রেলওয়ে ভ্রমণের অভিজ্ঞতা ও মায়ের অনুভূতি||~~
বাংলাদেশ রেলওয়ে ভ্রমণ:-
সকল কে শুভেচ্ছা। আশা করি সবাই ভালো আছেন। আলহামদুলিল্লাহ আমিও বেশ ভালোই আছি। আর আপনারা সবাই সব সময় ভালো থাকবেন এটাই প্রত্যাশা করি।
ট্রেন ভ্রমণের দারুন অভিজ্ঞতা
বন্ধুরা আজ আমি রেলওয়ে ভ্রমণের কিছু মজার অনুভুতি এবং অভিজ্ঞতা আপনাদের সাথে শেয়ার করতে যাচ্ছি। আশা রাখছি আপনাদের কাছে ভালো লাগবে।
ট্রেন ভ্রমণের অভিজ্ঞতা সাধারণত খুবই রোমাঞ্চকর এবং স্মৃতিময় হয়। ট্রেনে ভ্রমণ করলে আপনি প্রকৃতির সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারবেন। গ্রামের সবুজ মাঠ, নদী, ফসলের ক্ষেত, আর বিভিন্ন রকমের ছোট ছোট স্টেশন পেরিয়ে যেতে যেতে এক অন্যরকম আনন্দ পাওয়া যায়।
যখন ট্রেনে উঠবেন, প্রথমেই আসন খুঁজে বসবেন। ট্রেনের শব্দ, জানালার বাইরের দৃশ্য, এবং ভ্রমণকারীদের কোলাহল মিলে একটি মজার পরিবেশ তৈরি হয়। অনেক সময় ট্রেনের ভেতরে চা, কফি, খাবারের ফেরিওয়ালা আসে, তাদের থেকে খাবার কিনে খাওয়ার মধ্যেও একটা মজা আছে।
রাতের বেলায় ট্রেনে ভ্রমণ করলে চাঁদের আলোতে প্রকৃতির সৌন্দর্য আরও বেশি ফুটে ওঠে। ট্রেনের জানালা দিয়ে বাতাস এসে মুখে লাগে, আর সেই সঙ্গে প্রকৃতির একটানা শব্দ যেন এক ধরনের সঙ্গীত।
ট্রেন ভ্রমণের আরেকটি বিশেষ দিক হলো বিভিন্ন স্টেশনে থামা। প্রতিটি স্টেশনেই স্থানীয় মানুষের সাথে মেশার এবং তাদের জীবনযাত্রা দেখার সুযোগ পাওয়া যায়। স্টেশনের খাবারগুলোও অনেক সময় বিশেষ আকর্ষণ হয়ে দাঁড়ায়।
ট্রেন ভ্রমণের সময় যদি সঙ্গী থাকে তবে গল্প, গান, খেলা ইত্যাদি করেও সময় কাটানো যায়। আর একা ভ্রমণ করলে নিজের সাথে সময় কাটানোর এবং প্রকৃতির সাথে একাত্ম হওয়ার একটা চমৎকার সুযোগ পাওয়া যায়।
একা ট্রেন ভ্রমণে আমার কিছু অনন্য অভিজ্ঞতা হয়েছে। যেখানে আমি নিজেকে নতুনভাবে আবিষ্কার করার সুযোগ পেয়েছি । একা ভ্রমণের বিশেষত্ব হলো নিজের সাথে সময় কাটানোর সুযোগ দারুন সুযোগ পাওয়া যায়। এবং নিজের চিন্তা, অনুভূতি ও স্বপ্নগুলোর সাথে গভীরভাবে সংযুক্ত হতে পারি ।
শান্তি ও প্রশান্তি: একা ট্রেন ভ্রমণের সময় আমি প্রকৃতির সৌন্দর্য উপভোগ করি। যা চমৎকার ভাবে মানসিক প্রশান্তি এনে দেয়। চলন্ত ট্রেনের জানালা দিয়ে সবুজ মাঠ, নদী, পাহাড়, এবং ছোট ছোট গ্রাম দেখতে দেখতে মনটা একধরনের শান্তিতে ভরে ওঠে।
আত্মমগ্নতা: এই সময়টা নিজের চিন্তা-ভাবনার সাথে একাত্ম হওয়ার জন্য আদর্শ একটি সময় । মাঝে মাঝেই বই পড়ি , গান শুনি বা ডায়েরিতে কিছু মনের ভাব লেখে রাখি । অতীত স্মৃতি কিংবা আগের ভ্রমণ অভিজ্ঞতা বা জীবনের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে ভাবতে ভাবতে ভাবতে সময় বেশ কাটাতে পারি।
নতুন মানুষ ও সংস্কৃতির সাথে পরিচিতি: একা ভ্রমণ করলে অনেক নতুন মানুষের সাথে পরিচিত হওয়ার সুযোগ হয়। সহযাত্রীদের সাথে আলাপচারিতা শুরু করি কারণ তাঁদের থেকে নতুন সংস্কৃতি ও জীবনের ভিন্ন দিক সম্পর্কে জানতে পারি ।
স্বাধীনতা: একা ভ্রমণের সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো স্বাধীনতা। আপনি নিজের ইচ্ছেমতো যেকোনো কাজ করতে পারেন। যেকোনো স্টেশনে নামতে পারেন, যেখানে ইচ্ছে সেখানে ঘুরে বেড়াতে পারেন।
নিজেকে চ্যালেঞ্জ করা: একা ভ্রমণ করার সময় নিজেকে চ্যালেঞ্জ করার একটা সুযোগ পাওয়া যায়। একা থাকার ভয়, নিরাপত্তার বিষয়, খাবার ও বিশ্রামের ব্যবস্থা ইত্যাদি নিজের সামলাতে হয়। এতে আত্মবিশ্বাস বাড়ে এবং নতুন কিছু শেখা যায়।
সব মিলিয়ে, একা ট্রেন ভ্রমণ আমার জীবনের একটি স্মরণীয় অধ্যায়।
বিদায় বেলা মায়ের অনুভূতি:-
মাকে ট্রেনে তুলে দিয়ে, সন্তান যখন প্লাটফর্ম থেকে মায়ের দিকে চেয়ে থাকে,,
ট্রেনের জানালা দিয়ে প্লাটফর্মে দাঁড়িয়ে থাকা সন্তানের দিকে তাকিয়ে মায়ের মন ভরে উঠলো এক অদ্ভুত অনুভূতিতে। ট্রেনের গন্তব্য যেখানেই হোক, সন্তানের মুখ দেখে মায়ের মনে যেন এক শান্তির পরশ বুলালো। সন্তানের মুখে থাকা মৃদু হাসি আর চোখের গভীরতা মাকে সময়ের অতলে নিয়ে গেলো, যেখানে প্রথমবার সন্তানের মুখ দেখা, তার প্রথম হাঁটা, প্রথম কথা বলা—সব স্মৃতিগুলো মায়ের মনে তাজা হয়ে উঠলো।
এই মুহূর্তে মায়ের হৃদয়ে মিশে আছে সন্তানের জন্য গভীর ভালোবাসা, স্নেহ, এবং কিছুটা উদ্বেগ। সন্তানের প্রতি মায়ের এ অনুভূতি যে কত গভীর, তা ভাষায় প্রকাশ করা কঠিন। মায়ের মনে একটাই চিন্তা, "সন্তান যেন সবসময় ভালো থাকে, সুস্থ থাকে, সুখী থাকে।"
মা জানেন, ট্রেনের যাত্রার সাথে সাথে দূরত্ব বাড়বে, কিন্তু হৃদয়ের বাঁধন কখনও আলগা হবে না। মা জানেন, যে কোনো পরিস্থিতিতে তিনি তার সন্তানের পাশে থাকবেন, তাকে ভালোবাসা, স্নেহ, আর মমতায় আগলে রাখবেন। এই মধুর বিদায়ক্ষণ মায়ের মনে এক গভীর অনুভূতির সঞ্চার করে, যা কেবল একটি মা-ই অনুভব করতে পারেন।
আমি ছন্দের রাজ্যে, ছন্দরাণী কাব্যময়ী-কাব্যকন্যা বর্তমান প্রজন্মের নান্দনিক ও দুই বাংলার জনপ্রিয় কবি সেলিনা সাথী। একধারে লেখক, কবি, বাচিক শিল্পী, সংগঠক, প্রেজেন্টার, ট্রেইনার, মোটিভেটর ও সফল নারী উদ্যোক্তা।আমার পুরো নাম সেলিনা আক্তার সাথী। আর কাব্যিক নাম সেলিনা সাথী। আমি নীলফামারী সদর উপজেলায় ১৮ মার্চ জন্মগ্রহণ করি। ছড়া কবিতা, ছোট গল্প, গান, প্রবন্ধ, ব্লগ ও উপন্যাস ইত্যাদি আমার লেখার মূল উপজীব্য। আমার লেখনীর সমৃদ্ধ একক এবং যৌথ কাব্যগ্রন্থের সংখ্যা ১৫ টি। আমার প্রথম প্রকাশিত কবিতার বই- সাথীর শত কবিতা,অশ্রু ভেজা রাত, উপন্যাস মিষ্টি প্রেম, যৌথ কাব্যগ্রন্থ একুশের বুকে প্রেম। জীবন যখন যেমন। সম্পাদিত বই 'ত্রিধারার মাঝি' 'নারীকণ্ঠ' 'কাব্যকলি' অবরিত নীল সহ আরো বেশ কয়েকটি বই পাঠকহমলে বেশ সমাদৃত। আমি তৃণমূল নারী নেতৃত্ব সংঘ বাংলাদেশ-এর নির্বাচিত সভাপতি। সাথী পাঠাগার, নারী সংসদ, সাথী প্রকাশন ও নীলফামারী সাহিত্য ও সংস্কৃতি একাডেমির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি। এছাড়াও আমি জেলা শাখার সভাপতি উত্তোরন পাবনা ও বাংলাদেশ বেসরকারি গ্রন্থাগার পরিষদ নীলফামারী জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক এবং কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সমাজ কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদকের দায়িত্বে রয়েছি। আমি মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীনে ২০১৪ সালে নীলফামারী জেলা ও রংপুর বিভাগীয় পর্যায়ে সমাজ উন্নয়নে অসামান্য অবদানের জন্য শ্রেষ্ঠ জয়িতা অ্যাওয়ার্ড অর্জন করেছি। এছাড়াও সাহিত্যের বিভিন্ন শাখায় ও সামাজিক সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে বিশেষ অবদান রাখায় আমি বহু সম্মামনা পদক অর্জন করেছি। যেমন সাহিত্যে খান মইনুদ্দিন পদক ২০১২। কবি আব্দুল হাকিম পদক ২০১৩। শিশু প্রতিভা বিকাশ কেন্দ্র কর্তৃক সম্ভাবনা স্মারক ২০১৩। সিনসা কাব্য সম্ভাবনা ২০১৩। বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস উদযাপন উপলক্ষে সম্মামনা স্মারক ২০১৩। জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ৩৭ তম মৃত্যুবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে সম্মাননা স্মারক ২০১৩। জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম এর ১১৫ তম জন্ম জয়ন্তী উদযাপন উপলক্ষে ২০১৪। দৈনিক মানববার্তার সম্মামনার স্মারক ২০২৩। চাতক পুরস্কার চাতক অনন্যা নারী সম্মাননা ২০২৩ ওপার বাংলা মুর্শিদাবাদ থেকে মনোনয়ন পেয়েছি। এছাড়াও ,ওপার বাংলা বঙ্গবন্ধু রিসার্চ এন্ড কালচারাল ফাউন্ডেশন ভারত বাংলাদেশ। কবিগুরু স্মারক সম্মান ২০২৪ অর্জন করেছি।
বিষয়: ভ্রমণ
কমিউনিটি : আমার বাংলা ব্লগ
আন্তরিক ভাবে ধন্যবাদ জানাই এই কমিউনিটির সকল সদস্য কে, ধন্যবাদ.......
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
ট্রেনে ভ্রমণ করতে আমার ও ভালো লাগে।দিনের বেলা ট্রেন অনেক ভ্রমন করেছি কিন্তু রাতে করিনি।আসলেই ট্রেনে ভ্রমন করলে গ্রাম বাংলার প্রকৃতিক দৃশ্য দেখতে বেশ ভালো লাগে।ধন্যবাদ
ট্রেন ভ্রমণ আমিও দারুণভাবে উপভোগ করি। আর সেই অনুভূতিরটুকুর একাংশ আজ আপনাদের সাথে শেয়ার করলাম। আপনার ও ট্রেন ভ্রমন ভালো লাগে জেনে খুশি হলাম। ভালো থাকবেন সব সময়। 💞
আমার প্রথম ট্রেন ভ্রমণের সময় বগি ছিল ঢ। কিন্তু বুঝতে পারেনি ইংরেজি লেখা থাকায়। কিন্তু খুব আনন্দ লেগেছিল। আপনার অভিজ্ঞতা পড়ে বেশ ভালো লাগলো।
ধন্যবাদ।।।
গতকাল যখন তুমি চলে যাচ্ছিলা, অনেকটাই কষ্ট হচ্ছিল। এই বেশ কয়েকদিন বাসায় একসাথে ছিলা একসাথে খাওয়া দাওয়া করেছি, একসাথে সব ধরনের কাজ করেছি। সেগুলো আবার বিলীন হয়ে গেল মনে হচ্ছে। আসলে এই বিষয়গুলো কখনো তো উপস্থাপন করতে পারি না।
বাসের থেকে ট্রেন ভ্রমণ করতে আমার অনেক ভালো লাগে।ছোটবেলা থেকেই ট্রেন ভ্রমণ টাই বেশি করেছি। মাকে ট্রেনে উঠিয়ে দেওয়ার পর সন্তান যখন মাকে চলে যাওয়া দেখে সত্যিই এটা অনেক কষ্টদায়ক।মা সন্তানের সম্পর্ক এতটাই ভালোবাসায় জড়ানো একটু দূরে গেলেই
অনেক কষ্ট লাগে মনে। ট্রেন চলার সময় জানলা দিয়ে প্রাকৃতিক দৃশ্যগুলো দেখলে সব থেকে বেশি ভালো লাগে।অনেক ভালো লাগলো আপনার পোস্টটি পড়ে ধন্যবাদ আপু।
আমার পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়ে,গঠনমূলক মন্তব্য করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। প্রিয় আপু। আর এটাও ঠিক যে মা ও সন্তানের নারী ছেড়া সম্পর্ক। এটি আত্মার সম্পর্ক। তাই একজন আরেকজনের থেকে দূরে চলে গেলে, সত্যিই এটা অনেক বেদনাদায়ক। কষ্টের।