হোস্টেল লাইফ রেগিং (পর্ব -৩)|| Hostel life ragging.
(পর্ব -৩) |
---|
আমি আমার হোস্টেল লাইফ রেগিং নিয়ে দ্বিতীয় পর্ব আলোচনা করেছিলাম। আজ তার তৃতীয় পর্ব নিয়ে হাজির হলাম। আমি আমার হোস্টেল জীবন থেকে অনেক কিছু শিখেছি এই শিক্ষাগুলো আমার পরবর্তী জীবনে ভীষণ কাজে লেগেছে। তবে রেগিং এর বিষয়গুলো এতোটাই ভয়ানক এবং বেদনাদায়ক ছিল যে বলে শেষ করতে পারবো না। যাইহোক চলুন আজ তৃতীয় পর্ব শুরু করি।
রাত ৩ টা প্রথম দিনের রেগিং শেষ হয়েছে। রুমে এসে সবাই থমথমে অবস্থায় বেডের উপর এসে বসে পরলাম। আমাদের চারজন রুম মেটের মধ্যে একজন ছিল ভীষণ হ্যাংলা পাতলা। সে ভীষণ ভয় পেয়েছে, আর বলতে থাকলো এই হোস্টেলে আমি থাকবো না। যাইহোক তাকে সাহস দেয়ার মতো সাহস আমাদের কারও ছিলনা। অবশেষে সাড়ে তিনটা নাগাদ ঘুমাতে গেলাম, সত্যি বলতে ঘুম চোখে আসছিল না। কেমন যেন ভয় চারিদিক থেকে ঘিরে ধরছিলো। সকালে ক্লাশ থাকায় বেশ দুশ্চিন্তা ছিল, কখন যে ঘুমিয়ে পড়লাম বুঝতেই পারলাম না। হঠাৎ করেই এলার্মের শব্দে ঘুম থেকে লাফিয়ে উঠলাম।
খাবারের রুমের দিকে যাওয়ার তেমন ইচ্ছে ছিল না, গতকাল রাতে যা খেলাম তার থেকে সকালে না খেয়ে থাকাই ভালো। যাইহোক খুব তাড়াতাড়ি তৈরি হয়ে ক্লাসের দিকে ছুটলাম। তবে রুম থেকে বের হওয়ার আগে গতকালের নিয়ম কানুন গুলো মনে মনে আওড়াতে থাকলাম কারন ভুল হলে খারাপ কিছু হতে পারে আমার সাথেও। যাইহোক মাথা নিচু করে হাঁটা শুরু করলাম। বের হয়ে সামনে যাকে পেলাম না তাকিয়েই সালাম দিতে থাকলাম আর খুব ধীরে এগিয়ে যেতে থাকলাম। যাইহোক অবশেষে ক্লাসে পৌঁছালাম, এরপর ক্লাশ শুরু হয়েছে। খুব চেষ্টা করলাম ক্লাশে মনোযোগ দেয়ার কিন্তু কেমন যেন ভেতরে ভেতরে ভয় কাজ করছিল। ধীরে ক্লাশের দিকে মনোযোগ আসতে থাকলো।
ক্লাশ শেষে আবারও খুব সাবধানে রুমে ফিরলাম। গোসল করে ফ্রেশ হয়ে খাওয়ার রুমের দিকে গেলাম। আবার সেই অখাদ্য খেতে শুরু করলাম, না আজ কিছুটা খেতে পারলাম কারন পেটে বেশ খিদে ছিল। যাইহোক খাবার খেয়ে রুমে এসে লম্বা একটা ঘুম দিলাম কারন গতকাল রাতে ঘুম হয়নি, জানিনা আজ রাতে আবার কি হয়। ঘুম থেকে উঠলাম সন্ধার পর তাও এক রুমমেট ডেকে তুললো।
এরপর ফ্রেশ হয়ে চার রুমমেট একসাথে বাইরে চলে গেলাম চা নাস্তা খেতে। এটাই হয়েছে আমাদের অপরাধ, তবে আমরা ঘুনাক্ষরেও বুঝতে পারিনি এটাও তাদের কাছে অপরাধ মনে হয়েছে।
