স্বরচিত কবিতা : অবহেলিত নারী।
ওরম করুণাময় অসীম দয়ালু মহান সৃষ্টিকর্তার নামে শুরু করতেছি-
হ্যালো আমার বাংলা ব্লগের প্রিয় সদস্য বন্ধুরা, কেমন আছেন সবাই । আশা করি সবাই অনেক ভালো আছেন। আমিও সৃষ্টিকর্তার অশেষ রহমতে অনেক ভালো আছি। আজকে আমি আপনাদের মাঝে একটি স্বরচিত কবিতার পোস্ট নিয়ে হাজির হয়েছি। আমি জানিনা আমি কেমন কবিতা লিখতে পারি। তবে কবিতা লেখার অভ্যাস আমার আগে থেকেই আছে। তাছাড়া বর্তমানে বাংলা বিভাগ নিয়ে পড়ছি। হাতের মধ্যে অনেক ছন্দ রয়েছে। সেই ছন্দ গুলো মিলিয়ে আপনাদের মাঝে নতুন নতুন কবিতা শেয়ার করার চেষ্টা করছি।আমার আজকের স্বরচিত কবিতাটি হচ্ছে "অবহেলিত নারী" চলুন আমার লেখা স্বরচিত কবিতাটি আপনাদের মাঝে শেয়ার করি।
কবিতার মূলভাব :
কবিতাটি মূলত অবহেলিত নারীদেরকে নিয়ে। কবি নিজেকে অবহেলিত নারীদের মধ্যে একটি নারী ভেবে নিয়েছেন। এই পৃথিবী সৃষ্টির প্রথম থেকে নারীরা লাঞ্ছিত ও অপমানিত হয়ে আসছে। নারীরা সব জায়গায় অবহেলিত। নারীদের কোন নির্দিষ্ট ঘর নেই। তারা অন্যের সংসারটাতে প্রচুর পরিশ্রম করে। কিন্তু সেই পরিশ্রমের কোন মজুরিই নেই। নেই কোন সম্মান। মেয়ে হয়ে জন্মানোর কারণে, বাবার বাড়ি শশুর বাড়ি কোন জায়গাতেই তার আশ্রয় হয় না। একটা সময় বৃদ্ধ হলে অধিকাংশ নারী বৃদ্ধাশ্রমে যেতে হয়। যে মায়ের গর্ভে জন্ম নেই সে মাকেই সম্মান করে না। সে মাকেই শেষ মুহূর্তে নিজের কাছ থেকে দূরে ঠেলে দেয়। অনেক পুরুষরা আছে নারীদেরকে ছলনাময়ী বলে। তাদেরকে খারাপ বলে সম্বোধন করে। অথচ কোন নারী কোন ছেলের পিছনে ঘুরঘুর করে প্রেম করার প্রস্তাব দেয় না। এই ছেলেটি মেয়েটিকে প্রেমের প্রস্তাব দেই। তারপর মেয়েটিকে খারাপ বানাই। আর সেই ছেলেই নারীকে খারাপ বলে। আসলে খারাপটা কে? অনেক নারীরা রাস্তাঘাটে বখাটেদের হাতে অপমানিত হয়। অনেক নারীরা ধর্ষণের শিকার হয়। যার কোন বিচার এই সমাজে নেই। এই সমাজটা নিজের ঘরের নারীদেরকে সম্মান করে না। তাহলে কিভাবে বাহিরের নারীকে সম্মান করবে। নারীরা তার জীবন দিয়ে অন্যের সংসারকে সাজিয়ে গুজিয়ে রাখে। দিনশেষে অত্যাচারের শিকার হয়। অথচ এই নারী ছাড়া এই পৃথিবীটা এত সুন্দর হত না। প্রত্যেকটা ঘর ঘুছানো থাকতো না। একটা পুরুষ নারী ছাড়া অসম্পূর্ণ। একটা বাড়িতে যদি নারী না থাকে তাহলে সে বাড়িতে শূন্যতা বিরাজ করতো। নারীরা কোথাও তার নিজস্ব মতামত প্রকাশ করতে পারে না। কারণ সবাই তাকে দুর্বল মনে করে। তার প্রিয় মানুষটিও তাকে অবহেলা করে। যে মানুষটি সারাদিন তার স্বামীর সংসারটিকে আগলে রাখে। সেই স্বামী তাকে অবহেলা করে। তার সাথে হাসিমুখে কথা বলে না। বর্তমানে এই যুগটাতে এসেও অর্থাৎ সভ্যতার যুগেও নারীরা লাঞ্ছিত হচ্ছে। তাই নারীদের দুঃখ, যন্ত্রণাকে একটু উপলব্ধি করলাম এই কবিতা লেখার মাধ্যমে।
জন্মেছি যারা ধরণীতে হয়ে নারী,
আমাদের নাই নির্দিষ্ট কোন ঘরবাড়ি।
তবুও আমরা অন্যের ঘর
ঝাড়িয়া মুচিয়া যতন করিয়া রাখি।
চারিদিকে হাহাকার, হচ্ছে নারী অত্যাচারী।
বাবার বাড়ির বুঝা নারী, শশুর বাড়ির দাসী।
অবহেলিত জীবন আমাদের,
জন্মেছি বলে হয়ে নারী।
