স্মৃতিচারণ: আমার শৈশব কালের বৈশাখী ঝড়ে আম কুড়ানোর কিছু স্মৃতি
আমি @riyadx2 বাংলাদেশ থেকে
রবিবার, ১২ ই মে ২০২৪ ইং
শিশুদের বইয়ে ‘মামার বাড়ি’ কবিতায় ‘ঝড়ের দিনে মামার দেশে, আম কুড়াতে সুখ’ কথাটি পড়লেই হারিয়ে যাই শৈশবে। মনে পড়ে যায় শৈশব কালের বৈশাখী ঝড়ের কথা, মনে পড়ে যায় বৈশাখের লন্ড ভন্ড ঝড়ে আম কুড়ানোর কিছু স্মৃতি। এগুলো হয়তো কখনোই ভোলার মতো নয়, মনে থাকবে মৃত্যুর আগ মুহূর্ত পর্যন্ত। সবার জীবনেই কিছু স্মৃতি রয়েছে তা কখনো ভোলার মতো নয়। ঠিক অনুরুপ ভাবে আমার জীবনেও বেশ কিছু স্মৃতি রয়েছে তা কখনোই ভোলার নয়। সেই স্মৃতি গুলোর মধ্যে অন্যতম হলো শৈশব কালে বৈশাখী ঝড়ে আম কুড়ানোর কিছু স্মৃতি। আসলে তখনের দিন গুলো কত সুন্দর ছিল। ছিল না কোন কাজের চাপ, ছিল না কোন বাধা।
যেহুতু আমি ছোট বেলা থেকেই গ্ৰাম এলাকার মধ্যে বেড়ে উঠেছি। সেহেতু আমি ছোট বেলা থেকেই আমের সাথে খুবই পরিচিত।যখন আমি ক্লাস সিক্সে পড়ি, তখন আমাদের বাড়ির সামনে একটি বিশাল বড় ফজলী আমের গাছ ছিল।প্রতি বছর এই গাছের মধ্যে প্রচুর পরিমাণে আম ধরতো, কোন বার আম ধরা মিস হয়না। একদিন হঠাৎ বৈশাখ মাসে সকাল বেলা থেকেই ঝিম ঝিম করে বৃষ্টি পড়েছে, বৃষ্টির তেমন একটা চাপ নেই। সেদিন আমি বৃষ্টির জন্য স্কুল যাইনি। চাইলে স্কুল যেতে পারতাম, স্কুল আমাদের বাড়ির একদম কাছেই। সকাল বেলা থেকে ঝিম ঝিম করে বৃষ্টি হওয়ার পর একটু পরে খুবই জোরে বাতাস উঠলো।তখন আমি বাসা থেকে বাহিরে বেরিয়ে পড়লাম, কেননা তখন আমার আম কুড়ানোর একটি অন্যরকম নেশা ছিল।
এরপর বাড়ির বাহিরে বের হয়ে দেখি আমাদের ফজলী আম গাছের নিচে প্রচুর পরিমাণে আম পড়েছে। আমার বেশ কয়েকজন চাচাতো ভাই আম গুলো কুড়াচ্ছিল, কিন্তু আমি তাদের কে তাড়িয়ে দিয়ে বাসা থেকে একটি বড় পাত্র নিয়ে আসলাম, এরপর আমি আম গাছের নিচের সব আম গুলো কুড়িয়ে পাত্র ভর্তি করেছিলাম। এরপর বাতাসের চাপ একটু কমে গেল। আমি আমের পাত্র টি বাসায় নিয়ে গেলাম। তখন আম গুলো তেমন একটা বড় হয়েছিল না। কিন্তু তখন কুড়ানোর একটা আমেজ ছিল মনের মধ্যে। বর্তমান সময়ের ঝড়ে গাছের পাকা পড়লে ও কখনো আর আম কুড়ানোর জন্য বের হতে আর ভালো লাগে না। সময়ের সাথে সবকিছুর পরিবর্তন সাধিত হয়ে যায়।এক সময় মনে মনে ভাবতাম কখন ঝড় আসবে, কখন আম কুড়াবো। কিন্তু বর্তমান সময়ে আম কুড়ানোর কোন চিন্তা ধারা মনের মধ্যে আসে না।
হঠাৎ আরেকদিন বিকাল বেলা প্রচন্ড পরিমানে ঝড় উঠে। এই ঝড়ের মধ্যে গ্ৰামের গাছপালা সহ বেশ কয়েকটি বাড়িঘর লন্ড ভন্ড হয়ে যায়। তখন গ্ৰামের বাড়ি ঘরের অবস্থা তেমন একটা ভালো ছিল না, এখন অনেক টা উন্নত হয়েছে। এরপর আমি ঝড় শেষে বাড়ির উত্তর দিকের একটি আম গাছের নিচে চলে গেলাম। গিয়ে দেখতে পারলাম আম গাছের নিচে প্রচুর পরিমাণে আম পড়েছে এবং বেশ কিছু গাছের ডাল ভেঙে পড়েছে।এই গাছটি গ্ৰামের মধ্যে বেশ পুরনো একটি গাছ। এরপর আমি বাসা থেকে একটি চটের বস্তা নিয়ে আসলাম এবং আম গুলো কুড়িয়ে বস্তা ভর্তি করে নিয়ে এসেছিলাম। তখন এই আম গুলো খাওয়ার এতো বেশি লোক ছিল না।আর আম গুলো তেমন পরিপক্ক ছিল না। বেশিরভাগ আম গুলো পচে নষ্ট হয়ে যেত। তবুও আমি আম বাড়ির মধ্যে কুড়িয়ে নিয়ে আসতাম।আম কুড়ানো আমার একটি নেশা ছিল।এটাই ছিল আমার শৈশবের আম কুড়ানোর স্মৃতি।
সবাই কে অনেক অনেক ধন্যবাদ।
Vote@bangla.witness as witness
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
You've got a free upvote from witness fuli.
Peace & Love!
গ্রামে যারা ছোট বেলা থেকে বেড়ে উঠেছে তারাই শুধু ঝড়ের দিনে আম কুড়ানোর স্বাদ পেয়েছে। ঝড়ের দিনে গ্রামের মানুষরা আম কুড়ানোর প্রতিযোগিতায় নেমে পড়ে বলা চলে।বেশ ভালো লাগে আম কুড়াতে ও আম কুড়ানো দেখতে।ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর আম কুড়ানোর স্মৃতিচারন করে পোস্ট টি শেয়ার করার জন্য।
জী আপু গ্ৰামের মধ্যে যারা বসবাস করে থাকেন, তারা ছোট বেলায় প্রত্যেকেই আম কুড়ানোর সাথে সম্পর্কিত । আমি ও এই দিক দিয়ে কিন্তু কম নয়।
আসলে ছোটবেলায় আমরা সকলে আম কুড়িয়েছি এবং এই আম কুড়ানোর মধ্যে একটি আলাদা ভালোলাগা থাকে৷ আজকে আপনি সেরকমই সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করেছেন এবং আম কুড়ানোর সময় সকলে যখন একসাথে আম কুড়ানো হয় তখন একজনের সাথে আরেকজনের প্রতিযোগিতা লেগে যায়। ধন্যবাদ এরকম সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য৷