Incredible India monthly contest April #02|My town in 10 pictures.

in Incredible India2 years ago

IMG_20230424_122632.jpg

চলে আসলাম আপনাদের মাঝে আমার প্রিয় শহরের দশটি টি ছবি নিয়ে ৷ আমি এই দশটি ছবির ব্যাখা করে আপনাদের মাঝে শেয়ার করতে চলেছি ৷

প্রথম ছবি

এই মন্দিরটির নাম হলো গোলক ধাম মন্দির এই মন্দির টি আমাদের বাড়ি থেকে প্রায় বারো কিলোমিটার এর মত হবে ৷ এটি একটি প্রাচিন মন্দির এই মন্দিরটিকে দেখার জন্য অনেক দুরদুরান্ত থেকে মানুষ আসে দেখতে ৷

এই মন্দিরে ধুমধাম করে পূজা করা হয়ে থাকে ৷ আর পূজা করার সময় অনেক মানুষের সমাগম হয়ে থাকে ৷ এই গোলক ধাম মন্দিরটি পঞ্চগড় জেলার দেবীগঞ্জ উপজেলার শালডাংগা ইউনিয়নে অবস্থিত ৷ এই প্রাচীন মন্দির টি ১৮৪৬ সালে নির্মিত করা হয়ে থাকে ৷

মন্দিরটি প্রাচীনকালের ঐতিহ্যবাহী অষ্টাদশ শতকের স্থ্যাপত্যের একটি চমৎকার নিদর্শন ৷

IMG_20230424_122723.jpg

দ্বিতীয় ছবি

"ঢোলহাট মন্দির" এটি মূলত ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার অন্তর্গত একটি প্রাচীন মন্দির।
স্থানীয় লোকজনের সাথে কথা বলে জানতে পারি এটি প্রায় আনুমানিক ১৫০/২০০ বছর পূর্বে
'' গৌরলাল চৌধুরী ''' তার পারিবারিক উপাসনার জন্য নির্মাণ করেন‌‌।

ঢোলহাট মন্দিরটি ঠাকুরগাঁও শহর থেকে ৯ কিলোমিটার উত্তরে ঢোলরহাট নামক স্থানে অবস্থিত।
ঢোলহাট মন্দিরটি একটি লম্বা প্রাচীন উঁচু গোলাকার এক কক্ষের মন্দির।উপরে ওঠার জন্য সিঁড়ি আছে। একসময় এর দেয়ালে কারুকার্য ছিল তা বর্তমান জীর্ন অবস্থা দেখেও বুঝা যায়। এর অভ্যন্তরে একটি কক্ষ রয়েছে বলে জানা যায় ।

IMG_20230424_122813.jpg

তৃতীয় ছবি

এই মন্দিরটি হলো জগবন্ধু ঠাকুরবাড়ি ৷ হঠাৎ করে একদিন রাতের বেলায় ঘুরতে গিয়ে এই মন্দিরটির সাথে আমার পরিচয় হয়ে যায় ৷ এটি একটি দূর্গা মন্দির ৷ আনেক বড় ডেকারেশন দিয়ে এই দূর্গা পূজা ধুমধাম করে দেওয়া হয় ৷

সাধারনত এই মন্দিরে সব ধরনের পূজা করা হয়ে থাকে ৷ তারপর জানতে পারি পঞ্চগড় ভারতবর্ষের কুচবিহারের অন্তভুক্ত থাকাকালিন কুচবিহারের মহারাজা নিপেন্দ্র নারায়ণ ১৯৪১ সালে এই জগবন্ধু ঠাকুরবাড়ি প্রতিষ্ঠা করেন ৷ আর এই শতবছরের পুরনো মন্দির দেখতে অনেক মানুষের ভিড় জমে থাকে ৷

IMG_20230424_112512.jpg

চতুর্থ ছবি

এই মন্দিরটির নাম হচ্ছে বদেশ্বরী মন্দির ৷ এই মন্দির টি প্রাচীন যুগের মন্দির প্রাচীন যুগ থেকেই এই মন্দিরে পূজা করা হয়ে থাকে ৷ এই মন্দিরটি পঞ্চগড় জেলার বোদা উপজেলার বড়শশী ইউনিয়নে অবস্থিত ৷ এই মন্দিরটি পাল আমলে নির্মিত করা হয় বলে জানা যায় ৷

সবচেয়ে একটি দুঃখে বিষয় এই মন্দিরে মহালয়া অনুষ্ঠান চলে তিন দিন ৷ আর এই তিন দিনে অনেক মানুষের ভিড় জমে থাকে ৷ দুরদুরান্ত থেকে মানুষ আসে এই খানে মহালয়া দেখার জন্য ৷

এইবছরে দূর্গাপুজার আগে এই বদেশ্বরী মন্দিরে মহালয়া অনুষ্ঠান শুরু হয় ৷ আর এই বদেশ্বরী মন্দিরে যাওয়ার চারপাশের রাস্তা থাকলেও এক পাশ দিয়ে নদী পার হয়ে যেতে হয় ৷ মহালায়া অনুষ্ঠান এর দ্বিতীয় দিন অনেক মানুষ সেই নদী পারা পার করতেছে ৷

