|| আমার অতিথি | বেলুড় মঠ ঘোরা | শেষ পর্ব | ১০% বেনিফিট shy-fox এর জন্যে ||

in আমার বাংলা ব্লগ3 years ago (edited)
◆ নমস্কার আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা ◆

আগের পর্বে আমি আপনাদেরকে সজীব দার সঙ্গে ঘোরাঘুরির প্রথম দিনের সম্পূর্ণ কাহিনী শেয়ার করেছি। আজকে বলবো দ্বিতীয় দিনের অল্প কিছু মুহূর্ত কাটানোর কথা। প্রথমত সজীব দা ইন্ডিয়াতে যে কটা দিনের জন্যে এসেছিল, প্রত্যেকটা দিন ছিল প্যাক্টআপ শিডিউলে ভরা। তাই যেকোনো একটা প্ল্যানে আধঘন্টা বা এক ঘন্টায় এদিক-ওদিক হলে সব দিকেই সমস্যায় পড়ে যাচ্ছিল। সেহেতু আমারও কোন উপায় ছিল না।

IMG_20220817_213245.jpg

আমি যতটা পেরেছি দাদার সাথে দাদার টাইম মতো এডজাস্ট করে দেখা করার চেষ্টা করেছি। এভাবেই দ্বিতীয় দিন বিকেলে অনেক কষ্ট করে এক ঘন্টা বার করা গেছিল। তো সেদিনকে আমরা কোথায় ঘুরব এটা নিয়ে অনেক ভাবনা চিন্তা করে ঠিক করি যে বেলুড় মঠে ঘুরতে যাব। যেমন ভাবনা তেমন কাজ। প্রথমে ঠিক হয় বিকেল সাড়ে তিনটা থেকে চারটের মধ্যে বেরোনো হবে, কিন্তু বৃষ্টির জন্য সেটা পিছিয়ে গিয়ে বিকেল পাঁচটা হয়ে যায়। পাঁচটার সময় দাদাকে আমি একটি এড্রেস দিয়ে সেখানে আসতে বলে এবং সেখানে আমি আর দাদা একসাথে মিট করি। তারপর সেখান থেকে আমরা বেলুড় মঠের উদ্দেশ্যে রওনা দিই।

IMG_20220817_213408.jpg

বেলুড়মঠে ঢুকে সর্বপ্রথম আমরা ওপরের এই বিল্ডিংটি দেখতে পাই। দেখে বেশ আকর্ষণীয় লাগায় আমরা দুইজন তার প্রবেশ পথের উদ্দেশ্যে এগিয়ে যাই। প্রসঙ্গত বলে রাখি, আমরা প্রথমেই ঠিক করে নিয়েছিলাম সব জায়গায় নিখুঁতভাবে ঘোড়া আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়। কারণ হাতে ছিল মাত্র এক ঘন্টার মত সময়, আর পুরো বেলুড় মঠ ঘুরে দেখতে গেলে মোটামুটি তিন থেকে চার ঘন্টা সময় লাগে। ফলোতো আমাদের খুব কম সময়ের মধ্যে ঘুরে দেখতে হয়েছিল। তো উপরের এই মন্দিরটি সামনে গিয়ে জুতো খুলে আমরা মন্দিরের ভেতরে প্রবেশ করলাম।

IMG_20220817_213511.jpg

IMG_20220817_213526.jpg

ভেতরে ঢুকে দেখলাম অদ্ভুত শান্ত একটা পরিবেশ। ঘরটা একটু লম্বাটে ধরনের। তার দুই পাশে এবং শেষের দিকে যাওয়া আসা করার জন্য দরোজা রয়েছে। এবং ঘরে ঢুকেই একদম সামনে চোখে পড়বে মা সারদার একটি ফটো। আমরা যে সময় ঘরে ঢুকেছিলাম সেই সময় ঘরে বেশি লোক ছিল না। একজন বয়স্ক ভদ্রলোক চুপচাপ এক মনে চোখ বন্ধ করে বসেছিলেন,আর একজন ভদ্রলোক প্রণাম করছিলেন। সেখানে খুব বেশি হলে আমরা দু মিনিট মত ছিলাম, কিন্তু ফিল করলাম মনটা যেন হঠাৎ একটু অন্যরকম হয়ে গেল। জানিনা হয়তো অত সুন্দর পরিবেশের জন্য। যাই হোক সেখান থেকে আমরা বেরিয়ে আবার পরবর্তী জায়গার উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম। বেরিয়ে দেখলাম সামনে একটি জায়গায় বেশ কিছু ফুল গাছ লাগানো রয়েছে।

IMG_20220817_213703.jpg

এই বিল্ডিং এর ঠিক উল্টো দিকেই ছিল তাদের শো-রুম। যেহেতু একদমই কাছাকাছি ছিল তাই আমরা সেখানেও ঢুকলাম। সেখানে ঢুকে দেখলাম বিশাল একটি ঘর জুড়ে চারিদিকে শুধুই বই আর বই। বুঝতে পারলাম যে সেখানে অনেক বই কিনতে পাওয়া যায়। এখানকার অধিকাংশ বই গুলোই ছিল স্বামী বিবেকানন্দ, রামকৃষ্ণ দেব, মা সারদা সম্পর্কিত। বই ছাড়াও সেখানে তাদের বিভিন্ন ফটোও ছিল বিক্রির জন্য।সেখানে আমার অল্প কিছুক্ষণ সময় কাটিয়ে বাইরে বেরিয়ে গেলাম।

