মেয়ের সাফল্য
আসসালামু আলাইকুম,
কেমন আছেন সবাই?আশা করি সবাই সুস্থ আছেন।ভালো আছেন।আমিও আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি। আজ আবারো নতুন একটি ব্লগ নিয়ে আপনাদের মাঝে হাজির হয়েছি।আশা করি আজকের ব্লগটি আপনাদের কাছে ভালো লাগবে।
এখন তোর নিজের ভালো কোন কাজে তেমন আনন্দ না পেলেও ছেলে মেয়ের ভালো কাজে আনন্দটা যেন বেশি লাগে। আমার মেয়ের রেজাল্ট হয়েছিল সেদিন আমি তো ওর রেজাল্ট নিয়ে খুবই চিন্তায় ছিলাম। আমার ছোট ছেলেকে নিয়ে ওকে পড়াশোনা করতে সাহায্য করতে পারি না। আর পড়াতে বসলে ছোট জন নানা ভাবে দুষ্টুমি শুরু করে দেয়। কখনও পেন্সিল নিয়ে দৌড় দেয় আবার কখনো ওর বই খাতা নিয়ে দৌড় দেয়। তারপরও আমার মেয়েটা আমি বললে তেমন বেশি জেদ করে না আমার কথা শুনে।
বছরের প্রথম দিনটা খুব আনন্দে শুরু হয়েছিল আমার আসলে ইচ্ছা করলে নিয়ে শুরু করেছিলাম এ বছরের প্রথম দিনটি
তারপরও আমি যতটুকু পারি ওকে সময় দেওয়ার চেষ্টা করি মাঝে মাঝে মনে হয় থাক ছোট মানুষ যা পারে তাই হবে। অনেক বাবা মা কে আবার স্কুলে দেখি তারা বাচ্চাদের পড়াশোনা নিয়ে এত বেশি সিরিয়াস বাচ্চারা একটু ভুল করলেই এত রাগারাগি করে। মাঝে মাঝে খারাপই লাগে। আমার মেয়ে তো এখনো তেমন ভাবে বুঝতেই পারে না যে পরীক্ষা নিয়ে আসলে কতটুকু সিরিয়াস হওয়া দরকার। সে তো পরীক্ষার হলে গিয়ে নিজে না লিখে তার বন্ধুদেরকে বলে দেয় কারণ সে বলে যে তার বন্ধুরা পারে না। তাদেরকে আগে বলে দিতে হবে। সে নিজেরটা বাদ দিয়ে বন্ধুদের টা নিয়ে বেশি ব্যস্ত হয়ে পড়ে। এটা এখনো ওইভাবে বুঝতে পারে না যে পরীক্ষা নিজেরটা আগে লিখতে হয়। নিজের নাম্বার কমে যাবে নাহলে মাথায় আসে না। আস্তে আস্তে সময়ের সাথে হয়তো ওর মাথা ও হয়তো এগুলো বুঝতে শিখবে। আরো বেশি আপনারা সবাই আমার মেয়েটার জন্য দোয়া করবেন।
এবার সবগুলো পরীক্ষা মোটামুটি ভালো দিলেও শেষ পরীক্ষার দিনটাতে আমার মেয়েটাকে নিয়ে অনেক বেশি চিন্তায় ছিলাম।কারণ শেষ পরীক্ষা দিন সকালে উঠে কয়েকবার বমি করে হাসপাতালে ভর্তি করানোর মতো অবস্থা হয়ে যায়। তারপরও আমি ওকে কোলে করে নিয়ে যাই।জাহিরা তো বলে পরীক্ষা দেবে না। হাল ছেড়ে দিয়েছিল তার শরীর একেবারে চলছিল না। আমি বুঝিয়ে স্কুলে নিয়ে গিয়ে তাকে আলাদাভাবে পরীক্ষা দেওয়ার ব্যবস্থা করে দিয়েছিলাম। পরিচালক আমাকে অনেক সাহায্য করেছিল। ওকে তাড়াতাড়ি পরীক্ষা দিয়ে বাসায় নিয়ে চলে আসি। সেদিনের পরীক্ষাটা নিয়ে অনেক বেশি চিন্তায় ছিলাম কারণ সেদিন ওর ড্রয়িং সাধারণ জ্ঞান আরবি পরীক্ষা ছিল। এই তিনটা পরীক্ষা মেয়েটা আমার অসুস্থতা নিয়ে দিয়েছে সে যে কি দিয়েছে কি করেছে আমি কিছুই জানিনা।