গল্প: নীলাভ প্রেম। || Story: Blue Love. 💙 ( Part-5)
সারা বিকেল অপ্সরার জন্য অপেক্ষা করে সোনম সন্ধ্যায় ঘরে ফেরে মন মরা হয়ে। তাহলে সত্যিই কি মেয়েটা কষ্ট পেয়েছে তার কথায়, কিন্তু কি করতে পারতো সোনম? মেয়েটা যা কান্ড ঘটালো। যাইহোক সোনম মেয়েটাকে ভালোবাসুক বা না বাসুক তাকে সরি বলতেই হবে। ওসব প্রেম ভালোবাসা মাথায় নেয়া যাবে না। কিন্তু একটা অদ্ভুত ব্যাপার খেয়াল করলো সোনম মেয়েটার ওমন মিষ্টি চোখের কোনে জল গড়িয়ে পড়ছিল যখন সত্যিই একটা অদ্ভুত সৌন্দর্য দেখা মিললো। সোনম চোখ বন্ধ করলেই যেন সবকিছু স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছে। সারা রাত ঘুমোনোর জন্য শুধু এপাশ ওপাশ কিন্তু কিছুতেই ঘুমুতে পারলো না সে। তাহলে কি সত্যিই সে মেয়েটার প্রেমে পরে গেছে? কেন যেন অদ্ভুত একটা জ্বলুনি বুকের বা পাশে, সারা রাত ছটফট করে শুধু মাত্র একটাই চাওয়া কখন মেয়েটাকে এক ঝলক দেখবে।
ভোরের দিকে কখন ঘুমিয়েছে সত্যিই সোনম জানেনা। ঠিক দশটার দিকে মা হাঁক ছেড়ে ডাকছে কিরে রাতে ঘুমুসনি ? এতো বেলা পর্যন্ত পরে পরে ঘুমুচ্ছিস ? কি আর করা মায়ের চেঁচামেচিতে লাফ দিয়ে উঠে দেখে দশটা পার হয়ে গেছে। যাইহোক মাকে কিছু বুঝতে না দিয়ে দ্রুত নাস্তা খেয়ে ছাদের দিকে দৌড়। ছাদে উঠেই আহ্ শান্তি, মেয়েটা দাড়িয়ে। মিষ্টি রোদে চেহারাটা ঝলমল করছে যেন স্বর্গের অপ্সরা নেমে এসেছে। তবে সোনমকে দেখে একটু ইতস্তত বোধ করে কিংবা ভয়ে সরে যাচ্ছিল। সোনম ডাকলো শোন একটু ! কোন কথা না বলে মেয়েটি দাঁড়িয়ে থাকে। আমি গতকালের জন্য সত্যিই দুঃখিত, আসলে তোমাকে ওভাবে বলা আমার উচিত হয়নি। আমার বোঝা উচিত ছিল কেউ কাউকে ভালোবাসতেই পারে, এটা কখনোই দোষের কিছু নয়। এবার অপ্সরা সোনমের দিকে তাকিয়ে মুচকি একটা হাসি দেয়, সোনম তার চোখের দিকে তাকিয়ে কোথায় যেন হারিয়ে যাচ্ছে সে।
দুজনেই কিছুটা সময় নিরব পাশাপাশি দাঁড়িয়ে, সোনম বললো দেখো। ও সরি আপনাকে তুমি বলে ফেললাম। অপ্সরা হেসে জবাব দেয় আপনি আমাকে তুমি কিংবা নাম ধরে ডাকতে পারেন সমস্যা নেই। সোনম অবাক হয়ে যায়, মেয়েটার কেমন যেন আপন করে নেয়ার অদ্ভুত ক্ষমতা রয়েছে। যাইহোক অপ্সরা আমি তোমাকে এখনি ভালোবাসতে চাইছি না, কারন ভালোবাসা এতো সহজ ব্যাপার না। আচ্ছা আমরা তো বন্ধু হতে পারি, তাইনা? অপ্সরা হেসে জবাব দেয়, আমি আপনাকে ভালোবাসি, আমি এটা জানি। আর আপনি আমাকে বন্ধু ভাবুন আর যাই ভাবুন আমার তাতে কিছু যায় আসে না, তবে আমি বিশ্বাস করি আপনিও আমাকে ভালোবাসবেন, আজ নয়তো কাল। যাইহোক অপ্সরা হাত বাড়িয়ে দেয় দেখুন তো আপনার বন্ধুর হাত নরম না শক্ত 😄 সোনম মোহিত চোখে হাতটা ধরে, সে নিজেও জানে না কিভাবে কি হলো। বুকের হৃদস্পন্দন তার শরীরের নিয়ন্ত্রণে নেই, মনে হলো কলিজাটা এখনি হয়তো হাতে চলে আসবে। অপ্সরা হাতটা চেপে ধরে বলে আজ থেকে আপনি আমার ভালোবাসার মানুষ হলেন আর আমি আপনার বন্ধু। 😊 তা কেমন লাগলো বন্ধুর হাতটা ধরে? সোনম যেন হিপনোটাইজ হয়ে গেছে, কিছু বলার ভাষা তার নেই। মন আর আত্মা শুধু বলে যাচ্ছে, সোনম মেয়েটার হাত ছাড়িস না।
আমি ইন্জিনিয়ার ইমরান হাসান। মেশিন নিয়ে পেশা আর ব্লগিং হলো নেশা। কাজ করি টেকনিক্যাল সাপোর্ট ইন্জিনিয়ার হিসেবে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে। অবসর সময়ে ব্লগিং করি নিজের মনের খোরাক আর একটু পরিবারকে ভালো রাখার জন্য। আমি আবেগী, বড্ড জেদি, নিজেই নিজের রাজ্যের রাজা। কেউ কোথাও থেমে গেলে সেখান থেকে শুরু করতে ভালোবাসি। আমার শখ ছবি তোলা, বাগান করা আর নতুন জায়গায় ঘুরতে যাওয়া। মানুষকে আমি ভালোবাসি তাই মানুষ আমায় ভালোবাসে।