গর্ভে সন্তান ধারণ করে হইয়া জননী।
সেই নারীকে সম্মান করিতে,
এই জগতে আজ কোথাও দেখিনি।
তবে কেন নারী তুমি বৃদ্ধাশ্রমের বাসিনী।
অন্যায়ের প্রতিবাদ করিতে না পারি।
দুর্বল ভাবে সবাই আমায় আমি যে এক নারী।
জগতের ভুল ভ্রান্তি দুই নয়নে দেখি।
অশ্রু ভেজা নয়ন আচল দিয়া মুছি।
নারী তুমি রবেরই এক অনন্য সৃষ্টি।
কারো চোখে হলেনা তুমি অনন্য সুন্দরী।
তুমি ছাড়া শূন্য প্রতিটি ঘরবাড়ি,
তবে কেন সবাই বলে তুমি অলক্ষী।
নারী শুধু ভোগবিলাসী প্রয়োজনের কাঙ্গালিনী।
তবে কেন রাস্তায় ধর্ষিতা হয় নারী।
যার ছোঁয়ায় নারী হলো কলঙ্কিনী,
সেই বলে তুই নষ্টা ছলনাময়ী নারী।
স্বামীর ঘরে সারাদিন খাটিয়া
দিনশেষে পাওনা একটা হাসি।
যাদের জন্য রাখো জীবন বাজি,
তারা কেউ আজও বলেনি তোমায় ভালোবাসি।
বন্ধুরা কবিতাটি কেমন হলো অবশ্যই আপনাদের কাছে জানার আগ্রহ রইল। আশা করি কবিতাটি সবার কাছেই ভালো লাগবে। যায়হোক সবাই ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন। সবাই সবার জন্য দোয়া করবেন।
আমার পরিচিতি
আমি মোছাঃ মুসলিমা আক্তার নীলা। স্টিমিট প্লাটফর্মে আমি @titash নামে পরিচিত। আমার জন্মস্থান চট্রাগ্রাম বিভাগের ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার ভাদুঘর গ্রামে। আমি বর্তমানে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি মহিলা কলেজে অনার্স তৃতীয় বর্ষে বাংলা বিভাগ নিয়ে পড়াশোনা করতেছি। আমি বিবাহিত,আমার একটি কন্যা সন্তান আছে। আমি আমার হাসবেন্ডের সাথে ঢাকা বিভাগের অন্তর্গত নারায়নগঞ্জ জেলায় বসবাস করছি। আমি আমার হাসবেন্ডের মাধ্যমে স্টিমিট প্লাটফর্ম সম্পর্কে জানতে পারি। প্লাটফর্মটার বিষয়ে জেনে আমি এখানে কাজ করার আগ্রাহ প্রকাশ করি। তারপর ২০২৩ সালের ফ্রেব্রুয়ারী মাসে আমার বাংলা ব্লগের মাধ্যমে স্টিমিট প্লাটফর্মে যুক্ত হয়। আমি ভ্রমন করতে,মজার মজার রেসিপি করতে,বই পড়তে, নতুন নতুন বিষয় সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করতে ও সৃজনশীল জিনিষ তৈরী করতে ভালোবাসি। আমি বাঙ্গালী জাতি হিসাবে ও আমার বাংলা ব্লগের সদস্য হতে পেরে নিজেকে নিয়ে গর্ববোধ করি।
![image.png](
Done
অতীতের অভিজ্ঞতা থেকে যদি বলি নারীরা আসলে অবহেলিত। তবে বর্তমান সময়ে নারীরা অনেকটাই স্বাধীন বলা যায়। স্বাধীন বলতে এমনটা নয় যে আমরা ডানা গজিয়ে উঠতে পারব। সব কিছুর মধ্যে একটা সীমাবদ্ধতা থাকে। কিছু কিছু নারীরা আসলে সীমাবদ্ধতা লঙ্ঘন করে। তারপরেও নারীরা অনেক বেশি অবহেলিত চারপাশে। সুন্দর একটি কবিতা লিখেছেন আপনি অনেক ভালো লেগেছে পড়ে।
জ্বি আপু নারীরা একদম ডানা মেলে উড়তে পারবে এরকম স্বাধীনতা এখনো পায়নি। এছাড়া এমন স্বাধীনতা মেয়েরা চায় না মেয়েরা চায় একটু সম্মান ভালোবাসা।
আপনার লেখা একদম হৃদয়ে লাগলো আপু। যাদের মধ্যে বিবেক বুদ্ধি ঠিক রয়েছে তারা কখনো মা জাতিকে অসম্মান করতে পারে না। আজকে আপনি নারীর জীবন বৈশিষ্ট্য নিয়ে সুন্দর কবিতা লিখেছেন। যে সমস্ত সন্তানেরা তার মাকে বৃদ্ধাশ্রমে রেখে আসে তারা এক প্রকার কুলাঙ্গার।
