লাইফস্টাইল: ডাঃ হামজা ভাইয়ের বিয়ে || বিয়ের শাড়ি কেনার মুহূর্ত
কেমন আছেন আপনারা? আশা করি মহান সৃষ্টিকর্তার সহায়তায় ভালো আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় ভালো আছি। আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিকে ভালোবেসে উপস্থিত হলাম আমাদের প্রিয় খালাতো ডাক্তার ভাইয়ের বিবাহ উপলক্ষে আমার অনুভূতিমূলক পোস্ট। আমি বেশ কিছু পর্বে নিয়ে আপনাদের মাঝে উপস্থিত হব ভাইয়ার বিবাহর বিস্তারিত অনুভূতি শেয়ার করার জন্য। আজকে আমি হামজা ভাইয়ের বিবাহের দ্বিতীয় পোস্ট শেয়ার করতে চলেছি। এখানে আপনারা জানতে পারবেন বিয়ের শাড়ি কেনার অনুভূতি। এবং সেই মুহূর্তের বিস্তারিত বিষয়গুলো। যেখানে আমরা একাধিক জন উপস্থিত ছিলাম এবং কেনাকাটার মুহূর্তে বিভিন্ন আনন্দে মেতে ছিলাম।
বিবাহের আগ মুহূর্তে ছেলেরা যে লাফালাফি করে এটা কিন্তু আগে জানতাম। কিন্তু এত বেশি লাফালাফি করে সেটা জানা ছিল না। ভাইয়ার বিবাহের আগ মুহূর্তটা সম্পূর্ণ চোখের সামনে যার জন্য উপলব্ধি করতে পারলাম অনেক কিছু। মনে হচ্ছিল যেন তার বিবাহের পাত্রী হারিয়ে যাচ্ছে যত দ্রুত বিবাহর কাজ সম্পন্ন হবে ততই মঙ্গল। যেন দিন তার কাটে না সময় যায় না। বিয়ের জন্য মার্কেট করতে হবে। মেয়ের জন্য বিয়ের শাড়ি এছাড়াও এক্সট্রা শাড়ি। সেলোয়ার কামিজ থেকে শুরু করে বিভিন্ন পোশাক। আত্মীয়দের দিতে হবে এমন কিছু শাড়ি কাপুড় এছাড়াও কসমেটিক সামগ্রী। যাইহোক কাঙ্খিত দিন হুট করে চলে আসলো। হঠাৎ করে হামজা ভাইয়ার ফোন। ফোন রিসিভ করতে ভুলে গেছিলাম কারণ ব্যস্ত ছিলাম। ভাইয়া এসে উপস্থিত। সুমন ভাইয়াকে বলছে এখনই মার্কেট করতে যেতে হবে আমাদের দ্রুত রেডি হও। এদিকে আমারা কেউ খাওয়া দাওয়া করি নাই দুপুরের। কেউ এখনো গোসল করে রেডিও নাই। হঠাৎ করে যদি এসে বলে আজকে মার্কেট করতে হবে কেমন তো লাগে। তারপরেও আমরা দ্রুত রেডি হয়ে বের হয়ে পড়লাম বাজার করার উদ্দেশ্যে। কিন্তু কোন বাজারে কেনাকাটা করব। সিদ্ধান্ত হলো গাংনী বাজারে নয় বামুন্দি বাজারে কেনাকাটা করতে হবে। সেই বাজারে ভাইয়ার একটি বন্ধুর মার্কেট রয়েছে। এদিকে আমি আমার লিস্ট রেডি করে ভাইয়ার হাতে দিলাম। ভাইয়ার কাছে প্রশ্ন করলাম কত হাজার টাকা নিয়ে যাবেন। ভাইয়া টাকার বান্ডিল সামনে বের করে বলল বিয়ে বাজার। ৭০০০০ টাকা তুলেছে। বিয়ে উপলক্ষে এগুলো টাকা দিয়ে সমস্ত জিনিস কেনাকাটা করবে। কথা শুনে মাথায় হাত উঠে গেল। ৭০ হাজার টাকা দিয়ে এত কি কিনবে এখন এই মুহূর্তে! কারণ লিস্টে যেগুলো ওকে করা হয়েছে সেগুলো খুব জোরে ২৫ হাজার টাকা হতে পারে। যাইহোক বামুন্দি বাজারে পৌঁছে গেলাম।
