কুকুরের লেজ কখনো সোজা হয় না 🐕

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago (edited)

আজকের টাইটেল টা সবার খুব পরিচিত তাই নাহ্? আমরা সময়ে অসময়ে অনেক ভাবেই এই কথাটা শুনে থাকি। আবার কখনো কখনো আমরা নিজেরাই এই উক্তি করে বসি। যার অবশ্য যথেষ্ট কারণ আছে। তবে হ্যাঁ কথা টা কখনোই ভালো অর্থে ব্যবহৃত হয় না। যতটা সম্ভব ভদ্র ভাষায় সব থেকে নিকৃষ্ট ভাবে কাউকে গালি দিতেই এমনটা বলে থাকি। আর আমি যেন এই ধারার মানুষ গুলোকে বড্ড বেশি কাছ থেকে দেখার সুযোগ পেয়েছি শেষ দেড় বছরে। এই দিক থেকে আমি বেশ ভাগ্যবান বলা যায়। হিহিহিহি।

german-shepherd-166972_1280.jpg

Source

কিছুদিন আগেও আমি খুব মাথা গরম করা একটা ছেলে ছিলাম। যা মনে আসতো সেটাই করতাম। উনোচিত কিছু নিজের সাথে হতে দেখলে সাথে সাথে মুখ খুলে জবাব দিতাম। আর এই ব্যাপারে আমার বিন্দু মাত্র বাঁধত নাহ্। তবে আজকাল নিজের স্বভাবটা একটু পরিবর্তন করার চেষ্টা করছি। আচ্ছা কুকুরের ধর্মই হলো কামড় দেওয়া, তাই বলে মানুষ হয়ে উল্টো তাদের পায়ে কামড় দেওয়া কি আমাদের সাজে? কুকুরকে লাথি মারেন, থুতু দিন তারপরও দেখবেন আপনার কাছেই ছুটে আসবে। এবার পরের ক্ষণেই যদি আমিও ওর পিছনে ছুটি তাহলে কুকুর আর আমার মধ্যে পার্থক্য কি থাকলো আর!!

বয়সটা যত বাড়ছে বাস্তবতা খুব কাছে থেকে দেখছি এবং শিখছি। আর এই কয়েকদিনে একটা জিনিস বেশ লক্ষ্য করলাম। মুরুব্বিরা সবাই বলে ব্যবহার নাকি বংশের পরিচয়। আর এই কথাটা অক্ষরে অক্ষরে সত্যি। যাদের বংশের রক্তেই সমস্যা থাকে, দেখবেন সেই পরিবারের ছেলে মেয়ে গুলোও একটা নাহ্ একটা দিন সেই একই ধাঁচের হয়ে উঠবে। প্রথমে ভালো মানুষের মুখোশ পরবে ঠিকই। কিন্তু একটা সময় নিজের কুকুরের মত নির্লজ্জ স্বভাব টা ঠিক বেরিয়ে আসবে। ঠিক যেমন টা কয়লা ধুলেও নাকি ময়লা যায় না। নর্দমা থেকে কখনো সুগন্ধ বের হয় না, সেখান থেকে দুর্গন্ধই বের হবে সারা জীবন। এটাই প্রকৃতির নিয়ম।

আর যারা একটু ভদ্র ঘরের মানুষজন, তারা ময়লার সেই ভাগাড় দেখে নাকে হাত দিয়ে সামনে এগিয়ে যাবে। আচ্ছা ময়লা আবর্জনা দেখে তো অনেকেই সেদিকে থুতু ছিটিয়ে দিতে পারে। কিন্তু বেশির ভাগ লোক কেই দেখি সেই জায়গাটা নাক ধরে এগিয়ে গিয়ে কিছুটা দূরে গিয়ে থুতু ফেলে। কি ঠিক বললাম তো? মানুষ সেই ভাগাড়ে থুতু দেয় নাহ্, কারণ ওখানে মুখ খুললে সেই পঁচা দুর্গন্ধ টাও মুখের ভেতর দিয়ে শ্বাস নালীতে চলে যেতে পারে। আর অসুস্থ করে দিতে পারে সেই জীবাণু।

তাই বলে কি ভাগাড়ের সেই দুর্গন্ধ নিয়েই মানুষ সারা জীবন হাঁটবে? একদমই নয়। সময় হলে সেই নোংরা স্তূপেও আগুন জ্বালানো হয়। সব জীবাণু মেরে ফেলা হয়। প্রয়োজন শুধু ধৈর্য্য আর অপেক্ষার। কথায় আছে চোরের দশ দিন আর গৃহেস্থের একদিন।

dog-294460_1280.webp

Source

আমার বাবা একটা কথা বলে, ছোট লোক কখনো বড় হতে পারে না। টাকা না থাকলেই যে ছোটলোক হবে এমন টা কিন্তু নয়। বংশ ,মর্যাদা, আচার, আচরণ, বিবেক সব কিছু মিলিয়েই এই বিচার করা হয়। অর্থ বা অবস্থান মানুষের নাই থাকতে পারে। কিন্তু মন টা যার বড়, চিন্তা ভাবনা যার সৎ, সেই প্রকৃত বড়লোক। এই কথা গুলো এখন খুব করে কানে বাজে। আর তাই হয়তো কুকুর এসে কামড়াতে চাইলেও লাথি দিতে পারি না। তবে উপরে ঈশ্বর বলে একজন আছেন। যার কাছে সব হিসেব নিকেশ করা একদম। সময় মত ঠিক সুদাসলে ফিরিয়ে দেন। আর আমি ঠিক সেই দিনটার অপেক্ষাই এখন করছি প্রতিদিন।

