আবোল তাবোল জীবনের গল্প [ শৈশব স্মৃতি ]
হ্যালো বন্ধুরা,
কেমন আছেন সবাই? আশা করছি সবাই ভালো আছেন এবং সুস্থ আছেন। আলহামদুলিল্লাহ, আমিও ভালো আছি এবং সুস্থ থাকার চেষ্টা করছি। সার্বিকভাবে রমজানের নিয়মগুলোর সাথে থাকার চেষ্টা করছি। যদিও প্রতিবারই আমি শেষ পর্যন্ত লেগে থাকতে পারি না শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে পরি, তবে এবার বেশ আশাবাদী। তবুও দেখা যাক কতটা লেগে থাকতে পারি। অনেক ক্ষেত্রেই আমাদের মূল সমস্যা হয়ে থাকে মানসিক, যদিও এর সাথে শারীরিক একটা সংযোগ থাকে কিন্তু তবুও মানসিকভাবে শক্তিশালী হতে পারলে অনেক কিছুই সহজ হয়ে যায়।
আজকে অবশ্য শৈশবের স্মৃতিচারণ করবো, আসলে সেদিন ফেসবুকে একটা স্ট্যাটাস ভীষণভাবে নাড়া দিয়েছিলো। চিন্তা করেছিলাম সেই বিষয়ে কিছু লিখবো কিন্তু সেটা আর হয়ে উঠে নাই। সত্যি বলতে এমন অনেক কিছু নিয়েই মাঝে মাঝে পোষ্ট লিখতে চাই কিন্তু ব্যস্ততা কিংবা সময়ের অভাবে সেটা আর হয়ে উঠে না। আমাদের শৈশবটা একটু ভিন্ন রকমের ছিলো, যেমন আমাদের বয়োজ্যেষ্ঠদের মুখে তাদের শৈশব নিয়ে অনেক গল্প শুনতাম এবং সেগুলোর প্রতি আমাদের দারুণ রকমের বিস্ময় প্রকাশ করতাম। ধীরে ধীরে আমাদের শৈশবের গল্পগুলোও তেমন হয়ে যাচ্ছে বর্তমান প্রজন্মের কাছে।
সেই স্ট্যাটাসটি ছিলো অনেকটা এমন, গাছের বরইগুলো এখন একা একা হতাশা নিয়ে ঝরে পরে কারো ঢিল ছোড়ার অপেক্ষা করে না। সত্যি লাইনটির মাঝে ভীষণ রকমের একটা হতাশা লুকিয়ে আছে, আছে শৈশব জীবনের দুরন্তপনার নিদারুণ চিত্র। অবশ্য সেটা বর্তমান প্রজন্ম বুঝতে পারবে না কিংবা বুঝতে চাইবে না। কারণ তাদের দুনিয়া এখন শুধুই স্মার্ট জগত কিংবা স্মার্ট ডিভাইস। আর আমাদের শৈশব ছিলো বাহিরে দুনিয়া, দুরন্তপনার দারুণ চিত্রে ভরপুর। অন্তত আমার বিষয়টি আমি বলতে পারি, এলাকার কোন বাড়ির বরই গাছের বরই মিষ্টি, কোন গাছের বরইগুলোর স্বাদ দারুণ। কোন বাড়ির মানুষগুলো ভালো না, বরই খেতে দিতে চায় না কিংবা গাছে পাহারা বসিয়ে রাখে, এগুলো সব আমার মুখস্ত ছিলো, হি হি হি।
সময় এবং সুযোগ বুঝে আমরা সেই সকল গাছে হামলা চালাতাম, ঢিল ছোরায় যে বেশী পারদর্শী থাকতো তাকে সবার আগে রাখতাম। সে ঢিল ছুড়তো আর আমরা বরই কুড়িয়ে দৌড় দিতাম। তারপর সবাই আবার একত্রে হয়ে ভাগ করে বসে যেতাম স্বাদের ষোলআনা উপভোগ করার জন্য। অবশ্য মাঝে মাঝে গাছের মালিকও বুঝতে পারতো কারা করেছেন এমন। এমন অনেক বার হয়েছে, বাড়িওয়ালা অনুরোধ করেছেন যাতে ঢিল না মারি, বরং বরই পাকলে সেখান হতে আমাদের ভাগ দেয়া হবে। কিন্তু কে শুনে কার কথা, ঢিল মেরে বরই না পারলে মনে যেন শান্তি আসতো না এবং মনে একটা অস্বস্তি অনুভব করতাম।
একবার এমন হয়েছিলো, আমি ভুলে উল্টা পাশে দাঁড়িয়েছিলাম এবং একটা ঢিল এসে আমার মাথায় পড়েছিলো, সাথে সাথে মাথার খুলি ফুটো হয়ে বেশ রক্ত বেড়িয়ে পড়েছিলো। আর যে ঢিল ছুড়েছিলো সে ছিলো আমাদের বাড়ির ভাড়াটিয়ার ছেলে, সুতরাং নালিশ দেয়ার কোন সুযোগ ছিলো না। তবুও বাবার মাইর খাওয়ার ভয়ে সত্যিটা বলেছিলাম এবং বাবা ভীষণ রকমের শাসন করে অন্যের বাড়ির বরই খেতেও নিষেধ করেছিলেন। কিন্তু কে কার কথা শুনে, গাছের বরইগুলো যেন আমাদের চোখ মেরে ভেংচি কাটছে, এমন মনে হতো আর আমরা দারুণ উত্তেজনা নিয়ে ছুটে যেতাম ঢিল ছুড়তে।
Image Taken from Pixabay
ধন্যবাদ সবাইকে।
@hafizullah
আমি মোঃ হাফিজ উল্লাহ, চাকুরীজীবী। বাংলাদেশী হিসেবে পরিচয় দিতে গর্ববোধ করি। বাঙালী সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য লালন করি। ব্যক্তি স্বাধীনতাকে সমর্থন করি, তবে সর্বদা নিজেকে ব্যতিক্রমধর্মী হিসেবে উপস্থাপন করতে পছন্দ করি। পড়তে, শুনতে এবং লিখতে ভালোবাসি। নিজের মত প্রকাশের এবং অন্যের মতামতকে মূল্যায়নের চেষ্টা করি। ব্যক্তি হিসেবে অলস এবং ভ্রমন প্রিয়।

