হাঁড়িভাঙ্গা আম বাজারজাতকরণ (প্রথম পর্ব)2024
আসসালামুয়ালাইকুম, এবং হিন্দু ভাইদেরকে আদাব।আমার বাংলা ব্লগ এর সবাই কেমন আছেন, আশা করি প্রত্যেকে অনেক বেশি ভালো আছেন। আমি ও আপনাদের দোয়ায় আল্লাহর রহমতে ভালো আছি। আজকের ব্লগ এ আমি আমার অঞ্চলের হাঁড়িভাঙ্গা আম সম্পর্কে আংশিক কিছু বলতে চাই।আশাকরি আপনাদের প্রত্যেকের অনেক বেশি ভালো লাগবে। তাহলে চলুন এবার শুরু করা যাক।
আমার বাসা রংপুর জেলার মিঠাপুকুর থানার 1 নং খোঁড়াগাছ ইউনিয়নে। আমি গ্রামেই বাস করি। শহরের তুলনায় গ্রামীন জীবন যাপন আমার কাছে প্রিয়। শহরে শব্দ দূষণ, ধুলাবালি, ময়লার স্তূপের বিশ্রী গন্ধ আমার একদম ভালো লাগেনা। আমার গ্রামে সকালে ঘুম ভাঙ্গে পাখির কিচিরমিচির শব্দে। আমার গ্রামের চারপাশে ফসলের মাঠ এবং গাছপালায় ভরপুর। শহরের তুলনায় গ্রামে গাছপালা বেশি থাকায় আবহাওয়া সব সময় শিথিল থাকে।
আমার অঞ্চল প্রধানত হাঁড়িভাঙ্গা আমের জন্য বিখ্যাত। সারা বছর প্রায় 200 কোটি টাকার মতো আম বিক্রি হয় আমার অঞ্চলে। আমাদের আম বাগান রয়েছে তিনটি। আম পাকার আগেই আমরা দুটি বাগান বিক্রি করেছি। আরেকটি বাগান বাসাতেই রেখে আম পেড়ে বাজারে নিয়ে গিয়ে বিক্রি করতেছি।
গতবারের তুলনায় এবারে আমের দাম একটু চড়া। গতবার আমের শুরুতেই ভালো আমটা ১৮০০ থেকে ২২০০ টাকা গিয়েছিল। তবে এবার ভালো আমটা ২০০০ থেকে ৩০০০ পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। এবারে কৃষক একটু হলেও লাভবান হবেন বলে আমি মনে করি।
শুধু আমের দাম দেখলেই হবে না। এই আম পরিচর্যায় কৃষকরা অনেক পরিশ্রম করেন। শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত আম পরিপক্ক করার আগ মুহূর্ত পর্যন্ত কৃষকে হাড়ভাঙ্গা পরিশ্রম করতে হয়। আম গাছের নিচে জৈব সার, রাসায়নিক সার ব্যবহার করতে হয়। মুকুল আসার পূর্বে কীটনাশক প্রয়োগ করতে হয়। আসার পর যখন গুটিগুটি আম দেখা দেয় তখন আবার আম যাতে নষ্ট না হয় সেজন্য কীটনাশক স্প্রে করা লাগে। শুধু তাই নয় আম বড় হওয়ার পরও পোকামাকড়ের হাত থেকে আম কে ভালো রাখতে কীটনাশক ব্যবহারের বিকল্প নেই।
আজ সকালবেলা আমি আর আমার বাবা সহ আমাদের ছোট একটা বাগানে ছয় কেরেট আম পারতে গিয়েছিলাম। আমপারা শেষে ভ্যানে করে সেই আমগুলো বাজারে বিক্রি করার জন্য আমার বাবা নিয়ে যাচ্ছেন। আম বাজারে নিয়ে যাওয়াতে অনেক ভোগান্তি পেতে হয় কারণ বর্তমানে বর্ষার সৃজন চলতেছে। অতি বৃষ্টির কারণে আমাদের কাচা রাস্তায় অনেক কাঁদার সৃষ্টি হয়েছে। রাস্তা দিয়ে মানুষ চলাচল করাই কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে। কষ্ট করে হলেও এই রাস্তার মাঝ দিয়াই আমের ভ্যান ঠেলে বাজারে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। আশা করি আজকে ভালো দাম পাব।
আম এ আছে ভিটামিন আমের সৃজনে তাই আম খান প্রতিদিন। আম কেনার সময় কাচা আম কেনার চেষ্টা করবেন। কাচা আম এ কোন ভেজাল থাকে না। অনেক সময় দেখা যায় অসাধু ব্যবসায়ীরা অতি লাভের আশায় ক্যালসিয়াম কার্বাইড স্প্রে করে আম পাকান যা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য অনেক ক্ষতিকর।
নিজে সুস্থ থাকুন পরিবারকে সুস্থ রাখুন ধন্যবাদ।
সারা বাংলাদেশের আম শেষ হয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত আমাদের মিঠাপুকুর উপজেলার হাঁড়িভাঙ্গা আম শেষ হয়নি। আপনি দেখছি আজকে আমাদের মাঝে হাঁড়িভাঙ্গা আম বাজার জাত করার পুরো তথ্য আমাদের মাঝে তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন। আসলে হাঁড়িভাঙ্গা আম টি জি আই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়ার পর সকলের নিকট সুপরিচিত হয়ে উঠেছে ।