লাইফস্টাইল: ডাঃ হামজা ভাইয়ার বিবাহর মুহূর্ত
কেমন আছেন আপনারা? আশা করি মহান সৃষ্টিকর্তার সহায়তায় ভালো আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় ভালো আছি। আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিকে ভালোবেসে উপস্থিত হলাম আমাদের প্রিয় খালাতো ডাক্তার ভাইয়ের বিবাহ উপলক্ষে আমার অনুভূতিমূলক পোস্ট। আমি বেশ কিছু পর্বে নিয়ে আপনাদের মাঝে উপস্থিত হয়েছি ভাইয়ার বিবাহর বিস্তারিত অনুভূতি শেয়ার করার জন্য। আজকে আপনাদের মাঝে বিবাহের আনন্দের মুহূর্তটা তুলে ধরবো। আশা করব এই পোস্ট আপনাদের কাছে অনেক ভালো লাগবে ।
বেশ দেখাশোনা জানার পর বিয়ের দিন নির্ধারিত হয়। এদিকে বিয়ের কেনাকাটা সব হয়ে গেছে। আমি শুধু অলংকার ও কসমেটিক সামগ্রী কেনার মুহূর্তে ভাইয়াদের সাথে যেতে পারি নাই। কাঙ্ক্ষিত দিনের আগে বিকেল মুহূর্তে শুনতে পারলাম ভাই আর আম্মা হঠাৎ অসুস্থ। এদিকে মেয়ের বাড়িতে বিয়ের পেন্ডেল খুব সুন্দর করে সাজানো হয়েছে। আমরা বরযাত্রী যত মানুষ যাব তার ডবল পাত্রীপক্ষের গেস্ট থাকবে বিয়েতে। ঠিক সেভাবেই বিয়ের আয়োজন করেছেন মেয়ের বাবারা। কিন্তু কারণে কারণে নির্দিষ্ট দিনে বিয়ে না হয়ে সেই দিনের আগের রাতেই বিয়ে হয়। তাড়াহুড়ো করে রেডি হয়ে পড়লাম। হামজা ভাইয়ারা তাদের গাড়ি নিয়ে পৌঁছে গেল পাত্রীর বাড়িতে। এদিকে আমরাও মোটরসাইকেলে তাদের আগে এসে উপস্থিত হয়ে গেছিলাম। তবে তখন রাত দশটা। এরপর ভাইয়ার সাথে নতুন অতিথিদের সাথে কমবেশি সাক্ষাৎ হলো।
সকল মানুষ বলাবলি করলো ভাগ্য নিয়ে, রাত পোহালে সবাই যে যার মত সুন্দর ভাবে রেডি হয়ে বিয়েতে আসতো। কিন্তু ভাগ্য কেমন দেখো সকল ডেকোরেশন করা হয়েছে ভালো আয়োজন করা হয়েছে কিন্তু বিয়ের রাত্রে হয়ে যাচ্ছে। আসলে কথাটা সত্য ছিল। ফজরের আজানের পর থেকে মানুষজন বিয়ে বাড়ি রান্না করা সকল কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়ার কথা ছিল। কিন্তু সেই বিয়ে হয়ে যাচ্ছে রাত বারোটার দিকে। একদিকে খালাম্মা অসুস্থতা আরেক দিকে বেশ কিছু সমস্যা ফেস হয়েছিল। তাই পাত্র-পাত্রী এবং অভিভাবকদের মতামত নিয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছিল রাতে এই বিয়েটা হয়ে যাক। আমার খুব ইচ্ছা ছিল বিয়ে বাড়িতে অনেক অনেক সুন্দর ফটো ধারণ করব। কিন্তু রাত বলে সেভাবে নিজেও প্রস্তুত ছিলাম না। যেন আনন্দটাই এক প্রকার মাটি। এরপর তাড়াহুড়ো করে কাজী হুজুর ডাকা হল। প্রাথমিকভাবে আমাদের খাবারের ব্যবস্থা করা হলো। পাত্রীর বাসা হাট বোয়ালিয়া বাজারের পাশে। তাই সবকিছু ম্যানেজ করতে তেমন ঝামেলা হয়নি। অনেক মানুষ বাসা থেকে খাওয়া দাওয়া করেও এসেছিলেন। বিষয়টা এমন ছিল যে বিয়ে সত্যি কি রাতে হবে নাকি পূর্বে যেটা শোনা হয়েছিল সেটা। এই নিয়ে অনেকে কনফিউশন ছিল। কিন্তু ভাইয়ার বাড়ির পারিবারিক কিছু কারণ এর জন্য রাতে এই বিয়েটা সম্পূর্ণ করানো হয়।
কিছুক্ষণের মধ্যে পাত্রীর বাবার পাশের গ্রাম থেকে কাজী সাহেব চলে আসলেন। দেখে চিনে ফেললাম এত রাজের ছোট আব্বুর বিয়েতে বিয়ে পড়িয়ে ছিলেন। আসলে রাজের ছোট আম্মু বাবার বাড়ি আর হামজা ভাইয়ার শশুরের গ্রামটা পাশাপাশি। তাদের এলাকার একজন বিয়ে পোড়ানো কাজী। ভালই লাগছিল উনাকে বিয়ে পড়াতে আসতে দেখে। এর আগে ভাইয়ার বিয়েতে ওনার সাথে কথা হয়েছিল। উনি তার উভয় পক্ষের ডকুমেন্টস খাতায় লিপিবদ্ধ করতে থাকলেন। মূলত এটাই বিয়ের কাবিননামা।
