আবোল তাবোল জীবনের গল্প [ উপলব্ধি ]
হ্যালো বন্ধুরা,
কেমন আছেন সবাই? আশা করছি সবাই ভালো আছেন এবং সুস্থ আছেন। আলহামদুলিল্লাহ, আমিও ভালো আছি এবং সুস্থ থাকার প্রচেষ্টায় নিজেকে আরো বেশী গতিশীল রাখার চেষ্টা করে যাচ্ছি। সত্যি বলতে আমাদের প্রতিটি প্রচেষ্টা কোন না কোনভাবে সফল হয়, হয়তো কোনটা আমরা বুঝতে পারি আর কোনটা আমার বুজতে পারি না। পার্থক্যটা এখানেই, যেটা বুঝতে পারি সেটা নিয়ে খুব খুশি হই কিন্তু যেটা বুঝতে পারি না সেটা নিয়ে খুব বেশী হতাশ হয়ে যাই। আমি অবশ্য পজিটিভ মানুষ, কিন্তু কেন জানি মাঝে মাঝে নিজেও হতাশ হয়ে যাই। আসলে বাস্তবতা আমাদের অনেক কিছু শেয়ার সুযোগ করে দেয় কিন্তু সেটা আমরা উপলব্ধি করি না।
আমরা শুধুমাত্র নগদ লাভগুলো খুঁজতে থাকি। ঐ যে বললাম প্রচেষ্টার কথা, যে প্রচেষ্টাগুলো তাৎক্ষণিকভাবে সফল হয় সেগুলো নিয়ে আমরা বেশ হৈ চৈ করি আর যেগুলো তাৎক্ষণিক হয় না সেগুলো নিয়ে হতাশা। কিন্তু যেগুলো তাৎক্ষণিক ফলাফল দেয় না সেগুলো নিয়ে কখনো চিন্তা করি না কিংবা করার চেষ্টাও করি না। কারণ ঐ যে আমরা নগদে বিশ্বাসী। সেদিন একটা লেখা পড়লাম ফেসবুকে, আমাদের এক ক্লাসমেট সেটা গ্রুপে শেয়ার করেছিলেন। স্কুল জীবনের বন্ধুদের নিয়ে করা গ্রুপ, তাই ফেসবুকে এ্যাকিটভ না থাকলেও গ্রুপের লেখাগুলোর প্রতি চোখ রাখি নিয়মিত।
লেখাটা ছিলো বাবাকে নিয়ে, একজন সন্তান খুব বেশী সময়ের জন্য তার বাবার অবদান বুঝতে সক্ষম হয় না ঐ যে তাৎক্ষণিক সুবিধা বা ফল না পাওয়ার কারণে। কিন্তু যখন সে বুঝতে পারে ততোদিনে বেশ দেরী হয়ে যায়, বাবা দুনিয়ার বাহিরে চলে যান। একটু খেয়াল করে দেখুন, মোটামুটি ৪-৫ বছর পর্যন্ত প্রতিটি সন্তানের নিকট তারা বাবা সেরা এবং খুবই প্রিয়, কারণ সন্তান চাওয়ার সাথে সাথে সেটার ব্যবস্থা করে দেন বাবা এবং তাৎক্ষণিকভাবে। কিন্তু তারপর ১০ বছর পর্যন্ত চাইলেই কিছু দেয় না বাবা, কারণ তখন তার ভালো-মন্দ অনেক কিছুর বিবেচনা করতে হয়, তার সুন্দর ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করতে হয়, তাৎক্ষণিক ভাবে ছেলে অসন্তুষ্ট হলেও বাবা সেটা দেয়া হতে বিরত থাকেন।
এরপর মোটামুটি ২০ বছর পর্যন্ত চলে বাবার কড়া শাসন, নানা বিষয়ে কথা শুনায় বাবা, নানা কিছুতে বিধিনিষেধ আরোপ করা হয় এবং ছেলের নিরপত্তার বিষয়টিকে বেশী প্রধান্য দেয়া হয় বলে ছেলের নিকট বাবা খুবই খারাপ হয়ে যায়। এরপরের অধ্যায়গুলোতো আরো বেশী ভয়ানক হয়ে উঠে, ছেলের চাকুরী হয়, আয় রোজগার শুরু করেন। কিন্তু তখন আর বাবার কথা শুনতে চান না, নানা বিষয়ে বাবার সাথে তর্কে জড়িয়ে যায়। আর বিয়ের পর বাবা হয়ে যায় অনেক বড় বোঝা। কিন্তু যখন ছেলের ঘরে নতুন সন্তান আসে, তখন সে ধীরে ধীরে উপলব্ধি করতে পারে বাবা অবদান কতটা ছিলো তার প্রতি, শাসনগুলো ছিলো কতটা উপকারী।
কিন্তু অবাক করার বিষয় হলো তখন আর সে বাবাকে কাছে পায় না, বাবার অবদানের বিষয়গুলোকে আপন করে আলিঙ্গন করতে পারে না। এটা একটা চরম উদাহরণ আমাদের সকলের জন্য, আমরা শুধুমাত্র তাৎক্ষণিক সুবিধাগুলোর কথা মনে রাখি এবং সেটাকেই বিবেচনা করার চেষ্টা করি। অথচ অনেক প্রচেষ্টার ফলাফল আমাদের ভবিষ্যতকে দারুণভাবে আলোকিত করতে খুব বেশী ভূমিকা পালন করে থাকে, সেগুলো কখনোই আমাদের বিবেচনায় আসে না এবং আমরাও সেগুলোকে বিবেচনায় নিতে চাই না। আমাদের সঠিক বোধোদয় হোক, সঠিক সময়ে সঠিক বিষয়টি উপলব্ধি করার মানসিকতা তৈরী হোক।
Image Taken from Pixabay
ধন্যবাদ সবাইকে।
@hafizullah
আমি মোঃ হাফিজ উল্লাহ, চাকুরীজীবী। বাংলাদেশী হিসেবে পরিচয় দিতে গর্ববোধ করি। বাঙালী সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য লালন করি। ব্যক্তি স্বাধীনতাকে সমর্থন করি, তবে সর্বদা নিজেকে ব্যতিক্রমধর্মী হিসেবে উপস্থাপন করতে পছন্দ করি। পড়তে, শুনতে এবং লিখতে ভালোবাসি। নিজের মত প্রকাশের এবং অন্যের মতামতকে মূল্যায়নের চেষ্টা করি। ব্যক্তি হিসেবে অলস এবং ভ্রমন প্রিয়।

