অন্যরকম সরকারি পরিষেবার অভিজ্ঞতা

নমস্কার বন্ধুরা,

সরকারি পরিচয় পত্র নিয়ে সমস্যা যেন কখনোই সমাপ্তি হয় না। কোনো এক পরিচয় পত্রে নাম কিংবা জন্ম তারিখ ঠিক করালেন তার কদিন পরে দেখলেন যে আপনার অন্য একটি পরিচয় পত্রে অন্য কোন ভুল রয়েছে। তারপর আবার সেই পরিচয় পত্র ঠিক করা নিয়ে মাথাব্যথা এবং হয়রানি। সরকারি অফিসের ব্যাপার হয়রানি যেন অত্যন্ত স্বাভাবিক বিষয়। তবুও হয়রানির একটা সীমা থাকে যেটা ভারতীয় সরকারি দপ্তর গুলো অতিক্রান্ত করেছে। সরকারি বাবুদের ভুল গুলো মেনে নিয়ে ধীরেসস্থে কাগজপত্র ঠিক করে নেওয়া ছাড়া কোনো উপায় নেই। তবে এই প্রথম আমার একটু অন্য ধরনের অভিজ্ঞতা হলো।

যখন প্রয়োজনে আধার কার্ডের দরকার হয়ে পড়লো আর জানতে পারলাম যে আধার কার্ডে কিছু তথ্য আরো জুড়তে হবে। তখন এক অন্য সরকারি পরিষেবার সাথে পরিচিত হলাম। কোন সরকারি কাজ যে সুষ্ঠ ভাবে হতে পারে সেটায় আমি সত্যিই অবাক। আধার পরিচয় পত্র ঠিক করবো অথচ আধারের কাজ সব জায়গায় হয় না। সে জন্য সোজা আধারের ওয়েবসাইট থেকে আধার সেবা কেন্দ্রে খোঁজ নিলাম। কেন্দ্র কাছে পিঠে তাই অপেক্ষা করিনি সোজা চলে গেলাম কোনোরকম বুকিং ছাড়াই। যদিও বুক করিনি তাই অল্প চিন্তা ছিলো যে গিয়ে আদবে ফাঁকা পাবো কিনা। সেসবের মুশকিল আসান হলো আধার কেন্দ্রে পৌঁছে।

বিধাননগরের সেক্টর ফাইভে ওয়েবেল মোড় এর কাছে আধার সেবা কেন্দ্রটি সাধারণের জন্য উন্মুক্ত তবে তার পরিষেবার সংক্রান্ত নিয়ে আমার কোন অভিজ্ঞতা ছিল না। ভয়ে ভয়ে আধার কেন্দ্রে পৌঁছালাম। ওয়েবেল মোড়ের এইচডিএফসি ব্যাংকের ঠিক সাথেই লাগোয়া অফিস। অফিসে ঢুকে যেতেই বড় করে আধার সহায়তা কেন্দ্র লেখা রয়েছে। ঢুকেই বুঝতে পারলাম যে আর পাঁচটা সরকারি দপ্তরের থেকে জায়গাটা বেশ আলাদা। ঢুকেই কাউন্টার পেলাম সেখানে আমার সমস্যা বলতেই তার একটি ফরম হাতে দিলেন। আমি ফরম ফিলাপ করে সেটি জমা দিতেই আমাকে একটি সাথে সাথে টোকেন নাম্বার দিয়ে ভেতরে যেতে বললেন। যেটি হতে সর্বোচ্চ পাঁচ মিনিট সময় লাগলো ততক্ষনে আমি অভিভূত।

টোকেন নাম্বার নিয়ে ভেতরে ঢুকতেই আমার ডাক পরলো। প্রথমে একটি টেবিলে গেলাম সেখানে তারা আমার সমস্ত কাগজপত্র ভেরিফিকেশন করে সাথে সাথে আরও একটি টেবিলে পাঠালেন। ওমা সেখানেও ঝটপট আমার সমস্ত ডিটেলস এড করে আমাকে দিয়ে চেক করিয়ে তারা পাঠালেন তৃতীয় এবং শেষ টেবিলে। সেখানেই আমার বাদবাকি কাজটা হলো।

ফর্ম ফিল আপ থেকে কাজ শেষ হতে সময় লাগলো বড়ো জোর ২০ মিনিট। তাতেই পুরো কাজ সম্পন্ন হয়ে গেল। আমি আধার কেন্দ্রের প্রফেশনালিজম দেখে তাজ্জব। সরকারি দপ্তর যে এতটা ভালো হতে পারে সেটা আমার কল্পনাতেও ছিল না। নিমেষে কাজ হয়ে যাওয়ায় দু'দণ্ড বসলাম। বসে চিন্তা করলাম যে সত্যি আজকে এক অন্যরকম সরকারি দপ্তরের আমার অভিজ্ঞতা হলো। যেখানে পরিষেবাতে ৫/৫ দেওয়া যায়। যদিও বলে রাখা ভালো যে দপ্তরটি সরকারি হলেও দপ্তরে কাজকর্ম কিন্তু একটি বেসরকারি সংস্থা চালায়। হয়তো এই কারণেই কাজকর্ম এত দ্রুত।