উজানে কৈ মাছ ধরার আনন্দময় মুহূর্ত।
আসসালামু আলাইকুম
সবাই কেমন আছেন? আশা করি সবাই ভাল আছেন। আমিও আল্লাহর অশেষ রহমতে ভালো আছি। আমার বাংলা ব্লগ পরিবারের সকলের সুস্বাস্থ্য কামনা করছি। আজকে আমি আরেকটা নতুন ব্লগ নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির হলাম।
ছোটবেলা যখন প্রচুর পরিমাণ বৃষ্টি হতো। তখন দলবল নিয়ে ছুটে বেড়াতাম বিভিন্ন পুকুরের আশেপাশে, জমিনের ধারে ধারে। যদি পাই কৈ মাছ, সিং মাছ কিংবা শোল মাছের সাক্ষাৎ। অমনেই সবাই লাফিয়ে পড়তাম ধরার প্রতিযোগিতা। সোনালী শৈশবের হাজারো স্মৃতি মনে পড়ল, গতকাল যখন রেমালের তান্ডব শেষে হলো, কয়েকজন বন্ধু মিলে রাস্তা বের হলাম হাঁটার জন্য। ঠিক তখনই চোখের সামনে পড়লো একটি কৈ মাছ। হঠাৎ মাছটি দেখার সাথে সাথেই আমরা তিনজন জমিনে নেমে গেলাম, মাছটিকে কে আগে ধরবে তার জন্য প্রতিযোগিতায় লেগে গেলাম।
জমিনে হালকা হালকা পানি ছিল। একটি কৈ মাছ ধরতে আমাদের লেগে গেল পাঁচ মিনিট। অবশেষে হাতে ধরা দিল। মাছটি ধরার পরপরই আমরা তন্ন তন্ন করে খুঁজতে লাগলাম আরো কৈ মাছ, কিন্তু কোনভাবেই আমাদের চোখের সামনে পড়লো না। এক জমিনের পর আরেক জমিন পার হচ্ছি শুধু যদি একটি মাছ পাই। তবে কপালের জুটলো না কোন মাছ।
হাঁটতে হাঁটতে তিনজন মিলে একটি ডোবার পাশে গেলাম, সেখানে দেখলাম একটি বড় শোল মাছ। প্রায় দেড় কেজির কম হবেনা। দেখামাত্রই তিনজন দৌড়ে সেখানে গেলাম। এ মাছটি ধরার জন্য প্রতিযোগিতা লেগে গেলাম। তিনজনের ধাক্কাধাক্কিতে অবশেষে শোল মাছটি ডোবা লাফিয়ে পড়ে গেল। এই দৃশ্য দেখে খুবই কষ্ট লাগলো তিনজনের মধ্যেই।
তবে এটা আমরা মজার ছলেই করছিলাম। কিন্তু শোল মাছ যখন লাফিয়ে ডোবা নেমে গেল, তখন তিনজনের কাছেই খুব কষ্ট লাগলো। এবার ডোবার চারপাশে চিরুনি অভিযান শুরু করলাম, কোথায় আছে শোল মাছ আর কৈ মাছ, ধরেই ছাড়বো। চোখের সামনে কয়েকটা শামুক ছাড়া আর কিছুই পড়লো না।
এর শামুক গুলো দেখে ছোটবেলার কথা মনে পড়ল, ছোটবেলা এই শামুক আমরা হাঁসের জন্য খুঁজে বেড়াতাম। ঘরে ছোট ছোট পাতিহাঁস পুষতো, তাদের প্রধান খাদ্য ছিল শামুক। আর বৃষ্টি হলে আমরা ব্যাগ নিয়ে বের হয়ে যেতাম শামুকের সন্ধানে। যারা গ্রাম অঞ্চলে বেড়ে উঠেছে তারা দারুন ভাবে নিজ জীবনের সাথে বিষয়গুলো মিলিয়ে দেখতে পারবে।
বর্তমান প্রজন্মের ছেলেমেয়েরা এই জিনিসগুলো উপলব্ধি করতে পারবে না। যাইহোক যে কথাটি বলতেছিলাম, রেমালের এই কঠিন ঘূর্ণিঝড়ের মুহূর্তেও একটি বড় আনন্দ পেলাম উজানের কৈ মাছ ধরতে পেরে। জমিনে আর কোন মাছ না পেয়ে যখন রাস্তা উঠলাম, ঠিক তখনই রাস্তার উপর আরেকটি বড় কৈ মাছ দেখতে পেলাম। এই মাছটি ঘাসের মধ্যে হাটছে। সাথে সাথে মাছটিকে ধরে ফেললাম। আমাদের সর্বমোট মাছ হল কৈ মাছ দুটি।
সত্যি খুব মজাদার এক সময় কাটল। এই আনন্দময় মুহূর্তগুলো সব সময় আসে না। অনেকদিন পর বন্ধুরা মিলে এমন কাজ করতে পেরে ছোটবেলার কথা মনে পড়ল। পরে মাছগুলো আমাকে দেওয়ার জন্য অনেক বেশি জোরাজোরি করলো, কিন্তু আমি না নিয়ে আমার বন্ধু করিমকে দিয়ে দিলাম। সেও অনেক বেশি খুশি হলো। সময়টা অনেক ভালো কাটলো।
