পারিবারিক জীবন ও ইসলাম। 1 ম পোষ্ট.

পরিবার উদ্দেশ্য ও কর্তব্য

শুধুমাত্র প্রজনন বিষয়ক দায়িত্ব পালন পরিবারের একমাত্র কাজ নয়। মানুষের বংশ পরম্পরা সংরক্ষণ এবং পরস্পরের মাঝে যোগাযোগ রক্ষা করাও পরিবারের অন্যতম দায়িত্ব। সামাজিক সাংস্কৃতিক কাঠামোর মূল ভিত্তিই হলো পরিবার। পরিবারগুলোর টিকে থাকার জন্য একটি প্রক্রিয়া আছে যার মধ্য দিয়ে একই সাথে সামাজিক আদর্শিক এবং সাংস্কৃতিক স্থিতিশীলতা সুনিশ্চিত হয়। অতীত বর্তমান ও ভবিষ্যতের মাঝে একটি যোগসূত্র স্থাপনের কাজ করে পরিবার। কুরআন ও সুন্নাহর আলোকে পরিবারের বেশ কিছু উদ্দেশ্য ও কার্যক্রম সম্বন্ধে ধারণা পাওয়া যায়। যেমন _
মানবজাতির সংরক্ষণ ও ধারাবাহিকতা বজায় রাখা।
মানবজাতির অস্তিত্ব রক্ষা এবং খলিফা হিসেবে মানুষের দায়িত্ব ও কার্যক্রম অনেক ক্ষেত্রেই মানুষের নিয়মিত জন্মের ওপর নির্ভর করে। প্রকৃতিগতভাবে নারী ও পুরুষের মানসিকতা ও মনস্তাত্ত্বিক পার্থক্য রয়েছে এবং এগুলো বিপরীত লিঙ্গের মানুষ দুটোকে পরস্পরের জন্য সম্পূরক করে তোলে।
সমাজে নারী পুরুষ বা বাচ্চাদের অস্তিত্ব প্রথম থেকেই আছে এবং পরিবার এই মানুষগুলোকে এমনভাবে আবদ্ধ করে রাখে যাতে এসব সদস্যরা সমাজের প্রতি দায়বদ্ধ হয়ে ওঠে। আর পরিবার এমন একটি কাঠামো যা একেবারে শুরু থেকে নিয়ে পরিণতি পর্যন্ত পুরোটা বিষয়কে দায়িত্বশীলতার সাথে সম্পন্ন হওয়ার সুযোগ দেয়।

Yellow and Blue Modern Digital Marketing Agency Facebook Post.jpg

নৈতিকতার সংরক্ষণ
নারী-পুরুষের পারস্পরিক আকর্ষণ একটি সহজাত প্রবৃত্তির। সকল প্রাণীর মাঝেই এই প্রবৃত্তিটি লুকায়িত থাকে। যদিও নারী এবং পুরুষের মাঝে এই প্রবৃত্তির বৈশিষ্ট্য ও প্রকাশভঙ্গিতে কিছুটা ব্যতিক্রম রয়েছে অন্যান্য প্রাণীর ক্ষেত্রে যৌনতার প্রয়োজন কেবলই বংশ বিস্তারের জন্য। প্রকৃতির নিয়মের মধ্য দিয়েই গোটা বিষয়টি পরিচালিত হয় প্রাণীদের যৌন চাহিদা এবং তা পূরণের বিষয়টি অনেক ক্ষেত্রে প্রকৃতির সময় ও ঋতুর সাথেও সম্পৃক্ত। মানুষের ক্ষেত্রে বিষয়টি তেমন নয় মানুষের মধ্যে বছর জুড়েই এই তাড়না বা প্রবৃত্তি থাকে এবং এই প্রবৃত্তি নিয়ন্ত্রণে মানসিক প্রচেষ্টা চালানোর ক্ষেত্রে অনেক সময়ই আমাদের ঘাটতি থাকে। কিন্তু একটি স্বাস্থ্যকর অস্তিত্ব নিশ্চিতের জন্য নিয়ন্ত্রণ আর বিধিবিধান প্রণয়ন করা অপরিহার্য। যৌভিক সামাজিক ও সংস্কৃত ক্ষেত্রে এই নিয়ন্ত্রণ আরো বেশি জরুরী। ইসলাম বিবাহ বহির্ভূত সকল সম্পর্ক প্রত্যাখ্যান করে। ইসলাম পুরুষ ও নারীকে বৈধভাবে তাদের যৌন চাহিদা পূরণের সুযোগ দেয়। ফলে মানুষ এমন ভাবে জীবনকে উপভোগ করে যেখানে স্বস্তি ও দায়িত্ববোধ যুগোপুত ভাবে কার্যকর থাকে। বিবাহের মাধ্যমেই যৌন চাহিদাকে বিধিসম্মতভাবে নিয়ন্ত্রণ করা যায়। নৈতিকতার সবচেয়ে নিরাপদ পন্থায়ী হলো বিয়ে। ইসলাম বিয়েকে সবচেয়ে সুন্দর মানবিক সম্পর্ক এবং এক ধরনের জেনা ব্যভিচারের বিপরীতে নৈতিক দুর্গ হিসেবে সম্বোধন করেছে।

