পৌষ পর্বনের স্মৃতিচারণ❤️
হ্যালো
আমার বাংলা ব্লগ বন্ধুরা কেমন আছেন সবাই। আশা করছি ভালো আছেন। আমিও ভালো আছি আপনাদের আশীর্বাদ ও সৃষ্টিকর্তার কৃপায়।
আমি @shapladatta বাংলাদেশ থেকে। আমার বাংলা ব্লগের একজন ভেরিফাই নিয়মিত ইউজার। আমি গাইবান্ধা জেলা থেকে আপনাদের সঙ্গে যুক্ত আছি।
আজকে আমি আপনাদের সাথে ভাগ করে নেবো পৌষ সংক্রান্তি বা মকরসংক্রান্তি নিয়ে গল্প।
ছোটবেলায় শীত পড়লেই সবাই মানে গ্রামের ছেলে মেয়েরা খুই অপেক্ষায় ঢাকতাম মকরসংক্রান্তির দিনটির জন্য।
কারণ এই দিনে আমরা দল বেঁধে ফুল তুলতে বেড়িয়ে পড়তাম।মকরসংক্রান্তিতে প্রতিটি বাড়িতে পূজা হয়। খুটি পূজা বলা হয় এই পূজাকে কিন্তুু মূলত এই পূজাটা লক্ষীপূজা।
নানান প্রকারের ফুল লাগতো খুঁটির ভিতরে দেয়ার জন্য খুটি হচ্ছে মাটির তৈরি এক ধরনের পাত্র। এই খুটির ভিতরে দুধ জল ও বড়োই হলুদ, আদা, চাক করে ও হরিতকি দিতো তারপর খুঁটির গলায় বেঁধে দেয়া হতো নানা প্রকারের বনফুল।
যেমন শেয়ালমুতরি নামের এক ফুল, কানশিশা ফুল,সরিষা ফুল,মূলোর ফুল,কলমিফুল ইত্যাদি নানান ফুল তুলতাম আমরা আনন্দ করে।সেই ফুল দিয়ে সাজিয়ে গুছিয়ে পূজা হতো।
পূজায় গ্রামের মুসলিম মহিলারা সবাই পান সুপারি খেতে আসতো।প্রতি বাড়ি বাড়ি গিয়ে ওনারা পান সুপারি খেতো কেউবা জমিয়ে বাড়িতে নিয়ে যেতো।দিনগুলোকে খুবই মিস করি এখন।কোথায় হারিয়ে গেলো সেই দিন গুলো।কোথায় হারিয়ে যাচ্ছে সেই সম্প্রীতি।
দিন দিন আমরা ধর্মীয় কুসংস্কারে আচ্ছন্ন হয়ে যাচ্ছি। মা,দিদু পিসি পূজা করতেন আর আমরাও সাথে বসে পড়তাম পূজায়।আমার কাকা রান্না করতো পৌষ সংক্রান্তিতে।মা,দিদু, পিসির যাতে পূজা থেকে উঠে রান্না করতে না হয় সেজন্য মূলত রান্না করতে তবে রান্না করতেন বাড়ির বাইরে আর সেই রান্নাকে গ্রামের ভাষায় পুষনা বলা হতো।পৌষপার্বণে পুষনা খেতেই হবে এরকম একটা ব্যাপার ছিলো।
প্রতিটি বাড়িতে উঠানে বসে পূজা হতো। আমরা সব বাড়িতে পূজা দেখে ঘুরে বেড়াতাম দল বেঁধে এবং পূজা শেষ প্রসাদ খেতাম।সব বাড়িতে প্রসাদ খেতে খেতে পেট ভরে যেতো।
এরপর শুরু হতো সব বাড়িতে পিঠা বানানো। প্রতিটি আাড়িতে নানা রকম পিঠা হতো।পুরা গ্রাম পিঠার ঘ্রাণে ম-ম করতো।আমরা গরম গরম তেল পিঠা খেতাম,পৌষসংক্রান্তির দিন মূলতো চিতই পিঠা,তেল পিঠা,পাটিসাপটা পিঠা করতো।আমার তেল পিড়ার চার ধারের অংশ খেতে ভালো লাগতো কারণ চারপাশে মুচমুচে হতো খেতে।আমি চারপাশের অংশ খেয়ে রেখে দিতাম অনেক পিঠার।
পরদিন যে বাড়িতে আসতো তাকেই পিঠাও পায়েস সাজিয়ে খেতে দেয়া হতো কি যে মধুর ছিলো দিন গুলো তা বলে বোঝাতে পারবো না।খুবই মিস করি দিনগুলোকে।এখন পৌষসংক্রান্তি মানেই ব্যাস্ততা আয়োজন করা টেনশন। ভোরবেলায় এসব ছিলো না। একজন্যই মানুষ কথায় বলে যায় দিন ভালো আসে দিন খারাপ।
আজকের মতো এখানেই শে করছি।আবারও দেখা হবে অন্য কোন পোস্টের মাধ্যমে। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ ও নিরাপদ থাকুন।
টাটা
পোস্ট | বিবরণ |
---|---|
পোস্ট তৈরি | @shapladatta |
শ্রেণী | জেনারেল রাইটিং |
ডিভাইস | OppoA95 |
লোকেশন | বাংলাদেশ |
আমি হৈমন্তী দত্ত। আমার স্টিমিট আইডিরঃshapladatta. জাতীয়তাঃ বাংলাদেশী। শখঃবাগান করাও নিরবে গান শোনা,শপিং করা। ভালো লাগে নীল দিগন্তে কিংবা জোস্না স্নাত খোলা আকাশের নিচে বসে থাকতে।কেউ কটূক্তি করলে হাসি মুখে উড়িয়ে দেই গায়ে মাখি না।পিছু লোকে কিছু বলে এই কথাটি বিশ্বাস করি ও সামনে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করি।বিপদকে ও অসুস্থতার সাথে মোকাবেলা করার সাহস রাখি সহজে ভেঙ্গে পরি না। সবাইকে নিয়ে ভালো থাকার চেষ্টা করি আর মনে প্রাণে বিশ্বাস করি পর হিংসা আপন ক্ষয়। ধন্যবাদ ।
আপনার লেখাটি পড়ে আসলে ছোটবেলার সেই গ্রামে শীতকালে বিভিন্ন পিঠাপুলির যে অনুষ্ঠানগুলো হত সেগুলোর কথা মনে পড়ে গেল।এখন আসলে সেভাবে আর অনুষ্ঠানে থাকা হয় না।ছোটবেলার সেই দিনগুলো খুব মিস করি দিদি।