সুগন্ধি স্মৃতির জানালায় খুলে দিলো এক গুচ্ছ হাজার গোলাপ ফুলের ফটোগ্রাফি।।।

🥰.. আসসালামুয়ালাইকুম ...🥰

🥰...এবং হিন্দু ভাই বোনদের কে আদাব.💗🙏।আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির সকল বন্ধুরা সবাই কেমন আছেন ? আশা করছি সকলেই ভালো আছেন। আমি আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি। আমি আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির একজন নতুন সদস্য, এই প্লাটফর্মের সাথে দীর্ঘ কয়েক মাস আগে যুক্ত হয়েছি। সত্যি আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিতে যুক্ত হতে পেরে আমার কাছে অনেক ভালো লাগতেছে । আজকে আমি আপনাদের সাথে হারিয়ে যাওয়া শৈশবের সুগন্ধির হাজার গোলাপ ফুলের গল্প/ ফটোগ্রাফি শেয়ার করবো । আশাকরি আপনাদের প্রত্যেকের অনেক অনেক ভালো লাগবে। চলুন এবার শুরু করা যাক।

উপরে যে ফটোগ্রাফি দেখতে পাচ্ছেন এটি মূলত, হাজার গোলাপ ফুল।এটি বাংলাদেশের একটি দুর্লভ ও অনন্য সৌন্দর্যমণ্ডিত ফুল, যা হাজার গোলাপ ফুল নামে পরিচিত।এর ফুলগুলো গোলাকার, গোলাপি-সাদা মিশ্রিত, এবং একসঙ্গে গুচ্ছ আকারে ফুটে থাকে, যা একে অন্য ফুলের চেয়ে স্বতন্ত্র করে তোলে। হাজার ফুল দেখতে ছোট ছোট গোলাপি-সাদা কুঁড়ির মতো, যা পরে আস্তে আস্তে ফোটে। ফুলের মধ্যভাগ সাদা রঙের হয় এবং এটি প্রকৃতিতে এক দুর্দান্ত শোভা তৈরি করে। ফুলগুলো সাধারণত বসন্তকালে বেশি দেখা যায়। হাজার গোলাপের গাছের পাতা বড়, সবুজ এবং কিছুটা মোটা ধরনের হয়, যা গাছটিকে চমৎকার রূপ দেয়।

ছোট ছোট গোলাপি-সাদা কুঁড়ি গুচ্ছবদ্ধ হয়ে ফুটে থাকে, তাই হয়তো এই হাজার গোলাপ নাম দেওয়া হয়েছে। তবে শুধু রূপে নয়, এর বিশেষত্ব সুগন্ধেও। রাতের বেলায় এর সুবাস কয়েক বাড়ি দূর পর্যন্ত ছড়িয়ে যায়, যেন পুরো পরিবেশটা মিষ্টি সুগন্ধে ভরে ওঠে।

এই ফুলের গাছ নিয়ে আমাদের দাদি-নানিদের মধ্যে একটা মজার ধারণা ছিল। তারা বলতেন, রাতের বেলায় এই ফুলের গন্ধে সাপ আসে! তাই বাড়ির ভিতরে এই গাছ লাগাতে দিতেন না, বরং বাড়ির পিছনে বা একপাশে লাগানো হতো। তখন এসব কথা শুনে মনে ভয় কাজ করলেও, এখন মনে হলে হাসি পায়। তবে এটাও সত্যি যে, এই গাছের সৌন্দর্য অন্যরকম, বাড়ির আশপাশের পরিবেশকে এক অনন্য রূপ দেয়।

ছোটবেলায় এই গাছ আমাদের এলাকায় প্রচুর দেখা যেত, কিন্তু এখন এটি তেমন চোখে পড়ে না। আধুনিক বাগানের ফুল আর বাহারি গাছের ভিড়ে হাজার গোলাপ যেন হারিয়ে গেছে। কিন্তু সেদিন হঠাৎ করে এই গাছের দেখা পেলাম আমার ছোট চাচার বাড়িতে! বহুদিন পর এই ফুল দেখে যেন শৈশবের দিনগুলো ফিরে এল মনে।শৈশবের স্মৃতিগুলো যেন ঠিক তেমনই, কিছু কিছু হারিয়ে যায় সময়ের স্রোতে, আবার কিছু স্মৃতি হঠাৎ করেই ফিরে আসে, কোনো চেনা গন্ধ বা দৃশ্যের মাধ্যমে। আমার জন্য তেমনই এক স্মৃতির দরজা খুলে দিল হাজার গোলাপ ফুল দেখে।

