইয়ে সোনালী সাফল্যের সাথে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির শিরোপা ভারতীয় শিবিরে!

in আমার বাংলা ব্লগ2 days ago
হ্যালো বন্ধুরা, সবাই কেমন আছেন? আশা করি সবাই ভালো আছেন। সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে আজকের ব্লগটি শুরু করছি।

DALL·E 2025-03-10 03.58.33 - A dramatic cricket final match scene in a grand Dubai stadium, packed with cheering fans. The Indian cricket team is celebrating victory, holding the .webp

Image Created by OpenAI

আজকে আপনাদের সাথে খেলাধুলা বিষয়ে পোস্ট শেয়ার করে নেবো। গতকাল চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির শেষ মুহূর্ত ছিল। খেলাটাও বেশ আকর্ষণীয় একপ্রকার। কারণ ইন্ডিয়া আর নিউজল্যান্ড মানেই একটা অন্যরকম হাড্ডাহাড্ডি লড়াই। নিউজল্যান্ড ফিল্ডিং এর দিক থেকে মারাত্মক সিরিয়াস, কোনো বাউন্ডারি মিস হয় না, ক্যাস মিস হয় না। আর নিউজল্যান্ড ফাইনালে ওঠায় আরো বেশি উত্তেজনার কারণ ছিল হলো, তারা আগে একবার দুবাইয়ের পিচে খেলে গিয়েছে এবং ইন্ডিয়ার সাথে হেরেছেও। আর সেই কারণেই তারা কিন্তু এইবার ফাইনালে উঠে একদমই ছেড়ে কথা বলবে না, আর তারাও বোলিং লাইন সেইভাবে তৈরি করে নামবে। কারণ তারাও জানে, এই পিচে টার্নিং পয়েন্টটা কোথায়, স্পিনার একমাত্র ব্যাটসম্যানদের বশে আনতে পারবে, নাহলে না।

তো যাইহোক, বরাবরের মতো ইন্ডিয়া এই চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে গতদিনও টসে হেরেছে আর নিউজল্যান্ড এর সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তারা ইন্ডিয়াকে আগে ফিল্ডিং করতে পাঠায়। কারণ আরো একটা ছিল, গত একটি ম্যাচে তারা পরে ব্যাটিং করার কারণে হেরেছে, তাই পিচের কন্ডিশন বুঝে আগে ব্যাটিং করার সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকে। তবে সিদ্ধান্ত ঠিকই ছিল, কারণ এই পিচে একমাত্র টার্নিং হলো স্পিনের। তো সেক্ষেত্রে তাদেরও বেশ শক্তিশালী স্পিনার আছে। তো এখানে এই পরিস্থিতিতে যদি তারা কমপক্ষে ২৫০ এর উপরে টার্গেট দিতে পারে, তাহলে সেখানে রান চেজে বেশ ভালো একটা লড়াই হবে। তো সেই চিন্তা নিয়েই মোটামুটি তারা ব্যাটিং করতে নামে বলে ধারণা। এখন এখানে বিষয় হলো যে, নিউজল্যান্ড ব্যাটিং করতে এসে যা শুরু করেছিল, তাতে মনে হচ্ছিলো না এটা কোনো বোলিং পিচের জন্য উপযুক্ত।

তবে হ্যা, এটা একমাত্র স্পিন বলের জন্য উপযুক্ত ছিল, যা ফাস্ট বোলারদের ক্ষেত্রে একদমই উপযুক্ত ছিল না। কারণ ফাস্ট বল করলেই ম্যাক্সিমাম ১০-১৫ রান প্রতি ওভার আসছেই। রাচীন রবীন্দ্র তো যা শুরু করেছিল, তাতে থামার নামই নিচ্ছিলো না। তার উপর তার ক্যাচ মিস অসংখ্য। একজন মারপিট ওয়ালা ব্যাটসম্যান এর ক্যাচ যদি বারংবার ফেলা হয়, তাহলে তার ভাবমূর্তি চেঞ্জ হয়ে যায়, কারণ সেই ব্যাটসম্যান পরবর্তীতে কি পরিমানে রান করতে পারে, সেটা একমাত্র যে ক্যাচ ছাড়ে সেও অনুভব করতে পারে। তো এখানে শ্রেয়াস, গিল, শামি একপ্ৰকার সবাই মিস করেছে। তবে বরুন আসলেই একজন ভ্যালকি চক্রবর্তী, আসতেই উইকেট নিয়ে নেয়। পরের ওভারে কুলদীপের বলে রাচীন বোল্ড আউট হয়, যেখানে একটা স্বস্তির নিঃস্বাশ পাওয়ার মতো।

