তারিখ-২১.১২.২০২২
নমস্কার বন্ধুরা
আশা করি ঈশ্বরের আশীর্বাদে সকলে ভালো আছে।পরিস্থিতি যতই প্রতিকূল থাকুক, আমাদের সকলেরই ভালো থাকাটা খুবই প্রয়োজন। নিজেরা ভালো থাকলে আমরা চারপাশে প্রত্যেকটা মানুষ যারা আমাদেরকে ঘিরে বেঁচে আছে তারা ভালো থাকবে। তাই সবসময় চেষ্টা করতে হবে নিজেদের ভালো রাখার। আজকে আমি আপনাদের সামনে যে উপস্থাপনাটা নিয়ে এসেছি, সেটা একটা আবৃত্তি। এই কবিতাটি আমি আবৃত্তি করেছিলাম যখন আমি আবৃত্তি শিখতাম। হঠাৎ করে মনে পড়ে গেল এই কবিতাটির কথা।রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের 'খেয়া' কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত 'কৃপণ' কবিতা।

>আমি ভিক্ষা করে ফিরতেছিলেম
গ্রামের পথে পথে
তুমি তখন চলেছিলে
তোমার স্বর্ণরথে।
অপূর্ব এক স্বপ্ন-সম
লাগতেছিল চক্ষে মম--
কী বিচিত্র শোভা তোমার,
কী বিচিত্র সাজ।
আমি মনে ভাবেতেছিলেম,
এ কোন্ মহারাজ।
আজি শুভক্ষণে রাত পোহালো
ভেবেছিলেম তবে,
আজ আমারে দ্বারে দ্বারে
ফিরতে নাহি হবে।
বাহির হতে নাহি হতে
কাহার দেখা পেলেম পথে,
চলিতে রথ ধনধান্য
ছড়াবে দুই ধারে--
মুঠা মুঠা কুড়িয়ে নেব,
নেব ভারে ভারে
দেখি সহসা রথ থেমে গেল
আমার কাছে এসে,
আমার মুখপানে চেয়ে
নামলে তুমি হেসে।
দেখে মুখের প্রসন্নতা
জুড়িয়ে গেল সকল ব্যথা,
হেনকালে কিসের লাগি
তুমি অকস্মাৎ
"আমায় কিছু দাও গো' বলে
বাড়িয়ে দিলে হাত।
মরি,এ কী কথা রাজাধিরাজ,
"আমায় দাও গো কিছু'!
শুনে ক্ষণকালের তরে
রইনু মাথা-নিচু।
তোমার কী-বা অভাব আছে
ভিখারী ভিক্ষুকের কাছে।
এ কেবল কৌতুকের বশে
আমায় প্রবঞ্চনা।
ঝুলি হতে দিলেম তুলে
একটি ছোটো কণা।
যবে পাত্রখানি ঘরে এনে
উজাড় করি-- এ কী!
ভিক্ষামাঝে একটি ছোটো
সোনার কণা দেখি।
দিলেম যা রাজ-ভিখারীরে
স্বর্ণ হয়ে এল ফিরে,
তখন কাঁদি চোখের জলে
দুটি নয়ন ভরে--
তোমায় কেন দিই নি আমার
সকল শূন্য করে।
কবিতার বিষয়বস্তু এটাই যে আমরা যতই হতদরিদ্র অবস্থায় থাকি না কেন, আমাদের কাছে যখন কেউ কিছু প্রার্থনা করে, কিছু চায় ,তখন তাকে কখনোই খালি হাতে ফেরানো উচিত নয়। "জীবের মধ্যেই শীব থাকে" এ কথা আমরা অনেকেই জানি। তাই অনেক সময় হয়তো ঈশ্বর আমাদের পরীক্ষা করার জন্যই অন্য কোন ছদ্মবেশে আসতেই পারেন। কবি সেখানে সেরকমই দেখিয়েছেন যে এক ভিক্ষুক ভিক্ষে করতে বেরিয়েছেন। হঠাৎ করেই এক রাজাকে আসতে দেখে তিনি মনে মনে ভাবলেন যে আজকে হয়তো ভালো কিছু ভিক্ষে পাওয়া যাবে।
কিন্তু রাজা যখন তার রথ থেকে নামলেন, নেমে ভিক্ষুকের কাছেই হাত পেতে দিলেন, এই বলে যে, "আমায় কিছু দাও। তখন ভিক্ষুক অবাক হয়ে গেলেন।ভাবলেন, "একজন রাজাকে আমি কি দেবো? রাজা আমায় প্রবঞ্চনা করছে না তো! "তারপরে নিজের ঝুলি থেকে একটা ছোট শস্য কণা তুলে রাজার হাতে দিলেন। তারপরে সারাদিনের ভিক্ষাবৃত্তি শেষ করে যখন ঘরে এনে ভিক্ষের পাত্রটা ঢেলে দিলেন মেঝেতে, দেখলেন ঠিক যে পরিমাণে কণা তিনি রাজাকে দান করেছেন, সেরকমই একটা স্বর্ণের কণা তার ভিক্ষার ঝুলিতে এসে পড়ে রয়েছে।তখন তিনি আফসোসে নিজেকেই নিজে বলতে লাগলেন, এটা হয়তো ঈশ্বরের কোন পরীক্ষা ছিল! কেন তিনি তার সমস্ত শস্য কণা রাজাকে দিয়ে দেন নি! তাহলে হয়তো ততটাই স্বর্ণ কণা আজ তার কাছে থাকতো।
এই কারণে আমাদের সবসময়ই পরোপকারী হওয়া উচিত। অন্যের উপকার করলে,অন্যের অভাবে তাকে দান করলে, ঈশ্বর স্বয়ং সাহায্যকারীর পাশে এসে দাঁড়ান। হয়তো আজকে আপনি কোন অসহায় কে কিছু দান করলেন, ঈশ্বর আপনাকে তার দ্বিগুণ ফিরিয়ে দেবেন।
অনেকদিন পাঠ করি না। অনেক জায়গায় পিচ,টোন হয়তো ভুল হয়েছে। নিজ গুণে ক্ষমা করে দেবেন।আজ এখানেই শেষ করছি। আবার আসবো নতুন কোন উপস্থাপনা নিয়ে। কেমন লাগলো অবশ্যই জানাবেন। সকলে ভালো থাকবেন।
🌸🌸🌸ধন্যবাদ🌸🌸🌸

