পালং শাকের ভেজিটেবল চিকেন চাওমিন।।
পরম করুনাময় অসীম দয়ালু, মহান সৃষ্টিকর্তার নামে শুরু করছি-
হ্যালো আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির সদস্য বন্ধুরা। আপনারা সবাই কেমন আছেন। আশা করি আপনারা সবাই আল্লাহর রহমতে অনেক ভালো আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় অনেক ভালো আছি,আলহামদুলিল্লাহ। আজকে আমি আপনাদের সাথে প্রতিদিনের মতো নতুন একটি ব্লগ নিয়ে হাজির হলাম। আমার আজকের ব্লগটি হচ্ছে রেসিপি পোস্ট। আজকে আমি আপনাদের মাঝে ঘরে বানানো পালং শাকের চাউমিন রেসিপি শেয়ার করব। সুস্থ সাস্থের জন্য এই চাউমিন খুবই ফলপ্রসূ। আর টেস্ট ও ধারুন।
বন্ধুরা আমরা প্রতিনিয়ত নতুন নতুন খাবারের সাথে পরিচিত হয়। আমরা যে খাবার তৈরি করি, সে খাবারগুলো খেতে খুবই মুখরোচক হয়। কেননা আমরা বাঙালি তাই। বাঙালিরা সিম্পল পছন্দ করে না গর্জিয়াস পছন্দ করে। বিশেষ করে খাবারের বেলায় তৈলাক্ত ও মসলাদার খাবারই বেশি পছন্দ করে। যায় হোক, পালং শাক একটি উপকারী শাক। আর এই শাক যেভাবেই রান্না করা হয় না কেন খুবই ভালো লাগে। তবে বিশেষ করে বাচ্চারা শাক খেতে চায় না। তাই মায়ের বাচ্চাদের শাক খাওয়ানোর জন্য বিভিন্ন পদ্ধতি অবলম্বন করেন। যেমন আমিও এই পদ্ধতিটি অবলম্বন করেছি। আমার মেয়েটির রুটি পছন্দ করে। তাই তার জন্য পালং শাক ব্ল্যান্ড করে ময়দার সাথে মিশিয়ে রুটি বানিয়ে দিলে, সে অনায়াসে খেয়ে ফেলে। তাছাড়া বাজারের কেনা চাওমিনগুলো আমার মনে হয় আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। তাই চেষ্টা করি একটু সময় নিয়ে ঘরে মজাদার ও স্বাস্থ্যকর চাওমিন তৈরি করতে। এই চাওমিনটি তৈরি করতে অনেকগুলো উপকরণ দিয়ে তৈরি করেছি। কেননা এখন শীতকাল। এখন যদি বিভিন্ন রকম সবজি দিয়ে ইউনিক রেসিপি তৈরি করা না হয় তাহলে কখন করা হবে। আর কিছুদিন পরে সবুজ পালং শাক পাওয়া যাবে না। তাই আমি চিন্তা করলাম পালং শাকের এই চাওমিন রেসিপিটি আপনাদের মাঝে শেয়ার করি রেসিপিটি অনেক সুস্বাদু একটি রেসিপি। যাইহোক বন্ধুরা এখন আপনাদের মাঝে রেসিপিটির প্রত্যেকটি শেয়ার করি।
পালং শাক | পরিমান মত |
---|---|
কাঁচা মরিচ | চার পিস |
পেঁয়াজ | দুই পিস |
ডিম | দুটি |
চিকেনর বুকের মাংস | এক বাটি |
ফুল কপি | পরিমান মত |
আলু | একটি |
ময়দা | পরিমান মত |
নুডুলসের মসলা | একটি |
টমেটো | দুইটি |
