বিদায় বন্ধু বিদায়
হ্যালো আমার বাংলা ব্লগ বাসী।আশা করি সবাই ভাল আছেন।আমি ভাল নেই, আজকের দিনটা দুখের একটি৷ দিন।
সোর্সঃবন্ধুমহলের বানানো ব্যানার
আমার বন্ধুর সংখ্যা প্রচুর।খুব সহজে বন্ধু বানানোর ক্ষেত্রে আমি এক্সপার্ট বলতে পারেন।কিন্তু বন্ধু আর কাছের বন্ধুর মাঝে অনেক পার্থক্য থাকে।কাছের বন্ধু হল সে যে সব আনন্দ সুখ দুঃখ সব ভাগাভাগি করে নেওয়া যায়।
বন্ধুত্বের সম্পর্ক হল আত্মার সম্পর্ক,এটা এমন একটি সম্পর্ক যেখানে আপনার চোখে তাকিয়েই আপনার বন্ধু আপনার মনের খবর জানতে পারবে।অনেক পবিত্র একটি সম্পর্ক এই বন্ধুত্ব।যেখানে কোন স্বার্থ থাকে না।
শিহাব আমার কাছের বন্ধুদের মাঝে একজন ছিল।শিহাব আমাদের হাইস্কুল ফ্রেন্ড ছিল।কিন্তু আলাদা শাখায় হবার কারনে বেশি পরিচয় ছিল না।ওর সাথে আমরা ভালবাসে মেশা শুরু করি আমরা ইন্টারে। অল্পদিনের মাঝেই শিহাব আমাদের গ্রুপের খুব কাছের হয়ে ওঠে।
শিহাব এর সব থেকে বড় গুণ ছিল ওর সেন্স অফ হিউমার।ওর মত মজার মানুষ খুবই কম দেখেছি এজীবনে।পরিস্থিতি যতই গম্ভীর হোক, আপনার মন যতই খারাপ হোক শিহাবের সাথে ২মিনিট থাকলেই আপনার মত ভাল হতে বাধ্য।আর পরিস্থিতিও হালকা হয়ে যায়।খুব সহজেই মানুষের সাথে মিশে যেতে পারত।ওর মেসেই আমাদের আড্ডা জমত।
তবে ওর এই হাসিখুশি মুখের পেছনে থাকা দুঃখ গুলো জানতাম শুধু আমি আর নাফিজ।ফলে আমাদের মাঝের বন্ড টা আরো স্ট্রং হয়ে ওঠে।এভাবে চলতে চলতে একসময় ইন্টার কমপ্লিট হয়।নাফিজ নৌবাহিনী তে জব পায়।আমি বাড়িতেই থেকে যাই।আর শিহাব পারিবারিক সমস্যার কারনে পড়াশুনা কমপ্লিট না করেই চাকুরি শুরু করে।
ওর চাচা সিভিল ইঞ্জিনিয়ার হওয়ায় খুব সহজেই সে কনস্ট্রাকশন সাইটে জব পেয়ে যায় ইঞ্জিনিয়ার এর সহকারী হিসেবে।এভাবে বছর খানেক যাওয়ার পর ওর চাকুরি হয় রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে।যাওয়ার আগে ওর সাথে আমার কথা হয়।ও বারবার বলছিল আমার ওখানে যাওয়ার কোন ইচ্ছাই নাই।আমাকে জোর করে পাঠাচ্ছে।
এরপর দুইমাস পার হয়।আসে আজকেই এই দিন।সকাল থেকে কেমন অস্বস্তি লাগছিল।সারাদিন খাওয়াদাওয়া করি নাই।রাতে মা জোর করে খাইয়ে দিচ্ছিল।তখনই হঠাৎ নাফিজ কল করে বলল ভাই শিহাব আর নেই।আমার মাথায় যেন আকাশ ভেঙ্গে পড়ল।আমার গলায় ভাত আটকে গিয়েছিল।কিছুতেই মেনে নিতে পারছিলাম না শিহাব আর নেই।।
