সময়টা যখন অগোছালো || Crucial Time [10% for @shy-fox ]
আমরা অনেক সময় জানিনা আমাদের সাথে ঠিক আগামীকাল কি হতে চলেছে। আকস্মিক যে কোনো ঘটনায় আমাদের স্বাভাবিক কার্যক্রম গুলো পিছিয়ে যায়। তারচেয়েও বড় কথা হচ্ছে জীবনের স্বাভাবিক যে গতিপথ রয়েছে সেটি এলোমেলো হয়ে যায়। ঠিক এমনটাই ঘটে চলেছে আমার সাথে গত তিনদিন ধরে। প্রথমে দুদিন আমি অসুস্থ ছিলাম এবং এর পরপরই আমার স্ত্রী অসুস্থ হয়ে পড়ে এবং এখন তাকে নিয়ে আমি হাসপাতালে।
বর্তমান যে সময়টা আমাদের সামনে রয়েছে সেই সময়ে আমরা আমাদের আশেপাশের লোকজনকে তাদের ব্যক্তিগত কাজে বেশি ব্যস্ত থাকতে দেখি। প্রত্যেকেই তার নিজস্ব কাজ নিয়ে সবসময় ব্যস্ত থাকে এবং যারা অন্য কাজে ব্যস্ত থাকে না তাদেরকে মোবাইল ফোন কিংবা টেলিভিশনে নিয়ে ব্যস্ত থাকতে দেখা যায়। তাই কারো বিপদে কিংবা সন্তান লালন পালনের ক্ষেত্রে অন্যদেরকে আগের মত পাওয়া যায় না। আগে যেখানে পরিবারগুলো অনেক বড় ছিল এবং সন্তান লালন-পালনের ব্যাপারগুলো ছিল একটা স্বাভাবিক ঘটনা এখন সেখানে পরিবারগুলো ছোট হয়ে গিয়েছে তাই সন্তান লালন পালনের ক্ষেত্রে কয়েকজনকে মুখ্য ভূমিকা পালন করতে হয়।
আবার কিছু কিছু ক্ষেত্রে দেখা যায় বাচ্চাদের হাতে মোবাইল তুলে দিয়ে পরিবারের লোকজন তাদের নিজস্ব কাজে কিংবা নিজের মোবাইল বা টেলিভিশন এর মধ্যে মগ্ন হয়ে থাকে। এতে হয়তোবা বাচ্চাদের কে খুব বেশি সময় দিতে হয় না কিন্তু দিনশেষে বাচ্চাদের ভবিষ্যৎ এবং চোখের বারোটা কিন্তু আমরা ঠিকই বাজিয়ে দিচ্ছি। বাচ্চাদের বিশেষ করে পরিবারের সদস্যদের কোয়ালিটি সময় দেওয়াটা অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ আর সেজন্য পরিবারের আকার বড় হওয়াটা ভাল। একান্নবর্তী পরিবার গুলোতে দেখা যায় কেউ না কেউ কোনো না কোনো সময় ফ্রি থাকে তাই তাদের জন্য বাচ্চা লালন পালন করাটা অনেক সহজ।
বিচ্ছিন্ন পরিবারগুলোতে মানুষজন থাকে খুব অল্প এবং কেউ একজন অসুস্থ হয়ে পড়লে আরেকজনের পক্ষে বাচ্চা সামলানো এবং সংসারের অন্যান্য কাজ সামলে সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করাটা অনেক বেশি কষ্টকর হয়ে দাঁড়ায় যেটা আমি এই কয়দিনে খুব ভালোভাবে বুঝতে পেরেছি। যদিও সমাজের প্রয়োজনের তাগিদেই আমাদেরকে কর্মস্থলে গিয়ে বসবাস করতে হয়। কর্মস্থল এবং লেখাপড়ার সুবিধার কথা বিবেচনায় রেখে অনেককেই পরিবার নিয়ে কর্মস্থলের আশেপাশে কিংবা সুবিধাজনক অবস্থানে অবস্থান করতে হয় আর সেই কারণে বিচ্ছিন্ন পরিবারগুলোতে এই সমস্যাগুলো আমরা দেখতে পাই।
আমার সংসারে আমি এবং আমার স্ত্রী আর আমার দুই বছরের মেয়ে বসবাস করি। যখন আমি অসুস্থ হয়ে পড়েছিলাম তখন আমার স্ত্রীয়ের পক্ষে একা আমার মেয়েকেসহ সংসার সামলানো খুবই কঠিন একটি বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। ব্যাপারটি আরো বেশী কঠিন হয়ে যায় যখন স্ত্রী অসুস্থ হয়ে বিছানায় পড়ে গিয়েছে তখন আমাকে একসাথে আমার অফিস পরিবার এবং মেয়েকে সামলাতে হয়েছে যা সত্যিই খুব চ্যালেঞ্জিং। আমার অফিসে বেশ কিছু কাজের চাপ যাচ্ছে তার পাশাপাশি এখানে সংসারের ঝামেলা সবকিছু মিলিয়ে আমি এই অভিজ্ঞতা থেকে ব্যক্তিগত জীবন সম্বন্ধে বেশকিছু নতুন উপলব্ধি পেয়েছি।