একটি নৌকা এই নদীতে মানুষ পারাপার করে থাকে ৷
তারপর সেই নৌকাটি যাওয়ার পথে একশত মানুষের মত সেই নৌকাটিতে চড়িয়ে নেয় ৷ নৌকাটি নদীটির মাঝ পথ পার হতে না হতেই নৌকাটি পানিতে উল্টে যেয়ে ডুবতে থাকে ৷

আর সেই নৌকাতে একশত মত মানুষ বাচ্ছা থেকে শুরু করে পুরুষ মহিলা বয়ষ্ক সব ধরনের মানুষই ছিল ৷ নৌকা ডুবে যাওয়া দেখে নদীর পারের মানুষ গুলো আগে গিয়েও কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে নৌকাটি ডুবে যায় আর মানুষ গুলো ডুবে যায় ৷

পানিডুবরি আসতে আসতে তখন অনেক দেরী হয়ে গেছে যার জন্য নৌকাতে থাকা সব মানুষ ডুবে গিয়ে কোথায় হারিয়ে গেছে কিছুই বলা যাচ্ছে না ৷ বিশ জনের মত সাতার কেটে নদীর পারে আসতে পেরেছে ৷ আর বাকিগুলো ঐ খানেই ডুবানোর পর আর ভেসে উঠেনি ৷

এক ঘন্টা পরেই ডুবরি নেমে দেয় ডুবরি সেই জায়গায় খোজাখুজি করার পর কয়েক ঘন্টায় বিশ জনের মত মৃত দেই উদ্ধার করে থাকে ৷ তারপর রাত পর্যন্ত খোজাখুজির পর ত্রিশ টির মত মৃত দেই উদ্ধার করেছিল ৷

এভাবে এক মাস এই নৌকা ডুবির ঘটনায় মৃত দেহ উদ্ধার করেছিল ৷ যতই দিন যায় একটি দুইটি করে মৃত দেহ ভেসে উঠে থাকে ৷ একটি খুশির দিনে এই ঘটনাটি ঘটে যাবে কেউ বলতে পারে না ৷ আমি অনেক ছোট ছোট বাচ্চা কে দেখেছি এমন কি একি পরিবারের তিন জন সদস্য মৃত দেহ খুজে পাওয়া গেছিলো ৷ এই পরিবারে মানুষগুলো অনেক শোকাহত ছিল ৷

সবশেষে আরেকটি ঘটনা ভালো লেগেছে যেটা শুনে মনটা অনেক হালকা হয়ে গেছিলো ৷ ঐ নৌকা ডুবিতে ভাই ও বোন ছিল তাদের আনুমানিক বয়স ১০ বছরের মত হবে তারা দুজনে সাতার কেটে নদীর পারে চলে আসে ৷ নৌকা ডুবিয়ে যাওয়ার সাথে সাথে মেয়েটার ভাই তার বোনকে দেখে সে পানিতে ডুবিয়ে যাচ্ছে সে তারাতারি করে তার বোনের কাছে গিয়ে তার বোনের হাতটি ধরে দুজনেই অনেক কষ্ট করে নদীর পারে চলে আসে ৷ আসলেই মানতে হবে এই ভয়ানক ঘটনা ঘটে যাওয়ার সত্বেও ভাইটি তার বোনের হাত কোন ভাবেই ছাড়ে নি ৷ তাদের ফিরে আসা আমাকে অনেক অনুপ্রেনিত করে ৷

যাই হোক আমাদের বাস্তবতা মেনে নিতেই হবে ৷ এটাই বিধির বিধান ৷ হয়তো আপনারা সকলেই এই ঘটনাটি টিভিতে দেখেছিলেন ৷ এই ঘটনাটি ঘটে আমাদের বাড়ি থেকে ১৫ কিলোমিটার দুরে করতোয়া নদীতে ৷

এই বদেশ্বরী মন্দিরকে কেন্দ্র করে এই ঘটনাটি ঘটে যাওয়ায় আমরা অনেক কষ্ট পেয়েছি ৷ লিখতে লিখতে চোখের পানি চলে আসছে কিছুই করার নেই বাস্তবতা সবাইকে মেনে নিতে হবে ৷

IMG_20230424_122649.jpg

পঞ্চম ছবি

আমাদের স্কুল নাম নৃপেন্দ্র নারায়ণ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় ৷ এই স্কুলে আমি পাঁচ বছর অতিবাহিত করেছি ৷ অনেক স্মৃতি রয়েছে এই স্কুলের মধ্যে ৷ আমাদের প্রতিটি শিক্ষক অনেক ভালো ছিলেন আমাদের শাসনে রাখতেন ৷ পড়ালেখাও অনেক সুন্দর ভাবে হয় ৷

IMG_20230424_155953.jpg

ষষ্ঠ ছবি

এই ছবিটি তোলা হয়েছে ঢাকা রুপায়ন থেকে যখন আমি প্রথম ঢাকা যাই চাকরির ভাইবা দেওয়ার জন্য তখন সকালে বেলা চাকরির ভাইবার উদ্দেশ্য বের হওয়া সাথেই এই দৃশ্য টি আমি ক্যামরা বন্দি করে থাকি ৷ দেখেই মুগ্ধ হয়ে গেছিলাম এই বিল্ডিং গুলি ৷