Sort:  
 2 years ago 

আসলে ভাইয়া আপনি ঠিকই বলেছেন কিছু বাস্তব সত্য নিয়ে আমাদের মাঝে উপস্থিত হয়েছেন । আসলে মানুষের রক্তেই সমস্যা থাকে ।যেই মানুষের বংশ খারাপ সেই মানুষের মুখোশ একটা সময় সত্যিই খুলে যায় ।এই কথাটার সঙ্গে আমি একদম একমত । বেশ ভালো লেগেছে আপনার লেখাগুলো ।ধন্যবাদ।

 2 years ago 

আসলে সমস্যা হলো আপু এই নোংরা মনের মানুষ গুলোই সবার চোখে ভালো সেজে থাকে সব সময়। বাকিদের হতে হয় নিরব দর্শক।

 2 years ago 

কুকুরের লেজ আপনাকে কে সোজা করতে বলেছে কুকুরের লেজ যেমন আছে তেমনি থাক না , শুধু শুধু লেজের পিছনে দৌড়ায় লাভ কি । আর এটা ঠিকই বলেছেন ব্যবহারি বংশের পরিচয় রক্তের ধারা তো মানুষের শরীরে থাকবেই এটা চিরন্তন সত্য । আপনার বাবা এটাও ঠিক বলেছেন ছোটলোক কখনোই বড় হতে পারে না তার ব্যবহারে একদিক দিয়ে সেটা বের হবেই ।

 2 years ago 

আপু,, কুকুর সব সময় পিছনে তাড়া করলে কি করব বলেন!! শান্তিতে থাকতেই দিচ্ছে না। যতোই এড়িয়ে যাই ততই যেন পিছু নিচ্ছে।

 2 years ago 

সবগুলো কথা খুব সুন্দর ভাবে লিখেছেন আর সত্যিটাই লিখেছেন।আজকের পোস্টে এতো এতো সত্যি বিষয় তুলে ধরেছেন কোনটা রেখে কোনটা বলে কমেন্ট শেয়ার করবো পারছি না।তবে কবির ভাষায় বলতে চাই, " কুকুরের কাজ কুকুর করেছে কামড় দিয়েছে পায়।তাই বলে কি কুকুরকে কামড়ানো মানুষের শোভা পায়।"
আর মানুষের পরিচয় তা ব্যবহারে এটা সত্যি কথা।মনে হচ্ছে মনটা কোনকিছুতে বেশ খারাপ আছে।মনটাকে শান্ত করুন।অনেক অভিনন্দন আপনাকে।

 2 years ago 

মনটা কবে যে শান্ত হবে আপু এটাই বুঝতে পারছি না। কুকুরের জ্বালাতনে অতিষ্ঠ হয়ে যাচ্ছি। লাথি মেরে তারালেও যেন পিছু ছাড়ছে না। দোয়া করবেন আপু যেন খুব তাড়াতাড়ি সবকিছু ঠিক হয়ে যায়।

আমার বাবা একটা কথা বলে, ছোট লোক কখনো বড় হতে পারে না

এই কথার সাথে আমি একেবারেই একমত, ছোটলোক কোনদিন বড় হয় না সে যতই টাকা-পয়সার মালিক হোক না কেন।আর অজ্ঞ লোকের কাছে পাওয়ার চলে গেলে সেটাও খুব খারাপ অবস্থা হয়ে যায়। যাইহোক পোস্ট পড়ে মনে হল যে ভেতরে আপনার আশেপাশের অনেকের উপর হয়তো আপনার রাগ জমে রয়েছে, সেটার কিছুটা বহিঃপ্রকাশ করলেন। তবে আমিও মনে করি যে বংশ পরিচয় অনেক বেশি প্রভাব ফেলে একটা মানুষের উপরে এবং পরিবারের ভিতরের ব্যক্তিত্ব সেটা অবশ্যই সন্তানের ভিতর আসবেই। আপনি মানুষের ব্যবহার দেখলে বুঝতে পারবেন তার পরিবার কেমন বা সে কোন বংশের।

 2 years ago 

আসলে ভাই কিছু ব্যাপারে না পারছি সইতে, না পারছি বলতে। তাই এখানেই লিখলাম মনের ক্ষোভে। কি আর বলবো, মানুষ দিন দিন পশুর থেকেও নিচে নেমে যাচ্ছে ভাই।

Coin Marketplace

STEEM 0.17
TRX 0.24
JST 0.034
BTC 96328.68
ETH 2809.86
SBD 0.67