সন্তান না বললেও মায়েরা অনেক কিছু বুঝতে পারে।।
পরম করুনাময় অসীম দয়ালু, মহান সৃষ্টিকর্তার নামে শুরু করছি-
হ্যালো আমার বাংলা ব্লগ বাসি বন্ধুরা। আপনারা সবাই কেমন আছেন। আশা করি আল্লাহর অশেষ রহমতে আপনারা সবাই অনেক ভালো আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় অনেক ভালো আছি,আলহামদুলিল্লাহ। আজকে আমি আপনাদের সাথে নতুন একটি ব্লগ নিয়ে হাজির হয়েছি। আজকে আমার সাথে ঘটে যাওয়া কয়েকটি কথা আপনাদের সাথে শেয়ার করবো।
আমার সেজু আপুর হাসবেন্ড সাইনবোর্ড একটি মাদ্রাসায় চাকরি করার সুবাদে আপু নারায়গঞ্জের সাইনবোর্ড এলাকায় বাসা ভাড়া নিয়ে থাকেন। আমাদের বাসা থেকে আপুর বাসার দুরত্ব দশ টাকা অটো ভাড়া। তো আপু প্রায় সময় অমাাদের বাসায় আসে। আবার আমিও প্রায় সময় আপুর বাসায় যায়। কোরবানীর ঈদের পরে আপুর কোল আলোকিত করে একজন মেয়ে বাবু জন্ম গ্রহন করে। যার ফলে আপু প্রায় দেড় মাসের মত আমাদের গ্রামের বাড়িতে ছিল। আমি যখন বাড়িতে বেড়াতে গিয়েছিলাম তখন বাবুকে দেখে এসেছিলাম। তো গত সাপ্তাহ থেকে আপু সাইনবোর্ড বাসাতে আসার পরিকল্পনা করছিলো। সেই জন্য আপু আমাকে প্রায় সময় ফোন করে জিঙ্গেস করতো আমার কোন কিছু লাগবে কিনা। যদি বলি তাহলে আপু বাড়ি থেকে নিয়ে আসবে।
আপুর হাসবেন্ড অনেক ভালো মানুষ। আম্মু গ্রাম থেকে কোন কিছু দিলে না করে না। যেটা তিনির কাছে দেয় সেটাই আমানত হিসাবে আমাদের বাসায় এনে পৌছে দেয়। তো বার বার আপু ফোন করে কিছু লাগবে কিনা সেটা জিঙ্গেস করছিলো। যেহেতো আপু ছোট বাবুকে নিয়ে আসবে তাই আমি কিছু আনতে বলি নাই। আম্মুকেও আপুর সাথে কোন কিছু দিতে মানা করেছি। কিন্তুু সন্তান না চাইলেও মায়ের মন অনেক কিছু বুঝতে পারে। আমার ইচ্ছা ছিলো গ্রাম থেকে নদীর কিছু দেশি মাছ আনাবো। মানে শিং, টেংরা,চাপিলা, কৈ, পুটি সহ এই জাতীয় মাছ। আমাদের তিতাস নদীতে আবার এই মাছ গুলো বর্তমানে ভালোই পাওয় যাচ্ছে। কারন বর্ষার পানি চলে যাচ্ছে তাই প্রচুর মাছও ধরা পড়ছে।
আজকে সকাল বেলা ঠিক আটটার সময় আমাদের মোবাইলে সেজু দুলাভাই একটা কল দিয়েছিলো। কিন্তুু আমি ঘুমের কারনে আর কল রিসিভ করতে পারি নাই। তো আমি ভেবেছি হয়তো এমনি কল দিছে। বিশেষ দরকার হলে তো আরো কল দিতো। বারোটার সময় সেজু আপু কল দিয়ে বললো তোমার হাসবেন্ডেকে বলিও সাইনবোর্ড বাস স্টেশন থাকতে। আমরা বাড়ি থেকে আসতেছি, তোমার জন্য আম্মু একটি ব্যাগে কি কি যেন দিয়েছে। ফ্রিজের জিনিষ সাথে সাথে নিয়ে গিলে ভালো হবে। আর আমাদের বাসার ফ্রিজে এত গুলো জিনিষ জায়গা হবে না। জাষ্ট এতটুকু কথা বলেই ফোন রেখে দিয়েছে। আমি আমার হাসবেন্ডকে বলার পরে তিনি বললেন অফিসে অনেক কাজ, সন্ধার পরে যাবে। আমিও এই কথা আপুকে বলে দিলাম। সেই দিকে দুলাভাই আবার আমার হাসবেন্ডকে ফোন করে যেতে বলে। দুলাভাই বুঝিয়ে বলার পরে আমার হাসবেন্ড যায়।
