জগন্নাথ দেবের একটি চিত্রাঙ্কন।
হ্যালো বন্ধুরা
সবাইকে আমার নমস্কার,আদাব।আশাকরি আপনারা সকলেই ভালো আছেন,সুস্থ আছেন?ঈশ্বরের অশেষ কৃপায় আমিও ভালো আছি, সুস্থ আছি।
🙏জগন্নাথ দেব🙏
বাঙ্গালীর বারো মাসে তেরো পার্বন, আর সেই তেরো পার্বনের একটি হল রথযাত্রা।বাঙ্গালী সংস্কৃতি ও সাহিত্যের অবিচ্ছেদ্য অংশ রথযাত্রা। প্রতিবছর আষাঢ় মাসের পূর্ণিমা তিথিতে কাঠের তৈরি রথে করে মহাপ্রভু জগন্নাথদেবের বিগ্রহকে পরিভ্রমন করানো হয়।পুরীর জগন্নাথ মন্দির থেকে এই রথযাত্রার উদ্ভব।বৈদিক শাস্ত্র থেকে জানা যায়, জগন্নাথ আসলে শ্রীকৃষ্ণের অবতারের একটি বিশেষ রূপ। দ্বাপর যুগে দুষ্টের দমন, শান্তি ও আনন্দময় এবং ধর্ম সংস্থাস্থাপনের জন্য ভগবান শ্রীকৃষ্ণ বিশ্বভুবনে এসেছেন।জগন্নাথের প্রধান উত্সব হল রথযাত্রা।জগন্নাথ বলরাম ও সুভদ্রা এই তিন দেবতাকে টেনে জগন্নাথ দেবের মাসির বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। ৭দিন পরে মাসির বাড়ি থেকে রথ যেখানে থাকে। সেই স্থানে আবার রথের রশি টেনে টেনে নিয়ে আসা হয় একে উল্টো রথ বা ফেরত রথ বলা হয়।
আজকের চিত্রাঙ্কন টি আমার বড় কন্যা বর্ষা চাকী করেছে।সাধারণ একটি মাটির থাল অনেক দিন ধরেই ঘরে পড়ে ছিলো অযত্নে।সেদিন দেখি বর্ষা মাটির থালাটি পুরস্কার করছে আমি দেখে বললাম মাটির থালাটি কি করবা!ভেবেছিলাম হয়তোবা ওর প্রয়োজনীয় কোনো জিনিসপত্র রাখবে।ও আমাকে বললো একটা কাজ করবো তারপর তোমাকে সারপ্রাইজ দিবো।আমি আর বিষয় টি আমলে না নিয়ে দুপুরের খাবার শেষে একটু রেস্ট নেওয়ার জন্য রুমে চলে গেলাম।সন্ধ্যায় দেখি আমার বড় কন্যা জগন্নাথ দেবের চিত্রাঙ্কন টি আমার হাতে ধরিয়ে দিয়ে বললো এই নাও তোমার সারপ্রাইজ গিফট।আমি তো দেখেই অবাক!পরিত্যক্ত একটা মাটির থালা রং তুলি দিয়ে একেবারে জগন্নাথ দেবের মুখশ্রী চিত্রাঙ্কন করেছে, এটা আমি ভাবিনি যে ও এরকম একটি চিত্রাঙ্কন করে আমাকে উপহার দিবে।আমি খুবই খুশি হয়েছি এবং আমার কাছে বিষয় টি খুবই ভালো লেগেছে।তাই আপনাদের সাথে পুরো বিষয় টি শেয়ার করার চেষ্টা করছি।
উপকরণ
১.মাটির থালা
২.অ্যাক্রেলিক কালার
৩.তুলি
৪.পেন্সিল কম্পাস
ধাপ-১
প্রথমে মাটির থালাটি সাদা রং দিয়ে পুরোটা রং করে নিয়েছে।তারপর পেন্সিল কম্পাস দিয়ে কয়েকটি বৃত্ত একে নিয়েছে।
ধাপ-২
এবার চিকনতুলির সাহায্যে কালো রং দিয়ে বৃত্ত গুলি এঁকে নিয়েছে।
ধাপ-৩
এবার চোখের অংশ টা এঁকে নিয়েছে।তারপর মুখের অংশটি কালো রং দিয়ে ভরাট করে নিয়েছে।
ধাপ-৪
এবার লাল রং দিয়ে চোখ দু'টি ভরাট করে নিয়েছে।তারপর মুখ এঁকে নিয়েছে।
ধাপ-৫
এবার সাদা রং দিয়ে কপালের তিলক আইভ্রো এবং মুখের নিচে এঁকে নিয়েছে।তারপর কালো রং দিয়ে চোখের মনি দুটোকে নিয়েছে।
ধাপ-৬
এবার লাল রং দিয়ে প্রথমে একটি বর্ডার এঁকে নিয়েছে।তারপর সবুজ রং দিয়ে আরেকটি বর্ডার এঁকে নিয়েছে।সবুজ রং এর উপরে হলুদ রং দিয়ে আরেকটি বর্ডার এঁকে নিয়েছে।
ধাপ-৭
হলুদ রং এর উপরের ফাঁকা অংশটি নীল রং দিয়ে ভরাট করে নিয়েছে। এবার সাদা কালো রং দিয়ে ছোট ছোট দাগ টেনে নকশা এঁকে নিয়েছে।
ধাপ-৮
সবুজ বর্ডারের উপরে সাদা রং দিয়ে ছোট ছোট কলকা কে নিয়েছে।হলুদ বর্ডারের উপরে কালো রং দিয়ে ত্রিভুজাকৃতির নকশা এঁকে নিয়েছে।তারপর হলুদ বর্ডারের উপরে আরেকটি গোলাকার নকশা এঁকে নিয়েছে।
ধাপ-৯
এবার নীল রং এর উপরে লাল রং দিয়ে ত্রিভুজাকৃতির নকশা এঁকে নিয়েছে।তারপর সাদা রং দিয়ে লাল রং এর উপরে কলকা এবং নকশা কে নিয়েছে।আর এভাবেই পুরো আর্ট টি সম্পন্ন হয়েছে।