নাস্তা সেরে যে যার মতো পড়াশোনা নিয়ে ব্যাস্ত হয়ে পরলাম। না আজ আর কেউ আগে ঘুমাতে গেলাম না, কারন কখন আবার ডাক পরে। ঠিক ১২:৩০ মিঃ দরজায় ভীষণ জোরে আঘাতের শব্দ পেলাম, তাড়াতাড়ি ১০২ নাম্বার রুমে আয় মিটিং আছে। কলিজায় আর পানি নেই, আজ যে কি হবে আল্লাহ জানে। আজকেও সেই একই সিস্টেমের মিটিং শুরু হয়েছে। একটা ছেলে আজ ডাইনিং টেবিলে পা উঠিয়ে বসেছিল, একজন ত্রী কোয়াটার প্যান্ট পরেছিল আর একজন কানে হেডফোন লাগিয়ে বাইরে গিয়েছিল আর আমরা চারজন একসাথে দল বেঁধে বাইরে গিয়েছিলাম। যে ডাইনিংয়ে পা উঠিয়ে বসেছিল তাকে অকথ্যভাষায় গালাগালি করে পা লিনডাউন করে রেখে দিয়েছে, যে খাটো প্যান্ট পরেছিল তাকে যা বলেছিল সেটা আমি বর্ণনা দিতে পারবোনা আর আমাদের এক জনকে দিয়ে অন্যজনের কান মলে দিয়েছিল।
নিজেকে এতটাই ছোট আর অপমানিত মনে হচ্ছিল, যে আগামীকাল হোস্টেল ছেড়ে দেই। কিন্তু পরিবারের কিছুটা আর্থিক অসচ্ছলতার কথা চিন্তা করে সবকিছু মেনে নিলাম।
আমি ইন্জিনিয়ার ইমরান হাসান। মেশিন নিয়ে পেশা আর ব্লগিং হলো নেশা। কাজ করি টেকনিক্যাল সাপোর্ট ইন্জিনিয়ার হিসেবে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে। অবসর সময়ে ব্লগিং করি নিজের মনের খোরাক আর একটু পরিবারকে ভালো রাখার জন্য। আমি আবেগী, বড্ড জেদি, নিজেই নিজের রাজ্যের রাজা। কেউ কোথাও থেমে গেলে সেখান থেকে শুরু করতে ভালোবাসি। আমার শখ ছবি তোলা, বাগান করা আর নতুন জায়গায় ঘুরতে যাওয়া। মানুষকে আমি ভালোবাসি তাই মানুষ আমায় ভালোবাসে।
https://steemitwallet.com/~witnesses
VOTE @bangla.witness as witness
OR

Thank you, friend!


I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
https://twitter.com/emranhasan1989/status/1739699324509151570?t=41LA6LoeSVeodhPcupG5dw&s=19
সত্যি ই ভাইয়া খুবই বেদনাদায়ক এসব ঘটনাগুলো।এতো বিশ্রী ভাবে এরা রেগিং করে জেনে খুবই খারাপ লাগলো আমার।অসহায় ছাত্র গুলো এই ধরনের ঘটনার মধ্যে দিয়ে দিনের পর দিন গিয়েছে ভেবে আমারই রাগ লেগে যাচ্ছে।
হোস্টেল লাইফ রেগিং গুলো সত্যি ভীষণ খারাপ লাগে। যদিও এটা নিয়ে আবার অনেকেই মজা করে। তবে আমার কাছে খারাপ লাগে। পরিবারের কথা মাথায় রেখে হোস্টেল ছাড়েন নি খুব ভালো করেছেন। পরের পর্বের অপেক্ষায় রইলাম। আপনার জন্য শুভ কামনা রইল ভালো থাকবেন।
গল্পটা পড়ে পুরোপুরি বাকরুদ্ধ হয়ে গেলাম, আসলে ছোট ভাইদের স্নেহ ভালোবাসা দেওয়ার কথা সে জায়গায় রেগিং নামের নির্যাতন করা হচ্ছে। বলার ভাষা নেই।