হলুদের গুঁড়ো | পরিমান মত |
সরিষার তৈল | পরিমান মত |
রসুন বাটা | পরিমান মত |
আঁদা বাটা | পরিমান মত |
ধনিয়া পাতা | পরিমাণ মতো |
লবন | পরিমান মত |
গাজর | একটি। |
রন্ধন পদ্ধতি
প্রথম ধাপ
প্রথমে পালং শাকগুলো ভালোভাবে ধুয়ে নিয়ে তারপরে একটি কড়াইতে অল্প পানি দিয়ে ঢাকনা দিয়ে ডেকে হালকা ভাব দিয়ে নিলাম।
দ্বিতীয় ধাপ
পাংশাক গুলোকে ভাব দেওয়ার পর, একটি ছাকনি দিয়ে পানিটি ছেকে নিলাম। তারপর পালং শাক ঠান্ডা হয়ে আসার পরে, একটি ব্লেন্ডারে ব্লেন্ড করে নিলাম। তারপর পরিমাণমতো ময়দা ও সরিষার তেল দিয়ে দিলাম। তারপর ব্লেন্ডার করা পালং শাকের পেস্ট ময়দার মধ্যে দিয়ে দিলাম। তারপর পরিমাণ মতো লবণ দিয়ে ভালোভাবে মাখিয়ে নিলাম। এভাবে একটি ময়দার ডো তৈরি করে নিলাম। এই ময়দার সাথে কোন এক্সট্রা পানি ব্যবহার করা হয়নি। তারপর ৩০ মিনিটের জন্য একটি ঢাকনা দিয়ে ঢেকে দিলাম।
তৃতীয় ধাপ
৩০ মিনিট পর পালং শাকের ডো দিয়ে রুটি বেলে নিলাম। তারপর রুটিগুলোকে যথা সম্ভব একটি ছুরি দিয়ে চিকন করে কেটে নিলাম। যত চিকেন করে কাটা হবে তত দেখতে সুন্দর লাগবে। আরেকটু মোটা করে কাটা হলে পাস্তার মত হবে।
চতুর্থ ধাপ
কেটে নিয়ে চাওমিন বানানোর পর। একটি কড়াইতে ফুটন্ত গরম পানির মধ্যে। অল্প পরিমাণ তেল ও লবণ দিয়ে চাওমিনগুলো একটু ভাব দিয়ে নিলাম। তারপর ছেকে নিলাম।
পঞ্চম ধাপ
তারপর একটি ফ্রাই পেনের মধ্যে অল্প পরিমাণে তেল দিয়ে দুটি ডিম ভেজে নিলাম। তারপর ডিমগুলো আলাদাভাবে উঠিয়ে একটা বাটিতে রেখে দিলাম।
ষষ্ঠ ধাপ
তারপর আবারো ফ্রাই প্যানে অল্প পরিমাণে তেল দিয়ে পেয়াজ গুলো দিয়ে দিলাম। পেঁয়াজ কুচিগুলো ভাজা হয়ে গেলে তাতে দিয়ে দিলাম আধা ও রসুনের পেস্ট। আদা রসুনগুলো হালকা ভাজা হয়ে গেলে। তাতে দিয়ে দিলাম চিকেনের টুকরোগুলো। কিছুক্ষণ নাড়াচাড়া করে ভেজে নিলাম।
সপ্তম ধাপ-
এই ধাপে চিকেন গুলো হালকা ভেজে নিয়ে তাতে দিয়ে দিলাম গাজর ও আলু কুচি গুলো। আলু ও গাজরের সাথে অল্প পরিমাণে হলুদের গুঁড়ো দিয়ে দিলাম। তারপর কিছুক্ষণ হালকাভাবে নেড়েচেড়ে ভেজে নিলাম। ভেজে নেওয়ার পর তাতে দিয়ে দিলাম ফুলকপির টুকরো গুলো। তারপর হালকা নাড়াচাড়া করে ঢাকনা দিয়ে কিছুক্ষণের জন্য ঢেকে দিলাম। কেননা এইসবজিগুলো ভালোভাবে সেদ্ধ না হলে খেতে ভালো লাগবে না। তাই ভালোভাবে সিদ্ধ হওয়ার জন্য ঢাকনা দিয়ে ঢেকে ভাপের মাধ্যমে সিদ্ধ করে ভেজে নিতে হবে।