দুপুর আড়াটার সময় আমার হাসবেন্ড দুইটা ব্যাগ নিয়ে বাসায় এসে হাজির। আমি তো চমকে গেলাম। তখন তিনি বললেন দুলা ভাই ব্যাগ নিয়ে মেইন রোডে দাড়িয়ে ছিল। তিনি রিকশা দিয়ে গিয়ে নিয়ে আসলেন। ব্যাগ খুলে দেখলাম অনেক গুলো চিংড়ি মাছ, টেংরা মাছ, বাইম মাছ, দুইটা দেশি মুরগি একটি হাঁস সহ আরো কিছু সবজি দিয়ে পাঠিয়েছে। সাথে সাথে বাড়িতে ফোন দিয়ে নতুন খবর শুনতে পেলাম। সকাল বেলা নাকি আপু দুলাভাই ও আম্মুর জন্য তিনটি বাসের টিকেট কেটেছিল। বাস স্টেশন এসে দেখতে পায় আমার জন্য দুইটা ব্যাগ রেডি করেছিল, কিন্তুু ভুলে একটি ব্যাগ ফেলে এসেছে। সে কারনে আম্মু দুলা ভাইকে বললো তোমরা একটু দাড়াও আমি সেই ব্যাগটা নিয়ে আসি। বাস স্টেশন থেকে আমাদের বাড়ির দুরত্ব দশ মিনিট। আম্মু গ্রামের বাসায় গিয়ে ব্যাগ নিয়ে আসতে আসতে বাস ছেড়ে চলে এসেছে। এখন আম্মু নাকি পিছনে আরেকটি বাসে আসতেছে। এই খবর আবার আপু আর দুলাভাই জানে না। তারা না কি ভেবেছে আম্মু আসবে না।
তো সন্ধার এটকু আগে আম্মু একটি ব্যাগ সহ ফল ফ্রুট নিয়ে আমাদের বাসায় আসলেন। আম্মুকে দেখে আমিও চমকে গেলাম। বাসায় এসে আম্মু বিস্তারিত কাহিনী বললেন। আম্মু পাঁচটার সময় এসে আবার সাড়ে পাঁচটায় চলে গেলেন। আমাদের বাসায় মাত্র আধা ঘন্টার মত ছিলেন। আম্মু যে ঢাকায় এসেছে সেটা, আব্বু ভাইয়া কেউ জানে না। আর বাড়িতেও এক মাত্র ভাবি ছাড়া আর কেউ নেই। আমার ছোটবোনেরা সবাই সিলেট বড় আপু বাসায় চলে গেছে। আম্মুর সেই ব্যাগ খুলেও দেখলাম মাছ আর দুধ। আমি কিছু না বলার পরেও আম্মু কত কিছু নিয়ে আসলেন। এসে একটি রাতও না থেকে চলে গেলেন। মায়ের ভালোবাসার কোন তুলনা হয় না। আম্মু আমাদের বোনদের প্রতি এত খেয়াল রাখে যা বলার মত না। মা চলে যাওয়ার পর থেকে মনটা খুবই খারাপ। মা সুষ্ঠ ও সুন্দর ভাবে বাড়িতে গিয়ে পৌছেছে কি না। এই খবর না পাওয়া পর্যন্ত কোন কাজেই মন বসতেছে না। সবার কাছে আমার মায়ের জন্য দোয়া চাই।
সবাইকে অনেক অনেক ধন্যবাদ,আল্লাহ হাফেজ।।
আমার পরিচিতি
আমি মোছাঃ মুসলিমা আক্তার নীলা। স্টিমিট প্লাটফর্মে আমি @titash নামে পরিচিত। আমার জন্মস্থান চট্রাগ্রাম বিভাগের ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার ভাদুঘর গ্রামে। আমি বর্তমানে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি মহিলা কলেজে অনার্স দ্বিতীয় বর্ষে বাংলা বিভাগ নিয়ে পড়াশোনা করতেছি। আমি বিবাহিত,আমার একটি কন্যা সন্তান আছে। আমি আমার হাসবেন্ডের সাথে ঢাকা বিভাগের অন্তর্গত নারায়নগঞ্জ জেলায় বসবাস করছি। আমি আমার হাসবেন্ডের মাধ্যমে স্টিমিট প্লাটফর্ম সম্পর্কে জানতে পারি। প্লাটফর্মটার বিষয়ে জেনে আমি এখানে কাজ করার আগ্রাহ প্রকাশ করি। তারপর ২০২৩ সালের ফ্রেব্রুয়ারী মাসে আমার বাংলা ব্লগের মাধ্যমে স্টিমিট প্লাটফর্মে যুক্ত হয়। আমি ভ্রমন করতে,মজার মজার রেসিপি করতে,বই পড়তে, নতুন নতুন বিষয় সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করতে ও সৃজনশীল জিনিষ তৈরী করতে ভালোবাসি। আমি বাঙ্গালী জাতি হিসাবে ও আমার বাংলা ব্লগের সদস্য হতে পেরে নিজেকে নিয়ে গর্ববোধ করি।
Thank you, friend!


