বাড়ি থেকে মেসে ফিরে আসার গল্প।

in আমার বাংলা ব্লগ20 hours ago

হ্যালো..!!

আমার প্রিয় বন্ধুরা,

আমি @purnima14 বাংলাদেশী,

আজ- ০৭ মার্চ, মঙ্গলবার, ২০২৫ খ্রিঃ

কভার ফটো


1000039575.jpg

Source: Pixabay



আমি আশা করি, আপনারা সবাই সুস্থ এবং সুন্দর আছেন। আমি নিজেও ভালো আছি। আমি সবসময় চেষ্টা করি নিজেকে হাসি খুশি রাখার। আমি "আমার বাংলা ব্লগের" মাধ্যমে আপনাদের সামনে আমার ক্রিয়েটিভিটি তুলে ধরবো। আমি আপনাদের সাথে বিভিন্ন ধরনের পোস্ট শেয়ার করে থাকি। আজকেও আপনাদের সাথে নতুন একটি পোস্ট নিয়ে হাজির হয়েছি। আশা করি আজকের পোস্ট আপনাদের কাছে ভালো লাগবে। বেশ কয়েকদিন বাড়িতে থাকার পর কাল আবার মেসে এসেছি। বাড়িতে ছুটি কাটিয়ে মেসে আসার সময় মন যেন আর আসতে চায় না। ইচ্ছে করে আরো কিছুদিন মায়ের কাছে থেকে যায়। কালকে থেকে খুব খারাপ লাগছে। সে অনুভূতি আপনাদের সাথে শেয়ার করব। চলুন তাহলে দেরি না করে শুরু করা যাক।



আমাদের অনেকের জীবনের বেশ খানিকটা সময় কেটেছে বাড়ির বাইরে। অর্থাৎ মেসে, হোস্টেলে কিংবা কারোর বাসায়। পড়াশোনার কারণে আমাদেরকে বাড়ির বাইরে থাকতে হয়। বাড়ির বাইরের এই জীবনটা মোটেও সহজ নয়।বাইরে এসে মানিয়ে নিয়ে চলতে পারাটাও বিরাট বড় একটা ব্যাপার। স্টুডেন্ট লাইফে মেসে বা হোস্টেলে থাকেন এরকম মানুষ খুব কম। আমি তো অনেক ছোটবেলা থেকেই বাইরে থাকি।এই বাইরের জীবনটা যে কতটা কঠিন আমি খুব ভালোভাবে সেটা বুঝতে পারি।

বাড়ি মানে শান্তি। বাড়ির অফুরন্ত শান্তি ছেড়ে এই ব্যস্ত শহরে এসে মেস কিংবা হোস্টেলে মানিয়ে নিয়ে থাকতে সকলেরই কষ্ট হয়। যখন ছুটি পাই তখন যেন বাড়িতে যাওয়ার জন্য মনটা মরিয়া হয়ে ওঠে। বাড়িতে গিয়ে কিছুদিন থাকার পর আবার যখন মনে পড়ে ক'দিন পর এই ছুটি শেষ তখন যেন নিমেষ এই মনটা খারাপ হয়ে যায়। বাড়ি ছেড়ে আবার চলে যেতে হবে এই কথা ভেবে। একবার বাড়ি থেকে বের হলে আর কখনোই একবারে বাড়ি ফেরা হয় না। অতিথির মত যাওয়া আসা। এরকমটা প্রায় প্রত্যেকের জীবনেই হয়। যারা বাড়ির বাইরে থাকে তারাই বোঝে বাড়ির আসল মর্ম।

প্রতিদিন সকালে মায়ের হাতের রান্না ভাত খাওয়ার কতই না শান্তি। মায়ের হাতের মজার মজার খাবার এক টুকরো স্বর্গ। আর হোস্টেল বা মেসে এসে সে কি খাবার মুখেই তোলা যায় না। আর আমরা যারা রান্না করে খাই তাদের তো মুখে দেওয়ার মতো খাবার রান্নাই করা থাকে না। কখন রান্না করবো তারপর খাব। প্রতিদিন সকালে উঠে রেডি খাবার পাওয়া যায় না। সকালের খাবার দুপুরে আবার দুপুরের খাবার রাতে। কোন কোন দিন তো একবারে রাতেই খাওয়া হয়। আবার কোনদিন বা বাইরের খাবার খেয়ে কেটে যায়। কত অদ্ভুত আমাদের জীবন।

প্রায় ১৫ দিন মতো ছুটি পেয়েছিলাম। ছুটি পেয়ে মায়ের কাছে গিয়েছিলাম। মায়ের আঁচলের ছায়ায় থাকা কত যে শান্তি তা বলে বোঝানো যাবে না। দিনগুলো খুব ভালোই কাটছিল। হঠাৎ করেই ছুটি শেষ হয়ে গেল। দেখতে দেখতে যে পনেরোটা দিন কিভাবে কেটে গেল বুঝতেই পারলাম না। আবার মেসে আসার চিন্তা। মেসে আসবো আসবো করে তিন দিন পিছিয়েছি। প্রত্যেকবার তো মেসে আসি এত খারাপ লাগে না। এবারে মেসে আসতে আমার খুব খারাপ লাগছিল। তিন দিন পিছানোর পরে আর দেখলাম দেরি করলে হবে না। প্রাইভেট থাকায় বাড়ি থেকে মেসে চলে আসলাম। আসার সময় খুব কষ্ট হচ্ছিলো