হামজা ভাইয়া প্রথমে রিলাক্সে বসে পড়লো এবং বলল বিয়ের শাড়ি বের করতে। কেন জানি ওই দিন দোকানে বেশি একটা কাস্টমার নেই। তাই বেশ ভালই লাগছিল। কিন্তু ভাইয়ার লাফালাফি দেখে আরো হাসি পাচ্ছিল আমার। শাড়ি পছন্দ করব আমরা কিন্তু দেখি ভাইয়া নিজের শাড়ি পছন্দ করায় ব্যস্ত হয়ে পড়ল, আমরা সাইডে দাঁড়িয়ে থাকলাম। এদিকে সুমন ভাইয়া পছন্দ করলো লাল শাড়িটা। কিন্তু হামজা খাইয়া বলল ওল্ড মডেলের শাড়ি এ যুগের মেয়েদের মানায় না। কিন্তু আমি জানি যার সাথে তার বিয়ে ঠিক হয়েছে সে খুবই নম্র ভদ্র ওল্ড মডেলের এই শাড়িগুলোই তার পছন্দ হবে। কারণ শাড়ি নামের মশারি সে কখনোই পছন্দ করবে না। তবে কি আর করার বড় ভাই মানুষ চুপ করে তার কার্যক্রম দেখতে থাকলাম কোনটা তার পছন্দ হয়। হঠাৎ সুমন ভাইয়া বলল আপনি তো আর শাড়ি পড়বেন না। শাড়ি পরবে আপনার নববধূ তাকে না হয় একটু জানানো হোক কোনটা তার পছন্দ হচ্ছে। তখন আমিও সাড়া দিলাম কথাটা ঠিক আছে। তখন হামজা ভাইয়া লাইনে আসলো। ফোন দেয়া হলো মেয়ের বড় বোনের কাছে। মেয়ের বড় বোন সুমন ভাই আর পছন্দের লাল শাড়িটা পছন্দ করছে না। নিউ মডেলের শাড়িগুলো যেগুলো হামজা ভাইয়া পছন্দ করেছে সেগুলোই পছন্দ করেছে। তখন সুমন ভাইয়া বলল মেয়ের বড় বোন তো আর এই শাড়ি পড়বে না মেয়েকে দেখানো হোক। মেয়ে ভিডিও কলের আড়াল থেকে বলছি আরো কিছু শাড়ি দেখার।
বিয়ের পাত্রীর মতামত নিয়েই শাড়ি কিনা হবে। তাই একটার পর একটা শাড়ি বের করতে থাকলো দোকান এর লোকজন। অনেকগুলো শাড়ি দেখার পর যেমন কথা তেমন কাজ। হামজা ভাইয়া বারবার বলছে নিউ মডেলের এই শাড়িগুলো বিভিন্ন অনুষ্ঠানে মেয়েরা পড়ে আসে। এগুলো মানাবে ভালো। ওদিকে মেয়ের বোন রাজি হচ্ছেন আমরা ভাইয়ার চয়েজে। কিন্তু মেয়ে হঠাৎ বলে বসলো এসব শাড়ি আমি পড়বো না। হামজা ভাইয়া তখন রেগে গেল। হঠাৎ বলে বসলো চিসিংগা, ভিডিও কলের আড়ালে না থেকে মুখটা একটু দেখাও আর কোনটা পছন্দ সেটা বল। তখন মেয়ে আড়াল থেকে বলল লাল শাড়িটা আমার ভালো লাগছে। এমন কথা শুনে সুমন ভাইয়া খুবই আনন্দ পেলাম। কারণ দোকানে এসে শুরুতেই লাল শাড়িটা সুমন ভাইয়ের পছন্দ হয়েছিল। সুমন ভাইয়া মাঝে মাঝে কিছু কথা বলে সঠিকভাবে। বলেছিলেন নম্র ভদ্র মেয়ের জন্য লাল শাড়িটা বেটার হবে। আরে যে সমস্ত মেয়েরা আড্ডাবাজ তাদের জন্য মশারিগুলো মানায়। তখন হামজা ভাইয়া লাফালাফি কমে শুরু করলো। বললাম এর যখন পছন্দ তখন লাল শাড়িটাই হোক। কিন্তু আমার লাল শাড়িটা মোটেও পছন্দ নয় এটা ওল্ড মডেল। তখন সুমন ভাইয়া আবার বলল শাড়ি তো আর আপনি পরবেন না।
