নদীর তলায় কলকাতা মেট্রো
নমস্কার বন্ধুরা,
কলকাতায় কিছুদিন আগেই উদ্বোধন হয়েছে দেশের প্রথম আন্ডার ওয়াটার মেট্রো। আর উদ্বোধন করে গেছেন স্বয়ং ভারতের প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদি। চালু হওয়ার পর থেকেই প্রতিদিনই নানার মানুষজন যাচ্ছেন গঙ্গার নিচের মেট্রো অনুভব নিতে। যাবেনই বা না কেন। কলকাতায় ৪.৮ কিলোমিটার বিস্তৃত মেট্রো পথটি মানুষের কল্পনাকে বাস্তবে মাটিতে নিয়ে এসেছে। মাত্র চারটি স্টেশন রয়েছে তার মধ্যে প্রায় ৫০০ মিটার গঙ্গার নীচে। মা গঙ্গার নীচে পাতাল রেলের অনুভূতি নেওয়ার জন্য কাতারে কাতারে মানুষ প্রতিদিনই মেট্রো সফর করছেন। আমিও ভাবছিলাম একদিন ঘুরে এলে কেমন হয়।
বেশ কদিন আগে কলকাতায় মা বাবা এসেছিলেন। মূলত তাদের চিকিৎসার বিষয় নিয়েই কলকাতায় আসা। তখনই একদিন পরিকল্পনা করে সন্ধ্যেবেলায় সমস্ত কাজকে সরিয়ে রেখে তাদেরকে নিয়ে গেলাম গঙ্গার নীচের মেট্রো ঘুরিয়ে আনতে। জলের তলায় মেট্রোয় চড়বো এ এক অন্যরকম অনুভূতি। এমনিতে পাতাল রেলে যাতায়াত আমার প্রায় রোজকার বিষয়। তবে গঙ্গার নীচের মেট্রো তে যাতায়াত করব সেটা একদমই ভিন্নরকম।
এসপ্লেনেড স্টেশন থেকে হাওড়া ময়দান মোট চারখানি স্টপেজ। টিকিট কেটে অনেক গভীরে নেমে পড়লাম। সিঁড়ি যেন শেষ হওয়ার নয়। ভাগ্যিস বেশ কয়েকটা এসকেলেটর ছিল সেটা দিয়েই নেমে পড়লাম। টিকিট মাত্র ১০ টাকা হাওড়া ময়দান পর্যন্ত। ভীড় দেখে মনে হলো নিত্য যাত্রীদের থেকে সাধারণ ঘুরতে আসা মানুষই বেশি ছিল। সেটা একদমই স্বাভাবিক। গঙ্গার নিচে দিয়ে মানুষজন কখনো যাতায়াত করতে পারবে এ যেন কোন জাদুর থেকেও কম নয়।
এসপ্লেনেড থেকে মহাকারণ পেরিয়ে যখন গঙ্গার তলায় মেট্রো প্রবেশ করল সাথে সাথে চারপাশে নীল বাতি জ্বলে উঠলো। আসলে এই বাতিগুলো লাগানো হয়েছে যাতে মানুষজন বুঝতে পারে এইবার আমরা সবাই গঙ্গার তলায় আছি। খুব মসৃণ ভাবে গঙ্গার ওপারে পৌঁছালাম এবং পুরো ব্যবস্থা রীতিমতো চোখ ধাঁধালো। যেমন পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা তেমন সুন্দর। সত্যিই কর্তৃপক্ষকে কুর্নিশ জানানো উচিত। খুব কম সময়ের মধ্যে হাওড়া ময়দান পৌঁছে সেখানে আশেপাশে কিছুটা সময় কাটিয়ে আবার গঙ্গার তলা দিয়েই ফিরে আসলাম। এক অন্যরকম সন্ধ্যে এবং অন্যরকম অনুভূতি নিজের মধ্যে হচ্ছিলো।

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
গঙ্গার নীচ দিয়ে মেট্রো এটা আমি আগেও দেখছি কয়েক জায়গা। এটা আপনাদের যোগাযোগ ব্যবস্থা টা আরও উন্নত করে দিয়েছে। যদিও দূরত্বটা বেশি তারপরও দারুণ। এবং ভাড়া টাও দেখছি অনেক কম। মা কে নিয়ে মেট্রো ভ্রমণ টা বেশ ছিল দাদা। আপনার অনূভুতি টা পড়ে ভালো লাগল। দারুণ ছিল মূহূর্তটা। ধন্যবাদ আমাদের সাথে শেয়ার করে নেওয়ার জন্য।।
আমাদের দেশে মাত্র মাস কয়েক আগে মেট্রোরেল চালু হয়েছে। আর আমাদের প্রতিবেশীরা পাতাল রেল চালু করেছে। তাদের এগিয়ে যাওয়া আমাদের আশা যোগায়।
বাহ্! একেবারে ভিন্ন ধরনের অভিজ্ঞতা অর্জন করলেন দাদা। তবে ভাড়ার কথা শুনে তো অবাক হয়ে গেলাম। মাত্র ১০ টাকা ভাড়া দিয়ে চারটি স্টপেজ। আর আমরা তো উড়াল মেট্রোরেলে চড়ে ৪ স্টপেজ যাই ২০ টাকা ভাড়া দিয়ে। আমাদের দেশে নদীর তলায় মেট্রো থাকলে, ৪ স্টপেজ এর ভাড়া নিতো কমপক্ষে ৫০ টাকা। যাইহোক পরিবার নিয়ে নদীর তলায় মেট্রো তে ঘুরে বেশ ভালো সময় কাটিয়েছেন দাদা। এতো চমৎকার অনুভূতি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
তুমি দাদা কলকাতার বাইরে থেকে এসে নদীর তলায় কলকাতা মেট্রো ঘুরে চলে গেলে আর এদিকে আমি কলকাতার মানুষ হয়ে এখনো গঙ্গার নিচ দিয়ে যাওয়া মেট্রোতে উঠতে পারলাম না। সর্বোপরি তোমার অভিজ্ঞতা জেনে অনেক বেশি ভালো লাগছে। তবে গঙ্গার নিচ দিয়ে যাওয়ার সময় যদি জলটা দেখা যেত, তাহলে আরো বেশি মজা হত। হা হা হা... 😁😁 যাইহোক, দেখি আমার কবে সুযোগ হয় এই মেট্রোতে চড়ার।