|| KFC এর দুটি আইটেমের ফুড রিভিউ||
নমস্কার বন্ধুরা
আজ আমি আপনাদের মাঝে হাজির হয়েছি ,KFC এর দুটি আইটেমের ফুড রিভিউ নিয়ে । চলুন তাহলে বেশি কথা না বাড়িয়ে, মূল পর্বেই যাওয়া যাক।
অনেকদিন ধরেই আসলে রূপাই এর সাথে কথা হচ্ছিল KFC তে যাওয়া নিয়ে। ব্যক্তি জীবনে সেও যেমন ঘোরাঘুরি করার তেমন কোনো সুযোগ পায় না অর্থাৎ সময় হয়না। তেমনি আমারও পড়ানো থাকে তারপর আবার ঘর সামলানো এবং অন্যদিকে সপ্তাহে একবার বাড়ি যাওয়া। সব মিলিয়ে দুইজনের সময় ম্যাচ করা অনেকটাই কষ্টকর। কিছু দিন আগে আমি এবং আমার বৌদি গিয়েছিলাম এখানে। তবে রুপাই এর সাথে অন্যান্য জায়গায় ঘুরতে গেলেও এই KFC তে প্রথমবার যাওয়া। এমনিতেও সে বাইরের খাবার খুব বেশি একটা খায় না। তবে কেএফসি এর কথা বললে সে আবার লোভ সামলাতে পারে না। আমি যদিও খুব বেশি একটা পছন্দ করি না, তবে তার অনুরোধে এবং যেহেতু সেখানে যাওয়ার প্লান অনেকদিন ধরে হচ্ছিল তাই আর না বলতে পারিনি। এজন্য চলে গেলাম আমাদের বাড়ির পাশের স্টার মলের একদম টপ ফ্লোরে, যেটা ফুট কর্নার নামে পরিচিত। এখানে যাওয়ার একটাই সুবিধা হল অনেক সময় ধরে বসে আড্ডা দেওয়া যায় এবং গল্প করা যায়। তাছাড়াও এখানে প্রচুর লোকের সমাগম হয় যেটা দেখতে দেখতে এবং খাবার খেতে খেতে কখন যে সুন্দর সময়টা কেটে যায় বোঝাই যায় না।
মোটামুটি আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম যে রাতের ডিনারটা ওখানে গিয়েই সারবো। কারণ আমাদের টিনটিন বাবুকে পড়িয়ে আসতে আসতেই আমার প্রায় রাত 9 টার কাছাকাছি বেজে যায়। যাইহোক মোটামুটি আমাদের বাড়ির পাশের স্টেশন থেকে অটো ধরে দশ মিনিটের ভিতরে আমি এবং রুপাই পৌঁছে গেলাম স্টার মলে। সেখানে গিয়ে দেখি মারাত্মক রকমের ভিড়। আমার আবার ভিড় খুব বেশি একটা পছন্দ হয় না। যাই হোক অন্যান্য জায়গায় প্রচন্ড ভিড় থাকলেও কেএফসিতে তেমন একটা বেশি ভিড় দেখলাম না। খুব সম্ভবত দুই একজন লোক ছিল এই সুযোগে রুপাই গিয়ে দাঁড়ালো কেএফসি কাউন্টারে। তবে কি খাওয়া হবে সেই সিদ্ধান্ত আমরা অনেক আগে থেকেই নিয়ে এসেছিলাম। রূপাই সব সময় পছন্দ পেরি পেরি চিকেন স্টিপ্স এবং আমারও সেটা অনেক বেশি ভালো লাগে। তবে তার থেকে বেশি ভালো লাগে কে এফ সি এর স্পেশাল বার্গার। তাছাড়াও বার্গার নেওয়ার একটা কারণ ছিল যে ওটা খেলে ভালোমতো পেট ভরে যায়। বাড়িতে গিয়ে আর রাতে খাওয়া না লাগে। হা হা হা.. যাই হোক দুইজনের সহমতে এই দুটো আইটেম অর্ডার করা হলো। পেরি পেরি চিকেন স্ট্রিপসের সবথেকে ভালো স্পেশালিটি হল যে এই চিকেন আইটেমে এত সুন্দর একটা মসলা ব্যবহার করা হয় যেটা টেস্ট এবং ফ্লেভার অন্য কোন কিছুর সাথে ম্যাচ করে না।