IMG_20230424_163344.jpg

সপ্তম ছবি

আমার চাচা সহ যখন ঘুরতে যাই বীরগঞ্জ সুইচগেট ব্রীজ ৷ ব্রীজ টা বেশ ভালোই এই ব্রীজে কয়েক টা গেট রয়েছে সেগুলিকে ছেড়ে পানি যাইতে দেওয়া হয় ৷ এই ব্রীজের পাশেই একটি ছোট খাওয়া দাওয়ার জন্য জায়গা রয়েছে ৷ অনেক মানুষ ঘুরতে এসে সেখানে বিশ্রাম ও খাওয়া দাওয়া করে থাকে ঐ

IMG_20230424_163412.jpg

অষ্টম ছবি

এই বাড়িটি তাজহাট জমিদার বাড়ি এটি রংপুরে অবস্থিত ৷ আমাদের প্রিয় বিভাগ রংপুর আর শহর টা অনেক সুন্দর লাগে ৷ যেটা আমরা জানতে পারি এই বাড়িটি বিংশ শতাব্দীর শুরুর দিকে মহারাজা গোপাল কুমার লাল রায় নির্মাণ করে থাকেন ৷ এই বাড়িটি তৈরি করতে লেগেছিল প্রায় দশ বছর ৷ তারপর মহারাজা গোপাল রায় ছিলেন হিন্দু আর পেশায় ছিলেন স্বর্ণকার ৷

IMG_20230424_163442.jpg

নবম ছবি

এটাও রংপুরে অবস্থিত চিকলির পার্ক নামে ৷ রংপুরের মধ্যে এটাই বড় পার্ক যেখানে প্রতিনিয়ত মানুষ আসে ঘুরার জন্য ৷ এবং অনেক কিছু রয়েছে দেখার ৷ এই পার্কের ভিতরে রয়েছে রেস্টুরেন্ট সহ আরো অনেক কিছু খাওয়ার ব্যাবস্থা ৷

IMG_20230424_170920.jpg

দশম ছবি

আপনারা দেখতেই পারতেছেন এটা ব্রীজ রাতে ঘুরার সময় তোলা হয়েছে ৷ এই ব্রীজ টি আমাদের দেবীগঞ্জ উপজেলায় অবস্থিত করতোয়ো নদীর উপরে এই ব্রীজ টি ৷ ব্রীজের চারপাশেই রয়েছে লাইট দেখতে অসম্ভব সুন্দর লাগতেছে ৷ গরমের সময় এই ব্রীজে অনেক মানুষ ভিড় জমায় প্রাকৃতিক হাওয়া খাওয়ার জন্য ৷ রাতের বেলা অনেক শীতল বাতাস বয়ে থাকে এই ব্রীজের উপর ৷ এটি একটি চীনা মৈত্রক সেতু ৷

এই ছিল আমার শহরের দশটি ছবি যা আমি আজকে আপনাদের মাঝে শেয়ার করলাম ৷ সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন ৷

এই প্রতিযোগিতায় আমি আমার তিনজন বন্ধুকে আমন্ত্রণ জানাচ্ছি @happy-mondal @xhadhin @sanaula

🙏ধন্যবাদ সবাইকে🙏


বিষয়ফটোগ্রাফি
ডিভাইসভিভো Y11
লোকেশনবাংলাদেশ
W3Whttps://w3w.co/slotted.inward.quartered
Sort:  
Loading...
¡Congratulations! This post has been upvoted through -steemcurator06. We support quality posts, and good comments anywhere, with any tags.
Congratulations!.png
Curated by :<<@sduttaskitchen>>
 2 years ago 

ধন্যবাদ ভাইয়া আপনার শহরের দশটি গুরুত্বপূর্ণ ছবি তুলে ধরবার জন্য। এভাবে আমাদের কমিউনিটিতে নতুন নতুন কিছু তুলে ধরবেন এই প্রত্যাশা করি।

#miwcc

 2 years ago 

জ্বী ভাই আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ৷

 2 years ago 

Amigo su ciudad es muy hermosa y la luces se ven muy bonita. Saludos y bendiciones.🤗

#miwcc

 2 years ago 

Tahnk you so much friend 🤍✔

 2 years ago 

প্রথমে আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আপনি এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেছেন আপনার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইল এবং আপনার শহরের দশটি ছবি দেখে আমি মুগ্ধ হয়ে গিয়েছে আপনার ছবিগুলো অনেক সুন্দর হয়েছে পাশাপাশি আপনার ছবির উল্লেখগুলো খুবই সুন্দরভাবে করেছেন ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন আল্লাহ হাফেজ।

#miwcc

 2 years ago 

আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই এতো সুন্দর ভাবে আপনার মুল্যবান মন্তব্য করার জন্য ৷

Coin Marketplace

STEEM 0.16
TRX 0.25
JST 0.042
BTC 94103.02
ETH 1798.87
USDT 1.00
SBD 0.91