আল্লাহ তাআলা সূরা নিসার মধ্যে বলেন,

তোমাদের মধ্যে যারা স্বাধীন মুসলিম নারীদের বিবাহ করার সামর্থ্য রাখেনা তারা তোমাদের অধিকারভুক্ত মুসলিম দাসীদেরকে বিবাহ করতে পারে। আল্লাহ তোমাদের ঈমান সম্পর্কে সম্পূর্ণ ওয়াকিবহাল। তোমরা সকলে পরস্পর সমতুল্য। সুতরাং সেই দাসীদেরকে তাদের মালিকদের অনুমতি ক্রমে বিবাহ করবে এবং তাদের ন্যায় অনুগতভাবে তাদের মোহর প্রদান করবে এই শর্তে যে (বিবাহের মাধ্যমে ) তাদের চারিত্রিক পবিত্রতা রক্ষা করা হবে তারা কেবল কাম_চরিতার্থকরেনি হবে না এবং গুপ্ত প্রণয় গ্রহণকারিনী ও নয়।তারা যখন বিবাহের হেফাজতে এসে গেল তখন যদি কোন গুরুতর অশ্লীলতায় লিপ্ত হয়ে পড়ে তবে তার শাস্তি হবে সাদিনা (অবিবাহিতা) নারীর জন্য ধার্যকৃত শাস্তির অর্ধেক. এসব (অর্থাৎ দাসীদেরকে বিবাহ করার বিষয়টা) তোমাদের মধ্য হতে যারা (বিবাহ না করলে) গুনাহের লিপ্ত হয়ে পড়ার আশঙ্কা বোধ করে তাদের জন্য।আর তোমরা যদি সংযমী হয়ে থাকো তবে সেটাই তোমাদের পক্ষে শ্রেয়। আল্লাহ অতি ক্ষমাশীল পরম দয়ালু।
সূরা নিসা আয়াত ২৫

আল্লাহ তাআলা আরও বলেন,
তোমাদের জন্য হালাল সুতি সর্দি মুসলমান নারী এবং তাদের সতিসাতদিন নারী যাদেরকে কিতাব দেওয়া হয়েছে তোমাদের পূর্বে যখন তোমরা তাদেরকে মোহরানা প্রদান করো তাদেরকে স্ত্রী করার জন্য, কামবাসনা চরিতার্থ করার জন্য কিংবা গুপ্ত প্রেমে লিপ্ত হওয়ার জন্য নয়। যে ব্যক্তি বিশ্বাসের বিষয় অবিশ্বাস করে তার শ্রম বিফলে যাবে এবং পরকাল এসে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
সূরা মায়েদা আয়াত ৫

খুব শিগ্রই দ্বিতীয় পোষ্ট নিয়ে হাজির হবো ইনশাআল্লাহ.

Coin Marketplace

STEEM 0.17
TRX 0.24
JST 0.034
BTC 96422.40
ETH 2763.88
SBD 0.67