IMG_20220817_224937.jpg

IMG_20220817_213637.jpg

IMG_20220817_213555.jpg

তারপরে সেখান থেকে বেরিয়ে আমরা আরও সামনের দিকে এগিয়ে গেলাম। যাওয়ার পথে বেশ কয়েকটি জায়গায় পড়ল, যেগুলো আমরা না ঢুকে শুধুমাত্র বাইরে থেকে দেখে বেরিয়ে গেলাম। কারণ সেগুলোতে দেখার মতন কিছু ছিল না তাছাড়া আমাদের হাতে সময়ও বড্ড কম ছিল। এভাবে এগোতে এগোতে একটা বিশাল বড় বিল্ডিং আমাদের দুজনেরই দৃষ্টি আকর্ষণ করল। তারপর আমরা সেখানে গেলাম। সেখানে গিয়ে সবার প্রথমে যেটা চোখে পড়লো তা হলো স্বামী বিবেকানন্দের একটি বেশ বড় মূর্তি। তার বাঁদিকে একটা বিশাল বড় বিল্ডিং,যার গায়ে লেখা আছে "Ramkrishna Mission Vivekananda University"। আর বিবেকানন্দ এর মূর্তির ঠিক পেছনে ছোট একটা জলাশয় ছিল,এবং জলাশয়ের অপর প্রান্তেও ছিল বিরাট বড়ো একটা বিল্ডিং।এগুলোও ছাড়াও আরও ৩-৪ টে বিল্ডিং ছিলো সেখানে।তবে দেখে যা বুঝলাম,বিল্ডিং গুলোর অধিকাংশই গুলোই পড়াশোনার জন্য ব্যবহৃত হয়।

IMG_20220817_213757.jpg

IMG_20220817_213739.jpg

IMG_20220817_213853.jpg

সেই জায়গাটির পরিবেশও ছিল খুবই মনোরম।মন করছিল না সেখান থেকে বেরোতে।কিন্তু কোনো উপায় ছিলো না।দাদার একটু গুরুত্বপূর্ণ কাজ ছিল,তাই দাদাকে তো তাড়াতাড়ি বেরোতেই হতো।তারপর সেখান আমরা থেকে অন্য একটি জায়গায় গেলাম।মূলত বেলুড় মঠ বলতে যে জায়গাটির কথা সবার চোখে ভাসে, এইটা হলো সেই জায়গা।বিরাট বড়ো এক মন্দির।তার পাশে এবং উল্টো দিকে ছোট মাঠ,এবং পাশ দিয়ে বয়ে চলেছে গঙ্গা নদী।এখান থেকেও বেরোতে মন চাইছিলো না।ওই সময় আবার হালকা হালকা বৃষ্টিও পড়ছিলো।

IMG_20220817_214039.jpg

IMG_20220817_214253.jpg

IMG_20220817_214226.jpg

সেখানে একটা মজার জিনিস দেখলাম,যে বেশ কয়েকটা জায়গায় "ফটো তোলা নিষিদ্ধ" বলে বড়ো বোর্ড টাঙানো আছে,কিন্তু লোকে দেদার ফটো তুলছে।অথচ সেখানকার সিকিউরিটি কিছু বলছেও না।মানে বুঝলাম হয়তো কোনো এক সময় এই বিষয়ে অনেক কড়াকড়ি ছিল,কিন্তু এখন আর অতটা নেই।আমার হঠাৎ মাথায় কি খেয়াল হোলো,আমি আর দাদা ওই বোর্ডের সামনে গিয়েই একটা সেলফি তুলে এলাম ।

PXL_20220811_175907703.jpg
@roy.sajib

@samratsaha

দিন11th August,2022
ক্যামেরা পরিচিতিPOCO M3
Locationবেলুড় মঠ,হাওড়া
Sort:  
 3 years ago 

এবার ইন্ডিয়াতে গিয়ে কাটানো প্রতিটা দিন প্রতিটা মুহূর্ত স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে স্মৃতির পাতায় ভাই। সম্পর্কগুলো এমন নিঃস্বার্থভাবে বেঁচে থাকুক আজীবন। আর নিজের ভেতরে থাকা আমি টাকে কখনো জটিল করো না যেন। নিজের মতোই থেকো।

 3 years ago 

আরও কিছু স্মৃতি তৈরি হবে আশা করি।
তৈরি থেকো।

আমার আমি আমার মতো😜।

আপনি অনেক সুন্দর করে বেলুড় মঠ ঘোরে অনেক সুন্দর সুন্দর ফটোগ্রাফি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। দেখে ভালো লাগলো। আপনার উপস্থাপনাও অনেক ভালো ছিল। আপনার জন্য শুভকামনা রইল।

 3 years ago 

অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া আপনার মন্তব্যের জন্যে।আপনার জন্যেও শুভ কামনা রইলো।

Coin Marketplace

STEEM 0.14
TRX 0.23
JST 0.031
BTC 83733.06
ETH 2098.97
USDT 1.00
SBD 0.63