আমাদের সম্পর্কের গভীরতার গল্প

Hello,
Everyone,
কেমন আছেন আপনারা সকলে?
আশাকরি আপনারা সকলে ভালো আছেন, সুস্থ আছেন এবং আপনাদের সকলের আজকের দিনটা খুব ভালো কেটেছে।
আপনাদের মধ্যে যারা প্রতিনিয়ত আমার পোস্ট পড়েন, তারা নিশ্চয়ই আমার পোষ্যর কথা জানেন। যার নাম পিকলু্। যদিও একটা সময় ছিলো যখন আমি চাইতাম না যে পিকলু্ আমাদের জীবনে আসুক।
কারন আমি কখনোই এতোটা কাছ থেকে কুকুর বা বিড়ালদের আমাদের বাড়িতে দেখিনি। তাই ওদের প্রতি আমার তেমন টান বা ভালোবাসা ছিলো না।
তবে শুভ (আমার হাজব্যান্ড) বরাবর কুকুর ভীষন ভালো বাসতো। কিন্তু আমি ভাবিনি যে, ২০২০ সালে ফ্রেব্রুয়ারি মাসে সে পিকলু কে আমাদের বাড়িতে নিয়ে আসবে।
যদিও অনেকদিন ধরে ও আমাকে বলেছিল কিন্তু আমি কিছুতেই রাজি হয়নি,তখন আমার শশুরমশাই রাজি হলেন। বলতে পারেন উনি দায়িত্ব নিলেন পিকলুর দেখাশোনার। কারন তখন আমিও যেহেতু অফিস যেতাম তাই আমি জানিয়ে দিয়েছিলাম আমার সময় হবে না ওকে দেখাশোনা করার।
![]() |
---|
যাইহোক, অনেক আলাপ আলোচনার পর আমি হার স্বীকার করলাম। পিকলু্ এলো আমাদের বাড়িতে। প্রথম দিকে আমি ওর কাছেও যায়নি। কিন্তু ভগবানের অন্য কিছু ইচ্ছা ছিলো। তাই কয়েকদিন বাদেই করোনার কারনে লকডাউন শুরু হলো।
আর সেই থেকে শুরু হলো আমাদের কথোপকথন। পুরো লকডাউন কিভাবে পিকলু্র সাথে কাটলো বুঝতেও পারলাম না। কবে আমি ওকে এতো ভালোবেসে ফেললাম জানিনা। আর বর্তমানে এই বাড়িতে আমাকে সবথেকে যে বেশি বোঝে সেটা অন্য কেউ নয়,আমার পিকলু্।
বেশ কয়েকদিন আগে আপনাদের জানিয়েছিলাম ওর একটা ছোট্ট অপরেশন করতে হবে। আর সেই বিষয়ে জানুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহেই ডক্টরের সাথে কথা বলতে হবে।
যেদিন প্রথম ডক্টর বললেন অপরেশন করতে হবে, কোনো একটা অদ্ভুত কষ্টে চোখে জল চলে এলো। আসলে আমরা মানুষেরা আমাদের কষ্ট, খারাপ লাগা, শারীরিক ব্যাথা সবকিছু বলে বোঝাতে পারি। কিন্তু আমার পিকলু্ তো তা পারে না।
তাহলে ওর কষ্ট হলে ও কি করে বলবে, আমি কি ওকে বুঝতে পারবো? আমি কি ওকে যত্ন করতে পারবো। এইসব বিষয় নিয়ে অনেক দ্বিধাদ্বন্দ্ব আমার ভিতরেও চলছে।
তবে একটা কথা আমি আপনাদের সাথে অবশ্যই শেয়ার করতে চাই, আমি পিকলু্র কষ্ট বুঝি বা না বুঝি ও কিন্তু আমাকে পুরোটাই বোঝে।
![]() |
---|
আমার যদি শুভর সাথে কোনো কারনে ঝগড়া হয়, আমি যদি মন খারাপ করে বসে থাকি ও সবসময় আমার পাশে চুপচাপ বসে থাকে। আমি যদি ইচ্ছা করে শুয়ে পড়ি তবে ও আমার গায়ের সাথে জড়িয়ে শুয়ে পড়ে।
ও যেন বোঝাতে চায় ও আছে আমার সাথে,ও ভালোবাসে আমায়। এ এক অদ্ভুত বন্ধন। যাদের বাড়িতে এমন পোষ্য আছে তারা আমার অনুভূতি নিশ্চয়ই বুঝতে পারবেন।
যেদিন ওকে ভ্যাকসিন দেওয়া হয়, বাড়িতে ফিরে আমি ওকে সেদিন একটু বেশি সময় কোলে রাখারই চেষ্টা করি। আমরা যেমন আমাদের শরীর খারাপ হলে একটু বেশি যত্ন চাই,ওরাও কিন্তু তাই।
