রয়েল ফলের আচার রেসিপি।
কেমন আছেন "আমার বাংলা ব্লগ"এর সকল সদস্যরা? আশা করি সৃষ্টিকর্তার আশীর্বাদে সবাই খুব ভালো আছেন। আমিও খুব ভালো আছি। আজ আমি একটি পোস্ট নিয়ে আপনাদের মাঝে উপস্থিত হয়েছি। আশাকরি আমার পোস্টটি পড়ে আপনাদের খুব ভালো লাগবে।
বাড়িতেই যেহেতু রয়েল ফল গাছ রয়েছে এবং গাছের ফল সবই পেকে গেছে তাই সংরক্ষণ করে রাখলে সারা বছরই মোটামুটি খাওয়া যাবে। রয়েল ফল এত সুন্দর আঙ্গুরের মতো থোকা থোকা হয়ে ফলে যে সব ফল একসাথেই থোকা ধরে পেকে যায়। গাছে যখন এমন সুন্দর ফল ধরে তখন গাছ দেখতে অনেক বেশি সুন্দর লাগে। প্রত্যেকটা ডালে ডালে এই রয়েল ফল থোকা দেখা যায়। এই ফল খুবই কম পাওয়া যায় অনেক মানুষই এই ফল চেনে না বললেই চলে। আমাদের বাড়িতে অনেকে এই ফল প্রথম দেখেছে এবং প্রথম খেয়েছে। আবার অনেকে আগে থেকেই এই রয়েল ফলের সাথে পরিচিত ছিল। তবে এই ফল দেখতে এতটাই সুন্দর এবং লোভনীয় যে যেকোনো ব্যক্তির দৃষ্টি আকর্ষণ করবে। এই রয়েল গাছের দিকে যে কত মানুষের নজর লেগেছে তা গুনে শেষ করা যাবে না। যেহেতু একসাথে পেকে গেছিল তাই সব ফল একবারে গাছ থেকে পেড়ে নিয়ে বাড়িতে সবাইকে এই রয়েল ভাগ করে দিয়ে আমরাও কিছু রেখে দিলাম। আজ ভাবছি যেহেতু অনেক বেশি রয়েছে রয়েল ফল তাই আচার বানিয়ে রেখে দেবো এবং দীর্ঘদিন যাবত খেতে পারব। তাহলে চলুন শুরু করি আজকের রয়েল ফলের আচার।
-:রয়েল ফলের আচার তৈরি উপকরণ:-
রয়েল ফল
পাঁচফোড়ন
শুকনো লঙ্কা
এলাচ
দারচিনি
আখের গুড়
লবণ
জিরের গুড়ো
ধোনের গুড়ো
লঙ্কার গুড়ো
-:রয়েল ফলের আচার রেসিপি:-
রয়েল ফলের আচার তৈরি করার জন্য প্রথমে আমি এক গামলা মতো রয়েল ফল নিয়ে নিয়েছি। কয়েকবার জল দিয়ে ভালো করে ধুয়ে নিয়েছি যেন কোন ধুলোবালি লেগে না থাকে। এবার পরিমাণ মতো জল দিয়ে সেদ্ধ করতে বসিয়ে দিলাম। অন্যদিকে একটি কড়াইতে পরিমাণ মতো পাঁচফোড়ন, শুকনো লঙ্কা, দারচিনি এবং কয়েকটা এলাচ নিয়ে ভাজতে লাগলাম। তেল ছাড়া শুকনো কড়াইতে ভাজতে হবে। হালকা রং পরিবর্তন হলে এবং সুন্দর একটি মসলার গন্ধ বেরোলেই আগুন বন্ধ করে কয়েক মিনিট ঠান্ডা করতে দেব। একটু ঠান্ডা হলেই মিক্সচার জারে ঢেলে নেব। মিক্সারে হালকা করে গুঁড়ো করে নিলাম। পুরোটা মিহি করে গুঁড়ো করিনি।
জিরের গুঁড়ো এবং ধোনের গুঁড়ো আমার নিজে বাড়িতে করা থাকে তাই আর আলাদা করে জিরা এবং ধোনের গুঁড়ো করার প্রয়োজন নেই। এতক্ষণে রয়েল ফল সেদ্ধ হয়ে গেছে। রয়েল ফলগুলোকে জল ঝরিয়ে অন্য পাত্রে রেখে দিলাম। এবার কড়াইতে নিয়ে নিলাম সামান্য সরিষার তেল। তেল গরম হতে অর্ধেক চামচ পাঁচফোড়ন তেলের উপর দিয়ে দিলাম সাথে দুটো শুকনো লঙ্কা ও দিয়ে দিলাম ফোড়ন। এক দুই সেকেন্ড নাড়াচাড়া করেই যেই হালকা বাদামি রং হয়ে গেল অমনি দিয়ে দিলাম সেদ্ধ করে রাখা রয়েল ফলগুলো। বেশ কিছুক্ষণ নাড়াচাড়া করে দিয়ে দিলাম পরিমাণ মতো লবণ, লঙ্কার গুঁড়ো। আমি সামান্য একটু চিনি দিয়ে ফেলেছিলাম কারণ আমি ভুলে গেছিলাম যে আমি এই আচারটি গুড় দিয়ে তৈরি করব। একটু নাড়াচাড়া করে নিলাম যেন নিচের দিকটা পোড়া লেগে না যায়।
কিছুক্ষণ পর দিয়ে দিলাম জিরার গুঁড়ো এবং ধোনের গুঁড়ো। আবার একটু নাড়াচাড়া করে ভালো করে মসলাগুলোকে রয়েল ফলের সাথে মিশিয়ে দিলাম। এবার দিয়ে দিলাম পাঁচফোড়ন, শুকনো লঙ্কা, এলাচ এবং দারচিনি র একসাথে গুঁড়ো করে রাখা মসলা। এবার ভালো করে বেশ কিছুক্ষণ সব মসলা নাড়াচাড়া করে মিশিয়ে দিলাম। এ পর্যায়ে সুন্দর একটি গন্ধ পাওয়া যাচ্ছে রয়েল ফল থেকে। মিষ্টির জন্য দিয়ে দিলাম এক বাটি মত আখের গুড়। ভালো করে নাড়াচাড়া করে গুড়ের সাথে রয়েল ফল মিশিয়ে দিতেই দেখা গেল গুড় গোলে অনেকটাই জল বেরিয়ে এসেছে।
কিছুক্ষণ সময় নিয়ে আচার ভালো করে জাল দিতে লাগলাম। প্রতিনিয়ত নাড়াচাড়া করতে থাকতে হবে না হলে নিচে কড়াইতে লেগে পোড়া লেগে যেতে পারে। আর একবার আচার পোড়া লাগলে পুরো আচারটাই নষ্ট হয়ে যাবে এবং খাওয়ার অযোগ্য হয়ে যাবে। নাড়াচাড়া করতে করতে জল শুকিয়ে এসেছে। একদম পুরো শুকিয়ে ঘনঘন হয়ে গেছে। এ সময় জাল বন্ধ করে দিলাম। তৈরি হয়ে গেছে আমার রয়েল ফলের আচার। এবার ঠান্ডা হলে একটি কাচের জারে রেখে দিলাম। বাইরে যেহেতু এখন বৃষ্টি হচ্ছে তাই রোদ্দুরে দেওয়া সম্ভব নয়। সেই জন্য ফ্রিজের মধ্যেই রেখে দিলাম কারণ ফ্রিজে রাখলেও আচার দীর্ঘদিন ভালো থাকে নষ্ট হয় না। আর কিছুটা আগে থেকেই একটা বাটিতে রেখে দিয়েছিলাম সবাইকে খাইয়ে দেখার জন্য যে কেমন হয়েছে আমার তৈরি করা আচার। আমার বাবা, বর মশাই, আমার বান্ধবী সবাই খেয়ে বলল অনেক সুস্বাদু হয়েছে খেতে। এমন করে আচার বানালে সত্যিই অনেক সুন্দর হয় খেতে আর বৃষ্টির মধ্যে মাঝেমধ্যেই এমন মুখরোচক আচার খেতে অনেক ভালো লাগে।
ক্যামেরা পরিচিতি : Realme
ক্যামেরা মডেল : realme narzo 60 pro
ক্যামেরা লেংথ : 26 mm
আশা করি আজকের পোস্টটি আপনার খুব ভালো লেগেছে। আর ভালো লাগলে কমেন্ট করে অবশ্যই আমাকে জানাতে ভুলবেন না।
Thank you for sharing on steem! I'm witness fuli, and I've given you a free upvote. If you'd like to support me, please consider voting at https://steemitwallet.com/~witnesses 🌟
আপনি আমার পছন্দের রেসিপি শেয়ার করেছেন আজকে। এটা দেখেই তো আমার জিভে জল চলে এসেছে। কয়েকদিন আগেও রেসিপিটা খেয়েছিলাম। আপনি খুবই মজাদার ভাবে এটা তৈরি করেছেন। যে কারোই অনেক লোভ লাগবে আপনার তৈরি করা রেসিপি দেখলে। মনে হচ্ছে অনেক মজা করে খেয়েছেন এটা।
এত লোভনীয় রেসিপি শেয়ার করেছেন দেখে অসম্ভব ভালো লাগলো। আপনার আজকের রেসিপিটা আমার তো দারুন পছন্দ হয়েছে। মজার মজার রেসিপি গুলো তৈরি করে মাঝেমধ্যে আমাদেরকেও কিন্তু দাওয়াত দিতে পারেন। তাহলে মজার মজার খাবারগুলো আমরাও খেতে পারতাম। এই রেসিপিটা দেখে অনেক সুস্বাদু বলে মনে হচ্ছে। সবাই মনে হয় মজা করে খেয়েছেন।
একেবারে ইউনিক একটি রেসিপি শেয়ার করেছেন আপনি৷ যেভাবে আপনি আজকের এই রয়েল ফলের রেসিপি তৈরি করেছেন এটি দেখে অনেক সুস্বাদু মনে হচ্ছে৷ একই সাথে এই রেসিপির মধ্যে আপনি যে রয়েল ফলের ব্যবহার করছেন সেটি আমি আগে কখনো দেখিনি৷ এর নামও আমি আগে কখনো শুনিনি৷ আপনার কাছ থেকে এরকম একটি ফলের নাম জানতে পারলাম এবং এই ফল দিয়ে তৈরি করা আজকের এই রেসিপি সম্পর্কে জানতে পারলাম৷ অনেক ধন্যবাদ আপনাকে আজকের এই রেসিপি শেয়ার করার জন্য৷
রয়েল ফলকে আমরা বাংলাদেশে হর বড়াই বলে থাকি। এই ফলটি আমাদের দেশে দেখা দেখা যায় না বললেই চলে বিশেষ করে আমাদের এলাকায় নেই এই ফল ছোটবেলায় খেছিলাম একবার। আপনি চমৎকার লোভনীয় করে রয়েল ফলের আচার বানিয়েছেন যা খুব ভালো হয়েছে দেখেই বোঝা যাচ্ছে। ধাপে ধাপে আচার বানানো পদ্ধতি চমৎকার সুন্দর করে আমাদের সঙ্গে ভাগ করে নেয়ার জন্য ধন্যবাদ আপনাকে।