আশার সাথে সাথেই আমার ছোট বোন বারবার কল করছিল। একটাই কথা, দিদি তুমি কবে আসবা? সেটা শুনে আরো বেশি কষ্ট হচ্ছিল। একসাথে বেশ কয়েকটা দিন কাটিয়েছি। প্রত্যেকবার আমি বাড়ি থেকে চলে আসার পর ছোট বোনটা এভাবেই কান্না করে। আমার নিজেরও খুব কান্না পায়। কালকে থেকে কিছুতে কোন কাজে মন বসাতে পারছি না। কেমন যেন ফাঁকা ফাঁকা লাগছে। রান্না করে খেতে ইচ্ছে করছিল না। কোনমত একটু খিচুড়ি রান্না করে খেয়েছি। বাড়ি থেকে আসার পর প্রথম কয়দিন খুব কষ্ট হয়। তারপর আবার আস্তে আস্তে ঠিক হয়ে যায়।

বাড়ির মত শান্তি আর কোথাও নেই। মেসে আসলে কেউ বলে না ভাত হয়েছে খাবার খেয়ে নে। প্রতিদিন মায়ের এই ডাকটা খুব মিস করি। যখন খুব ক্লান্ত হয়ে কলেজ থেকে ফিরে তখন মনে হয় ইস কেউ যদি এখন একটু খাইয়ে দিত। তারপর ভাবি আমি মেসে আছি এখানে আমি না খেয়ে থাকলেও কেউ দেখবে না। বাড়ি থেকে বের হলেই জীবনের আসল বাস্তবতা বোঝা যায়। আমি কুষ্টিয়া শহরের মধ্যে থেকেও বাড়িতে খুব কম যাওয়া হয়। বাড়ি এবং বাড়ির মানুষ গুলোর কথা খুব মনে পড়ছে।

ওই যে কবে বাড়ি থেকে বেরোলাম আর কখনোই একেবারের জন্য বাড়ি যাওয়া হয় না। অতিথির মতো যায় আর অতিথির মতো চলে আসি। আর কখনোই হয়তো পার্মানেন্ট বাড়ি যাওয়া হবে না। আমার মত অনেকেরই এরকম ভাবেই প্রতিটি দিন কাটে। আমরা যারা হোস্টেলে বা মেসে থেকে দিন কাটাই তাদের জীবন মোটেই সহজ নয়। প্রতিটা দিন খুব কষ্ট করে আমাদের পার করতে হয়। সব সময় মন খারাপ হলে বাড়ি যেতে পারি না। হয়তো আর কখনো যখন তখন বাড়ি যাওয়া হবে না। মেসের এই ছোটখাটো পরিবার নিয়ে আমরা সবাই ভালো থাকি।



প্রিয় বন্ধুরা,আমার আজকের ব্লগটি কেমন হয়েছে আপনারা সবাই কমেন্টের মাধ্যমে অবশ্যই মন্তব্য করবেন, সামান্য ভুল ত্রুটি হলে অবশ্যই ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন এবং সুপরামর্শ দিয়ে সবসময় পাশে থাকবেন। আবার দেখা হবে নতুন কোনো পোস্ট নিয়ে শীঘ্রই, ততক্ষণে সবাই সুস্থ ও সুন্দর থাকবেন।



আমি কে !

Screenshot_20231102_205038_Facebook-01.jpeg

আমি পূর্ণিমা বিশ্বাস, আমার ইউজার নেম @purnima14। আমি আমার মাতা-পিতা এবং নিজের মাতৃভূমি ও মাতৃভাষাকে ভালবাসি। আমি হৃদয় থেকে ভালবাসি সৃষ্টিকর্তা ও তার সকল সৃষ্টিকে। আমি বর্তমানে কুষ্টিয়া পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে সিভিল টেকনোলজিতে ডিপ্লোমা ইন-ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে লেখাপড়া করছি। আমি ভ্রমণ করতে, কবিতা লিখতে ও আবৃত্তি করতে, গান শুনতে, যেকোনো ধরনের রেসিপি তৈরি করতে ও প্রাকৃতিক দৃশ্যের ফটোগ্রাফি করতে অনেক পছন্দ করি। "আমার বাংলা ব্লগ" কমিউনিটিতে কাজ করতে পেরে আমি গর্বিত



সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ
@purnima14



VOTE@bangla.witness as witness witness_proxy_vote.png
OR
SET @rme as your proxy
witness_vote.png

standard_Discord_Zip.gif

Coin Marketplace

STEEM 0.12
TRX 0.23
JST 0.030
BTC 79492.61
ETH 1570.27
USDT 1.00
SBD 0.66