|| আমার বাংলা ব্লগ-শুরু করো বাংলা দিয়ে ||




>>>>>|| এখানে ক্লিক করো ডিসকর্ড চ্যানেলে জয়েন করার জন্য ||<<<<<


Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |

Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote
Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote
VOTE @bangla.witness as witness

OR
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
আসলেই ভাই এই উদাহরণটি ছিলো একেবারে চরম সত্য। প্রতিটি বাবা সন্তানের মাথার উপর বটগাছের মতো ছায়া দিয়ে থাকে। কিন্তু বাবারা জীবিত থাকা অবস্থায়,সন্তানেরা সেটা বুঝতে পারে না। কিন্তু বাবাদের মৃত্যুর পরে প্রতিটি সন্তান সেটা গভীরভাবে উপলব্ধি করতে পারে। যাইহোক সবার শুভবুদ্ধির উদয় হোক সেই কামনা করছি।
সেটাই বাস্তবতা আমাদের অনেক কিছু শেখার পথ তৈরী করে দেয় কিন্তু আমরা সময় থাকতে সেটা বুঝতে পারি না। ধন্যবাদ
দাঁত থাকতে দাঁতের মর্যাদা না দেওয়াটা বাঙালিদের পুরনো স্বভাব ভাই। আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ।
বাবার অবদান আমরা যতদিন তাদের পাশে পাই, ততদিন সেভাবে উপলব্ধি করতে পারি না। কিন্তু সময়ের স্রোতে যখন আমরা সেই দায়িত্বের ভার নিজ কাঁধে অনুভব করি, তখন বাবার ত্যাগ, শাসন, ভালোবাসার সত্যিকার মূল্য বুঝতে পারি। আপনার এই লেখা আমাদের সবার জন্য এক মহামূল্যবান উপলব্ধির বার্তা। আশা করি, আমরা সবাই সময় থাকতেই বাবা-মায়ের ভালোবাসার মর্যাদা বুঝতে শিখব।