অষ্টম ধাপ-
এ পর্যায়ে দিয়ে দিলাম, টমেটো ও কাঁচামরিচ কুচিগুলো। তার সাথে দিয়ে দিলাম নুডুলসের মসলা। এগুলো ভালোভাবে নেড়েচেড়ে মিশিয়ে নিলাম। তারপর দিয়ে দিলাম আমার তৈরি করা পালং শাকের চাউমিন। তারপর ভালোভাবে নেড়েচেড়ে নিলাম।
নবম ধাপ-
চাওমিনগুলো ভেজিটেবিলের সাথে মিশিয়ে নেওয়ার পর। বেজে রাখা ডিমগুলো দিয়ে দিলাম। তারপর ভালোভাবে মিশিয়ে তাতে দিয়ে দিলাম ধনিয়া পাতা কুচি। পাতা কুচি দেওয়ার পর হালকাভাবে নেড়ে ছেড়ে চাওমিনগুলো চুলা থেকে নামিয়ে পরিবেশন করে নিলাম।
পরিবেশন-
খুবই পুষ্টিকর ও ইউনিক একটি সুস্বাদু পালং শাকের ভেজিটেবল চাউমিন রেসিপিটি খেতে খুবই দারুন হয়েছে।
বন্ধুরা আজ এ পর্যন্তই। কেমন হলো আমার আজকের রেসিপি। অবশ্যই কমেন্টসের মাধ্যমে জানাবেন। সবার জন্য শুভকামনা ও দোয়া রইল। এ প্রত্যাশা রেখে এখান থেকে বিদায় নিয়েছি। আল্লাহ হাফেজ।
সবাইকে অনেক অনেক ধন্যবাদ,আল্লাহ হাফেজ।।
ফটোগ্রাফির বিবরণ:
ডিভাইস | মোবাইল |
---|---|
মডেল | রেডমি নোট-৮ |
শিরোনাম | পালং শাকের ভেজিটেবল চিকেন চাওমিন ।। ।। |
স্থান | নিজবাসা, নারায়নগঞ্জ,ঢাকা,বাংলাদেশ। |
তারিখ | ২১- ০২ -২০২৫ |
কমিউনিটি | আমার বাংলা ব্লগ |
ফটোগ্রাফার | @titash |
আমার পরিচিতি
আমি মোছাঃ মুসলিমা আক্তার নীলা। স্টিমিট প্লাটফর্মে আমি @titash নামে পরিচিত। আমার জন্মস্থান চট্রাগ্রাম বিভাগের ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার ভাদুঘর গ্রামে। আমি বর্তমানে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি মহিলা কলেজে অনার্স দ্বিতীয় বর্ষে বাংলা বিভাগ নিয়ে পড়াশোনা করতেছি। আমি বিবাহিত,আমার একটি কন্যা সন্তান আছে। আমি আমার হাসবেন্ডের সাথে ঢাকা বিভাগের অন্তর্গত নারায়নগঞ্জ জেলায় বসবাস করছি। আমি আমার হাসবেন্ডের মাধ্যমে স্টিমিট প্লাটফর্ম সম্পর্কে জানতে পারি। প্লাটফর্মটার বিষয়ে জেনে আমি এখানে কাজ করার আগ্রাহ প্রকাশ করি। তারপর ২০২৩ সালের ফ্রেব্রুয়ারী মাসে আমার বাংলা ব্লগের মাধ্যমে স্টিমিট প্লাটফর্মে যুক্ত হয়। আমি ভ্রমন করতে,মজার মজার রেসিপি করতে,বই পড়তে, নতুন নতুন বিষয় সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করতে ও সৃজনশীল জিনিষ তৈরী করতে ভালোবাসি। আমি বাঙ্গালী জাতি হিসাবে ও আমার বাংলা ব্লগের সদস্য হতে পেরে নিজেকে নিয়ে গর্ববোধ করি।