এদিকে এলোমেলো কাপড় গুলো গুছাতে গুছাতে দোকানের ছেলেটা বলল মেয়েদের পছন্দ নিজের পছন্দ মনে করতে হবে। কারণ তাদের ভালোলাগাটাই নিজের ভালোলাগা। সব মেয়েরা তো আর এই জাতীয় শাড়িগুলো পছন্দ করে না। এখন এইগুলো চলছে তারপরে আগের গুলো এগুলোর চেয়ে অনেক নম্র ভাদ্র। এখন তোর শাড়িগুলো একাধিক ভাজ দিলে দেখা যাবে না। তবে অনেক মেয়েরা এগুলো বিরক্তি ফিল করে। বিয়ের অনুষ্ঠান আর অকেশনে এগুলো পড়া চেষ্টা করে। তবে সবার কাছে এগুলো গ্রহণযোগ্য হয় না। অনেকের কাছে বেশ বিরক্তিকর। তখন হামজা ভাইয়া মন থেকে মেনে নিল। সুমন ভাইয়া বলল মেয়ের তো মুখ দেখেছেন, কথা হয়েছে তার সাথে। কল্পনায় ভাষাতে থাকেন, লাল শাড়িতে আপনার বউ দাঁড়িয়ে রয়েছে। আর মনে মনে ফটো ধারণ করতে থাকে, আপনার মনের মোবাইল ফোনে। আর এভাবে লাল শাড়ি অর্থাৎ বিয়ের শাড়ি কেনার পর্ব শেষ হলো হাসি আনন্দের মধ্য দিয়ে।
সাথে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ
বিষয় | হামজা ভাইয়ের বিয়ে |
---|---|
What3words Location | Gangni-Meherpur |
মোবাইল | Infinix Hot 11s |
ক্রেডিট | @jannatul01 |
ব্লগার | আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটি |
আমার পরিচয়
আমার নাম মোছাঃ জান্নাতুল ফেরদৌস শশী। আমার বাসা গাংনী মেহেরপুর, বাংলাদেশ। আমি আপনাদের সুপ্রিয় বিদ্যুৎ জিরো ওয়ান এর পরিবার। আমি একজন গৃহিণী। স্বামী সন্তান সহ আমাদের যৌথ পরিবার। আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির চারজন সদস্য রয়েছে আমাদের পরিবারে, তার মধ্যে আমি একজন। এইচএসসি পাশ করার পর নার্সিং কোর্স করে বিয়ে হওয়ার মধ্য দিয়ে আমার লেখাপড়া স্থগিত হয়। আমার ইচ্ছে আমি এই কমিউনিটিতে দীর্ঘদিন ব্লগ করব। পাশাপাশি আমার নিকটস্থ প্রিয়জনদের সহায়তা করব এই কমিউনিটিতে কাজ করার জন্য।
আপু আপনি আজকে আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন খুবই সুন্দর একটি পোষ্ট। ডক্টর হামজা ভাইয়ের বিয়েতে আপনি কেনাকাটা করতে গিয়েছিলেন। তবে একটা বিষয় হচ্ছে অবাক করার বিষয় সেটা হচ্ছে সত্তর হাজার টাকা শুধু কেনাকাটা করার জন্য। যাইহোক তাহলে ভালোভাবেই কেনাকাটা করেছেন এবং বিয়েতে খুব সুন্দর শাড়ি কিনেছেন। আপনার অসংখ্য ধন্যবাদ এত সুন্দর একটি পোষ্ট লিখে শেয়ার করার জন্য। আপনার ডক্টর ভাইয়ের বিবাহিত জীবন সুখী হোক এই প্রত্যাশাই করি।
ভাইয়াদের জন্য দোয়া করবেন।
হামজা ভাইয়ের বিয়ের কেনাকাটা নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়লেন তাহলে। আপনারা তো বেশ ভালোই কেনাকাটা করলেন যেহেতু বাজেট ভালো ছিল কেনাকাটা দারুণ করেছেন। আপনি বিস্তারিত আমাদের সাথে খুব সুন্দর ভাবে বর্ণনা করলেন। এই ধরনের বিয়ের অনুষ্ঠানের কেনাকাটা গুলো বেশ ভালো লাগে। সুন্দর একটি মুহূর্ত আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অনেক ধন্যবাদ।
একদম ঠিক বলেছেন
আমাদের প্রিয় ডাক্তার ভাইয়ের বিয়েতে বেশ আনন্দ করেছি আমরা। তবে বিয়ের দিনের চেয়ে বেশি আনন্দ হয়েছে কেনাকাটার মুহূর্তে। প্রথম দিন এবং তৃতীয় দিন কেনাকাটায় আমি অংশগ্রহণ করতে পারিনি। তবে এই দিনটাই জাক কেনাকাটা করেছিলাম খুবই ভালো লেগেছিল।
হ্যাঁ বিয়েটা হুট করে রাতে হয়ে গেল