পোষ্য কুকুরের সাথে কাটানো মূহুর্ত ও তাদের মৃত্যু পর্ব ২😪
হ্যালো,
আমার বাংলা ব্লগ বন্ধুরা কেমন আছেন সবাই আশা করছি ভালো আছেন। আমিও সৃষ্টি কর্তার কৃপায় ভালো আছি।আমি শাপলা দত্ত, বাংলাদেশ থেকে আজ আপনাদের মাঝে শেয়ার করবো পোষ্য কুকুরের সাথে কাটানো মুহুর্তও তাদের মৃত্যুর দ্বিতীয় পর্ব পোষ্ট টি । আশা করছি আপনাদের ভালো লাগলে।
ডন ছিলো চমৎকার সুন্দর ধবধবে সাদা ও লেজটি ভীষণ সুন্দর বিদেশি কুকুরের মতো লোমশ টাইপের। ডনকে দেখলে কিছু টা বিদেশি কুকুরের মতোই লাগতো।সবাই ডনকে খুব ভালোবাসতো।আমার ভাই প্রতি সপ্তাহে ডনকে স্নান করিয়ে দিতো শ্যাম্পু দিয়ে। শ্যাম্পু দিয়ে স্নান করানোর ফলে ওর শরীরের শুভ্রতা দ্বিগুণ বেড়ে যেতো।অপরিচিত কেউ ডনকে দেখলে বলতো এটা কি বিদেশি কুকুর। আমরা বল খেলতাম দূরে বল গেলে মুখে করে এনে দিতো সামনে। আমাদের গম ক্ষেত আলু ক্ষেত ও নানা রকমের ক্ষেত যদি কারো ছাগল এসে লাগতো আর ডন যদি তা দেখতো তাহলে তাড়িয়ে দিতো এবং আশ্চর্যের ব্যাপার হলো দড়ি ধরে টানতে টানতে নিয়ে আসতো। ধানের আটি কৃষাণরা নিয়ে আসতো ডন মুখে করে নিয়ে আসতো সাথে সাথে।
আর একটা অলৌকিক কাজ করতো ডন তা হলো আমাদের যেদিন একাদশী হতো ঠিক সেদিন কিছু খেতো না। সন্ধ্যা অবদি সটানে শুয়ে থাকতো রান্না ঘরের সামনে। খাবার দিলেও খেতো না সন্ধ্যার পর ঠিক খেতো।অপরিচিত কেউ বাড়িতে আসলে আক্রমণ করতো তবে কখনো কামড়াতো না।রাত্রি বেলায় পরিচিত কেউ বাড়িতে আসলেও আক্রমণ করতো।যতো চুপিচুপি কেউ আসুক না কেন ডন চিৎকার করতো।এটাই কাল হলো ডনের জিবনে।গ্রামের ছেঁচড়া চোরদের চোখের বিষ ও পথের কাঁটা হয়ে গেলো ডন।মাঝে মাঝে ঘুমের ঔষধ খাওয়াতো আমরা বুঝতে পারতাম না শুধু পড়ে পড়ে ঘুমাতো ডন।
আমরা ভাবলাম শারীরিক সমস্যার জন্য ঘুমায়।এর পর হঠাৎ একদিন দেখলাম আমরা যে ডন খাবার খেতে পারছে না।গলা ফুলে গেছে। মুখ দিয়ে অনবরত লালা ঝড়ছে।বুঝতে বাকি রইলো না ওকে কিছু খাইয়ে দিয়েছে চোরের দল।মুখ হা করে দেখা হলো গলায় আটকে আছে কয়েকটি সুচ।বেশ কয়েকটা সুচ ডনের গলায় আটকে গেছে তাই খেতে পারছে না😪।পাউরুটি কিংবা কলার সাথে বিশেষ কায়দায় খাইয়ে দিয়েছিলো সুচ গুলো।আর এ কারণে না খেতে পেরে পেরে ডন একদিন আমাদেরকে টমের মতোই কাঁদিয়ে চলে গেলো।মানুষ মারা গেলেও যতোটা শোক হয় তার থেকে বেশি শোক হয়েছিল ডনের মৃতুতে।ডনকে নিয়ে হাজারো স্মৃতিছিলো।
আমরা সবাই খুব কান্না করেছিলাম।আমার ভাই বেশি কান্না করেছিলো কারণ ওর খেলার সাথী ছিলো ডন।ডনের গলা জড়িয়ে ধরে ছবি তুলেছিলো অনেক গুলো।এখনো ছবি গুলো বাড়িতে অ্যালবামে স্মৃতিবহন করছে।
ডনের মৃতুর এক বছর পর আমাদের বাড়িতে আসে সবার চোখের মনি হয়ে ভীষণ শক্তিশালী ও আক্রমণাত্বক একটি কুকুর নাম ওর সাগর। আজ এপর্যন্তই সাগরকে নিয়ে বিস্তারিত পরবর্তী পোস্টে শেয়ার করবো।
সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন নিরাপদে থাকুন।
টাটা
পোস্ট | বিবরণ |
---|---|
পোস্ট তৈরি | @shapladatta |
শ্রেণী | জেনারেল রাইটিং |
ডিভাইস | OppoA95 |
লোকেশন | গাইবান্ধা, বাংলাদেশ |