আমি দেরি না করে সঙ্গে সঙ্গে ফোন বের করে ফটোগ্রাফি করা শুরু করলাম। দিনের আলোতে, রাতের আলোতে , যতটা সম্ভব এর সৌন্দর্য ধরে রাখতে চাইলাম ক্যামেরার ফ্রেমে। প্রতিটি ছবিতে যেন এক টুকরো শৈশব বন্দি হয়ে গেল।

এই ফুল শুধু গন্ধ ছড়ায় না, স্মৃতিও ছড়ায় শৈশবের, পরিবারের, দাদি-নানির গল্পের। আজকের দিনে দাঁড়িয়ে এই ফুলকে দেখে মনে হলো, হারিয়ে যাওয়া সব জিনিসই কি সত্যি হারিয়ে যায়? নাকি সঠিক মুহূর্তে তারা ফিরে আসে, আমাদের জীবনের গল্পে নতুন এক রঙ যোগ করতে?

এই হাজার গোলাপ ফুলের মতো হারিয়ে যাওয়া অনেক ছোটখাটো সৌন্দর্য হয়তো এখনো কোথাও লুকিয়ে আছে। আমাদের শুধু সময় নিতে হবে, খুঁজে বের করতে হবে, এবং সেই মুহূর্ত গুলোকে ধরে রাখতে হবে, হয় স্মৃতিতে, নয়তো ফোটোগ্রাফির মধ্যে ।

আবার বাংলাদেশের গ্রামীণ এলাকায় এই ফুল মাঝে মাঝে দেখা গেলেও, এটি অনেকের কাছে এখনো অজানা। এটি ঔষধি গুণসম্পন্ন একটি উদ্ভিদ, যা আয়ুর্বেদিক চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়। তবে এর কষ কিছুটা বিষাক্ত হতে পারে, তাই এটি সরাসরি ত্বকে লাগানো উচিত নয়।

প্রকৃতির এই অনন্য সৃষ্টি আমাদের চারপাশের সৌন্দর্যকে আরও সমৃদ্ধ করে হাজার গোলাপ ফুল।

এই ছিল আজকের ব্লগ । আশা করি আপনাদের কাছে ভালো লাগবে।কার কাছে কেমন লেগেছে তা অবশ্যই কমেন্টের মন্তব্য করে জানাবেন। কোন ভুল ত্রুটি হলে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন। আজকের মত বিদায় নিচ্ছি, আবার নতুন কিছু নিয়ে হাজির হবো আপনাদের মাঝে।সেই পর্যন্ত সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন এবং সবার জন্য অনেক শুভকামনা রইল ।

আমার নাম মোছাঃ সামছুন্ নাহার সুইটি । আমি একজন বাংলাদেশী মুসলিম নাগরিক । আমি আমার মাতৃভাষা বাংলায় কথা বলতে ভালোবাসি। আমার বাড়ি বাংলাদেশের রংপুর জেলার বদরগঞ্জ উপজেলায় অবস্থিত। আমি অনার্স প্রথম বর্ষে পড়ালেখা করি । আমি পড়ালেখা করার পাশাপাশি স্টিমিট প্লাটফর্মে কাজ করার জন্য যুক্ত হয়েছি । আমি গত ২০২৪ সালের এপ্রিল মাসে এই প্লাটফর্মের মধ্যে যুক্ত হই । এই প্লাটফর্মের মধ্যে যুক্ত হতে পেরে নিজেকে অনেক ভাগ্যবান মনে করি ।আমি ভ্রমণ করতে অনেক বেশি পছন্দ করি।সেই সাথে নতুন নতুন ফটোগ্রাফি করতে ও ইউনিক রেসিপি এবং নতুন নতুন ইউনিক ডাই তৈরি করতে বেশ পছন্দ করি । আর স্টিমিট প্ল্যাটফর্মকে আঁকড়ে ধরে ভবিষ্যতে আরো এগিয়ে যেতে চাই, এটাই আমার লক্ষ্য।