Double-faced! কপট!
![]() |
---|
মিষ্টি কথার আড়ালে লুকিয়ে থাকা দুরভিসন্ধি যুক্ত মানুষদের বাংলায় কপট এবং ইংরিজিতে ডাবল ফেস নামে আখ্যায়িত করা হয়!
অনেকেই সকলের সামনে এত নম্রতা দেখায় যেনো ভাজা মাছ উলটে খেতে পারেন না!
এই মানুষগুলো থেকে যতটা সম্ভব দূরত্ব বজায় রাখা শ্রেয়।
এরা জীবনে কারোর আপন হতে পারে না এবং
আত্মস্বার্থ চরিতার্থ করার পাশাপাশি অন্যের ক্ষতিসাধন করাই এদের আসল উদ্দেশ্য।
তবে এর আগেও বহুবার উল্লেখ করেছি, ছদ্মবেশ একজন উপর থেকে লক্ষ্য রাখছেন সর্বদা।
অন্যের ক্ষতি সাধন করে যে হাসি
অন্তরালে বসে এরা হাসেন নিজেদের বিজয়ী ভেবে, তারা প্রায়শই উপরিউক্ত বিষয়টি ভুলে যায়।
- এদের মিষ্টি কথায় অথবা উসকানিতে যারা অবলীলায় পথ বদলে ফেলেন, যারা অন্যের দুর্বলতাকে কাজে লাগিয়ে স্বার্থ চরিতার্থ করেন;
তাদের পরিণতি নিয়ে জাতকের একটি গল্প আজকের লেখায় আপনাদের সাথে ভাগ করে নিচ্ছি।
![]() |
---|
এক্ রাজ্যে বাস করতো এক্ নামকরা ব্যবসায়ী।
দরিদ্র ব্যক্তিদের অর্থের প্রয়োজন পড়লে চড়া সুদে ঋণ দিতেন জিনিষ বন্দক রেখে!
একদিন বাণিজ্যের কারণে, সেই ব্যবসায়ীকে বাইরে যেতে হবে, কিন্তু তার কাছে গচ্ছিত জিনিষ কার দায়িত্বে রেখে যাবে এই কথা ভাবতে ভাবতে তার এক বন্ধুর কথা মনে পড়ে।
যেমনি ভাবনা তেমন কাজ। ব্যবসায়ী কিছু দামী বাসন রেখে আসে বন্ধুর কাছে।
এরপর যখন বাণিজ্য সেরে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হয়, পথে বন্ধুর বাড়িতে বিশ্রামের পাশাপাশি নিজের মূল্যবান বাসনগুলো ফেরৎ নিয়ে যাবেন বলে মনস্থ করে।
ব্যবসায়ী বন্ধুকে ফিরে আসতে দেখে খুশি হয়ে সে ব্যবসায়ীর বাসন নিয়ে ফিরে আসতেই ব্যবসায়ীর চক্ষু চড়কগাছ!
সবকটি বাসনের মধ্যে একই রকম দেখতে ছোটো আকারের বাসন তার নজরে পড়ে!
বন্ধুকে জিজ্ঞাসা করলে সে উত্তর দেয়, তার নিজের বাসনগুলো সন্তান প্রসব করেছে!
তাই সব বড় বাসন গুলোর মধ্যে একটি করে একই রকম দেখতে ছোটো আকারের বাসন রয়েছে।
একদিকে সুদখোর, তার উপরে কপট মানসিকতা! কাজেই ব্যবসায়ী লোভে পড়ে গেলো।
সে মনে মনে ভাবলো ব্যবসা করে উপার্জিত সোনার মোহর গুলো বন্ধুর কাছে গচ্ছিত রেখে যাবে!
এদিকে বন্ধু যাতে তার দুরভিসন্ধি বুঝে না ফেলে তাই কিছুদিন বাদে বাণিজ্যের অজুহাতে পুনরায় সেই বন্ধুর দ্বারস্থ হলো ব্যবসায়ী।
এবার সেই ব্যবসায়ীর যতো অর্থ ছিল সবটাই গুনে গচ্ছিত রেখে গেল ব্যবসায়ী, যাতে ফিরে নিজের লাভের হিসেব রাখতে পারেন।
এবার ইচ্ছে করেই ব্যবসায়ী দেরি করে ফিরল, কারণ বাসনের চাইতে সোনার মোহরের সংখ্যা অধিক, কাজেই সন্তান প্রসব করতে বেশি সময় প্রয়োজন!
হিসেব নিকেষ করে, এরপর ব্যবসায়ী ফিরলেন
এবং আগের বারের মতোই বন্ধুর বাড়িতে পৌঁছলেন।
দরজা খুলতেই ব্যবসায়ী লক্ষ্য করলেন বন্ধুর মুখ শুকনো, মনমরা!
ব্যবসায়ী সিদ্ধান্ত নিলেন রাতেই নিজের গৃহে ফিরে যাবেন।
তাই বন্ধুকে নিজের রেখে যাওয়া সোনার মোহর গুলো নিয়ে আসতে বলেন।
বন্ধু ঘর থেকে ফিরে এসে ব্যবসায়ীর হাতে একটি স্বর্ণ মুদ্রা রাখেন!