যাইহোক আরো অর্ডার করা হয়েছিল দুটো কোলড্রিংস তবে সেটার ফটো না তোলার কারণে দেখাতে পারলাম না। মোটামুটি আমাদের খাবার অর্ডার করার প্রায় ২০ থেকে ২৫ মিনিট পর আমাদের টোকেন নাম্বার ধরে ডাক দিল। কেএফসিতে একটাই সমস্যা খাবার রেডি হতে অনেক বেশি সময় লাগে। এদিকে আমাদের খিদেতে পেট চো চো করছিল। তবে একটা জিনিস বেশ ভালো লাগছিল যে দুজনে মিলে গল্প করছিলাম এজন্য হয়তো সময় অনেক সুন্দর ভাবে কেটে যাচ্ছিল। যাইহোক খাবার সামনে আসার সাথে সাথেই আমাদের কেমন যেন গল্প বন্ধ হয়ে গেল এবং কোথা থেকে খাওয়া শুরু করব সেটা নিয়েই দুজন কাড়াকাড়ি শুরু করে দিলাম। আমি অবশ্য বার্গার খেতে অনেক বেশি পছন্দ করি তাই আমি শুরুটা বার্গার দিয়ে করলাম। অন্যদিকে রুপাই পেরি পেরি চিকেন স্ট্রিপ দিয়ে তার খাওয়া শুরু করল। খাওয়ার সময় আমাদের ভিতর একটা সবথেকে বড় ব্যাপার হয় সেটা হলো আমরা কোন কথা বলি না, শুধু খেয়েই যাই। খাওয়া শেষ হওয়ার পর তারপর আবার আমাদের গল্প শুরু হয়।
সত্যি কথা বলতে এখানকার খাবার নিয়ে তেমন কিছু বলার নেই। কারণ কেএফসির খাবার কেমন হয় সেটা আপনারা প্রত্যেকেই জানেন এবং এর টেস্ট কেমন সেটা আপনারা প্রত্যেকেই জানেন সুতরাং নতুন করে বলার তেমন কিছু নেই। তারপরও যেহেতু এটি একটি ফুট রিভিউ পোস্ট তাই টুকটাক কিছু কথা না বললেই নয়। বার্গার টা অনেক বেশি জুসি এবং ভেতরে প্রচুর পরিমাণে চিজ দেওয়া ছিল তাছাড়াও চিকেনের যে পেটি টা ছিল ওটা অসাধারণ টেস্টি ছিল। এছাড়াও ভিতরে ছিল পিয়াজ শসা এবং অন্যান্য সবজি যেটার কারণে টেস্ট আরো অনেক গুনে বেড়ে গেছিল। তাছাড়াও এদের স্পেশালিটি হলো যে এরা বার্গারের ভিতরে লেগ পিস দেয়। এজন্য চিকেন টা অনেক বেশি নরম এবং টেস্টি হয়। এরপর আসি পেরি পেরি চিকেনের কথা নিয়ে। এটা এতটাই টেস্টি এবং জুসি যেটা বলে বোঝানো যাবে না। তাছাড়াও এর সাথে দুই ধরনের মেয়োনিজ দিয়েছিল আমাদের, সেটা মাখিয়ে খেতে এক অনবদ্য টেস্ট মনে হচ্ছিল আমার কাছে। সবথেকে বড় কথা হল এর স্টাফিং টা এত বেশি সুন্দর থাকে যেটা অন্যান্য চিকেন আইটেম থেকে এটাকে অনেক বেশি আলাদা করে। এবার আসি দামের কথা নিয়ে। যেটা আসলে বলা উচিত হবে কিনা জানিনা তারপরও বলি। যদিও দাম কত নিয়েছিল সেটা আমি দেখিনি। তবে তারপরও আমাকে রুপাই যেটা বলেছিল সেটা হলো যে চিকেন বার্গার গুলো খুব সম্ভবত ১৭০ টাকা করে নিয়েছিল প্রত্যেকটা এবং পেরি পেরি চিকেন স্ট্রিপ ৩৯০ কিংবা তার কাছাকাছি এরকম একটা নিয়েছিল। তবে সব মিলিয়ে আমাদের সেই দিনের আড্ডা এবং খাওয়া দাওয়া অনেক বেশি জমজমাট ছিল।
ডিভাইস | realme 8i |
---|---|
ফটোগ্রাফার | @pujaghosh |
অনেকদিন পর দুইজন মিলে দারুন সময় কাটিয়েছেন।জীবন মানেই এখন রেস,সেই রেসের মাঝে সময় বের করাটাই সব থেকে মুশকিল। আপনাদের কেএফসির খাবার গুলো তো ভালই,কিন্তু আমাদের এখানকার কেএফসি আউটলেট এর খাবারের অবস্থা বাজে৷ যাই হোক আপনার ফুড রিভিউটি বেশ ভাল ছিল। ধন্যবাদ শেয়ার করার জন্য।
ফুড রিভিউটা আপনার কাছে ভালো লেগেছে জেনে খুশি হলাম ভাই। ধন্যবাদ আপনাকে।