আজকে এ পর্যন্তই সবার সুস্বাস্থ্য কামনা করে এখানে শেষ করছি।
নিজেকে নিয়ে কিছু কথা
আসসালামু আলাইকুম, আশা করি সবাই ভালো আছেন। প্রথমেই সবাইকে আমার আন্তরিক অভিনন্দন। আমি তাহেরুল ইসলাম, আমার স্টিমিট ইউজার আইডি হল - @ti-taher। আমি ফেনী জেলায় জন্মগ্রহণ করেছি। বর্তমানে ফেনী শহরে অবস্থান করছি। আমি ফেনীতে পড়াশোনা করেছি এবং বড় হয়েছি। আমি একজন ভ্রমণপ্রিয় মানুষ, আমি ভ্রমণ করতে এবং ছবি তুলতে ভালোবাসি। নতুন জায়গায় ঘুরতে আগ্রহী, নতুন জায়গায় ঘুরতে এবং নতুন কিছু আবিষ্কার করতে ভালোবাসি। আমি বই পড়তেও ভালোবাসি, অনেকে আমাকে বই পোকাও বলে থাকে। আমি কবিতা, গল্প, উপন্যাস এবং বৈজ্ঞানিক বই সহ সব ধরনের বই পড়তে পছন্দ করি। আমার প্রিয় কবি "কাজী নজরুল ইসলাম"। প্রিয় কবিতা "বিদ্রোহী"।( ফি আমানিল্লাহ)
VOTE @bangla.witness as witness
OR
SET @rme as your proxy

https://twitter.com/titaherul/status/1795483690283466824?t=Qn4HqInPE7j3WKN8XtUctw&s=19
আসলে কৈ মাছ বৃষ্টি হলে ডাঙায় উঠে আসে এটা বেশ মজাদার বিষয়। আমাদের এদিকেও এমনটা দেখা যায় যখন মুষলধারে বৃষ্টি হয় তখন এরকম উজান থেকে অনেক কৈ ডাঙায় উঠে আসে। এই মুহূর্তগুলো আমরা যেমন এনজয় করি তেমনি অনেক কৈ মাছ ধরি যাই হোক ধন্যবাদ ভাই আপনাকে আপনার সুন্দর মুহূর্ত গুলো শেয়ার করার জন্য।
আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আমার পোস্টটি পড়ে আপনার মহামূল্যবান মন্তব্য করার জন্য। বৃষ্টির পরেই কৈ মাছ উপরে উঠে আসে, নতুন পানির সংস্পর্শ পেতে। আর এই সময় কৈ মাছ ধরার অনুভূতিটি সত্যিই অসাধারণ।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
আসলে আমরা সবাই জানি যে বৃষ্টির সময় এই কৈ মাছ জলের উপরে উঠে আসে এবং বিভিন্ন জায়গায় চলাফেরা করে। আসলে এই বিষয়টি আমি আগে জানতাম কিন্তু কখনও আমার চোখের সামনে এ ধরনের মাছের দেখা মেলেনি। যাই হোক আপনি আজকে আপনার পোষ্টের মাধ্যমে এই সুন্দর দৃশ্যটি দেখার সৌভাগ্য করে দিয়েছেন। ধন্যবাদ আপনাকে এত সুন্দর একটা পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
প্রথমেই আপনাকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি আমার পোস্টটি পড়ে আপনি আপনার মহামূল্যবান মন্তব্য করার জন্য। বৃষ্টির শেষে আপনি ডোবার আশেপাশে একটু হাঁটাচলা করবেন। দেখবেন আপনার সামনেও কৈ মাছ পড়বে। আর সে সময়ের অনুভূতিটি আসলেই ভাষা প্রকাশ করা যায় না।
বর্তমান তেমন একটা খাল বিল পুকুর নেই থাকলেও শুকিয়ে গিয়েছে। ছোটবেলা বৃষ্টিময় দিনে পুকুর পাড়ে দেখতাম কৈ মাছ উপরে উঠে এসেছে। যেটা বর্তমান খুবই মিস করি। আপনি ঘূর্ণিঝড়ের রেমালের তান্ডবে যেটা দেখতে পেয়েছেন। ভালো লাগলো সেই মুহূর্ত শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।
সঠিক বলেছেন আপনি, বর্তমান খাল, বিল, পুকুরের সংখ্যা অনেকটাই কমে গেছে। তুলনামূলকভাবে যা আছে বৃষ্টির পরে সেখান থেকেই অসংখ্য কৈ মাছ উঠে আসে। এই দৃশ্যটা অনেকটাই আশ্চর্যজনক এবং অনুভূতিপূর্ণ। অবশেষে আপনাকে ধন্যবাদ আপনি আপনার মূল্যবান মন্তব্যটি উপস্থাপন করার জন্য।