এবার ব্যবসায়ী তার বন্ধুকে জিজ্ঞাসা করেন তার বাকি স্বর্ণ মুদ্রা কোথায়?
ব্যথিত মুখে বন্ধু ব্যবসায়ীকে জানায় বাকি স্বর্ণ মুদ্রা প্রসব করবার সময় মারা গেছে!
এবার ব্যবসায়ী নিজেকে ঠিক রাখতে পারেন না!
আমাকে বোকা পেয়েছো? স্বর্ণ মুদ্রা কখনও প্রসব করতে পারে?
বন্ধু শান্ত কণ্ঠে উত্তর দেয়, কেনো বাসন যদি প্রসব করতে পারে সেটা তোমার বিশ্বাস হয়ে থাকে, তাহলে স্বর্ণ মুদ্রার ক্ষেত্রে আমার কথা তোমার কেনো বিশ্বাস হচ্ছে না?
![]() |
---|
এবার ব্যবসায়ী বুঝতে পারলো "শঠে শাঠ্যং" কথার প্রকৃত অর্থ!
অন্যের সাথে শঠতা করলে নিজের সাথে একই ঘটনা ঘটবে এটাই বাস্তব।
তাই ব্যাক্তিগত এবং কর্মজীবনে এই ধরনের মানুষের কাণ্ড দেখে করুণা হয় তাদের পরিণতির কথা ভেবে।
আজকের লেখা তাদের উদ্দেশ্যে যারা দ্বিচারিতা বহন করে নিজেদের অতীব চতুর ভাবেন!
শেষটা সামলাতে পারবেন তো?


এই মানুষদের আমি বহৃরুপী মনে করি যারা আত্ম স্বার্থ উদ্ধার করতে যে কোনো কিছুই করতে পারে। আমি সরাসরি এদেরকে এড়িয়ে চলার চেষ্টা করি এটাই আমি। এটা আমার খারাপ অভ্যাস যদি কারো প্রতি কখনো ক্ষোভ সৃষ্টি হয় তাকে চাইলেও আমি আর ভালো ভাবে কখনোই গ্রহণ করতে পারি না।
ঈশ্বরের প্রতি তো মাঝেমধ্যেই রাগ হয় যে কেন এদেরকে শাস্তি দেন না।
জীবনের স্বল্প সময়ে একটা ঈশ্বরের শাস্তি দেখেছি আর সেইটা দেখেই মনে হয়েছে ঈশ্বর সুযোগ দেন। তবে একটা সময় সেইটাও যদি মাত্রাতিরিক্ত হয় তখন আর সুযোগ দেন না।
পাশাপাশি, গল্পাকারে যে ঘটনাটি উপস্থাপন করেছেন এটা শিক্ষনীয় ও বটে। ধন্যবাদ ম্যাম দূর্দান্ত একটা লেখা পরিদর্শন করার সুযোগ করে দেওয়ার জন্য।
0.00 SBD,
0.12 STEEM,
0.12 SP
বাঃ! আপনার লেখাটা অসাধারণ লাগলো। সত্যিই আপনি গল্পের মাধ্যমে আমাদের একটা অনেক বড় শিক্ষা দিলেন।
সত্যি সমাজে এমন অনেক মানুষ থাকে যারা অন্যকে ঠকিয়ে বড়ো হতে চায়। তবে তারা ভুলে যায়, অন্যের ক্ষতি করে কখনো নিজে বড় হওয়া যায় না। জীবনে কখনো না কখনো তাকেও বিপদে পড়তে হয়।
ছোটবেলায় এই ধরনের গল্প অনেক শুনেছি। এই গল্পগুলো সত্যিই আমাদের অনেক শিক্ষা দেয়।। তাইতো ছোট থেকেই বাচ্চাদের এই ধরনের শিক্ষনীয় গল্প গুলোর মাধ্যমে শিক্ষা দেওয়া উচিত।। তাতে তারা ভবিষ্যতে একদিন প্রকৃত মানুষ হয়ে উঠতে পারে।
0.00 SBD,
0.12 STEEM,
0.12 SP
আপনি খুব সুন্দরভাবে বুঝিয়েছেন আমদের। যেখানে মানুষের প্রতারণা ও অন্যদের ক্ষতি করার পরিণতি স্পষ্টভাবে ফুটে উঠেছে আপনার এই পোস্টে। এটি আমাদের সকলকে সতর্ক থাকতে শেখায়, যাতে কখনো নিজেকে কিংবা অন্যকে এমন বিপদে না ফেলে।
এই ধরনের গল্পগুলো আমাদের জীবনের অমূল্য শিক্ষা দেয়। মানব প্রকৃতির এই দ্বিচারিতা ও শঠতা কখনোই লাভজনক নয়, কারণ একসময় সত্য সামনে চলে আসে। ব্যবসায়ীকে যে শিক্ষা দেয়া হলো, তা আমাদেরও এক ধরনের সতর্কতা শেখায়। ধন্যবাদ দিদি আপনাকে এই সুন্দর গল্প আমাদেরকে উপহার দেওয়ার জন্য। আপনার জন্য সব সময় শুভকামনা রইল দিদি।
0.00 SBD,
0.12 STEEM,
0.12 SP
💦💥2️⃣0️⃣2️⃣5️⃣ This is a manual curation from the @tipu Curation Project
@tipu curate