I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
একদমই ঠিক বলেছেন আপু। মায়েরা যখন দূরে থাকে তখন ছেলেমেয়েদের জন্য কিন্তু তারা অনেক বেশি চিন্তিত থাকে। কে কি খাচ্ছে, না খাচ্ছে এটা নিয়ে অনেক বেশি চিন্তিত হয়ে পড়ে। আমার নানুকে দেখেছি বাড়িতে কোন কিছু যদি হয়ে থাকে যেমন ফলমূল মাছ মাংস ইত্যাদি এগুলো আমাদের জন্য রেখে দেয়। তার পাশাপাশি আমার খালামণিদের জন্যও রেখে দেয়। আর আপনার আম্মু তো দেখছি অনেকগুলো জিনিসপত্রই আপনার আপুর সাথে দিয়েছে। তাছাড়া যে ব্যাগটা রয়ে গিয়েছে সেটার জন্য তিনি আবার বাসায় গিয়ে আবার নিয়ে এসেছেন। আসলে আপনার মায়ের কথা চিন্তা করে খুব ভালো লাগছে তিনি যেন সুস্থ ভাবে বাড়ি ফিরেন এবং সুস্থ থাকেন সেই দোয়া রইল আপু।
জ্বি আপু সন্তানদের জন্য সবচেয়ে বেশি চিন্তিত থাকেন মা-বাবা। আলহামদুলিল্লাহ আমার আম্মু ঠিক সময়ে বাড়িতে পৌঁছে গেছেন।ধন্যবাদ আপু।
আসলে মায়ের মত কোন ভালোবাসা হয় না।মায়েরা আমাদের জন্য অনেক ভালোবাসা দিয়েছে। মায়েরা সব সময় চিন্তিত থাকে তার সন্তান কেমন আছেন,কি করেন এগুলো নিয়ে। যাইহোক আপনার মায়ের জন্য সব সময় দোয়া রইলো। আপনার পোস্ট টি পড়ে খুবই ভালো লাগলো। ধন্যবাদ আপনাকে পোস্ট টি শেয়ার করার জন্য।
জি ভাইয়া একদমই মায়ের মত কেউ হতে পারে না। মায়ের মত কেউ ভালবাসতেও পারেনা। ধন্যবাদ ভাইয়া।
ব্যাগ ফেলে আসার পরেও আপনার আম্মু আবার সেই ব্যাগ নিয়ে এসেছে এটা শুনে সত্যিই ভালো লাগলো। আসলে মায়েরা সবসময় সন্তানকে মন উজাড় করে জিনিসপত্র দেওয়ার জন্য প্রস্তুত থাকেন। মায়ের ভালোবাসা সত্যি অতুলনীয়।
আপু একদমই মায়ের ভালোবাসার সাথে কোন কিছুর তুলনা হয় না। আমি মনে করি আমার মা সবচেয়ে সেরা। ধন্যবাদ আপু।
মা-বাবা সব সময় সন্তানের খুশি গুলোকে মনে রাখে। আর তাদের পছন্দের কোন কিছু সংগ্রহ করে পাঠিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে। আপু আপনার লেখাগুলো পড়ে সত্যি খুবই ভালো লেগেছে। অসাধারণ ভাবে আপনি নিজের অনুভূতি উপস্থাপন করেছেন। ধন্যবাদ আপনাকে।
জ্বী ভাইয়া মা-বাবা বুঝে সন্তান কোন জিনিসে খুশি হবে। ঐদিন আম্মু চলে যাওয়ার পর তার জন্য খুবই মন খারাপ ছিল। তাই মাকে নিয়ে এই অনুভূতি মূলক পোস্টটি লিখেছিলাম। আপনাকেও ধন্যবাদ ভাইয়া।