ডেঙ্গু ছোঁয়াচে নয়- ভয়ে নয় সাবধানে থাকুন

in Incredible India2 years ago (edited)

mosquito-g9cd620f37_1920.jpg

source
(দিনে দিনে ডেঙ্গুর সংক্রমণ বাড়ছে,সকলে সাবধানে থাকুন)

Hello,
Everyone,

সুপ্রভাত সকলকে।
আশাকরি আপনারা প্রত্যেকেই ভালো আছেন, সুস্থ আছেন এবং আজকের দিনটা খুব ভালো ভাবে শুরু করেছেন।

আজকাল টিভিতে খবরের চ্যানেল খুললেই কিন্তু চোখে পড়ে ডেঙ্গু সংক্রমণ নিয়ে বিভিন্ন খবর। ইদানিং সময়ে আমাদের চারপাশেও ডেঙ্গুর সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ছে। আর কখনো কখনো সেই সংক্রমনের কারনে মানুষের মৃত্যুও ঘটছে।

ডেঙ্গু সংক্রমণের ক্ষেত্রে এখনো বহু মানুষের মধ্যে অনেক ভুল ধারণা আছে। যেই কারনেই কিন্তু সঠিক সময়ে সঠিক চিকিৎসা না হওয়ায় মৃত্যুর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে।

ডেঙ্গুর সংক্রমণ থেকে বাঁচার উপায়:-

প্রথমেই আপনাদের সাথে শেয়ার করবো ডেঙ্গু সংক্রমনের থেকে বাঁচার উপায় নিয়ে-

  • টিভিতে বার বার সম্প্রচার করলেও অনেক সময় আমরা সেগুলো মনোযোগ দিয়ে শুনি না। আর সেই কারণেই কিন্তু আমাদের আশেপাশে ডেঙ্গুর মশা জন্মাচ্ছে। প্রথমেই জানিয়ে রাখি ডেঙ্গু একটি মশাবাহিত রোগ। মূলত এডিস মশার কামড়ের ফলে ডেঙ্গুর সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ে। তাই যদি আমরা এই মশার উৎপত্তিস্থল গুলো ধ্বংস করে ওদের বংশবিস্তার বদ্ধ করতে পারি তাহলেই কিন্তু এই সংক্রমণ বদ্ধ করা সম্ভব।

  • আপনারা অনেকেই জানেন যে ডেঙ্গু রোগ বহনকারী এডিস মশা কিন্তু কোনো নোংরা জলে বংশবিস্তার করে না। এরা সর্বদা স্বচ্ছ জমা জলে জন্মায়। এই কারণে প্রত্যেকের উচিৎ বাড়িতে যাতে কোথাও বৃষ্টির জল না জমে সেদিকে খেয়াল করা। যেমন-ফুলের টব, বাইরে পড়ে থাকা কোনো বালতি বা কোনো পাত্র, ডাবের খোসা, কোনো নীচু স্থান এই রকম কোনো জায়গাতেই যেন বৃষ্টির জল না জমে।

  • বর্ষাকালের পর পরই কিন্তু ডেঙ্গুর সংক্রমণ ছড়ায় বেশি। আর মশা যেহেতু আমাদের শরীরের ফাঁকা জায়গাতেই কামড়ায়, তাই চেষ্টা করতে হবে বেশিরভাগ সময় হাত পা ঢাকা জামাকাপড় পরার।

  • এছাড়াও বাচ্চাদের ঘুম পাড়ানোর সময়, এমনকি নিজেরাও দুপুরে ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি ব্যবহার করবেন। কারন ডেঙ্গুর জীবাণু বহনকারী মশা আমাদের মূলত দিনের বেলাতেই কামড়ায়।

  • এছাড়াও মশা মারার জন্য বাড়ির চারপাশে মাঝে মধ্যে মশা মারার ওষুধ ছড়াতে হবে। এক্ষেত্রে কিন্তু আমাদের গ্রাম পঞ্চায়েত একটি অনন্য ভূমিকা পালন করে। তাদের নির্বাচিত কিছু স্বাস্থ্য সাথী বন্ধুরা নিয়মিত পাড়ায় পাড়ায় ঘুরে এই বিষয় গুলোর উপর নজর রাখেন।

ডেঙ্গু জ্বরের লক্ষন/উপসর্গ:

ডেঙ্গু জ্বরের লক্ষন অনেকাংশে সাধারণ জ্বরের মতো হলেও এর বিশেষ কিছু লক্ষন থাকে যেগুলো দেখে আমাদের সর্তক তার প্রয়োজন হয়। যেমন--

  • ডেঙ্গু সংক্রমিত হলে হঠাৎ করেই প্রবল জ্বর হয়। কোনো রকম ঠান্ডা লাগা বা সর্দিকাশি ছাড়াই শরীরের তাপমাত্রা ১০১-১০৪ ডিগ্রি পর্যন্ত উঠে যায়।

  • সারা শরীরে ব্যাথা অনুভূত হয়। বিশেষ করে শরীরের বিভিন্ন জয়েন্টে প্রবল ব্যাথা হয়।

  • মাথা যন্ত্রনা/ব্যথা ও বমি বমি ভাবও ডেঙ্গুর অন্যতম লক্ষন।

  • অতি সহজেই শরীর ক্লান্ত লাগা, চোখ ব্যাথা করা। কিছু কিছু ক্ষেত্রে পেটেও ব্যাথা হয়।

