স্মৃতিচারণ: শৈশবের শীতকালের সকাল বেলার প্রাইভেট পড়তে যাওয়ার স্মৃতি
আমি @riyadx2 বাংলাদেশ থেকে
সোমবার, ০২ ই ডিসেম্বর ২০২৪ ইং
শীতকাল মানেই বাঙালিদের এক অন্যরকম উৎসব এবং আনন্দময় সময়। শীতকাল চলে আসলেই বাঙালি এই সময় কে বিভিন্ন ভাবে উপভোগ করার চেষ্টা করে থাকেন।আর অন্যান্য সব মৌসুমের তুলনায় শীত মৌসুমে একটু বেশি আচার অনুষ্ঠান গুলো হয়ে থাকে। এই বিষয়ে হয়তো আপনারা সকলেই অবগত আছেন। যাইহোক, শীতকাল নিয়ে আমার মনের মধ্যে অনেক গুলো স্মৃতি জড়িয়ে রয়েছে। হয়তো আপনাদের মধের মধ্যে এরকম স্মৃতি জড়িয়ে রয়েছে। আসলে এই ধরনের স্মৃতি গুলো মৃত্যুর আগ মুহূর্ত পর্যন্ত মনে থাকবে, কখনো ভোলার মতো নয় এই সব স্মৃতি গুলো। আমার কাছে মনে হয়, শীতকাল মানেই এক নতুন সৌন্দর্যের একটি মৌসুম। প্রতি বছর নতুন নতুন সৌন্দর্য নিয়ে শীতকাল আমাদের মাঝে হাজির হয়ে যায়।
শীতকালে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকলেও পড়ালেখা তবুও চালু ছিল।আমি যখন অষ্টম শ্রেণীর মধ্যে পড়াশোনা করতাম, তখন আমাদের সময়ে অষ্টম শ্রেণীর জন্য একটি বোর্ড পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হতো। এই বিষয়ে হয়তো আপনারা সকলেই অবগত আছেন। কিন্তু বর্তমান সময়ে আর তা নেই আমাদের দেশের মধ্যে। তখন বোর্ড পরীক্ষার প্রায় চার মাস আগে থেকেই স্কুলের মধ্যে ক্লাস বন্ধ হয়ে যেত। তখন অনেকেই বাড়ির মধ্যে বসে বসে পড়াশোনা করতো। আবার অনেকেই বিভিন্ন ধরনের প্রাইভেট সেন্টার এবং কোচিং সেন্টারের মধ্যে ভর্তি হয়ে পড়াশোনা করতো।যার যেমন টি সুবিধা হতো সে সেটি করতো। তবে, আমার কাছে প্রাইভেট এবং কোচিং সেন্টারের মধ্যে পড়াশোনা করা তেমন একটা পছন্দের না।
কিন্তু যেহেতু স্কুলের মধ্যে ক্লাস বন্ধ হয়ে গিয়েছে, তাই আমাকে ইচ্ছার বিরুদ্ধে গিয়ে আমার বাড়ির পাশের বাজারের একটি কোচিং সেন্টারের মধ্যে ভর্তি হতে হয়।আমি মূলত প্রস্তুতি কোচিং করার জন্য এই কোচিং এর মধ্যে ভর্তি হয়েছিলাম।আর এই প্রস্তুতি কোচিং টি একদম শীতকালে।আর ক্লাস ও ছিল একদম ভোরে, সকাল ৭ টায়। আমার পক্ষে সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠে কোচিং করা অনেক টা কষ্টকর ছিল। কিন্তু তবুও পরিবারের চাপে সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে কোচিং যেতে হতো। এটা আসলে আমার পক্ষ থেকে অনেক বেশি কষ্টকর হয়ে পড়ছিল। তবু ও যেতে হয়েছিল আমাকে।
আমরা মূলত আমাদের গ্ৰামের বেশ কয়েকজন বন্ধু সহ এক সাথে এই কোচিং সেন্টারের মধ্যে ক্লাস করছিলাম। আমরা প্রতিদিন কোচিং যাওয়ার জন্য এক সাথে গিয়েছিলাম। আমরা যখন কোচিং যাওয়ার জন্য বের হতাম তখন চারদিকে শীতের কারণে কিছুই দেখা যেত না। আমরা শীত কে উপেক্ষা করে কোচিং গিয়েছিলাম তখন।গ্ৰামের অনেকেই আমাদের কে দেখে অনেক অনেক প্রশংসা করেছিলেন। তখন আমাদের প্রত্যেকের একটি করে সাইকেল ছিল, আমরা প্রত্যেকেই কোচিং যাওয়ার সময় সাইকেল নিয়ে বের হতাম। শীতকালে সাইকেল চালানো কতটা কঠিন সে বিষয়ে হয়তো আপনারা সকলেই অবগত আছেন।