কিন্তু মেনে না নিলেই বাস্তবতা পরিবর্তিত হয়না।অবশেষে বাস্তবতা মেনে নিতেই হল।চোখের জলে বন্ধুকে কবরে রেখে আসতে হল। মনে হচ্ছিল কলিজা খুলে রেখে আসতেছি।দেখতে দেখতে একবছর হয়ে গেল শিহাবের মৃত্যুর।এখনো যে কোন অনন্দের মুহুর্তে মনে পড়ে ওর কথা।ওর বিদেহী আত্মার শান্তিকামনা করে আজকের পোস্ট এখানেই শেষ করছি।সবাই আমার বন্ধুর আত্মার শান্তির জন্য দোয়া করবেন।
OR
আমি বৃত্ত মোহন্ত (শ্যামসুন্দর)। বর্তমানে ছাত্র। নতুন কিছু শিখতে, নতুন মানুষের সাথে মিশতে আমার খুব ভাল লাগে। তেমনি বই পড়া আর ঘুরে বেড়ানো আমার পছন্দের কাজগুলোর মধ্যে অন্যতম। মুক্তমনে সব কিছু গ্রহণ করার চেষ্টা করি আর মনে প্রাণে বিশ্বাস করি,"বিশ্বজোড়া পাঠশালা মোর, সবার আমি ছাত্র"।
বন্ধুর মৃত্যু, মেনে নেওয়াটা কতটা বেদনাদায়ক তা বুঝি।কিছুদিন আমারো একটা ফ্রেন্ড মারা গেছে রোড এক্সিডেন্টে🙂।
ফ্রেন্ডরা হলো মানুষের আরেকটা জগৎ। খেতে বসে বন্ধুর এমন খবর শোনা,বিষয়টা আসলেই অনেক কষ্টের।
আল্লাহ তায়ালা তাকে জান্নাতুল ফেরদৌস দান করুক।
আপনার বন্ধুর মৃত্যুতে আমরাও শোকাহত।সত্যিই এই ঘটনাগুলি মেনে নেওয়া কষ্টের।বন্ধুর সম্পর্ক আত্মিক সম্পর্ক ঠিকই বলেছেন।আপনার বন্ধুর আত্মার শান্তি কামনা করি।এটাই জগতের নিয়ম মেনে নিতে হবে,মন খারাপ করবেন না দাদা।
শান্তনার জন্য ধন্যবাদ দিদি
ভাইয়া আপনার বন্ধু একবছর আগে মারা গিয়েছে আর আজ সেই দিন তাই আপনাদের মন খারাপ হওয়ারই কথা। কাছের বন্ধু মারা গেলে সত্যি তা মেনে নেওয়া যায়না। কিন্তু কিছু করার নেই নিয়তি যাকে যেভাবে যেখানে নিয়ে যায় যেতে তো হবেই। বন্ধুদের সাথে হয়তো রক্তের সম্পর্ক থাকে না তবে এমন কিছু সময় আসে যখন তারা রক্তের সম্পর্কের থেকেও বেশি আপনা হয়ে যায়। আপু বন্ধুর আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি।
ধন্যবাদ আপু।
বন্ধু বা কাছের মানুষের মৃত্যু মেনে নেয়া যায় না, তবুও সত্যি এটা মানতেই হয়।বন্ধু হল আত্মার সম্পর্ক।অনেক সময় রক্তের সম্পর্কের চেয়ে আত্মার সম্পর্কই বড় হয়ে ওঠে।আপনার বন্ধুর মৃত্যুতে কষ্ট লাগারই কথা।এমন অনেক মৃত্যু মেনে নেয়া যায় না। মন খারাপ না করে তার আত্মার শান্তি কামনা করাই তার জন্য মংগল। ভাল থাকবেন আশাকরি ভাইয়া।
একদম ঠিক বলেছেন আপু।ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্যের জন্য।