ভাইয়া আপনি একদম ঠিক কথা বলেছেন, যে মা জন্ম দিয়েছে সে মাকে যে মানুষ অসম্মান করে তারা সমাজে ঘৃণিত ব্যক্তি।
এটাই মেয়ে মানুষের জীবন। কি অদ্ভুত তাই না। বাবার বাড়ি থেকে স্বামীর বাড়ি। এরপর আবার দায়িত্ব চলে যাবে সন্তানের পর। এর মধ্যে কত পরিশ্রম কত ভালোলাগা মন্দ লাগা। কিন্তু যাদের জন্য পরিশ্রম করা হবে তারা কখনো বুঝবেনা পরিশ্রমের মূল্য। অনেক সুন্দর লিখেছেন বোন। ভালো লাগলো বাস্তবতা কবিতার ভাষায় লিখতে দেখে।
জি আপু যদি বুঝতো এই পরিশ্রমের মূল্য তাহলে নারীরা এত অসম্মানিত হতো না। ধন্যবাদ আপু।
মেয়েদের জীবন এরমই। সমাজ মেয়েদের এই জায়গাই দেয়। বিশেষ করে আমাদের মতো সমাজে। আপনার কবিতার প্রতিটি লাইন সত্য৷ জ্বর জ্বালা যাই হোক নারী কোনদিন রানী হয় না। খুব খুব ভালো লিখেছেন৷
নারী যদি রানী হত তাহলে দাসী হত কে?এটাই আমাদের সমাজের প্রশ্ন?
কবিতাটি নারীর প্রতি অবিচার, অসম্মান এবং অবহেলার প্রতি গভীর প্রশ্ন তুলে ধরে, সেই সঙ্গে নারী জীবনের শক্তি ও সাহসিকতাকেও সম্মান জানায়। এটি আমাদের মনে করিয়ে দেয়, নারীর প্রতি সমান মর্যাদা ও ভালোবাসার প্রয়োজন। আপনাকে ধন্যবাদ সুন্দর একটি কবিতা শেয়ার করার জন্য।
আপু আপনি একদম ঠিক কথা বলেছেন। আমি এই কবিতাটি মূলত রচনা করেছি নারীদেরকে সম্মানের প্রয়োজন বোধে। যাতে সবাই বুঝতে পারে নারীদেরকে সম্মান করতে হবে। নারীরা সম্মানের যোগ্য।
আজকে আপনি খুব সুন্দর একটি কবিতা লিখেছেন।অবহেলিত নারী কবিতাটি পড়ে বেশ ভালো লাগলো। তবে একদম বাস্তবিক কথা দিয়ে আপনি কবিতাটি লিখেছেন। তবে নারীরা বেশিরভাগ জায়গায় অবহেলিত হয়। সন্তানের কাছেও বৃদ্ধ বয়সে মায়েরা অবহেলিত হয়। তবে চমৎকার একটি কবিতা লিখেছেন পড়ে বেশ ভালো লাগলো।
জি ভাইয়া নারীর জীবনটাই অদ্ভুত। ছোট থাকে একদম বৃদ্ধকাল পর্যন্ত তারাকোন সম্মান ভালোবাসা কিছুই পায় না। তারা ছোট থেকে বৃদ্ধকাল পর্যন্ত অবহেলিত হয়ে আসছে।
নারী হলো মায়ের জাতি। তবে এরা যে অবহেলিত কথাটা একেবারে মিথ্যাও না। বিভিন্ন ভাবে এখনও মেয়েটা অবহেলিত অত্যাচারিত হয়। তবে আগের সেই জায়গা টাই আর নেই। দারুণ লিখেছেন কবিতা টা ভাই। বেশ ভালো লাগল।
জি ভাই নারী মায়ের জাতী হলেও এখন আপন মায়ের সম্মান সন্তানরা করে না। তাহলে অন্যের মাকে কিভাবে সম্মান করবে। ধন্যবাদ ভাইয়া।
খুবই সুন্দর একটি কবিতা লিখেছেন অবহেলিত নারীদের নিয়ে। আসলে আমার কাছে মনে হয় নারীরা সবসময় অবহেলিত। তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে সেটা ভিন্ন হলেও বেশিরভাগই এরকম। বিশেষ করে নারীদের নিজের কোন ঘর থাকে না যার জন্য যখনই কোন কিছু হয় তখন নারীরা বেশিরভাগই নিজেদেরকে অবহেলিত মনে করে অসহায় মনে করে। যাই হোক আপনার এই কবিতাটি পড়ে আমার কাছে বেশ ভালো লেগেছে। ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর একটি কবিতা লিখে আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
ঠিক বলেছেন নারীরা অন্যের সংসারকে সাজিয়ে গুছিয়ে রাখে ।কিন্তু দিন শেষে তারা অত্যাচারের শিকার হয় । আসলেই আপনার কবিতাটি পড়ে অনেক ভালো লাগলো ধন্যবাদ শুভকামনা রইল।