  • সংক্রমণ বেড়ে গেলে বমি,প্রস্বাব ও মলের সাথে রক্তপাতও হতে পারে।

  • রক্তে প্লেটলেটর সংখ্যা কমে যায় এবং শ্বাস কষ্টও শুরু হয়ে যায়।

ডেঙ্গুর সংক্রমণ এড়াতে ঘরোয়া পদ্ধতি:

ডেঙ্গুর সংক্রমণ ধরা পড়লে ভীত না হয়ে ঘরোয়া চিকিৎসার মাধ্যমেও অনেক সময় এই সংক্রমণ দূর করা সম্ভব। তারজন্য আমাদের কাছে সঠিক তথ্য থাকা প্রয়োজন। কি কি উপায় ঘরে বসে আমরা এই সংক্রমণ কমাতে পারি সেগুলো জেনে নেই-

  • ডেঙ্গুর সংক্রমণের ক্ষেত্রে প্রথমেই যেটা প্রয়োজন সেটা হলো পর্যাপ্ত পরিমাণে জল পান করা। এরফলে মাথা ব্যাথা, বিভিন্ন পেশীর ব্যাথা ও ডিহাইড্রেশনের মতো বেশকিছু ডেঙ্গুর লক্ষন কমে যায়।

  • নিম পতার রস আমাদের শরীরে ডেঙ্গুর মতো ভাইরাল জ্বরের প্রকোপ কমাতে সাহায্য করে।

  • পেঁপে পাতার রস ডেঙ্গু রোগীর শরীরে প্লেটলেট বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। ফলে প্রতিদিন পেঁপে পাতার রস খেলে অনেক উপকার পাওয়া যাবে।

  • মেথি আমাদের শরীরে উচ্চ তাপমাত্রা কমাতে সাহায্য করে। পাশাপাশি শরীরের ব্যাথা নিয়ন্ত্রনেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ফলে রোগী ভালো ভাবে ঘুমাতে পারে যা তার সুস্থতার জন্য বিশেষ প্রয়োজন।

  • কমলা লেবুর রস আমাদের শরীরে ভিটামিন সি অভাব পূরণ করে যা শরীরে উপস্থিত কোষের ক্ষত সারাতে সাহায্য করে এবং এতে থাকা অ্যান্টি অক্সিডেন্ট জ্বরের প্রকোপ কমাতে সাহায্য করে।

  • এছাড়াও অন্যান্য বিভিন্ন ফলমূল, শাক সবজি আমাদের শরীরে রক্তপ্রবাহ সচল রাখে, যারফলে রক্ত জমাট বাঁধে না, তাই প্লেটলেটর সংখ্যা স্বাভাবিক থাকে। সুতরাং এই সময় আমাদের প্রত্যেকের প্রচুর পরিমাণে সবজি খাওয়া উচিৎ।

এই সকল ঘরোয়া উপায় গুলির সাহায্যে আমরা অতি সহজেই ডেঙ্গুর সংক্রমণ থেকে বাঁচতে পারি। এরদ্বারা যদি সংক্রমণ না কমে, সেক্ষেত্রে বেশি অসুবিধা হলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিন। সঠিক সময়ে সঠিক ভাবে চিকিৎসা করান।

আর অবশ্যই আপনাদের আশেপাশে সচেতনতা ছড়িয়ে দিন।কারন ডেঙ্গু কোনো ছোঁয়াচে রোগে নয়,যে একজনের থেকে অন্যজনের হয়ে যাবে। সুতরাং কেউ ভয় না পায় বরং এগিয়ে এসে একসাথে ডেঙ্গুর সংক্রমণ দূর করতে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন।

সকলে ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন।

Sort:  
Loading...
 2 years ago 

একদম সঠিক এবং ভীষণ প্রয়োজনীয় কথা আজ আপনি আপনার লেখায় ভাগ করে নিয়েছেন ম্যাডাম।

এখন সত্যি খবর খুললেই কেবল ডেঙ্গু সচেতনার খবর বেশি চোখে পড়ছে।

 2 years ago 

সত্যিই স্যার আজকাল ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় পাশাপাশি মৃত্যুর হারও বেড়ে চলেছে।

 2 years ago 

খুব ভালো বিষয়ে লিখেছেন। আসলে আমরা আমাদের অসচেতনতার কারণেই আরও বেশি অসুস্থ হয়ে পড়ি। ধন্যবাদ আপনাকে এতো সুন্দর একটি বিষয় তুলে ধরার জন্য।

 2 years ago 

একদমই তাই দিদি। সবার আগে সচেতনতা বাড়াতে হবে।

 2 years ago 

দিদি আপনার লেখা পড়ে অনেক কিছু জানতে পারলাম।আজ থেকে এই কাজ গুলোর দিকে বেশি করে নজর রাখবো।

 2 years ago 

সেটাই আগে দরকার। তাহলেই আমরা কিছুটা হলেও ডেঙ্গুর সংক্রমণ কমাতে পারবো।

 2 years ago 

@sampabiswasআপনার লেখা পড়ে আমরা অনেক কিছু জানলাম।ডেঙ্গু আমাদের এখানেও ছড়িয়েগেছে।তাই সবাই আমরা সবসময় সাবধানেই রয়েছি।

 2 years ago 

ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য। জেনে ভালো লাগলো আপনারা সাবধানতা অবলম্বন করছেন। ভালো থাকবেন।

Coin Marketplace

STEEM 0.16
TRX 0.24
JST 0.030
BTC 81979.25
ETH 1618.09
USDT 1.00
SBD 0.82