একটু বৃষ্টি হলে কৈ মাছ উপরের দিকে উঠে আসে। আর সে এমন ভাবে উপরের দিকে উঠে আসে দেখলে অবাক লাগে। একবার আমাদের বাড়ির পুকুর ভাটিয়ে গিয়ে এমন ভাবে কৈ মাছ উপরের দিকে উঠে এসেছিল। আর সেই থেকে এ মাছের প্রতি আমি বেশি অবগত।
ধন্যবাদ আপনি আপনার মূল্যবান মন্তব্য করার জন্য। আমার পোস্টটি পড়ে আপনি আপনার স্মৃতি শেয়ার করার জন্যও ধন্যবাদ। উজানে কৈ মাছ ধরার অনুভূতিটি সত্যি যে ধরে, সে ব্যতীত কেউই বুঝবে না।
উজানে কৈ মাছ ধরার অনুভূতি পোস্ট টি ভীষণ ভালো লাগলো।আমাদের এলাকায়েও কৈ মাছ উজানে চলে আসে আর অনেকেই মজা করে ধরে।আপনারা তিন জন মিলে শোল মাছের পিছনে ছুটেও শোল মাছ পাননি জেনে খারাপ লাগলো।শামুকটি কিন্তুু দারুণ। ফটোগ্রাফি তে চমৎকার লাগছে দেখতে।ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর উজানে মাছ ধরার অনুভূতি আমাদের সাথে ভাগ করে নেয়ার জন্য।
অসংখ্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি আপনাকে, আমার পোস্টটি পড়ে আপনার মহামূল্যবান মতামত শেয়ার করার জন্য। আমাদের কাছেও খুব আফসোস লাগলো, শোল মাছটি না ধরতে পারার।
শামুক গুলো দেখতে অসাধারণ ছিল।
তিনজন মিলে মাত্র একটা কৈ মাছ ধরেছেন ভাই...? হা হা হা... 🤭🤭 তবে তাড়াহুড়ো না করলে কিন্তু শোল মাছটাও ধরতে পারতেন। যাইহোক, আমরাও আসলে ছোটবেলায় ঝড়ের পরবর্তী সময় এভাবে বিলে মাছ ধরে বেড়াতাম। অনেক ভালো লাগতো সেই সময়টাতে এই ব্যাপার গুলো। অনেকদিন পর আপনার পোস্ট পড়ে সেই কথাগুলো মনে পড়ে গেল।
ধন্যবাদ ভাইজান, আমার পোস্টটি পড়ে আপনি আপনার মতামত শেয়ার করার জন্য। তিনজন মিলে চিরুনি অভিযান দিয়েও আর মাছ পেলাম না। খুব কষ্ট লাগলো যখন শোল মাছটা নিজেদের ব্যর্থতার কারণেই হাতছাড়া হলো। যাইহোক, আপনার শৈশবের স্মৃতিও শেয়ার করেছেন সেজন্য ধন্যবাদ আপনাকে।
কষ্ট লাগাটাই স্বাভাবিক ছিল ভাই।
বৃষ্টি হওয়ার পর মাছ ধরতে অনেক ভালো লাগে। আর ছোটবেলায় এই সময়গুলোতে মাছ ধরতে যেতেন জেনে ভালো লাগলো। কৈ মাছটি দেখেই তো মনে হচ্ছে তুলে নিয়ে এসে কৈ মাছের ঝোল করে ফেলি। দারুন হয়েছে আপনার পোস্ট।
অসংখ্য ধন্যবাদ আপু, পোস্টের আলোকে আপনি আপনার মন্তব্য করার জন্য। এসময় উজানে মাছ ধরার মজাটাই আলাদা। তবে খুব ভালো লেগেছে উজানে মাছ ধরতে পেরে। আবার কষ্ট লেগেছে শোল মাছটি হাতছাড়া করে।
একদম ঠিক বলেছেন ভাইয়া পাতি হাঁসের জন্য উপযুক্ত খাবার এই শামুক। আমরাও বৃষ্টি হলে বিলে অথবা মাঠে চলে যেতাম ।অল্প একটু পানি জমে থাকলে সেখানে অনেক শামুক পাওয়া যেত। আর বাড়িতে এই শামুক গুলো এনে উপরের অংশ ভেঙে নরম অংশটা পাতি হাঁসকে খাওয়ানো হতো। উজানে কই মাছ ধরার সুন্দর একটি মুহূর্ত আমাদের সাথে শেয়ার করেছেন ভাইয়া ধন্যবাদ।
অসংখ্য ধন্যবাদ, আপনার মন্তব্য দেয়ার জন্য। বৃষ্টি হলে শামুক খোঁজার জন্য বের হতাম ছোটবেলা। সেই সুবাদেও মাঝে মাঝে মাছ পেতাম। ছোটবেলার স্মৃতি গুলো সত্যিই দারুণ ছিল।