যেসব পরিবারের শিশু সন্তান রয়েছে তাদেরকে সঠিকভাবে লালন পালনের জন্য আসলে পর্যাপ্ত সময় দেওয়া দরকার। আমরা দুজন মিলে সেই কাজটি করার চেষ্টা করে যাচ্ছিলাম কিন্তু মাঝে মাঝে যখন এরকম অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটে যায় তখন সবকিছু ঠিকই এলোমেলো হয়ে যায় যেমনটি আমার সাথে হয়েছে।
এখন আমরা চলে এসেছি বাড়িতে এবং আপাতত এই সমস্যাগুলোর এখন নেই। তবে আমার স্ত্রীর অসুস্থতার ব্যাপারটি খুবই স্পর্শকাতর এবং আমি খুব দুশ্চিন্তার মধ্যে আছি। সবাই দোয়া করবেন এবং সবার সুস্বাস্থ্য ও মঙ্গল কামনা করছি কারণঃ আশেপাশে অনেকেই অসুস্থ হতে শুনছি। সবাই সুস্থ থাকুক এমন ভালো থাকো এই কামনা রইল। ধন্যবাদ
এই পোস্টের সম্পূর্ন লিখা আমার নিজস্ব ও কোথায় থেকে কপি করা হয়নি। কোথাও হতে কোন তথ্য বা ছবি নিয়ে থাকলে সোর্স দেয়া হয়েছে
আমি কে
আমি সাইফুল বাংলাদেশ থেকে। পেশায় শিক্ষক, সাবেক ব্যাংকার। আমি আমার চিন্তাভাবনা এবং ধারণাগুলি ব্লগে শেয়ার করতে ভালবাসি। প্রকৃতির মাঝে ঘুরে বেড়ানো এবং ক্রিকেট খেলা আমার শখ। আমি সর্বদা একজন শিক্ষানবিস এবং সবার থেকে শিখতে চাই। আমি বিশ্বাস করি, আমার লেখা থেকে কেউ যদি উপকৃত হয় বা নতুন কিছু শিখতে পারে তবেই আমার লেখালেখি সার্থক। |
---|
সাইফুল ভাই আপনাদের জন্য দোয়া রইল। আপনি এবং ভাবি যেন তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে যান। সেই সংগে আপনি যেমনটি বলেছেন আমার পরিবারেও একই সমস্যা রয়ে গেছে। বাচ্চাটিকে যতক্ষণ মোবাইল দেবো ততক্ষন সে চুপচাপ থাকবে। মোবাইল না দেখলেই তার দুরন্তপনা চরম আকার ধারণ করে। একান্নবর্তী পরিবার গুলো ভেঙে অনু পরিবার সৃষ্টি হওয়াতেই আমার মনে হয় এ ধরনের সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে। যাইহোক সাবধান থাকবেন সুস্থ থাকবেন এই প্রত্যাশা রইল।
একদম ঠিক বলেছেন এবং ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর মন্তব্যের জন্য
দোয়া করি আপনার স্ত্রী যেনো খুব তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে উঠে।
আসলে কিছু করার নেই এমন পরিস্থিতিতে।
কথাটা কাটায় কাটায় সত্য। এটার বেশি প্রমাণ পাওয়া যায় শহরের ধনী পরিবারের ছেলে মেয়েদের দেখে। বয়স ৫ চোখে পাওয়ার এর চশমা। ল্যাপটপ /কম্পিউটার / মোবাইল এইগুলো অতিরিক্ত ব্যবহারের ফলেই মূলত এই সমস্যা হয়। গ্রামে আবার চোখের সমস্যা খুব কমই লক্ষ্যনীয়।
যাই হোক, এখন সময় খারাপ। ভাবী অসুস্থ জেনে খুব খারাপ লাগলো। দোয়া করি তিনি যেনো খুব দ্রুত সুস্থ্য হয়ে উঠেন। আপনার পরিবারের সবার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইলো।
ভাই সময়টা আসলেই অনেক কঠিন যাচ্ছে । অসুখ বিসুখ লেগেই আছে আশে পাশে । ভাবির সুস্থতা কামনা করছি । আপনার পরিবারের জন্য শুভেচ্ছা রইল।