আমি হৈমন্তী দত্ত। আমার স্টিমিট আইডিরঃshapladatta. জাতীয়তাঃ বাংলাদেশী। শখঃবাগান করাও নিরবে গান শোনা,শপিং করা। ভালো লাগে নীল দিগন্তে কিংবা জোস্না স্নাত খোলা আকাশের নিচে বসে থাকতে।কেউ কটূক্তি করলে হাসি মুখে উড়িয়ে দেই গায়ে মাখি না।পিছু লোকে কিছু বলে এই কথাটি বিশ্বাস করি ও সামনে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করি।বিপদকে ও অসুস্থতার সাথে মোকাবেলা করার সাহস রাখি সহজে ভেঙ্গে পরি না। সবাইকে নিয়ে ভালো থাকার চেষ্টা করি আর মনে প্রাণে বিশ্বাস করি পর হিংসা আপন ক্ষয়। ধন্যবাদ ।
পোষা মানেই জীবনের একটি অংশ আর সেই পোষা জিনিস যদি মারা যায় তাহলে তো তার জন্য কান্না হবেই। আর আপনার ভাইয়ের কান্নাটা এজন্যই বেশি সে তো সব সময় ডনকে নিয়ে খেলা করেছে।তবে দিদি আপনার গল্পের হেডলাইনটিতে মনে হয় একটু ভুল আছে সংশোধন করে নিবেন প্লিজ।
অসংখ্য ধন্যবাদ আপু ভুল ধরিয়ে দেয়ার জন্য।
আপনার পোষ্য কুকুর ডনের মৃত্যুর কাহিনীটা আমার কাছে খুবই হৃদয়বিদারক মনে হয়েছে। আসলে কুকুরকে কেউ এত যন্ত্রণা দিয়ে মারতে পারে এটা সত্যিই কল্পনার বাইরে। সত্যি ডনের উপর আমার খুবই মায়া লাগছে। আমাদের প্রত্যেকের উচিত গৃহপালিত প্রাণীদের ওপর হৃদয়বান হওয়ার।
হ্যাঁ ভাইয়া ডনকে নির্মম ভাবেই মেরেছিলো।
মানুষ যে এতটা নিষ্ঠুরও হতে পারে, সেটা আপনার এই পোস্ট টি পড়ে আরো একবার বুঝতে পারলাম। একটা নিরীহ প্রাণীকেও তারা ছেড়ে কথা বলে না। প্রথমত ঘুমের ওষুধ খাইয়েছে, তারপর আবার খাবারের সাথে সুঁই দিয়ে দিয়েছে। আসলে নিজের পোষা যে কোন প্রাণী যদি মারা যায় তাহলে যে কতটা কষ্ট লাগে সেটা আমি নিজেও অনুভব করতে পারি দিদি। সে যেখানেই থাকুক সৃষ্টিকর্তা যেন তাকে ভালো রাখে, এটাই বলবো শুধু।
ভীষণ কষ্টকর দাদা পোষা কুকুরের মৃত্যু।ধন্যবাদ দাদা মন্তব্য করার জন্য।
অনেক বছর আগে গ্রামে যখন থাকতাম আমাদেরও একটা পোষা কুকুর ছিল । সেটা মরে যাওয়ার পর আমি কয়েকদিন ভাত পর্যন্ত খেতে পারিনি কষ্টে😭।
যখন আমাদের কোন পোষা প্রাণীর সাথে আমরা অনেকক্ষণ সময় কাটাই তখন তাদের প্রতি একটি আলাদা মায়া ও ভালবাসা কাজ করতে থাকে। যদি তাদের কিছু হয়ে যায় নিজের অনেকটাই কষ্ট হয়৷ আপনার ভাইয়ের অনেকটাই কষ্ট হয়েছে। কারণ সে সবসময়ই তাকে নিয়ে খেলা করতে এবং তার সাথে সময় কাটাতো৷ অনেক কষ্ট লাগলো আপনার এই গল্পটি পড়ে৷ পরবর্তী পর্বের আশায় রইলাম৷
ধন্যবাদ ভাইয়া পরবর্তী পর্ব নিয়ে আসবো আপনাদের মাঝে খুব তারাতারি।
কুকুর খুব বিশ্বস্ত প্রাণী হয়। এদেরকে ঠিক মত পালন করলে এরা মানুষের থেকে বেশি বিশ্বস্ত হয়। ডনও সেরকম হয়ে গিয়েছিল আপনাদের কাছে। কিন্তু মানুষ যে কত খারাপ তার প্রমাণ আবারও দিল। কুকুরটিকে কিছু খাইয়েছে ভালো কথা তাই বলে এত মর্মান্তিকভাবে মৃত্যুর কারণ হবে তা ভাবাই যায় না। কতটা কষ্ট পেয়ে কুকুরটি মারা গিয়েছে খুব খারাপ লাগলো শুনে।
আসলেই মানুষ কতোটা খারাপ তার প্রমাণ দেয় এরকম ঘটনা ঘটিয়ে।
কিছুদিন আগে যখন আমার শ্বশুর বাড়িতে গিয়েছিলাম গ্রামে আমার শ্বশুরের কুকুর আছে পালিত সেই কুকুরের অনেক সুন্দর একটি নাদুস নুদুর বাচ্চা হয়েছিল কিন্তু সেদিন ফোনে জানতে পারলাম সে বাচ্চাটি মারা গিয়েছে। শুনে বেশ খারাপ লেগেছিল।টমের শেষ পরিণতি পড়ে খুবই খারাপ লাগলো। 😢
আসলে পালিত কুকুর যদি মারা যায় তবে ভীষণ খারাপ লাগে।