অনেক বছর পরে ঈদের ছুটিতে মামা বাড়ি যাত্রা।
ঈদের দিন গ্রাম থেকে এসে একদিন ঢাকাতে ছিলাম। কিন্তু এখানেও খুব একটা ভালো লাগে নাই। কেমন জানি একধরনের নিঃসঙ্গতায় ভুগেছি।
আমার বড় ভাই তার পুরো পরিবার নিয়ে সৌদি আরব রয়েছে রোজার আগে থেকেই আবার ছোট ভাইও গ্রামের বাড়িতে গিয়েছে। মামারাও কেউ নেই। আমি পরিবারকেন্দ্রিক মানুষ। যতোই বন্ধু-বান্ধব থাকুক না কেন কাছের মানুষগুলো না থাকলে কেমন জানি একধরনের খালি খালি অনুভব করি।
একবার ভেবেছিলাম আমাদের গ্রামের বাড়ি ধামরাই যাব কিছু ছোটভাই আমার মামার বাড়ি এলাকায় গিয়েছে।এখানে ওর শশুরবাড়িও।তাই একঢিলে দুই পাখি মারা হয়ে গেছে। আমরা সারাদিন কোথাও যাবো যাবো করার পরও ঢাকার বাইরে যাওয়া হয় নাই ওইদিন।
আজকেও যে কোথাও যাব এটা ভাবি নাই কারন প্রচন্ডরকম এর গরম পরেছে। সকালে ঘুম থেকে উঠেছি দেরি করে। নাস্তা বানাবো নাকি বানাবো না এটা নিয়ে কিছু সময় ভেবে রুটি আর আলুভাজি করলাম। তখন ১০ টার বেশি বাজে। নাস্তা করতে করতে ভাইকে কল দিলো আমার হাসবেন্ড।
হাসবেন্ড এর কথায় বুঝতে পারলাম ভাই মামার বাড়ি যেতে বলছে।এমন সময় মামীও কল দিয়ে বললো গ্রামের বাড়ি যেতে।আমি কিছুটা নিমরাজি ছিলাম গরম এর কথা চিন্তা করে।কিন্তু দেখলাম বড়ো ছেলে আর তারা বাবা পারলে এখনি উড়ে চলে যায়।
তবে ছোট ছেলে একদমই রাজি না যাওয়ার জন্য। ওকে রিকুয়েষ্ট করে রাজী করালাম এই বলে যে, আমরা দুপুরের খাবার শেষ করেই বের হবো ঢাকার দিকে। কিন্তু আমরা যতোই পরিকল্পনা করি না কেন ঈশ্বরের পরিকল্পনা সবসময় আমাদের ইচ্ছেমতো হয় না।
ভাই আমাদেরকে বললো দ্রুত বের হতে। ও আমাদেরকে সাথে নিয়ে ধলেশ্বরী নদীতে গোছল করতে যাবে। আমার হাবি এটা শোনে পারলে ঢাকা থেকেই নদীতে ঝাঁপিয়ে পরে।
তার এই আগ্রহের মাঝে বাম হাত ঢুকিয়ে আমি বললাম যে এত গরমে নদীতে গোছল করতে যাওয়া সম্ভব হবে না কারণ নদী আমার মামা বাড়ি থেকে মাইল খানের দূরে দেখেছি আমি ছোট বেলায় আর এখনতো বোধহয় আরো দূরে চলে গেছে। কিন্তু কার কথা কে শোনে। আমি তাকে অগ্রাহ্য করে গোছল করে বের হলাম আমার পেছনে পেছনে দেখি সবাই একই কাজ করলো।
আমাদের বাসা থেকে বের হতে হতে প্রায় বারোটা বেজে গেল। আমার মামা বাড়িকে শুধু গ্রাম বললে হয়তোবা ভুল বলা হবে এটা গ্রামের মাঝে আরো গ্রাম।আমরা ছোট বেলায় যখন যেতাম তখন এই গ্রামে বিদ্যুৎ ছিলো না।
সপ্তাহে দুদিন বিকেলবেলাতে হাট বসতো এছাড়া সকাল দশটার আগে বাজারে গেলে কিছু জিনিসপত্র পাওয়া যেত নাহলে খালি হাতে বাড়িতে ফিরতে হতো।এই অবস্থা আমার বিয়ের আগ দিয়েও দেখেছি।তবে যে জিনিসটা না বললেই না সেটা হলো এই গ্রামের মাছের স্বাদ।ধলেশ্বরী নদীর মাছ খুবই সুস্বাদু হয়।
আমরা সন্ধ্যার পরপরই রাতের খাবার শেষ করে ঘুমাতে যেতাম। সারারাত ঘরের মাঝে হারিকেন জ্বলতো নিভু নিভু করে।
শুয়ে শুয়ে শিয়ালের হাঁক, কুকুরের ঘেউঘেউ আর নানাধরণের পোকা ও পাখির শব্দ পেতাম যতক্ষন জেগে থাকতাম।
আমার মা ও নানীকে দেখতাম ভোর হবার অনেক আগ থেকে বিছানায় শুয়ে শুয়ে গল্প করতো।
ছোট বেলায় সাটুরিয়া পর্যন্ত বাসে যেতাম ।বাকি রাস্তা রিকশায় যেতাম।ভাঙ্গাচুড়া রাস্তায় একটু পর পরই রিকশা থেকে নেমে পাশে হেটে যেতে হতো এসব স্মৃতিচারন করতে করতে রাস্তায় চলছিলাম।
রাস্তা আমরা কেউ-ই চিনি না। যে রাস্তায় আগে গিয়েছি সেটাতে কাজ চলছে তাই ভাই অন্য রাস্তার কথা বললো আমাদের।
গুগলম্যাপেও তেমন কিছু পাওয়া যায় না।ভাইকে লোকেশন শেয়ার করতে বলায় ও লোকেশন দিলো আমাদেরকে।আমরা সাটুরিয়া বাজার দিয়ে দরগ্রাম হয়ে যাবো।
তবে আমাদের যাত্রা বেশিরভাগ সময়ই খুব একটা মসৃন হয় না।এরপর কি হলো সেটা পরবর্তী পর্বে জানাবো।
Es un placer saludarte amiga, entiendo como te sientes, a veces nos podemos sentir solos incluso cuando estamos alrededor de mucha gente, es importante acudir a las personas que amamos cuando nos sentimos de esa manera.
আমার লেখা পড়ে চমৎকার মন্তব্য করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।