![image.png](
Done
পালং শাকের ভেজিটেবল চিকেন চাওমিন তৈরি করেছেন। আপনার রেসিপিটি দেখে লোভ সামলাতে পারছি না আপু। পালং শাক ভাজি খেতে খুব ভালো লাগে। আপনার রেসিপিটি আপনি পর্যায়ক্রমে সম্পন্ন করেছেন এবং সেটা আমাদের মাঝে উপস্থাপন করেছেন। এজন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আপু।
আপনি দেখছি আজকে নিজের হাতে পালং শাকের ভেজিটেবল চিকেন চাওমিন রেসিপি তৈরি করেছেন। আসলে নিজের হাতে তৈরি করা রেসিপি গুলো খেতে একটু বেশি ভালো লাগে। আপনি প্রতিটি উপকরণ একদম সমান ভাবে মিশ্রণ করে রেসিপি টি সম্পন্ন করেছেন। বেশ দারুন হয়েছে আপু।
বাহ আপনি নিজের হাতে পালং ভেজিটেবল চিকেন চাওমিন তৈরি করেছেন। এটা দেখতে তো খুবই লোভনীয় লাগছে আপু। অবশ্যই এটা অনেক স্বাস্থ্যকর একটি খাবার। কারণ বিভিন্ন সবজির সমন্বয়ে একটি রান্না করেছেন। অসংখ্য ধন্যবাদ আপু মজার এই পালং চাওমিন রেসিপি শেয়ার করার জন্য।
বাইরের খাবার গুলো আসলে স্বাস্থ্যসম্মত নয়। বাসায় নিজ হাতে তৈরি করা খাবার গুলোর মজাই আলাদা। আপনি আজকে পালং শাকের ভেজিটেবল চিকেন চাউমিন তৈরি করেছেন। রেসিপির কালার টা খুব লোভনীয় লাগছে দেখতে। খেতে নিশ্চয় সুস্বাদু হয়েছে। রেসিপিটা আগে কখনো খাওয়া হয়নি। সম্ভব হলে একদিন ট্রাই করে দেখব। ধন্যবাদ আপু সুস্বাদু একটা রেসিপি শেয়ার করার জন্য।
দারুন একটা রেসিপি তৈরি করেছেন যেটা দেখে রীতিমত অবাক হয়ে গেলাম। কারণ পালং শাক দিয়ে এভাবে চাউমিন তৈরি করার আইডিয়াটা বেশ ইউনিক লেগেছে আমার কাছে। যদিও আমরা কখনো এভাবে তৈরি করিনি। তবে বাচ্চাদেরকে বিভিন্ন রকম ভাবে শাকসবজি খাওয়ানো হয়ে থাকে। আর আপনি অনেকগুলো সবজিও দিয়েছেন তার পাশাপাশি ডিম দিয়েছেন।দেখেই অনেক লোভনীয় লাগছে।
চিকেন চাওমিন আমার খুব পছন্দের। আসলে চিকেন চাওমিন সত্যি খুব ভালো লাগে। আপনার চিকেন চাওমিন দেখে খেতে খুব ইচ্ছে করতেছে । মনে হচ্ছে বেশ মজাদার এবং সুস্বাদু হয়েছে। আপনার রন্ধন প্রক্রিয়া বেশ দুর্দান্ত হয়েছে। ধন্যবাদ আপনাকে আপু।
বাহ আপু আপনি তো মজার এবং ভিন্নরকম রেসিপি করেছেন। পালং শাকের ভেজিটেবল চিকেন চাওমিন রেসিপি খুব সুন্দর করে করেছেন। তবে এটি ঠিক বাচ্চারা সবজি খেতে চায় না। একটু ভিন্ন রকম রেসিপি করলে বাচ্চারা খেতেও পছন্দ করে। ধন্যবাদ এত মজার রেসিপিটি করে সুন্দর করে আমাদের মাঝে উপস্থাপনা করার জন্য।