আমি পায়েল।ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের রাজধানী কলকাতার কাছাকাছি ডাক্তার বিধান রায়ের স্বপ্নের শহর কল্যাণীর বাসিন্দা।একসময় যদিও চাকরী করেছি কিন্তু বর্তমানে ফুলটাইম ব্লগার এবং ভ্লগার।যদিও নিজেকে এখনও শিক্ষানবিশ মনে করি। আর তা ই থাকতে চাই ।সফল হয়েছি কিনা বা কতদিনে হব তা জানি না, কিন্তু নিজের প্যাশনকেই লক্ষ্য করে এগিয়ে চলেছি।বাকিটা আপনাদের হাতে।আশাকরি আমার সাথে যুক্ত থাকলে আশাহত হবেন না।
Facebook
Instagram
YouTube


OR
Set @rme as your proxy


হুম দিদি ভালো থাকতে হবে ৷ আর নিজে ভালো থাকলেই তো জগৎ ভালো ৷ যা হোক আপনার কবি গুরু রবীন্দ্রনাথের লেখা কৃপণ কবিতা উপস্থাপনা সত্যি অনেক সুন্দর ছিল ৷ আর এর আগেও অনেক বার আপনার এরকম আবৃত্তি করেছেন যা আমি শুনেছি ও দেখেছি ৷
আর এভাবেই নতুন নতুন আবৃত্তি শেয়ার করবেন এমনটাই প্রতার্শা ৷
ধন্যবাদ দিদি
অনেক ধন্যবাদ ভাই।
ধন্যবাদ দাদা পাশে থাকার জন্য।
আসলেই আপনার কবিতা আবৃতি শুনে মনটা ভরে গেল আমার। আপনি এত সুন্দর কবিতা আবৃত্তি করেন যে শুনে মনটা ভরে যায় সাথে সাথে। কবিতার প্রত্যেকটি লাইন আপনি অসাধারণ ভাবে বলেছেন। এবং কবিতার বিষয়বস্তু আপনি নিচে খুব সুন্দর ভাবে লিখেছেন যা পড়ে অনেক কিছুই বুঝতে পারলাম। আপনি ঠিকই বলেছেন আমাদের সব সময় এই পরোপকারী হওয়া উচিত। অন্যের উপকার করলে অন্যের অভাবে তাকে দান করে। খুবই ভালো একটি বিষয় লিখেছেন আপনি। এরকম কথাগুলো ভীষণ ভালো লাগে পড়তে।
ধন্যবাদ দাদা। ☺
আপনি সবসময় খুবই সুন্দর সুন্দর গান এবং কবিতা আবৃত্তি করে থাকেন। যেগুলো আমার কাছে সব সময় ভালো লাগে। আজকে আপনি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের অসাধারণ একটি কবিতা আবৃত্তি করেছেন। আপনার কন্ঠে এই কবিতাটির আবৃত্তি শুনতে ফেরে খুবই ভালো লেগেছে। বারবার শুনতে ইচ্ছে করছিল কবিতা আবৃত্তি। আশা করছি আরও এরকম বিভিন্ন গান এবং কবিতা নিয়ে আমাদের মাঝে হাজির হবেন তাও আপনার কন্ঠে।
অনেক ধন্যবাদ। আপনাদের অনুপ্রেরণা কাম্য।