সৃষ্টিকর্তার উপরে ভরসা করে রেখেছিলাম যে আমার মেয়েটা এতদিন কষ্ট করে পড়লো আর পরীক্ষার দিনে এসে অসুখ বাঁধিয়ে বসলো কি যে হবে জানিনা। কয়েকদিন ধরেই চিন্তা হচ্ছিল তারপর পরীক্ষা দিতে নিয়ে তারপর রেজাল্টের দিনে চিন্তা করছিলাম যে আসলে কি হবে। রেজাল্ট হাতে পেয়ে অনেকটা ভালো লেগেছে আমার মেয়ে টোটাল নাম্বার থেকে সাত নাম্বার পেয়েছে সে বার্ষিক পরীক্ষায় দ্বিতীয় হয়েছে। তবে সে প্রথম সাময়িক পরীক্ষায় একটু নাম্বার কম পেয়েছিল এর জন্য গড় করে তার রোল টা একটু পিছিয়ে গেছে কিন্তু আমার কাছে এটাই ভালো লেগেছে যে সে বার্ষিক পরীক্ষায় দ্বিতীয় হয়েছে। আমার কাছে এটাই অনেক বড় কিছু অনেক ভালো লাগছিল।
আমার মেয়ে তো রেজাল্ট নিয়ে সরাসরি বাবার অফিসে চলে গেছে রেজাল্ট দেখানোর জন্য তার বাবাও তাকে দেখে তাকে গিফট কেনার জন্য বকসিস দিয়েছে। সত্যি ছেলেমেয়েগুলোর ছোট ছোট সাফল্যে যদি তাদেরকে উৎসাহ দেয়া যায় তাহলে ভবিষ্যতে তারা আরো অনেক ভালো কিছু করার চেষ্টা করবে। সবাই আমার মেয়েটার জন্য দোয়া করবেন। আমার মেয়েটা যেন সামনে আরো অনেক ভালো রেজাল্ট করতে পারে এবং ভালো মানুষ হয়ে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারে।
আজকের মতো এখানেই বিদায় নিচ্ছি।ধন্যবাদ সবাইকে।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
এত কম বয়সে পরীক্ষা নিয়ে সিরিয়াস না হওয়ার ই তো কথা আপু। ওভাবে কি আর বুঝে এখনই! তবুও যে মারাত্মক অসুস্থ অবস্থায় ও ৩ টি বিষয় পরীক্ষা দিতে পেরেছে- সেটাই তো অনেক আপু। জাহিরার এমন সাফল্যের কথা জেনে ভীষণ ভালো লাগলো। ওর জন্য অনেক অনেক দোয়া রইলো।
সন্তানের সাফল্য দেখলে মা বাবার আনন্দের সীমা থাকে না। আপনার মেয়ে অসুস্থ শরীর নিয়ে পরীক্ষা দিয়েছে, এটাই তো অনেক। তবুও সে ভালো রেজাল্ট করেছে, এটা জেনে ভীষণ ভালো লাগলো। আশা করি ভবিষ্যতে সে আপনাদের মুখ উজ্জ্বল করবে। আপনার মেয়ের জন্য শুভকামনা রইলো আপু।
আপনার মেয়ে বার্ষিক পরীক্ষায় দ্বিতীয় হয়েছে শুনে খুবই ভালো লাগলো। ওকে অভিনন্দন জানাই আর পরবর্তী দিনগুলোর জন্য শুভকামনা রইল। শেষের তিনটা পরীক্ষা খুব অসুস্থতার মধ্যে দিয়েছে। তারপরও খুব ভালো একটা রেজাল্ট করেছে। সুন্দর এই মুহূর্তগুলো শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ আপু।
শুভকামনা জাহিরা মামুনির জন্য। জাহিরা অনেক বুদ্ধিমান একটা বাচ্চা তা ওকে দেখলেই বোঝা যায়। বাচ্চাদের অসুস্থতায় যে কি হয় তা আমি ভালো বুঝি।অনেক ভালো করেছে রেজাল্ট। আসলে বাচ্চাদের সফলতায় উৎসাহীত করলে তারা অনুপ্রাণিত হয়।শুভকামনা রইলো জাহিরার জন্য। ধন্যবাদ পোস্ট টি ভাগ করে নেয়ার জন্য।