এরপর কাহিনী যা হওয়ার তাই হয়, প্রথম পাওয়ার প্লে তে অসম্ভব রান উঠলেও পরের দ্বিতীয় হাফে একদম রান শুয়ে পড়ে। এমনকি পর পর টানা ৪০ ওভার স্পিন দিয়ে বল করিয়ে তাদের এমন অবস্থা তৈরি করে যে, ২০০ রান হওয়াও একপ্ৰকার মুশকিল ছিল। তাছাড়া একপ্রকার ১৫০ রানে আটকে গিয়েছিলো। কিন্তু যখনই আবার ফাস্ট বলার আনে, ওখানেই প্রতি ওভারে ১০-১৫ রান করে তুলে নেয় আর রান কোথাকার কোথায় চলে যায়। একদম পুরোপুরি ২৫০ রানে আটকে যায়। মোটামুটি লড়াইয়ের মতো রান করেছিল। একদমই ফাস্ট বলের জন্য উপযুক্ত ছিল না এই পিচ। তো এই রান চেজে ইন্ডিয়া ব্যাটিং করতে নেমে, একপ্রকার তুলোধোনা শুরু করে দেয়। রোহিত আর গিল খেলতে নামলেও সব বল প্রায় স্ট্রাইক নিয়ে নিয়ে রোহিত খেলেছে, পিটিয়েছেও সেইরকম।

পুরো টানা ১০০ রান শূন্য উইকেটে। ফাইনালে এই ধরণের পিচে স্পিনের টার্নিং পয়েন্টে দাঁড়িয়ে যেন নতুন কিছু হলো। তবে গিলের ক্যাচটা আবারো সেই ফিলিপ্স উড়ন্ত ভাবে ধরলো। খুবই বিপদজনক ফিল্ডার সে বলতে গেলে। আর গতকাল যেন একদম ঝাঁপিয়ে ঝাঁপিয়ে ফিল্ডিং করেছে, বাউন্ডারি সহজে বের করতে দেয়নি। তবে এটা ইন্ডিয়া বলে কথা, তারা যে ২৫০ রান টার্গেট দিয়েও বলে আটকাতে পারে আবার ২৫০+ চেজ করতে নামলেও সহজে বের করতে পারে। এটাই এই চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে বারবার প্রমান করে দিলো। দুবাইয়ের পিচে খেলা অতটা সহজ না, খুবই কঠিন এই বোলিং টার্নিংয়ে। রোহিত-কোহলি থাকাকালীন নতুন একটা সময়ের সূচনা করে দিলো। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির চ্যাম্পিয়ন্স হয়ে বাড়ি ফিরলো তারা। এটা পুরো ভারতবাসীর কাছে একটা আনন্দের মুহূর্ত, আসলে শুধু ভারতবাসী বলে বলবো না, একমাত্র ক্রিকেট প্রেমী হিসেবে যারা ক্রিকেট ভালোবাসে, সঠিক অর্থ বোঝে, মূল্য বোঝে, তাদের কাছেও এটা আনন্দের মুহূর্ত। বেশ সুন্দর ফাইনালের মতো একটা লড়াই সম্পূর্ণ ম্যাচ খেলা হয়েছে শেষ পর্যন্ত।


শুভেচ্ছান্তে, @winkles


Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png



Sort:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

 yesterday 

পুরো ম্যাচের বিশ্লেষণটা অসাধারণ লাগলো। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনাল সত্যিই দারুণ উত্তেজনাপূর্ণ ছিল। নিউজল্যান্ডের কঠিন ফিল্ডিং, স্পিন-বান্ধব পিচ, আর রোহিত-গিলের দুর্দান্ত ব্যাটিং সব মিলিয়ে ক্রিকেটপ্রেমীদের জন্য এটা ছিল এক অবিস্মরণীয় ম্যাচ। ভারত শেষ পর্যন্ত নিজেদের শ্রেষ্ঠত্ব আবারও প্রমাণ করলো! দারুণ বিশ্লেষণ শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ দাদা।

 yesterday 

ফিলিপ্সের ফিল্ডিং আসলেই মারাত্মক। অসম্ভব সব ক্যাচগুলো বাজ পাখির মত ক্যাপচার করে। যাই হোক দ্বিতীয় ইনিংসে যখন ১০০ রানেও কোনো উইকেট পড়েনি তখন বুঝতে পারলাম ভারত অনাসে এই ম্যাচ জিতে যাবে। ফাইনালে বিজয়ী দল ভারতকে অভিনন্দন।

 yesterday 

ভারত আরো একবার দুর্দান্ত খেলে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি শিরোপা বিজয় করলো। তার সঙ্গে সারা পৃথিবীর মধ্যে ক্রিকেট খেলায় তার শ্রেষ্ঠত্বের প্রমাণ দিয়ে গেল আবার। কাল আগাগোড়া সম্পূর্ণ ম্যাচেই ভারত দাপট রেখে ম্যাচ জিতেছে। আপনি দারুণ সুন্দর করে সম্পূর্ণ মেসেজ রিভিউ শেয়ার করলেন দাদা।

 yesterday 

এই টুর্নামেন্টের শুরুতেই ভেবেছিলাম ভারত এবার চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জিতবে। তবে ফাইনাল ম্যাচে ভারত বেশ কয়েকটি ক্যাচ মিস করেছিল। তখন সত্যিই মেজাজ খারাপ হয়ে গিয়েছিল। কারণ এমন গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে ক্যাচ মিস করলে,অনেক সময় ম্যাচের মোড় ঘুরে যায়। যাইহোক পোস্টটি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ দাদা।

Coin Marketplace

STEEM 0.12
TRX 0.22
JST 0.030
BTC 81285.92
ETH 1919.42
USDT 1.00
SBD 0.80