আর শীতকালে গ্ৰাম এলাকা গুলোর মধ্যে একটু বেশি ঠান্ডা পড়ে। তখন আমাদের বন্ধু গুলোর মধ্যে যেরকম বন্ধুত্ব ছিল, কিন্তু বর্তমান সময়ে আর নেই। এখন বিভিন্ন জন বিভিন্ন জায়গায় চলে গিয়েছে। আমরা শীতকালের মধ্যে ও কখনো কাউকে ছেড়ে যাইনি কোনদিন। আমাদের কোচিং যাওয়ার জন্য একটি নির্দিষ্ট সময় এবং স্থান ছিল, আমরা সকলেই নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে নির্দিষ্ট স্থানে চলে আসতাম। এভাবেই প্রতিদিন এক সাথে কোচিং গিয়েছিলাম আমরা। আপনারা কে কে শীতের সকালে প্রাইভেট কিংবা কোচিং করেছেন, তা অবশ্যই কমেন্টের মাধ্যমে জানাবেন আমাকে।
সবাই কে অনেক অনেক ধন্যবাদ।
Vote@bangla.witness as witness
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
X promotion
আজকে আপনি আপনার গল্পের মধ্য দিয়ে মনে করে দিলেন আমার অতীতের স্মৃতিগুলো। সকালে ঘুম ভাঙতেই দ্রুত চোখমুখ ধুয়ে চলে যেতাম পাশের গ্রামে অংক প্রাইভেটের জন্য। যখন পথে বের হতাম কুয়াশা কম এরপর আস্তে আস্তে ঘন কুয়াশা ছেড়ে যেত। সকাল করে যে যখন যেয়ে উপস্থিত হতে পারে। যাইহোক আপনার প্রাইভেট থেকে কোচিং এর বিষয়টা শীতের সময়ের অনুভূতির সাথে জড়িত জেনে ভালো লাগলো।
আজ আপনি আপনার শৈশবের একটি গল্প শেয়ার করেছেন তবে মনে করিয়ে দিলেন আমাদের জেনারেশনের প্রতিটি মানুষের শৈশব কে। শৈশবের শীতকালে সেই ভোরে ওঠে পড়তে যাওয়া সত্যিই অনেক মনে পড়ে। এই বিষয়টা আমার মাঝে মাঝেই খুব মনে পড়ে। আপনার পোস্ট পড়ে আজকে বেশি মনে পড়ছে। সেই সুখের সময়টা আর ফিরে আসবে না। তবে আমি একটা কথা ভাবি। এখন চাইলেও সকালে ঘুম থেকে উঠতে পারি না আর সেই সময় আমরা কিভাবে সকাল ছয়টায় উঠে পড়তে যেতাম। কুয়াশা মোড়ানো চারিপাশ শীতের কাপড় পড়ে দলে দলে চলে যেতাম প্রাইভেটে। খুব সুন্দর একটি স্মৃতিময় গল্প শেয়ার করেছেন। গল্পটি পড়ে বেশ ভালো লাগলো।
প্রচন্ড শীতে সকালে ঘুম থেকে উঠে প্রাইভেট পড়তে আমরাও গিয়েছি। আসলে সেই সময়ের অনুভূতি গুলো খুবই মিস করি । আমার মনে হয় জীবনের সেরা মুহূর্ত সেই সময়ের। আপনার পোস্ট পড়ে সেটাই উপলব্ধি করতে পারলাম।
আপনার শৈশবকালের স্মৃতিগুলো পড়তে গিয়ে আমারও সেই শৈশবকালের কথা মনে পড়ে গেল। যখন আমিও খুব সকালবেলায় সাইকেল নিয়ে প্রাইভেট পড়তে যেতাম। আপনার শৈশব কালের দারুণ অনুভূতি গুলো আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
আমার ইচ্ছার বিরুদ্ধে গিয়ে আমাকে কখনও কোচিং বা প্রাইভেটে যেতে হয়নি। আমার পরিবার কখনও জোর করেনি। তবে শীতের সকালে প্রাইভেট পড়ার অনূভুতি আমার আছে। শীতের সকালে কনকনে ঠান্ডায় উঠে পড়তে যাওয়া সত্যি অনেক কষ্টকর। চমৎকার লিখেছেন ভাই।
শীত মানেই পিঠাপুলির আমেজে ভরপুর। শীত মানেই শীতকে আলাদা ভাবে কাটানো চেষ্টা। আপনার শীতকালীন প্রাইভেট পড়তে যাওয়ার গল্পটি পড়ে নিজের পড়তে যাওয়ার স্মৃতি মনে হয়ে গেলো।ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর পোস্ট টি আমাদের সাথে ভাগ করে নিয়েছেন জন্য।