ফাইনাল লুক
আজ এখানেই শেষ করছি।আবার দেখা হবে অন্য কোনো সময়ে নতুন কোনো বিষয় নিয়ে সেই পর্যন্ত সবাই ভালো থাকবেন,সুস্থ থাকবেন এই প্রত্যাশা করি।
OR
টুইটার লিংক
অনেক সুন্দর হয়েছে। আপনাকে দারুন সারপ্রাইজ দিয়েছে। সঠিক হাতে পড়লে যে লোহাও সোনা হয়ে যায় এটিই তার উৎকৃষ্ট প্রমান। দারুন লাগছে দেখতে। ধন্যবাদ কাকিমা সুন্দর চিত্রকর্মটি আমাদের মাঝে তুলে ধরার জন্য।
এটা ঠিক বলেছো সঠিক হাতে পড়লে লোহাও সোনা হয়ে যায়।আমার মেয়ে আর্ট মোটামুটি ভালোই পারে কিন্তু অসলতার কারনে এখন সব ভুলে যাচ্ছে দিনদিন।আমিও খুব একটা চাপ দেই না তার কারন সামনে পরীক্ষা।ইচ্ছে করলে ও আরও অনেক ভালো কিছু করতে পারবে।ধন্যবাদ তোমাকে সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।
মাটির থালার ভিতরে এরকম সুন্দর একটি আর্ট তৈরি করে ফেলার জন্য আপনাকে জানাই শুভকামনা। মাটির থালার উপরে এরকম সুন্দর আর্ট করা যায় এটি আমার কখনো জানা ছিল না৷ আপনি খুবই ভালোভাবে এই আর্টটি তৈরি করে ফেলেছেন৷ আপনার ক্রিয়েটিভিটি প্রকাশ পেয়েছে এই আর্টের মাধ্যমে৷
সুন্দর মতামত পোষণ করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই ভাইয়া।জগন্নাথ দেবের আর্ট টি আমার বড় মেয়ে করেছে।ধন্যবাদ ভাইয়া।
আপু আপনি আজকে আমাদের মাঝে অনেক সুন্দর ভাবে জগন্নাথ দেবের একটি চিত্রাঙ্কন তৈরি করে শেয়ার করেছেন। আসলে মাটির থালার ভিতরে যেকোনো ধরনের আর্ট তৈরি করলে দেখতে বেশ ভালই লাগে। আমার কাছে দেখতে কিন্তু বেশ চমৎকার লেগেছে আপু। ধন্যবাদ এত সুন্দর ভাবে প্রতিটা স্টেপ আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
মাটির থালায় আর্ট গুলো আমারও অনেক অনেক ভালো লাগে।জগন্নাথ দেবের চিত্রাঙ্কন টি আপনান অনেক ভালো লেগেছে জেনে খুশি হলাম।ধন্যবাদ ভাইয়া।
বড় মেয়ের প্রতিভা আছে, মাথায় আইডিয়াও আছে। ও চেষ্টা করলে অনেক দূরে এগোতে পারবে। খুব সুন্দর একটি সারপ্রাইজ দিয়েছে তোমাকে। এমন একটি সারপ্রাইজ পেলে নি:সন্দেহেই ভালো লাগবে যে কারোরই। ও প্রতিটি স্টেপ খুব সুন্দর করে গুছিয়ে করেছে। মাসিমনীর পক্ষ থেকে সবসময়ই ভালোবাসা ও শুভকামনা 😘😍
অনেক সুন্দর করে গঠনমূলক একটি মন্তব্য করার জন্য তোমাকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই মনা।😘❤️
বাহ,আপনাকে আপনার বড় মেয়ে দারুণ সারপ্রাইজ দিয়েছেন আন্টি।আপনি রেস্ট নিতে নিতেই মাটির পাত্রের উপর চমৎকার অঙ্কন করেছে।আমার কাছে খুবই ভালো লেগেছে এটি।সুন্দরভাবে জগন্নাথ দেবের চিত্র ফুটিয়ে তুলেছে,আশা করি আপনার কাছে খুবই ভালো লেগেছে।ধন্যবাদ আপনাকে।
সম্পূর্ণ ভিন্ন ধরনের পদ্ধতিতে আজকে আপনি আমাদের মাঝে একটা চিত্র অঙ্কন করে শেয়ার করেছেন আপু। আপনি একটি মাটির থালার ওপর জগন্নাথ দেবের চিত্র অংকন করে শেয়ার করেছেন যে আমার কাছে খুবই ভালো লেগেছে।
আপনার চিত্র অংকন খুবই দুর্দান্ত হয়েছে।জগন্নাথ দেবের চিত্রাঙ্কন করেছেন খুবই অসাধারণ লাগছে দেখতে। বিভিন্ন রকম ডিজাইন দিয়ে পুরো চিত্রাংকন চমৎকার ভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন। জল রং দিয়ে আঁকা পেইন্টিং গুলো দেখতে খুবই সুন্দর লাগে। এত চমৎকার পেইন্টিং আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই।
আপু আপনি আজকে আমাদের মাঝে সুন্দর করে জগন্নাথ দেবের চিত্র অংকন শেয়ার করেছেন। সত্যি কথা বলতে দেখতে অনেক সুন্দর লাগছে। আপনার দক্ষতা আছে আপু বলতে হবে। ধন্যবাদ আপনাকে এভাবেই এগিয়ে যান।