অগ্ৰহয়ণের নবান্ন উৎসব
আমি @riyadx2 বাংলাদেশ থেকে
শনিবার, ৩০ ই নভেম্বর ২০২৪ ইং
নবান্ন উৎসব বাঙালির একটি পুরোনো ঐতিহ্য। এই উৎসব কে কেন্দ্র করে বাঙালিদের অনেক অনেক ইতিহাস রয়েছে।যা আমরা ছোট বেলায় পাঠ্যবইয়ের মধ্যে পড়ছিলাম। আপনারা হয়তো সকলেই এই বিষয়ে অবগত আছেন। বিশেষ করে গ্ৰাম এলাকার মানুষ গুলো নবান্ন উৎসব পালনে একটু বেশি আগ্রহী। নবান্ন উৎসব মূলত অগ্ৰাহায়ন মাসের মাঝামাঝি সময়ে নতুন ধান ঘরে তুলে সেই ধান থেকে প্রস্তুত চালের প্রথম রান্না কে ঘিরেই নবান্ন উৎসব পালন করা হয়ে থাকে। বিভিন্ন জন বিভিন্ন ভাবে এই উৎসব পালন করে থাকেন। বাঙালিদের বেশ কয়েকটি জনপ্রিয় উৎসব রয়েছে, তার মধ্যে অন্যতম একটি উৎসব নবান্ন উৎসব। বিশেষ করে এই উৎসব টি বাংলাদেশ এবং ভারত সহ পৃথিবীর আরো বেশ কয়েকটি দেশের মধ্যে বেশ জাঁকজমকপূর্ণ ভাবে এই উৎসব পালিত হয়।
এপার বাংলা এবং ওপার বাংলায় কৃষি উৎপাদনে যে সব আচার অনুষ্ঠান এবং উৎসব পালন করা হয়, তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে নবান্ন উৎসব। নবান্ন উৎসব কে বাঙালিরা বিভিন্ন ভাবে পালন করা হয়। নবান্ন উৎসব মূলত নতুন ধানের চাল থেকে তৈরি করা যে কোন ধরনের পিঠা পুলি কে কেন্দ্র করে হয়।আর এই উৎসব কে ঘিরে বাঙালিদের মনের মধ্যে এক অন্যরকম আনন্দ কাজ করে। বিশেষ করে যারা গ্ৰাম এলাকার মধ্যে বসবাস করে থাকেন তারা হয়তো এই বিষয়ে অবগত আছেন।গ্ৰাম এলাকা গুলোর মধ্যে এই সব উৎসব অনেক দারুন ভাবে পালিত হয়। নবান্ন উৎসব কে কেন্দ্র করে গ্ৰাম এলাকা গুলোর মধ্যে বিভিন্ন ধরনের ছোট বড় মেলার আয়োজন করা হয়।
তবে, ধীরে ধীরে নবান্ন উৎসবের আমেজ আমাদের সমাজ থেকে হারিয়ে যাচ্ছে। এখন আর আগের মতো তেমন একটা নবান্ন উৎসব পালিত হয় না আমাদের গ্ৰাম এলাকার মধ্যে। অতীতে এই নবান্ন উৎসব কে কেন্দ্র করে বাঙালিরা এক বিশাল আয়োজন করেছিল। কিন্তু আমাদের কাছে থেকে এতো বড় একটি উৎসব আমাদের কাছে থেকে হারিয়ে যাচ্ছে।এটা আসলেই আমাদের জন্য খুবই দুর্ভাগ্যজনক একটি ব্যাপার। অতীতে নবান্ন উৎসব কে কেন্দ্র করে বিভিন্ন ধরনের পিঠা পুলি তৈরি প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হতো।আর এই প্রতিযোগিতা গুলোর মধ্যে গ্ৰামের সর্বস্তরের মানুষ অংশগ্রহণ করেছিল।একে অপরের সাথে পিঠা পুলি গুলো আদান প্রদান করতো।এতে করে সকলেই সকলের হাতের তৈরি করা পিঠা খেতে পারতো।
বর্তমান সময়ের ছেলে মেয়েরা নবান্ন উৎসব সম্পর্কে তেমন একটা অবগত নন। তারা নবান্ন উৎসব সম্পর্কে তেমন একটা জানেন না। তারা শুধু মাত্র পাঠ্যবইয়ের মধ্যে নবান্ন উৎসব সম্পর্কে পড়েছিল। আমি নিজেও নবান্ন উৎসব তেমন একটা দেখিনি। তবে, ছোট বেলায় আমি আমাদের গ্ৰামের মধ্যে দেখছিলাম নতুন ধান ঘরে তোলার পর পরই নতুন নতুন পিঠা তৈরি করেছিল।আর এই পিঠা গুলো সকলের মধ্যে ভাগাভাগি করেছিল। তবে, বর্তমান সময়ে তেমন একটা পিঠা পুলি এবং নবান্ন উৎসবের আমেজ নেই আর আমাদের সমাজ গুলোর মধ্যে। আমরা ধীরে ধীরে প্রাচীন ঐতিহ্য গুলো কে হারিয়ে ফেলছি। আমাদের পূর্বপুরুষরা এই সব উৎসব পালন করতে যত বেশি আগ্রহী ছিলেন, আমরা তার দশ ভাগের এক ভাগ ও আগ্রহী নই।
আমরা চাইলে আমাদের এই সব ঐতিহ্য গুলো কে আবার ফিরে নিয়ে আসতে পারি। অতীতের তুলনায় আমাদের মাঝে এখন নতুন নতুন ধান চাষ হচ্ছে। আমরা চাইলে আবার এই সব ধানের সাহায্যে নতুন নতুন পিঠা তৈরি করার মাধ্যমে নবান্ন উৎসব পালন করতে পারি। আমরা যত বেশি আধুনিকতার দিকে এগিয়ে যাচ্ছি, তত বেশি প্রাচীন ঐতিহ্য গুলো কে হারিয়ে ফেলছি। আধুনিকতার ছোঁয়া সব কিছু পুরনো ঐতিহ্য কে ভুলিয়ে দিচ্ছে।এমন ভাবে চলতে থাকলে আমাদের মাঝে থেকে একদিন বড় বড় ধরনের উৎসব গুলো হারিয়ে যাবে।
সবাই কে অনেক অনেক ধন্যবাদ।
Vote@bangla.witness as witness
X promotion
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
নবান্ন উৎসব এক সময় বাঙালির আবেগের উৎসব ছিলো।ঠিক বলেছেন ভাইয়া এই উৎসবগুলো ধীরে ধীরে হারিয়ে যাচ্ছে। আমরা নবান্ন উৎসব সম্পর্কে ঠিক করে জানিনা। এভাবে চলতে থাকলে একদিন বাংলার সব ঐতিহ্য হারিয়ে যাবে। আধুনিকতার ছোঁয়া ধীরে ধীরে বাংলার উৎসবগুলোকে হারিয়ে দিচ্ছে। আপনার লেখাগুলো আমার কাছে বেশ ভালো লাগলো। সুন্দর একটি বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছেন।