দীর্ঘদিন পরে || @shy-fox 10% beneficiary
নিলুফা আমার খালামণি হলেও, ওর সঙ্গে সম্পর্কটা ছিল আমার অনেকটা বান্ধবীর মতো। যাইহোক ব্যাপারটা এমন ছিল , ও বয়সে আমার ছোট ছিল কিন্তু যেহেতু একসঙ্গেই জয়পুরহাটে থাকতাম । তাই মোটামুটি অনেকটা কাছের ছিলাম থাকতাম দুজন দুজনার । তাই মোটামুটি আমাদের দুজনের মধ্যে সম্পর্ক ছিল বেশ গভীর ।
আমার যখন কলেজ জীবন শেষ হয়েছিল, তখন নিলুফা ক্লাস নাইনে পড়ে । যাইহোক এখন মোটামুটি আমার গ্রাজুয়েশন শেষ, আমার বিয়ে হয়ে গিয়েছে এবং আমার মোটামুটি সাংসারিক জীবন যাচ্ছে প্রায় সাড়ে তিন বছরের মতো হচ্ছে । ঐ যে সেদিন বলেছিলাম আমার প্রিয়তমোর ভাইয়ের বিয়েতে গিয়েছিলাম , সেদিন আমি দীর্ঘ সাড়ে তিন বছর পরে নিলুফার বাড়িতে গেলাম এবং এই দীর্ঘ সাড়ে তিন বছরে, ওর সঙ্গে আমার কোনো দেখা সাক্ষাত হয়নি । কারণ আমি যখন জয়পুরহাট ছেড়েছি, তারপর থেকে ওর সঙ্গে আর কোন সাক্ষাৎ হয়নি। তবে আমাদের যোগাযোগ হতো সোশ্যাল মিডিয়াতে ।
এই সাড়ে তিন বছর সময়ে, আসলে অনেকটা পরিবর্তন এসেছে নিলুফার জীবনে। নিলুফা অনেক বড় হয়ে গিয়েছে এবং ওর বিয়ে হয়েছে মোটামুটি ভালো একটা ফ্যামিলিতে। কিন্তু আমার আর তার সঙ্গে সাক্ষাৎ হয়নি । আসলে হুটহাট সময়গুলো সম্পর্কগুলোতে এমন ভাবে পরিবর্তন করে দেয়, যেটা আসলে চিন্তা করলে অনেকটা মাঝে মাঝে অবাক লাগে । যে নিলুফা একটা সময় আমার সঙ্গে বান্ধবীর মতো আচরণ করতো, তার সঙ্গে যখন দীর্ঘ দিন পরে দেখা , তখন যেন আমি যাকে দেখছি তার ভিতরে যেন আকাশ-পাতাল তফাৎ । কারণ সে এখন একদম পাক্কা গৃহিণী হয়ে গিয়েছে এবং মোটামুটি সে নিজের মতো করে তার সংসারটাকে সাজিয়ে নিয়েছে ।
যদিও প্রতিনিয়ত সে আমাকে, সোশ্যাল মিডিয়াতে তাদের বাড়িতে যাওয়ার কথা বলতো। কিন্তু আসলে আমাদের সময় হয়ে উঠত না, বিধায় তার বাড়িতে আমাদের যাওয়া হয়ে ওঠেনি। আমরাও তাকে প্রতিনিয়ত আমাদের বাসায় আসতে বলতাম, কিন্তু তাদের ও ঠিক একই অবস্থা । দিনশেষে আসলে সবার সময়ের অভাব, অনেক কিছু চাইলেও আর কি সঠিক ভাবে সবকিছু করে ওঠা হয়না ।
আমি আমার প্রিয়তমোকে বললাম নিলুফার বাবুর জন্য কিছু ফল কিনে নাও। কারণ যে-পথে তোমার ভাইয়ের বাড়িতে যাব, ঐ পথেই নিলুফাদের বাড়ি। যাইহোক নিলুফাকে আগের দিনই বলে রাখলাম, এবার কিন্তু তোদের বাড়িতে যাবো। নিলুফা মোটামুটি বেশ খুশি হয়েছিল কথাটা শোনার পরে। অতঃপর পরের দিন গন্তব্যের মাঝেই, আমরা বিরতী দিয়েছিলাম নিলুফার বাড়ীতে। আমি মোটামুটি গিয়ে অনেকটাই অবাক হয়েছি, কারণ নিলুফার পরিবর্তন দেখে । অবাক হওয়ারই কথা, যে মেয়েটা একটা সময় ঠিকঠাক নিজেকে সামলাতে পারতো না, সে এখন পুরো সংসার সামলাচ্ছে ।
আমাদের জন্য হরেক রকম খাবারের আয়োজন করেছে । যদিও সকাল বেলার দিকে গিয়েছি, তবে যেহেতু কষ্ট করে রান্না করেছে , তাই মোটামুটি আমরা সবাই খাবার খেয়ে নিলাম। আমি একটা সময়ে গিয়ে নিলুফাকে প্রশ্ন করলাম । কিরে নিলুফা, এখন দেখছি অনেক বড় হয়ে গিয়েছিস। পুরো সংসারটাকে নিজের মতো করে সামলাচ্ছিছ ঘটনা কি? সে উত্তরে যেটা বলেছিল, সেটা শুনে রীতিমতো আমিও অনেকটা অবাক হয়ে গিয়েছি। সে শুধু আমাকে একটা কথাই বললো, তুমিও তো অনেক বড় হয়ে গিয়েছো। তুমিও তো অনেক দায়িত্ব নিতে শিখেছো। তাহলে আমার দায়িত্ব নিতে দোষ কোথায় ।
আসলে মেয়ে মানুষের জীবনটা এমনই,থেমে থেমে যেন রং পাল্টায় । যাইহোক আমার কাছে নিলুফার পরিবর্তনটা বেশ ভালোই লেগেছে। ওর সংসার জীবনের জন্য, আমার শুভেচ্ছা রইল। ভালো থাকুক পরিচিত মানুষগুলো, তাদের নিজ নিজ জায়গায় ।।
ছোটবেলায় আমরা যাদের সাথে কাটিয়েছি হয়তো সময়ের কারণে তাদের সাথে আর দেখা হয়ে ওঠেনা। সবাই যে যার মতো ব্যস্ত জীবন পার করছে। যাইহোক আপনি আপনার একটু সময় বের করে যে আপনার সেই ছোটবেলার প্রিয় মানুষটির কাছে গিয়েছেন এটা জেনে ভালো লাগলো। আপনাদের জন্য শুভকামনা রইল।
ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর মন্তব্য করেছেন। শুভেচ্ছা রইলো আপনার জন্য।
আপু অনেকেই কাছের মানুষকে ভুলে থাকতে পারে, আবার অনেকেই কাছের মানুষকে ভুলে থাকতে পারে না। তার মধ্যে আপনি একজন। তবে খুব কমই দেখা যায় ভুলে থাকার। দীর্ঘদিন পর দেখা হওয়ায় কতই না খুশি হয়েছেন আপনারা তা দেখেই বোঝা যাচ্ছে। ধন্যবাদ আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য। শুভেচ্ছা ও ভালোবাসা রইলো।
ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর মন্তব্য করেছেন। শুভেচ্ছা রইলো আপনার জন্য।
আমরা আমাদের জীবনের ব্যস্ততার মাঝে আমাদের ছোটবেলার সাথী গুলোকে হারিয়ে ফেলেছি। যাদের সাথে হাসি, আনন্দ, কান্নায় সবকিছুতে মেতে থাকতাম তারা আজ কত দূরে চলে গেছে। সবাই যে যার মতো ব্যস্ত সংসার জীবন পার করছে। হয়তোবা কেউ কেউ আবার পড়াশুনার তাগিদে দূরে রয়েছে। আপু আপনার এই পোস্টটি পড়ে আমারও আমার কাছের মানুষগুলোর কথা মনে পড়ে গেল যাদেরকে আমি কতদিন থেকে দেখি না। মনে পড়ে গেল তাদের সাথে কাটানো বিভিন্ন মধুর স্মৃতিগুলো। মাঝে মাঝে ইচ্ছে করে সবার সাথে একত্রিত হয়ে আবারো সেই সময়গুলো কাটাই। কিন্তু ব্যস্ততার কারণে কেউ সেভাবে সময় দিয়ে উঠতে পারে না। তবে আপনি যে আপনার এই ব্যস্ততম জীবনের মাঝেও আপনার নিলুফা খালামণির বাসায় গিয়েছেন এবং তাকে সময় দিয়েছেন এটা দেখে খুবই ভালো লাগলো। সত্যি কথা বলতে সেই সময় গুলো হয়তো আপনারা অনেক বেশি উপভোগ করেছেন। শুভকামনা রইল আপনাদের জন্য।
ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর মন্তব্য করেছেন। শুভেচ্ছা রইলো আপনার জন্য।
এভাবে করে অনেকদিন পরে হঠাৎ ভাইকে নিয়ে আপনার বান্ধবীকে (খালামণি) সারপ্রাইজ দিয়ে সত্যিই খুব চমৎকার কাজ করেছেন কারণ পূর্বের স্মৃতি গুলো, খুব আনন্দঘন মুহূর্ত গুলো সবই এখন মনে পরার মত একটা উপলক্ষ তৈরী করতে পেরেছেন। ধন্যবাদ শেয়ার করার জন্য।
ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর মন্তব্য করেছেন। শুভেচ্ছা রইলো আপনার জন্য।
আসলে আমাদের প্রত্যেকের জীবনটাই এরকম যে আমরা ছোটবেলায় যাদের সাথে চলতে চলতে বড় হয়েছি তার সাথে এক সময় কোন দেখা-সাক্ষাৎ এ থাকে না। কিন্তু যখন অনেক বছর পর হঠাৎ করে দেখা হয় তখন তাদেরকে দেখে খুবই ভালো লাগে। তো আপনার বান্ধবীর সাথে অনেকদিন পর দেখা হয় আপনার অনেক ভালো লেগেছে এবং তারও অনেক ভালো লেগেছে এটা আপনার কথায় বোঝা যাচ্ছে।
ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর মন্তব্য করেছেন। শুভেচ্ছা রইলো আপনার জন্য।