আমরা মন খারাপের কারন পিকলু

Hello,
Everyone,
কেমন আছেন আপনারা সকলে?
আশাকরি সকলে ভালো আছেন, সুস্থ আছেন এবং আজকের দিনটা আপনাদের সকলের অনেক ভালো কেটেছে।
আজকে আসলে আমার মনটা একটু খারাপ। আপনাদের সাথে পিকলু কে নিয়ে অনেক কথা শেয়ার করেছি। তাই এতো দিনে আপনারা নিশ্চয়ই বুঝতে পেরেছেন যে পিকলু আমার জীবনে অনেকটা অংশ জুড়ে আছে।
আপনাদের বাড়িতে যখন বাচ্চাদের শরীর খারাপ হয় তখন আপনাদের মন নিশ্চয়ই খারাপ থাকে। আর থাকাটাই স্বাভাবিক। তেমনি আমার ক্ষেত্রে ও তাই। হ্যাঁ আমি জানি আপনাদের মধ্যে অনেকেই ভাববেন এইগুলো সব আদ্যিখেতা। কিন্তু এই বিষয়ে আমি আপনাদের মতো মানুষের সাথে সত্যিই কোনো আলোচনায় যেতে চাই না।
কারন, যাদের মনে এই ধরনের কথা আসতে পারে তাদের সাথে এই বিষয়ে আলোচনা করা, নিজের অনুভূতি ব্যক্ত করা সবটাই মূল্যহীন বলে আমার মনে হয়। তবে হ্যাঁ কিছু কথা আমি অবশ্যই বলবো তাদেরকে যারা আমার এই অনুভূতি নিয়ে কোনো প্রশ্ন তুলবে না।

গত কয়েকদিন ধরে কালীপুজো, দীপাবলি, ভাই ফোঁটা সবকিছু মিলিয়ে আমরা সকলেই অনেক মজা করেছি, ঘুরেছি, ঠাকুর দেখেছি, বাজি ফাটিয়েছি। নিজেদের মতো করে যতটা আনন্দ করা যায় করেছি। কিন্তু কখনোই আমরা পিকলুর মতো অসহায় জীবগুলোর কথা ভাবি নি।
আমি জানি আমার মতো যারা পিকলুদের ভালোবাসেন তারা সবসময় সবাইকে একটাই কথা বলেছেন শব্দ বাজি ব্যবহার করবেন না। কিন্তু অনেকেই বুঝেছেন, আবার অনেকেই বোঝেননি। কিন্তু যারা বোঝেননি, তাদের মতো কিছু মানুষের জন্য আজকে আমার পিকলুর শরীরটা ভালো নেই।

গত কয়েক দিন সন্ধ্যার পর থেকে অনবরত বাজির শব্দে ও ভয়ে গুটিয়ে থাকে। একটি দিনও রাতে খাবার খায় না। প্রতি দিন রাতে ওর জ্বর আসে। ওকে কোলে নিয়ে বসে থাকতে হয়। রাতে যতক্ষণ বাজির শব্দ বন্ধ না হয়, ততক্ষণ ও ঘুমায় না পর্যন্ত।
সবকিছু মিলিয়ে পিকলুর জন্য আমার মনটা খারাপ হয়ে আছে। ও আসলে অনেক প্রান চঞ্চল। সারাক্ষণ আমার সাথে, আমার শশুর মশাইয়ের সাথে সাথে সারা বাড়ি ঘুরে ঘুরে বেড়ায়। আমাদের গেটের সামনে দিয়ে কোনো বিড়াল/কুকুর গেলেই ও দৌড়ে গেটের সামনে গিয়ে ডাকতে থাকে।

আমার কেউ ছাদে গেলেই ও আমাদের পিছু পিছু ছাদে যাবে। গাছের গন্ধ শুঁকবে, আমার ঘরের জালানায় উঠে বসে থাকবে। আমার খাটে উঠে নিশ্চিন্তে ঘুমাবে। গত কয়েক দিনে এই সব কিছু বন্ধ হয়ে গেছে। বিশেষ করে সন্ধ্যার পর থেকে ও একদমই চুপচাপ হয়ে যায়।
আর ওর শরীর খারাপ থাকলে আমার একটুও ভালো লাগে না। আজকেও আমাদের এখানে ঠাকুর বিসর্জনের জন্য বাজি ফাটছে। আর ও আমার খাটের নীচে অন্ধকারে লুকিয়ে শুয়ে আছে। এই বাজি ফাটা বন্ধ হলে তবেই আমি ওকে কোলে করে ওর বিছানায় শুইয়ে দিয়ে আসবো।

কাল থেকে আশাকরি বাজি ফাটা বন্ধ হয়ে যাবে। আর আমার পিকলু একটু শান্তি পাবে। সত্যিই শব্দ বাজি বন্ধ করা নিয়ে কঠিন আইন তৈরি হওয়া উচিৎ, শব্দ বাজি তৈরি নিষিদ্ধ হওয়া উচিৎ, বাজারে বিক্রি হওয়া বন্ধ হওয়া উচিৎ। এইসব গুলো যদি সম্ভব হয়, তাহলে আর কিছু না হোক কিছু অবলা জীব অন্তত নিশ্চিন্তে থাকতে পারবে।
যাইহোক, আপনারা সকলে ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন এবং অবশ্যই আমি যে কথা গুলো বললাম সেগুলো সম্পর্কে আপনার মতামত জানাবেন। শুভ রাত্রি।
আপনার পোষ্যর প্রতি আপনার এই অনুভূতিকে আমি সত্যি মন থেকে শ্রদ্ধা করি।
অনেক অনেক ধন্যবাদ স্যার। এদের প্রতি অনুভূতি আসলেই অন্যরকম।
যাদের বাড়িতে পোষ্য আছে তারা তাদের সন্তানের মতই ভালোবাসে। আমি অনেক বাড়িতে দেখেছি। তোমার পিকলুকেও তুমি খুব ভালোবাসো, সেটা বোঝা যায়। কিছু মানুষের জন্য এরা সত্যিই অনেক কষ্ট পায়।
অনেক ধন্যবাদ দিদি এতো সুন্দর ভাবে আমার অনুভূতি বোঝার জন্য। ভালো থাকবেন।
@sampabiswas চিন্তা করিস না দিদি। পিকলুর শরীর ভালো হয়ে যাবে।
হ্যাঁ, সেই আশাতেই আছি। বাজির আওয়াজ বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত শান্তি নেই।