এরপর কাজী সাহেব পাত্রপক্ষের কাছ থেকে আর পাত্রীপক্ষের কাছ থেকে স্বাক্ষর চাইলেন। ছেলের পক্ষ থেকে হামজা ভাইয়ের বড় ভাই হিরো ভাইয়া স্বাক্ষর দিলেন আর হামজা ভাইয়ার আঙ্কেল। পাত্রীর পক্ষ থেকে এলাকার চেয়ারম্যান আর আমার বড় আব্বু সাক্ষর দিলেন। আসলে আমার বড় আব্বু পাত্রীর বড় বোনের শশুর। সেই হিসাবে বড় আঙ্কেল উপস্থিত ছিলেন। বলতে গেলে একপ্রকার আত্মীয়র মধ্যে আত্মীয়তা। এরপর পাত্র ও পাত্রী স্বাক্ষরও দিলেন। পাত্রীর মুখে তিনবার আলহামদুলিল্লাহ কবুল শব্দ শোনার মধ্য দিয়ে বিয়ের কাজ সম্পূর্ণ হলো।
বিয়েতে দেনমোহর তিন লাখ রাখা হয়েছে। এটা সর্বজনীন স্বীকৃতভাবেই ধার্য করা হয়। স্বাক্ষর শেষে হুজুর আমাদের সামনে খাতা মিলিয়ে ধরলেন। যে যার মত ফটো উঠিয়ে রাখলেন। এরপর রাজের আব্বু বিয়েতে অলিমা বিতরণ করলেন। অনেক সাধের মিষ্টি বিতরণ করছিলেন। তারা কখন যে এই মিষ্টি কিনেছে সেটা আমার জানা ছিল না। একপ্রকার শুকনা মিষ্টি। অতিরিক্ত মিষ্টি হাওয়ায় অর্ধেক খেতেই যেন মুখ মরে গেছিল। বিয়েতে পাত্রপক্ষের ওলিমা দিতে হয় এটাই নিয়ম।
এরপর বিয়ে বাড়িতে উপস্থিত গণ্যমান্য ব্যক্তিরা সবাইকে বসিয়ে বেশ গুরুত্বপূর্ণ কথা বললেন। কিছুটা সময় ধরে অনেক কথা হলো। হামজা ভাইয়ের বাড়ির পক্ষ লোকরা তার শ্বশুরবাড়ির পক্ষের লোকদের সাথে পরিচয় লাভ করলেন। কে ছেলের কি হন আর কে মেয়ের কি হন এই নিয়ে আলাপ আলোচনা। তাদের ভবিষ্যৎ চিন্তা ধারা নিয়ে ভালো কিছু বুঝ দেওয়া। সংসার জীবনে অনেক সহি ঝগড়া হতে পারে সবকিছু কাটিয়ে দুইজনের মধ্যে মিল রেখে জীবন যাপন করা ইত্যাদি বিষয় নিয়ে কথা হল। এরপর বিদায়ের বেলা চলে আসলো। ততক্ষণে রাত বারোটা বেজে গেছে। এরপর ভালই ভালই আমরা সবাই বিদায় হয়ে পাত্রীর বাবার বাড়ি ত্যাগ করে বাশার উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম।
সাথে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ
বিষয় | হামজা ভাইয়ের বিয়ে |
---|---|
What3words Location | Gangni-Meherpur |
মোবাইল | Infinix Hot 11s |
ক্রেডিট | @jannatul01 |
ব্লগার | আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটি |
আমার পরিচয়
আমার নাম মোছাঃ জান্নাতুল ফেরদৌস শশী। আমার বাসা গাংনী মেহেরপুর, বাংলাদেশ। আমি আপনাদের সুপ্রিয় বিদ্যুৎ জিরো ওয়ান এর পরিবার। আমি একজন গৃহিণী। স্বামী সন্তান সহ আমাদের যৌথ পরিবার। আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির চারজন সদস্য রয়েছে আমাদের পরিবারে, তার মধ্যে আমি একজন। এইচএসসি পাশ করার পর নার্সিং কোর্স করে বিয়ে হওয়ার মধ্য দিয়ে আমার লেখাপড়া স্থগিত হয়। আমার ইচ্ছে আমি এই কমিউনিটিতে দীর্ঘদিন ব্লগ করব। পাশাপাশি আমার নিকটস্থ প্রিয়জনদের সহায়তা করব এই কমিউনিটিতে কাজ করার জন্য।
আলহামদুলিল্লাহ অবশেষে আপনার হামজা ভাইয়ার বিয়ে সম্পূর্ণ হলো। দোয়া করছি আপনার হামজা ভাইয়ের বিবাহিত সংসার জীবনের সুখ শান্তি বয়ে আনুক। হামজা ভাইয়ের বিয়েতে দেখলাম অনেক আত্মীয়তা বেড়ে গেছে। আসলে অনেক সময় বিয়ে বাড়িতে দেখা যায় এক আত্মীয়তা থেকে নতুন আরো আত্মীয়তার বন্ধন তৈরি হয়।
হ্যাঁ আপু বিয়ে হয়েছে কিন্তু দিনে যেভাবে আনন্দের কথা ছিল সেটা হয়নি।
X--promotion
আজকের কাজ সম্পন্ন
ভীষণ আনন্দ করে ভাইয়ার বিয়েতে সময় কাটিয়েছেন বুঝতেই পারছি। কত সুন্দর করে সম্পূর্ণ বিবরণীর ব্যাখ্যা দিলেন। পড়তে পড়তে যেন মনে হচ্ছিল আমিও সেই বিয়ে বাড়ির একজন অংশীদার। শুধু খাওয়াটাই যা হলো না। বাকি সমস্তভাবে আপনার সঙ্গে বিয়ে বাড়ির আনন্দ ভাগ করে নিলাম।
হ্যাঁ দাদা কখনো কোন ঘটনা পড়লে মনে হয় নিজেও সেখানে ছিলাম।