|| আমার বাংলা ব্লগ-শুরু করো বাংলা দিয়ে ||




>>>>>|| এখানে ক্লিক করো ডিসকর্ড চ্যানেলে জয়েন করার জন্য ||<<<<<


Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |

Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote
Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote
VOTE @bangla.witness as witness

OR
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
ভাই পুরো পোস্টটা পড়েছি আর অনেক হেসেছি। শৈশবের এসব গল্পগুলো পড়তে আসলে খুবই ভালো লাগে। গ্রামীণ শৈশব প্রায় একই ধরনের হয়ে থাকে। বরই পাকলে ভাগ নেয়াটা বড় কথা না, বন্ধু বান্ধব মিলে ঢিল মেরে কুড়িয়ে বড়ই খাওয়ার মজাই আলাদা। আর এটাও সত্যি যে, বরই গাছে ঢিল না মারলে বড়ই ভীষণ কষ্ট পায়। এরকম স্মৃতিময় মুহূর্ত যখন মনে পড়ে তখন ভীষণ ভালো লাগে। আর তখন ইচ্ছা করে দুরন্ত শৈশবে ফিরে যেতে। অনেক সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই।
ভাই আপনার পোস্টটি পড়ে ছোটবেলার স্মৃতি মনে পড়ে গেলো। বড়ই গাছে ঢিল মারতে যে কি ভালো লাগতো ছোটবেলায়, সেটা ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়। কিন্তু বর্তমান প্রজন্ম এসব ব্যাপার গুলো সম্বন্ধে একেবারেই জানে না। তারা সারাক্ষণ ইলেকট্রনিক ডিভাইস নিয়েই ব্যস্ত থাকে। আমি মনে করি আমাদের শৈশব ছিলো একেবারে রঙিন, আর এখনকার প্রজন্মের শৈশব হচ্ছে সাদা কালো বিটিভি এর মতো হা হা হা। যাইহোক এতো চমৎকার একটি পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
সত্যিই আমাদের ছেলেবেলা গুলো একেবারেই অন্যরকম ছিল। একবার জানেন কামরাঙ্গা চুরি করতে গিয়ে কিছুতেই ঢিল শ
ছুঁড়তে পারচ্ছিলাম না ফলে আমার দাদা গাছে উঠে গিয়েছিল। আর সেই গাছ থেকে সমস্ত ডাল ভেঙে একদম নিচে। দুঃখের বিষয় পায়ে ভীষণভাবে আঘাত পেয়েছিল। এদিকে মা যেহেতু স্কুলে দুপুরবেলাটা বাবাই বাড়িতে থাকতেন। অন্যান্য কাকু কাকিমারাও ছিলেন কিন্তু বাবা যেহেতু প্রধান অভিভাবক তাই বাবাকে বলতেই হবে। কিন্তু ভয়ে সেটা আর দুজনের কেউ বলতে পারছি না। দাদা পুকুরের জলে পা ডুবিয়ে বসে রয়েছে মায়ের অপেক্ষায়। তারপর ঠাকুমা দেখতে পেয়ে বাবাকে ডেকে দেখালো, ডাক্তার-খানা নিয়ে যাওয়ার আগেই বাবা আমাদের দুজনকেই উত্তম মাধ্যম দিয়ে দিলেন এবং তারপর দাদাকে ডাক্তারখানা নিয়ে গেলেন। হে হে হে৷
কিন্তু সেই শৈশব সত্যিই অতুলনীয়। কি যে ভীষণ প্রাণ ছিল তা আজ বুঝি।