আশাকরি ওকে ডক্টর দেখালে সেদিন ওর অপরেশনের তারিখ উনি দিয়ে দেবেন। মিথ্যে বলবো না, মনে মনে ভীষন ভয়ে আছি। আমি জানি অপরেশনের সময় আমাকে ওর পাশে থাকতেই হবে। ওকে একা আমি ছেড়ে দিতে পারবো না।
তাই এখন থেকেই নিজেকে মানসিক ভাবে প্রস্তুত করছি। ডক্টর কি বললেন তা অবশ্যই আপনাদের সাথে শেয়ার করবো পরবর্তী কোনো পোস্টে।
সকলে ভালো থাকবেন। শুভ রাত্রি।
এটা আসলে হৃদয়কে স্পর্শ করা মতো কিছু কথা, বিশেষ করে যাদের বাড়িতে এরকম পোষা প্রাণী আছে।
আমার একটি কিউট বিড়াল (মিনি) ছিল। কিন্তু ও এখন আর নাই। একদিন লিখবো আপনাদের জন্য আমার মিনির কথাগুলো।
নিশ্চয়ই লিখবেন মিনির কথা, ভালো লাগবে। অনেক ধন্যবাদ আপনার এতো সুন্দর মন্তব্যের জন্য।
We support quality posts anywhere and any tags.
Curated by : @sduttaskitchen
Thank you @steemcurator07 & @sduttaskitchen for supporting my post. 🙏
পিকলু আপনাদের পরিবারের কিভাবে সদস্য হয়ে গেল তা খুব সুন্দর ভাবে উপস্থাপন করলেন। আপনার স্বামী পিকলুকে বাড়িতে নিয়ে আসে তার সদস্য হিসেবে গ্রহণ করার জন্য কিন্তু আপনি তাকে নামক পোষণ করেন কারণ আপনার অনেক দায়িত্ব রয়েছে অফিসের জন্য। আপনার শ্বশুর সেই দায়িত্ব নিতে চেয়েছে।
কিন্তু উপরওয়ালার ইচ্ছায় করোনাভাইরাসের কারণে সবকিছু বন্ধ হওয়াতে আপনি পিকলুর দায়িত্ব নিতে পারবেন। এমনকি আপনার সাথে খুবই ভালো একটি সম্পর্ক হয়ে গেল।
আপনার মন খারাপ হলে ও সাথে থাকতো। এমনকি পিকলু কে আপনি অনেক ভালবাসতে শুরু করলেন। আদর যত্নের কোন অভাব নেই বলা যায়।
কোন এক কারণে তার অপারেশনের কারণ দ্বারা কিন্তু কি কারনে অপারেশন করতে হবে এটি জানার প্রতীক্ষায় থাকলাম।
অনেক ধন্যবাদ আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য। হ্যাঁ পিকলুকে বাড়িতে আনা নিয়ে শুরুতে আমার আপত্তি ছিলো। কিন্তু ওদের মায়াই এমন, একই বাড়িতে থাকতে থাকতে, কখন ওরা মায়ায় জড়িয়ে ফেলে বোঝা বড়ো দায়। ওর অপরেশনটা কেন করতে হবে নিশ্চয়ই অন্য একটি পোস্টে জানাবো। ধন্যবাদ জানতে চাওয়ার জন্য।
আর এটা জেনে ভালো লাগলো যে আপনার বিড়াল খুব পছন্দের, সম্ভব হলে অবশ্যই পুষবেন। ভালো থাকবেন। ধন্যবাদ।
অপেক্ষায় রইলাম। ধন্যবাদ
সত্যিই এবার ঠান্ডা পড়েছে মনে হচ্ছে। হুডি পড়ে বেশ হ্যান্ডসাম লাগছে কিন্তু পিকলুকে।
ওর সাথে আপনার সম্পর্কের গভীরতা সম্পর্কে ধারনা আছে আমার, সেই কারনেই আপনার ভয়টাও বুঝতে পারছি। চিন্তা করবেন না। ঈশ্বরের উপর ভরসা রাখুন সব ঠিক হয়ে যাবে।
ধন্যবাদ দিদি। পিকলু কমেন্ট পড়তে পারলে খুব খুশি হতো, আপনি ওকে হ্যান্ডসাম বলেছেন তাই।
হ্যাঁ, সত্যি বলতে ভয় তো একটু লাগছে,যদিও ডক্টর বলেছিলেন, এই অপরেশনটা অনেক কুকুর বা বেড়ালের করা হয়। কিন্তু তবুও ভয় করছে।